আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গৃহকর্মী শিশুরা শুধু দিবসের প্রতিপাদ্য

আজ বুধবার সারা দেশে ঘটা করে পালিত হচ্ছে বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস। এবার দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, ‘গৃহকর্মে শিশুকে “না” বলুন’। তবে এ প্রতিপাদ্যের বিষয়টি নিয়ে সরকারের তেমন কোনো কর্মকাণ্ড নজর কাড়েনি।
২০০৬ সালের শ্রম আইনে গৃহকর্মকে শ্রম হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। চলতি বছরের মার্চ মাসে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রমের তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে।

সেখানেও বাদ পড়েছে গৃহকর্মে শিশুশ্রম।
৩৩টি জাতীয় শ্রমিক ও মানবাধিকার সংগঠনের জোট ‘গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্ক’ দাবি করেছে, উচ্চবিত্তরাই মূলত গৃহকর্মীদের নির্যাতনের সঙ্গে সম্পৃক্ত।
তাই জোটের পক্ষ থেকে শ্রম মন্ত্রণালয়ে একটি আচরণবিধির খসড়া জমা দেওয়া হয়েছে। সেখানে শ্রম আইনে এই শ্রমিকদের অন্তর্ভুক্ত করতে বলা হয়েছে। যত দিন তা না হচ্ছে, তত দিন এই বিধি অনুযায়ী শ্রমিকদের সুরক্ষা দেওয়ার দাবি করেছে জোটটি।

তবে সরকার তা এখনো চূড়ান্ত করতে পারেনি; খসড়া
আকারেই সেটি পড়ে আছে।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কনভেনশন বা সনদ ১৮৯-এর মূল বিষয় ‘গৃহশ্রমিকের জন্য শোভন কাজ’। এই সনদের মাধ্যমে সারা বিশ্বের গৃহশ্রমিকদের জন্য আইনি সুরক্ষা দেওয়ার একটি মানদণ্ড তৈরি হয়েছে। তবে সরকার এখনো সনদটি অনুসমর্থন করেনি।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বরত সচিব মজিবুর রহমান তাঁর লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘সরকার আইএলওর এই সনদে অনুমোদন দেওয়ার বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে।

’ তিনি বলেন, দেশের বাস্তবতায় গৃহশ্রমকে নিষিদ্ধ করা যাচ্ছে না।
সংবাদ সম্মেলনে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, দেশের বাস্তবতায় গৃহকর্মে শিশুশ্রমকে ঝুঁকিপূর্ণ কাজের তালিকায় রেখে বন্ধ করে দেওয়ার সময় আসেনি। সে ক্ষেত্রে সবাইকে সচেতন হতে হবে। শিশুশ্রমিকের সঙ্গে কেমন আচরণ করা উচিত, তা ঠিক করতে হবে।
তবে সরকারের এ ধরনের বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছেন গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্কের সমন্বয়কারী সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ।

তিনি বলেন, তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকার এই জোটের সঙ্গে কোনো আলোচনা করেনি। গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুশ্রমিক যদি ঝুঁকিপূর্ণ না হয়, তাহলে আর কাকে ঝুঁকিপূর্ণ বলা হবে তা বোধগম্য নয়।
নিবন্ধনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় দেশে গৃহকর্মীদের প্রকৃত সংখ্যা নিশ্চিতভাবে জানা কঠিন। ‘লেবার ফোর্স সার্ভে ২০০৬’-এর মতে, গৃহকর্মে নিয়োজিত ১৫ বছরের বেশি বয়সী শ্রমিকের সংখ্যা তিন লাখ ৩১ হাজার। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর জাতীয় শিশুশ্রম জরিপ ২০০৩-এর তথ্য অনুযায়ী ৫-১৭ বছর বয়সী গৃহকর্মীদের সংখ্যা ছিল এক লাখ ২৫ হাজার।

তবে দেশে বর্তমানে ২০ লাখের বেশি শ্রমিক গৃহকর্মে নিয়োজিত বলে বেসরকারি প্রতিনিধিদের ধারণা। এই শ্রমিকদের বেশির ভাগই শিশু।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ১০ বছরে (২০১১ সাল পর্যন্ত) গৃহশ্রমিকের ওপর ৭৯৮টি অমানবিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৩৯৮ জন নিহত হয়েছে। ছয়টি সংবাদপত্রে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের দেওয়া তথ্যমতে, শুধু গত বছর আটজন গৃহশ্রমিককে মেরে ফেলা হয়েছে।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.