আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গণতন্ত্র, বাংলাদেশ স্টাইল

বাংলাদেশের গনতন্ত্র একটি ভিন্ন স্টাইলে অগ্রসর হচ্ছে। সাম্প্রতিক এক রিপোর্টে বলা হয়েছে বিএনপি বা আওয়ামী লীগ কেউই নিজ দলের গঠনতন্ত্র অনুসরণ করছে না। এমনকি নির্বাচন কমিশনের যে শর্তে তারা নিবন্ধিত তারা সেটাও মানছে না। এই যদি হয় বড় দলগুলোর গণতন্ত্রের নমুনা তাহলে দেশের গণতন্ত্র কোথায়? আজকাল পাড়া মহল্লার ক্ষেত্রেও (মূল দল ছাড়াও অংগ সংগঠনের কমিটির ক্ষেত্রেও) যারা কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন তারা পোস্টার ছাপিয়ে সকলকে জানান দেন যে তারা প্রধানমন্ত্রী বা বিরোধীদলীয় নেত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞ কারণ তারাই তাকে অমুক কমিটির সদস্য নির্বাচন করেছেন। দলগুলোতে গঠনতন্ত্র আছে, তবে সেই গঠণতন্ত্র অনুযায়ী সর্বময় ক্ষমতা দলপ্রধানের হাতে।

দলের অন্যান্য নেতার প্রতি আস্থা না থাকাই এর প্রধান কারণ। আবার দলপ্রধান হবেন একপক্ষে বঙ্গবন্ধুর পরিবারের কেউ কিংবা জিয়া পরিবারের কেউ। এটাও গণতন্ত্র নয়। সামন্তবাদী মনোভাব থেকে বের না হয়ে আসাই এর প্রধান কারণ। যে কোনো সংগঠনের ক্ষেত্রে একটা সাকসেশন প্লান থাকে।

কিন্তু বাংলাদেশে এটা নেই। রাজনৈতিক দলের ক্ষেত্রেও নেই বা ব্যবসায় সংগঠনের ক্ষেত্রেও নেই। বঙ্গন্ধুর পরিবার ছাড়া আওয়ামী লীগ চলবে না, তাজ উদ্দিনের পরিবার ছাড়া কাপাশিয়া চলবে না, জিল্লুর রহমানের পরিবার ছাড়া ভৈরব চলবে না অপরপক্ষে জিয়ার পরিবার ছাড়া বিএনপি চলবে না, মীর্জা গোলাম হাফিজের পরিবার ছাড়া ঠাকুরগাও পঞ্চগড় চলবে না, খন্দকার দেলোয়ারের পরিবার ছাড়া মাণিকগঞ্জ চলবে না, এরশাদের পরিবার ছাড়া জাতীয় পার্টি চলবে না-- এসবই নেতিবাচক দিক। আমার বাবা মারা গেছেন ১৯৭৪ সালে। সবাই ভেবেছিল আমার বাবা ছাড়া আমাদের জীবন অর্থহীন হয়ে যাবে।

কিন্তু আজ এতদিন পর বাস্তবতা হলো-- বাবা ছাড়াও চলে। এবং প্রকৃতি মানুষকে প্রতিকূলতাকে জয় করার শক্তি দেয়। বাবাকে আমরা কেউ ভুলে যাইনি, কিন্তু তিনি তো আমাদের জীবনে অপরিহার্য থাকেননি। বরং বাবার কৃতিত্ব সেটাই যে তিনি এমন একটা পরিবেশ সৃষ্টি করে গেছেন যাতে তার সন্তানরা উপযুক্ত হতে পারেন। তাহলে রাজনৈতিক নেতৃত্ব কেন তাদের সাকসেশন প্লান করবেন না যাতে একটি পরিবার কাঠামো থেকে বের হয়ে দলটি সর্বজনীন হতে পারেন? বাংলাদেশের গণতন্ত্র বিকাশের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোই প্রধান বাঁধা।

তাদের মনোজগতে গণতন্ত্র নেই। আছে সামন্তবাদের অবশেষ, পরিবারতন্ত্রের প্রভাব এবং তালুকদারী মনোভাব। দেশটা জনগণের নয়, জনতার কাছ থেকে কৌশলে নিয়ে নেওয়া ইজারাদারদের। আর জনগণ, তারাও অন্যের গাড়ী থেকে খুশী হয়, কিন্ত নিজের যে ১২টা বাজছে সেদিকে খবর নেই। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.