আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভেসে আসা শূন্যতা নিঃশ্বাসের ঘ্রাণে

.. শূন্যতা মানুষকে স্বৃতিবিলাসী করে তোলে বড্ড বেশী । রাতের বাকিটা সময় জানালার ধারে বশে রাতে পূর্ণতা উপভোগ করার আর শূন্যতা ঢাকার সুযোগ দেয় । মাঝে মাঝে কাঁঠাল চাঁপার ঘ্রাণ ভেসে আসে পেছন থেকে, প্রথম প্রথম এমন যখন হতো চমকে উঠতাম খুব , এখন তা কমে গেছে । তোমার শরীর থেকে ভেসে আসা এ ঘ্রাণ আমার খুব পরিচিত । তোমার অস্তিত্ব আমার সত্ত্বা জুড়ে বিচরণ করে সারাটা সময়।

মনে পড়ে যায় কোন একদিন দুজন বেরিয়েছিলাম অনেকটা দূরে , কাজ ফুরবার আগে মেঘ ফুরোবার বন্ধবস্ত হল আকাশ কাল করে। ভয়ে ভয়ে ছুটতে আরম্ভ করার পর ঝুম বৃষ্টি থামিয়ে দিয়েছিল । আমাদের নিরাপদ আশ্রয় ছিলনা এ জনশূন্যটার মাঝে , দুজনে কোন এক ভাঙ্গা অন্ধকার কোনায় আশ্রয় নিয়েছিলাম দ্রুত বৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য , যদিও বৃষ্টি রেহাই দিচ্ছিলনা আমাদের । তোমার ভেজা শরীর আড়াল করেছিলে আমার শরীরের আশ্রয়ে । তোমার এ শীতল স্পর্শে এতো বেশী মাদকতা থাকতে পারে জানা ছিলনা ।

আমি বৃষ্টি ভুলে গিয়েসিলাম , আমার পৃথিবী নিঃশব্দ হয়েছিল অনেকটা সময়। অলক্ষে হারিয়ে কীভাবে এভাবে থাকে মানুষ ? ভাবি আজও । দিন গত হয়েছে অনেক , শুধু ভারি হচ্ছে চোখ , দিন দিন ঝাপসা হচ্ছে দৃষ্টি আর বাড়ছে স্বৃতির আসবাব। নূতন একটা রুটিনে চলছে জীবন , একাকীত্ব নূতন করে অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে যেন । রাত ফুরনোর অনেক আগেই ঘুম ভাঙ্গে দুঃস্বপ্নের জ্বালাতনে, ঘুমাতে ভয় হয় দুঃস্বপ্নের ভয়ে ।

চা খেতে ইচ্ছে হয় , কিন্তু বানাতে কষ্ট হয়, তখন বুঝি আমার আশপাশ অনেক বেশী শূন্য । শূন্যতা আবার ডেকে আনে স্বৃতিগুলোকে। মনেপড়ে একবার বন্ধুদের আড্ডার মাঝ থেকে ডেকে এনেছিলে আমায় , প্রচুর রাগ হচ্ছিল তোমার উপর । রাগ নিয়েই দেখা করেছিলাম তোমার সাথে সেই সন্ধ্যায় , খুব বেশী মাথা ধরেছিল । তবে রাগটা তোমার চোখের দিকে তাকিয়ে প্রকাশ করার ক্ষমতা হয়নি কখনও , তোমার চোখের সারল্য সবসময় কেড়ে নিত রাগগুলো ।

সন্ধেবেলার পার্কের এই পরিবেশ অপরিচিত ছিল বেশ । তুমি সব জড়তা ভেঙ্গে বলেছিলে তোমার গায়ে মাথা রাখতে, তোমার আনাড়ি হাতে আমাকে সুস্থতা দান করবার চেষ্টা করছিলে । এমনিভাবে ছিলাম অনেকটা সময় , তোমার নিঃশ্বাসের শব্দ পাচ্ছিলাম । কিছুটা সময় পর তুমি দূরত্ব কমিয়ে তোমার নিঃশ্বাসের ঘ্রান ছড়িয়ে দিচ্ছিলে আমার দিকে । সংবতি দান করেছিল তোমার নিঃশ্বাসের ঘ্রান ।

তোমার নিঃশ্বাস থেকে ভেসে আসা ঘ্রান এভাবে তন্দ্রা সৃষ্টি করতে পারে অজানা ছিল । হতে পারে অন্যদের মত ঘনিস্ততা না থাকার কারনে এমনটা হয়েছে , যেটা এখনকার জুটিগুলো আধুনিকতার ছায়ার আড়াল করে চালিয়ে যায়, যাই হোক ওদের যুক্তি গুলো জানিনা তাই এ সম্পর্কে বেশী কিছু বলা ঠিক হবেনা। তোমার নিঃশ্বাস আমার মুখ জুড়ে , আমার অস্থিরতা বেড়ে বাঁধ ভেঙ্গে গেছে । তোমার হাতদুটো দুহাতে বন্ধি করে তোমার চোখ, মুখ, নিঃশ্বাস এর ঘ্রান নিয়েছিলাম মন ভরে অনেকটা সময়, সংবতিগ্রস্থ হয়ে পরেছিলাম । জানিনা মদ্যপান করলে এতোটা মাতাল হওয়া সম্ভব কিনা , এতোটা তন্দ্রা ভর করে কিনা ।

হঠাৎ কোন অপ্রত্যাশিত কারনে এ তন্দ্রা তন্দ্রা খেলা ভেঙ্গে চুরমার হয়েছিল, তারপরেও এটা আমার সর্বচ্চ প্রাপ্তি মনে হয় । জীবনের এইসব স্বৃতিগুলো মাঝে মাঝে ঝুলি থেকে বেরিয়ে এসে একাকিত্তের কষ্ট বাড়িয়ে দেয় , মহগ্রস্থ করে ফেলে বার বার । ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।