"জাতের কী রুপ দেখলাম না এই মাঝারে" - আপনার কোন স্যালারি এক্সপেকটেশন আছে নাকি?
- হ্যাঁ তা তো একটু আছেই।
- কত?
- ২৫
- ফ্রেশার হয়ে ২৫ !!
( প্রথমে তার বিস্ময় দেখে নিজেও অভিভূত হলাম। ২৫ কি খুব বেশি হয়ে গেল ? খুলনাতে নিজের খরচ ই তো মাসে ১০ হাজার ছিল। ঢাকায় সেটা আরও বাড়বে। এখন তো পরাশুনা শেষ , পরিবারকেও সাপোর্ট দিতে হবে।
পরিবার আশা করে আছে , ছেলে যে তাদের ইঞ্জিনিয়ার হয়েছে , এবার সংসারের হাল ধরবে ছেলে। )
- দেখুন ২৫ বেশি কিছু না , একেবারে খারাপ ও না। একটা চলনসই স্যালারি একজন ফ্রেশার এর জন্য। ৩০ হলে সেটা ভাল হত , কিন্তু আমি তো ২৫ চেয়েছি। আর আমি ফ্রীল্যান্সিং করে ঘণ্টায় ৬০০ টাকা ইনকাম করি।
আর আপনি আমাকে দিনে ৫০০ টাকা অফার করছেন ?!!
- না আমরা আপনাকে ১৫ এর উপরে দিতে পারব না।
- একজন বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার কে আপনি ১৫ অফার করতে পারেন না !
- দেখুন মানুষের আকাঙ্খার কোন শেষ নেই। আপনাকে ১৫ দিলে চাইবেন ২৫ , ২৫ দিলে চাইবেন ৩৫। তাছাড়া আমাদের দেশটা গরিব দেশ। আপনি আন্তর্জাতিক মানের স্যালারি চাইলে আমরা দিতে পারব না।
- আকাঙ্খার শেষ নেই ঠিক আছে , কিন্তু সেই লজিকে আপনি কি আমাকে ১০ ও অফার করবেন ?!! আর দেশটা যে গরিব তা তো আপনাদের কোম্পানির মালিককে দেখলে বুঝা যাবে না নিশ্চয় , ঢাকা শহরে গাড়ি- বাড়ি সবই তো আছে তার। ছেলে মেয়ে ও হয়ত কোন প্রাইভেট এ পড়ে। তখন গরিবিয়ানা থাকে না , আর একজন ইঞ্জিনিয়ারকে পে করার সময় গরিব দেশের দোহায় ? আপনি জানেন একজন সিএনজি চালকের ও মনে হয় ১৫ থাকে মাস শেষে ? আর এত এত ভাল রেজাল্ট আর মেডেল- ক্রেস্ট পেয়ে ইঞ্জিনিয়ার হয়ে ও আমাকে সেই ১৫ এর অফার ই পেতে হচ্ছে !
*********************
এই ছিল আমার নিজের দেয়া একটা জব ইন্টারভিউ এর কিছু অংশ ! আগেও ২/৩ টা ইন্টার্ভিউ এ এই ১২-১৫ এর অফার পেয়ে বিরক্ত ছিলাম। এইটাতে আর মেজাজ ঠিক রাখতে পারিনি। ক্ষোভের কিছু বহিপ্রকাশ ঘটে গিয়েছে।
আগে ভাবতাম দেশেই থেকে দেশের জন্য কিছু করব। কিন্তু একি ! কেউ কেউ বাপের টাকার দামি গাড়িতে ঘুরবে , কোন রকম প্রতিযোগিতায় না গিয়েই প্রাইভেট থেকে ডিগ্রী কিনবে , আর আমি পেটে ভাতহীন অবস্থায় ফ্যা ফ্যা করে ঘুরব আর দেশ সেবা করব তা তো হয়না। আগে পেটে ভাত , তারপর দেশ সেবা।
আর দেশ গরিব বলে সব জায়গায় যে অজুহাত দেখায় , তাহলে এই গাড়ি গুলি কোথায় থেকে এল এ দেশের রাস্তায় ?
অথবা এই গাড়ি গুলি ? বিভিন্ন শিল্পতিদের কাছে আসলে এত টাকা আছে যে তাদের অনেকেই পুরা বাংলাদেশকে কিনে নিতে পারবে। সেই টাকা হল দুর্নীতির টাকা , শ্রমিকের শ্রম শোষণের টাকা , মেধাবির মেধা শোষণের টাকা।
যারা ব্রেইন ড্রেইন নিয়ে চিল্লাচিল্লি করেন তাদের বলছি , আগে ব্রেইন এর কদর করতে শেখেন , তারপর ব্রেইন পাচার এম্নিতেই বন্ধ হয়ে যাবে। একটা মেধাবি ছেলে কম কষ্ট নিয়ে ঘর বাড়ি দেশ ছেড়ে বাইরে চলে যায় না। যদি দেশেই একটু ভাল থাকতে পারত তারা তাহলে বাইরে যেত না।
আগে বাইরে যাওয়ার কোন ইচ্চাই ছিল না , এখন অবস্থা দেখে বাইরে যাবার ব্যাপারে সিরিয়াস। আমার এক বন্ধুর ভাষায় , " যদি দেশের জন্য কিছু করতে চাও , তাহলে দেশ ছেড়ে বাইরে চলে যাও , দেশের জনসংখ্যা তাতে কমবে আর রেমিটেন্স বাড়বে!"
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।