নিউইয়র্কস্থ জ্যামাইকার হিলসাইড এভিনিউতে অবস্থিত মুসলিম সেন্টারে হাফিজ গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন হাফিজদের পিতামাতাকে আল্লাহ তায়ালা পুরস্কৃত করবেন। সাফল্যের সাথে পবিত্র কোরআনুল কারীম হিফজ্ পর্ব সম্পন্ন করায় ছাত্রদের মধ্যে সনদ বিতরণের জন্য গত ৩১ জুলাই জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে উক্ত গ্র্যাজুয়েশ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ড. জুননুন চৌধুরীর উপস্থাপনায় বিপুল সংখ্যক অতিথি ও অভিভাবকদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত এ সমাবর্তনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের সভাপতি মাহমুদুল হক। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন জাহিদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শেখ মোহাম্মদ আল সিনাওয়ী, ইমাম মির্জা আবু জাফর বেগ, ইমাম শামস্ ই আলী, খাজা মিজান হাসান, সনদপ্রাপ্ত হাফিজ আমজাদ মির্জা ও ফরহাদ সৈয়দ প্রমুখ।
হিফজ্ স্কুলের পরিচিতিমূলক বক্তব্য রাখেন স্কুলের সাব-কমিটির চেয়ারম্যান মিজান হাসান। সভাপতি মাহমুদুল হক উপস্থিত হাফিজ, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, কঠোর শ্রম, পরম ধৈর্য ও অধ্যবসায় দিয়ে যারা হাফিজ হয়েছেন তাদের দায়িত্ব অনেক। তাদের প্রথম ও প্রধান দায়িত্ব হল নিয়মিত কোরআন পাঠের মাধ্যমে অনুশীলন বজায় রাখা এবং অন্যকে কোরআন শিক্ষা দেয়া। সমাজে আদর্শ ব্যক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে হাফিজদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। মুসলিম সেন্টারের কার্যক্রম পরিচালনায় বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে অনুদান অব্যাহত রাখার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন মাহমুদুল হক।
লেবাননী বংশোদ্ভূত ইসলামী গবেষক শেখ মোহাম্মদ আল সিনাওয়ী বেশি করে কোরআনের চর্চা বজায় রাখার উপর গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন কোরআন যতেœর সাথে রেখে দেয়ার জন্য আসেনি। আমরা ব্যবসা, চাকুরি, পর্যটন বিভিন্ন কারণে ভিন্ন ভাষা শিখতে পারি; তাই কোরআনকে বুঝতে আমাদের আরবি ভাষা শেখাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান তিনি।
তিনি কোরআনের অনুসারী ও কোরআনের ছাত্রদের অপমান বা উপহাস করার প্রতি সতর্কতা জ্ঞাপন করে বলেন কোরআনকে অনুসরণ করার কারণে তাদের অপমান করার মানে কোরআন পরিত্যাগ করা।
মাওলানা আবু জাফর বেগ হাফিজদের মর্যাদা তুলে ধরে বলেন আল্লাহ হাশরের দিনও হাফিজদের পিতামাতাকে সম্মানিত করবেন।
এমনকি হাফিজদের সাহায্যকারীগণও একইভাবে পুরস্কৃত হবেন বলে জানান তিনি। তার বক্তব্যে অনুপ্রাণিত হয়ে উপস্থিত ১১ জন মহৎপ্রাণ ১৪ জন শিক্ষার্থীকে কোরআন হিফজ্ করার আর্থিক ব্যয়ভার বহনের দায়িত্ব নেন। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য বছরে প্রায় দুই হাজার চারশ’ ডলার ব্যয় হবে বলে জানা যায়। এ মহৎ কাজে অংশগ্রহণে আগ্রহী ব্যক্তিগণ হলেন লুৎফুল হক চৌধুরী, খাজা মিজান হাসান, আহমেদ সালেহ চৌধুরী, আব্দুর রহমান মাতু, মির্জা মশিউর রহমান, আব্দুল মালেক, বেনজির দাবিয়ু, ফারুক বেগওয়ান, সোহেল মোহাম্মদ, সৈয়দ মাসুদ এবং ইমাম মোহাম্মদ শাহজাদ।
খাজা মিজান হাসান বলেন পরকালে পুরস্কৃত হওয়ার জন্য কোরআন অনুসরণ করা ছাড়া আর কোন বিকল্প নাই।
তিনি উপস্থিত সকলের প্রতি প্রশ্ন রাখেন আমরা কি কোরআন অনুসরণ করছি, নাকি পাশ্চাত্য সমাজব্যবস্থাকে অনুসরণ করছি।
হাফিজ আমজাদ মির্জা বলেন, কোরআন আমাকে পরিচ্ছন্ন রাখে। আত্মার বিশুদ্ধতা অর্জনে ও চুরি, প্রতারণা, হত্যা, মদ্যপানসহ অন্যান্য অন্যায় কাজ থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করে পবিত্র গ্রন্থ কোরআন। হাফিজ ফরহাদ সৈয়দ বলেন কোরআন পড়া ও মনে রাখা অত্যন্ত সহজ। এতে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত প্রতিটি ক্ষেত্রে মানুষের করণীয় বিষয়গুলোর নির্দেশনা দেয়া আছে।
কোরআন আমাদের গাইড।
যে পাঁচজন হাফিজ সমাবর্তনে পাগড়ি ও সনদ পেয়েছেন তারা হলেন জাহিদুল ইসলাম, তোফাজ্জল মির্জা, মোহাম্মদ ফয়জান, আমজাদ মির্জা ও ফরহাদ সৈয়দ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।