জীবনের কিছু কাহিনী অনেক অদ্ভুত হতে পারে। আজ রাতে অটোরিক্সায় উঠলাম। বসলাম চালকের পাশের সিটে। গাড়ি চলছে। পেছনে বসা এক লোক বলে উঠলো, "ভাই জলদি যান, আমার রাতে ট্রেন আছে"।
তখন ঘড়িতে বাজে ১০.৩০। চালক বলল, "চিন্তা করবেন না। Within 30 minutes আমরা পৌঁছে যাব"। আমি লক্ষ্য করলাম অটোরিক্সার চালকটি যখনি কথা বলছে, তার কথার মধ্যে কিছু নাকিছু ইংরেজি চলে আসছে।
আমার মনে অনেক কৌতূহল হল।
কিন্তু তাকে তো আর সরাসরি জিজ্ঞাসা করা মানায় না। তাই প্রথমে তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, "ভাই আপনি কতদিন হল এই অটোরিকশা চালান"?
উত্তরে তিনি বললেন, "বেশ কিছুদিন"।
আমি এরপর জিজ্ঞাসা করলাম, “এর আগে কি কিছু করতেন”?
আমার এই প্রশ্ন শুনে হয়তো তিনি বুঝে নিলেন আমি আসলে কি জানতে চাই। সহাস্য বললেন, “আমি আসলে দুর্গাপুরের একটি কলেজের ইংরেজির প্রভাষক। রাজশাহী ইউনিভার্সিটি থেকে ইংরেজিতে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছি কয়েক বছর আগে।
দিনের বেলা কলেজে ক্লাস নেই, বিকেলে কোচিং সেন্টারে ছাত্র পড়াই। আর সন্ধ্যার পর অটোরিকশা নিয়ে বের হয়ে নিজেই চালিয়ে যাত্রী বহন করি”।
জানতে পারি লোকটার নাম মাহবুবুর রহমান। কোন কাজই যে ছোট না, এই কথাটি জীবনে অনেকবার শুনলেও বাস্তব চোখে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে মাত্র হাতে গোনা কয়েকবার। আমাদের দেশেও এমন অনেক সৎ পরিশ্রমী মানুষ আছে, যাদেরকে উপযুক্তভাবে কাজে দিলে বাংলাদেশ আজ ইউরোপ, মালয়েশিয়া, জাপানের মত উন্নত হত।
কিন্তু এই দুর্নীতিগ্রস্থ সরকারের কারনে আমরা আজ সামনের দিকে এগিয়ে না গেয়ে বরং উল্টো পথে চলছি। তারা ভবিষ্যতের ২০৭১ সালের দিকে না গিয়ে, দেশের জনগনকে অতীতের ১৯৭১ সালের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। শুধুমাত্র রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য আজ তারা ১৬ কোটি মানুষকে জিম্মি করে দরিদ্রতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। আর আমরাও এসব না চিন্তা করে না বুঝে শুধু হাম্বা হাম্বা ডাকে সাড়া দিয়ে বলছি- “জী হুজুর, জী হুজুর...আগে যুদ্ধাপরাধিমুক্ত দেশ গড়ুন”।
আজ যাদের নামে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ, কেউ এমনকি স্বয়ং যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছে তারা পর্যন্ত প্রমান করতে পারলো না যে তারা সত্যিকার যুদ্ধাপরাধি ছিল।
বাংলাদেশ তো ইতোমধ্যেই যুদ্ধাপরাধিমুক্ত দেশ হয়ে গেছে, কারন সত্যিকার যুদ্ধাপরাধি বলতে বাংলাদেশে কেউ নেই। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ঘোষিত প্রকৃত যুদ্ধাপরাধি ছিল ১৯৫ জন পাকিস্তানি সৈন্য ও অফিসার যাদেরকে '৭১ এর পরে ত্রিদেশীয় (বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান) চুক্তির মাধ্যমে ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এই সত্য জানার পরেও তবুও কিছু লোক Brainwashed হয়ে হাম্বা হাম্বা ডেকেই যাবে- “জী হুজুর, জী হুজুর... আগে যুদ্ধাপরাধিমুক্ত দেশ গড়ুন”।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।