Only I know what is my goal, My heart is my temple. প্রথমে একজন প্রশাসনের সাবেক কর্মকর্তার কথা বলি। কারণ কান টানলে মাথা আসে। তিনি সাবেক সচিব এবং সাবেক জ্বালানী প্রতিমন্ত্রী। নাইকো কোম্পানীর কারনে দেশব্যাপী তিনি একটি খ্যাতি পেয়েছেন। তিনি যখন নিচের একটি পদস্থ সরকারী কর্মকর্তা।
তখনই কোন এক অনুষ্ঠানে নিজের স্ত্রীকে রাষ্ট্রপতির সামনে পাঠিয়ে দেন। দেখলেন, রাষ্ট্রপতির চোখে তার স্ত্রী ভালমতোই ধরা পড়েছেন। তিনি নিজের ক্যারিয়ারের সিড়ি হিসেবে স্ত্রীকে ব্যবহার করে সচিব পর্যন্ত হলেন। কিন্তু ততদিনে স্ত্রী আর তার থাকেনি। কারণ ওই ভদ্র মহিলার নামের শেষাংশের হোসেন পাল্টে গিয়ে ততদিনে হুসেইন।
এখানে না বলে পারছিনা- আমার ব্যাচের কতগুলো অফিসারকে আমার ইতোমধ্যেই দেখা হয়েছে। এরা বউ কেন- মাধ্যম হিসেবে মেয়েকেও ব্যবহার করতে দ্বিধা করবেনা। অধ্যাপক মুনতাসির মামুন প্রশাসনের এই কর্মকর্তাদের ক্যারেক্টার নিয়ে একটি বইও লিখেছেন। যাই হোক, আমি তখন মানবজমিন পত্রিকায় জাতীয় পার্টি বিট করি। ওই ভদ্র মহিলা জিনাত হুসেইনের সংগে আমার দেখা ও কথা হয়েছিল।
কিন্তু ইতোমেধ্যই ওই সচিব মহোদয় তাকে তালাক দিয়েছেন। নিজে একটি দলের নেতা ও স্ত্রী অন্য দলের নেতা বনে গেছেন। ভাবলাম, হোসেন নাম ত্যাগ করে হুসেইন নাম যোগ করার কি এমন আকর্ষন। কি মধু আছে এই হুসেইন নামে!
আমি আমার জবাব পেয়েছিলাম। কিভাবে পেয়েছিলাম সেটা বলছি।
মানবজমিনের সম্পাদক যখন বিয়ে করেছিলেন তখন তিনি আমাদের মতোই সাধারন রিপোর্টার। ভাবি মাহবুবা চৌধুরীর পরিবারের অনেক টাকা থাকলেও বিয়ের সময় মতি ভাই এতটা জাকজমক অনুষ্ঠান করতে পারেননি। বিয়ের ২৫ বছর পূর্তিতে তার ভগ্যদেবী সুপ্রসন্ন। মতিভাই ও ভাবী মাহবুবা চৌধুরী দুজনেই স্টার। আমরা সবাই তার বিয়ের ২৫ বর্ষ পূতিতে অনুষ্ঠান করতে চাইলাম।
গুলশানের একটি হোটেলে ওই অনুষ্ঠান হয়েছিল। এমন কোন সেক্টর নেই, যেখানের শীর্ষ ব্যক্তিরা ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না। আমি জাতীয় পার্টি বিট করি বলে পার্টির চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদসহ তার দলের নেতাদের দাওয়াত দিয়ে অনুষ্ঠানে আনি। জনাব এরশাদকে নিয়ে উপস্থিত সবার সংগে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি। চিত্রনায়িকা পপির সামনে নিয়ে তাকে পরিচয় করিয়ে দিলাম।
জনাব এরশাদ পপিকে বললেন, আমি তোমার অনেক ছবি দেখেছি। কয়েকদিন আগে (পদ্মাপাড়ের দৌলতি বা এই রকম কোন ছবির নাম) দেখেছি। অনেজক সুন্দর অভিনয় করেছো। দেশের মেয়েরা এত সুন্দর অভিনয় করতে পারছে তা দেখে আমি আশাবাদী। তবে মুভিতে তোমাকে একটু মোটা লাগছিল।
কিন্তু বাস্তবে যা দেখচি তাতে তো তুমি অনেক স্লিম। সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের মুখে এমন কথা শুনে পপিতো গদগদ। আর আমি আমার জবাব পেয়ে গেলাম। মনে মনে বললাম, ওস্তাদ আপনাকে আমার সালাম। বুঝতে পারছি কেন হঠাৎ অনেক মেয়ের নামের শেষ অংশ পাল্টে যায়।
ইদানিং ডিসকোভারী চ্যানেলটা দেখি। ট্যাবু ভাঙ্গার বেশ কিছু অনুষ্ঠান আমার ভাল লাগে। একদিন দেখলাম, কোন এক দেশে বিয়ের পর মেয়েদের নামের শেষাংশ চিরদেনের জন্য বিদায় দেয়ার অনুষ্ঠান করা হয়। সমূদ্রের পাশে দাড়িয়ে একটি বোতলে কনের নাম ভরে সেই বোতল বর সমূদ্রে নিক্ষেপ করেন। এভাবেই পাল্টে যায় নামের শেষাংশ।
এতক্ষণ যেসব কথা বললাম এগুলো একান্তই কথার কথা। এসব নিয়ে মাথা ঘামাবার আমি কেউ নই। এজন্য কেউ মনে কষ্ট পেলেও আমি দু:খিত। এসব নিয়ে আমার মতো সরকারী কর্মচারীর কোন উৎসাহও নেই। তাই তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
এবার আমার উদ্দেশ্যের কথা বলি। যে সিরিয়াস কথাটা বলতে চাচ্ছি তাতে অনেকেরই ভুরু কুচকে যাবে। আমার বন্ধুরাও মনে কষ্ট পেতে পারেন। ইদানিং দেখি কিছু ছাগল রিপোর্টার পুলিশ বিভাগের সংগে প্রশাসন যোগ করে দিচ্ছেন। লিখছেন, পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে অমুক তমুক বলা হয়েছে।
রিপোর্টগুলো দেখি আর ভাবি লোক প্রশাসন সম্পর্কে নূন্যতম জ্ঞান থাকলেও পুলিশের সংগে প্রশাসন যোগ করতে পারেনা। কিছু রাজনীতিবিদকেও দেখি এ ধরনের বক্তব্য দিতে। সবাই কর্তৃপক্ষ, প্রশাসন সব গুলিয়ে একাকার করে ফেলেছে। কোনটা বিভাগ, কারা কর্তৃপক্ষ আর কারা প্রশাসন এই বেসিক জ্ঞানটাও এখন দেখিনা। দেশটার যে কি হবে! এ সুযোগে কিছু জেলায়ও পুলিশ নিজেরাই প্রশাসন লিখছে।
যদিও তাদের আইন বিধির কোথাও পুলিশ প্রশাসন কথাটা নেই। পুলিশের কথাটা উদাহরণ হিসেবে লিখলাম। অবস্থা এমন দাড়িয়েছে হাসপাতাল প্রশাসন, ঘাট প্রশাসন, হাট প্রশাসন কোথায় প্রশাসন নেই। অপেক্ষায় আছি কয়েকদিন পর ..লছাল ও প্রশাসন হবে। আমার এত নাতিদীর্ঘ ভূমিকার কারণ একটাই-প্রশাসনে এসে, প্রশাসন নিয়ে টানাটানি দেখি অথচ এতে যে কি মধু আছে তা আজও খুজেঁ পেলাম না।
(ঈষৎ পরিবর্তিত আকারে ফের প্রকাশ) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।