দেশের মানুষের বৃহত্তর স্বার্থে জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন। বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম,
আগের পর্বে (Click This Link) আমরা দেখেছি কোরআনকে আসলে কি হিসেবে আল্লাহতা'লা আমাদের প্রতি পাঠিয়েছেন, তার কিছু আলোচনা।
আসুন এই পর্বে দেখি কোরআন কেন আমাদের অর্থাৎ মানুষের মাঝেই নাযিল করা হল, সে সম্পর্কিত আল্লাহতা'লার জানানো কিছু কথা।
১। "আমরা যদি একটা পাহাড়ের উপর এই কুরআন নাযিল করতাম, তবে অবশ্যই তুমি সেটাকে বিনয়াবনত দেখতে এবং সেটাকে আল্লাহর ভয়ে (টুকরো টুকরো হয়ে) ভেঙ্গে পড়তে দেখতে।
আমরা মানুষের কাছে এধরণের উপমা উপস্থাপন করি, যাতে তারা অনুধাবন করতে পারে। "
(সুরা হাশর, ৫৯:২১)
২। "যদি কোন কুরআন এমন হতো যদ্বারা পর্বতকে গতিশীল করা যেতো অথবা পৃথিবীকে বিদীর্ণ করা যেতো অথবা মৃতকে কথা বলানো যেতো (এটিই হতো সেই কুরআন), কিন্তু সমস্ত বিষয়ই আল্লাহর আদেশের অধীন। ..."
(সুরা রা'দ, ১৩:৩১)
৩। "পরম দয়ালু আল্লাহ (হে মানব তোমাদের) কুরআন শিক্ষা দিয়েছেন (করুণাবশত)।
তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন। " (সুরা আর-রহমান, ৫৫:১-৩)
৪। "এবং এটা হচ্ছে এমন এক কিতাব, যা আমরা এক রহমতস্বরূপ তোমাদের কাছে প্রেরণ করেছি; সুতরাং এটা অনুসরণ কর ও ন্যায়পরায়ণ হও- যেন তোমরা রহমত পালন করতে পারো। " (সুরা আন'আম, ৬:১৫৫)
৫। "এটা হচ্ছে এমন একটা বরকতময় কিতাব যা আমরা তোমার কাছে নাযিল করেছি যে তারা এর আয়াতসমূহ নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করে এবং যাতে জ্ঞানী ব্যক্তিরা এ থেকে সতর্কবাণি গ্রহণ করে।
" (সুরা সাদ, ৩৮:২৯)
৬। "নিশ্চয়ই এই বাণী এমন যে কারো জন্য যার একটি অন্তর ও বোধশক্তি রয়েছে অথবা যে তা শ্রবণ করে ও গভীর মনোযোগ দেয়। "
(সুরা ক্বাফ, ৫০:৩৭)
৭। "এটা তো কেবল এক উপদেশ এবং সুস্পষ্ট কুরআন; যেন সে জীবিতদের সতর্ক করতে পারে এবং যাতে কাফিরদের বিরুদ্ধে শাস্তির কথা সত্য হতে পারে। " (সুরা ইয়াসীন, ৩৬:৬৯-৭০)
তাহলে উপরের আয়াতগুলো থেকে জানা যায়, মানুষের কিছু নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য আছে যা জ্বীন ব্যতীত আর কোন সৃষ্টির নেই।
যেমনঃ
চিন্তা করার ক্ষমতা, ভালো ও মন্দ বোঝার বোধশক্তি এবং সে অনুযায়ী চিন্তা করে ইচ্ছামত বেছে নেয়ার ইচ্ছাশক্তি (এই ক্ষেত্রে পশুপাখির কথা আসবেনা, কারণ পশুপাখি তাদের জন্য ভালো-মন্দ বুঝে সেখান থেকে সবসময় ভালোটাই বেছে নেয় কিন্তু মানুষ ব্যতিক্রম কারণ জেনে-বুঝেও মানুষ মন্দটাও বেছে নিতে পারে)।
আল্লাহতা'লা কোন পাহাড় বা নির্জীব বস্তুর উপর কুরআন নাযিল করেন নি। কারণ, তাদেরকে আল্লাহতা'লা স্বাধীন চিন্তাশক্তি বা ইচ্ছাশক্তি দান করেন নি।
আবার মৃত ব্যক্তিরাও কুরআন থেকে নিজে নিজে কোন উপকার পায়না কারণ মৃত্যুর পর মানুষ এবং জ্বীনদের স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি কেড়ে নেয়া হয়। অতএব কোরআন কেবল জীবিত মানুষদেরই সতর্ক করতে পারে।
অতএব, আল্লাহতা'লা যে কুরআন আমাদের জন্য এতোটা গুরুত্বের সাথে নাযিল করেছেন, তার ভার বহন করাটাই মানুষ হিসেবে আমাদের সর্বপ্রধান কর্তব্য। আর এই ভার নিশ্চয়ই কোন কেজি-বাটখারার হিসেব নয়। এ হলো মানুষ হিসেবে আমাদের শ্রেষ্ঠত্বের পরীক্ষা ও আল্লাহর রহমত।
আপনি তৈরী তো?
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।
(চলবে) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।