জড় এক প্রসঙ্গ কাঠামোর নিবিড় পর্যবেক্ষক :P প্রথমেই বলে নেই এটা গতানুগতিক ভ্রমণ কাহিনী না। কাজেই এই জিনিস পড়া শেষে রচনার শিল্পগুন নিয়া উত্তেজিত হবেন না ।
খাগড়াছড়ি যাবার আগে সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ে নানাবিধ গুজব শুনি। শান্তি বাহিনী নাকি যাকে পাচ্ছে তাকেই জবাই করছে। একটা সময় ছিল যখন বাঙালী তিলকে তাল করত, আজকাল তরমুজ করাও শুরু হইসে তাই খুব একটা পাত্তা দিলাম না।
সুন্দর দিনখন দেখে আমরা সায়দাবাদ থেকে শ্যামলী পরিবহনের একখানা বাসে চেপে বসলাম। শ্যামলীর টিকেটের পশ্চাদ্দেশে দেখলাম আটা, ময়দা, সুজির বিজ্ঞাপন মাগার এই ব্র্যান্ডের জিনিস তো কখনো মার্কেটে দেখি নাই। একেই বোধহয় বলে "কাজীর গরু কেতাবে আছে গোয়ালে নাই" শ্যামলীর বাসে বসে আরাম করে সবে চোখ বুঝলাম তখনি "খট খট খটা খট" আমাদের মস্তকের উপরের ফ্যান বাবাজি তারস্বরে নির্দিষ্ট পর্যায়কাল পরপর বিকট শব্দ করছেন। এই শব্দে খোদ কুম্ভকর্নও ধড়মড় করে উঠবেন আর আমি তো কোন ছাড় ঘুমাতে পারবো না জেনে গান শুনতে লেগে গেলাম।
যাত্রা পথে যথারীতি হাইওয়ের ক্রমিক জ্যামে পড়লাম।
বেপারটা একটু ব্যাখ্যা করি। ধরুন আপনি বাসে ১ ঘন্টার জ্যামে। আপনার সামনের ট্রাক ড্রাইভার ভাবলো এই জ্যাম কখন ছাড়ে একটু ঘুমাই লই। জ্যাম যখন ছেড়ে যাবে তখন এক লেনের রাস্তায় এমন অসংখ্য ঘুমন্ত ড্রাইভারদের জন্যে আবার জ্যাম লাগবে। সৃষ্টি হবে এক ক্রমিক জ্যাম।
আমাদের বাস ড্রাইভার দেখি
এক কাঠি সরস। তিনি হাতে একটা পানি ভর্তি বোতল নিলেন যাবার পথে যেসব ট্রাক ড্রাইভার নাক ডাকছিল তাদের গায়ে ছিটা দিতে। পুরো পথে থিনি ২০ বারের মত ঐ বোতল ব্যাবহার করেছিলেন। এদিকে আমাদের দাড়িওয়ালা সুপারভাইজার সাহেব, যাকে দেখে প্রথমে নিতান্তই গোবেচারা মনে হয়েছিল ঘুমন্ত ড্রাইভারদের প্রতি অসম্ভব সব শব্দ চয়নে খিস্তি আউড়ে আমাদের ভুল ভাঙ্গিয়ে দিলেন। এতসব বিচ্ছিন্ন ঘটনার মাঝেই কুম্ভকর্ণকে কাঁচকলা দেখিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।
ঘুমের মাঝেই স্বপ্নে দেখলাম আমি সিলেট যাচ্ছি চা বাগানের মধ্য
দিয়ে বাসে করে। পরে সহযাত্রী মনোজের খোচা খেয়ে অনুধাবন করলাম এটা স্বপ্ন না। আমরা আসলে আছি খাগড়াছড়ির রামগড়ে। এর কিছুদুর পরেই মাটিরাঙ্গা বাজার। হাই তুলতে তুলতে বাস থেকে নামলাম, আমাদের জন্যে কি রোমাঞ্চ আর শিহরণ অপেক্ষা করছে তা জানলে হয়ত আমি হাইটা তুলতাম না।
(চলবে)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।