আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এখানে আয় তু তু করে ডেকে ডেকে মন্ত্রীত্ব দেওয়া হয়!

জ.এ. লিপু আওয়ামীলীগের এম পি গোলাম মাওলা রনি মাঝে মাঝেই খুব মজার মজার গল্প করেন টিভি টক শো গুলোতে। সরাসরি, সাহসী, সুন্দর ও গুছিয়ে কথা বলার জন্য তরুণ প্রজন্মের কাছে তিনি খুবই জনপ্রিয় একজন মানুষ। তবে গল্পচ্ছলে উনি আওয়ামীলীগের অনেক গোমরই ফাঁস করে দেন যেটা হয়ত দলের জন্য অনেক সময় বিব্রতকর হয় দাঁড়ায়। কিন্তু তিনি যে এই ব্যাপারে অসতর্ক তা নয়। প্রচণ্ড দলীয় আনুগত্য বান মানুষ যখন টক শো গুলোতে দেখি মাঝে মাঝে চোখের সামনে অন্য প্রাণীর চেহারা ভাসে উঠে।

মনে হয় কোট টাই পড়ে একটি মুখ লম্বাটে একটি কুকুর বসে আছে। বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি করে, ঘার মুখ নাড়িয়ে নাড়িয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে কথা বলছে। দেখি সাদা ঘন থুথু চোয়ালের দু’পাশ বেয়ে পরছে। ওয়াক থু! নিশ্চয়, জানোয়ারের থুথু বড়ই নোংরা ও নাপাক। কিন্তু রনিকে যতবারই দেখেছি আমার কাছে মানুষই মনে হয়েছে।

তাকেই আমি দেখেছি রাজনীতিতে যিনি নেতা বুঝে, নেতার উপর দল বুঝে, দলের উপরে দেশ অর্থাৎ সবার উপরে দেশ কিন্তু অন্যরা ঠিক উল্টোটা। একদিন তার গল্পে উঠে এসেছে এমনি একটি গোমর যেটা হল আবুল হোসেনের মন্ত্রিত্ব গ্রহণের কাহিনী। প্রাক্তন যোগাযোগ মন্ত্রী আবুল হোসেন নাকি দৌড় না কি একটি খেলায় জিতে মন্ত্রিত্ব পেয়েছিলেন। তিনি সেদিন বলেছিলেন কি ভাবে হাসিনা তার মন্ত্রিত্ব দিয়েছিলেন। সেই গল্প শুনে আমি তাজ্জব বনে গিয়েছিলাম।

একি রাষ্ট্র না মগের মুল্লুক, মন্ত্রিত্ব দান না কি ছেলে খেলা! সেদিককার ঘটনাটা ছিল আরও অন্য রকম। সংসদ ভবনের ভিতর মিটিংয়ে সব গুরুত্বপূর্ণ নেতা, এমপি দের ডাকা হয়েছে। সবাই জানে যে আজ হাসিনা নতুন সরকারের মন্ত্রিত্ব কে পাবে তার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিবেন। সেখানে এমপি রনি সহ মহাজোটের সব এমপিরাই ছিলেন। ছিলেন বর্ষীয়ান নেতারা।

৪০-৪৫ টি চেয়ার (সংখ্যাটি মনে নেই, যে কয় জন মন্ত্রী হবেন তাদের চেয়ার)। চেয়ার গুলোতে লিখা ছিল সকল হবু মন্ত্রীদের নাম। কে মন্ত্রিত্ব পাবেন কেউ আগে থেকে কিছুই জানতেন না। এই ব্যাপারে পূর্বে কোন আলাপ আলোচনাই হয় নি। যে নাম অনুযায়ী চেয়ারে বসবেন তারাই হবেন বাংলাদেশ সরকারের অতীব গুরুত্ব পূর্ণ ও পাতি মিনিস্টার যাদের হাতে থাকবে ১৬ কোটি লোকের ভাগ্য।

না এরা বাস্তবেই মন্ত্রী হবেন, স্বপ্নে নয়। এটা কোন মিছেমিছি শিশু-কিশোরদের সংসদ সংসদ খেলা নয়। বাকি যারা মন্ত্রিত্ব আশা করেছিল তারা বসবেন সাধারণ চেয়ারে। হবু মন্ত্রীদের সারপ্রাইজ দেবার জন্যই এটা করা হয়েছিল। তবে যারা মন্ত্রিত্ব আশা করে পাননি তারাও সারপ্রাইজড হয়েছিল চরম ভাবে।

অনেকে আশাহত, অপমানিত হয়ে গিয়েছিলেন গোপনে মিটিং ছেড়ে। একটি নতুন সরকারের মন্ত্রিত্ব বণ্টন মোটেই কোন ছেলে খেলা নয়। রাষ্ট্রীয় কাজ করার উপযুক্ত, যোগ্যতা সম্পন্ন লোকেরাই কেবল মন্ত্রী হতে পারে। শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা অন্যান্য সবকিছু দরকার তার মধ্যে শুধু পার্টির মিটিং মিছিল আর মুখোশ পরে গ্রামের লোক দের সাথে মিষ্টি বাক্য বিনিময় নয়। সচিবালয়ে বসে রাষ্ট্রীয় অনেক গুরুত্ব পূর্ণ বিষয় গুলো তিনিই ডিল করবেন সবচেয়ে শিক্ষিত, অভিজ্ঞ, জ্ঞানী ও যোগ্য লোকদের সাথে যারা হলেন সচিব তাদের সাথে হবে মন্ত্রীদের কাজ কর্ম।

তাদের ভুলের জন্য রাষ্ট্রের বিশাল ও অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে চলে যেতে পারে শত্রু রাষ্ট্রের কাছে গোপনীয় ও স্পর্শকাতর অনেক বিষয়, দলিল-দস্তাবেজ। মন্ত্রী তার যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা দিয়ে সব দায়িত্ব পালন করবেন। তাই তাকে পুনঃ পুনঃ যাচাই বাছাই করতে হবে ইন্টার্ভিউ এর মাধ্যম, প্রথমেই পার্টি প্রদানের সাথে আলোচনা, তারপর দেশের শিক্ষক সমাজ, বিচারক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব অনেকের মতামত ও পরামর্শ নতুন মন্ত্রী নির্বাচনের পূর্বেই বিবেচনায় আনতে হবে। তাই যে মন্ত্রী হবেন তিনি অবশ্যই অবশ্যই জানবেন যে তিনি মন্ত্রী হতে চলছেন। কোন মন্ত্রণালয় পাবেন সেটিও তার পূর্বেই জানার কথা।

কারণ তার যোগ্যতা অনুসারেই তাকে মন্ত্রিত্ব দেয়া হচ্ছে। সেই সময় প্রথম ধাপে যারা মন্ত্রী হয়েছেন তারা কেউ জানতেন না যে তারা কাল থেকে মন্ত্রী হতে চলছেন। কিন্তু এবার সে একই কাহিনী করতে গিয়ে বোধ হয় ভালোই শিক্ষা পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এবারো তিনি মন্ত্রিত্ব দেবার আগে কারো সাথে আলাপ আলোচনা করেন নি। তিনি মনেন করে তার সব নেতাদের আয় তু তু করে ডাকলেই মন্ত্রিত্ব গ্রহণ করতে চলে আসবেন।

কেউ যে মন্ত্রিত্ব গ্রহণ করতে অস্বীকার করে ফেলতে পারে তা তিনি কস্মিনকালেও ভাবেন নি। তাই তারা মন্ত্রিত্ব নিতে অস্বীকার করায় তাকে লজ্জিত হতে হয়েছে। বলতে হয়েছে আমি তাদের ফোন করি নাই মন্ত্রিত্ব গ্রহণ করার জন্য। কিন্তু শাক দিয়ে মাছ ঢাকা যায় নাকি সম্ভব যেখানে আছে আমাদের মত বদমাশ জনগণ! ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.