ইসলাম আমাকে হয়ত অনেক অধিকার দিয়েছে কিন্তু ইসলাম অনুসারীরা আমার সেই অধিকার দেয়নি। আমি শিশু কাল থেকেই ক্লাশে খুব ভালো করতাম। এমন কি আমাদের স্কুল প্রতিষ্ঠা পাওয়ার থেকে আমি ছিলাম প্রথম ফার্সট ডিভিশন পাওয়া ছাত্রী। কিন্তু বাবা আমাকে ভালো কোন কলেজে দিলেন না। ঢাকায় হলে সীট পাওয়ার নিশ্চয়তা থাকা সত্বেও সেখানে যেতে দিলেন না, ইসলামে নাকি মেয়েদের অত দূরের শহরে একা থাকতে নেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সময়ের নামকরা সাবজেক্ট ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন্সে চান্স পেয়েও বাবা ভর্তি হতে দিলেন না, কারন একটাই। মেয়ে মানুষ।
আমার ভাইরা সুন্দর সুযোগ পেল, আমি ওগুলোর কিছুই পেলাম না। বাবা যখন হজে গেলেন, জমি গুলো ভাইবোন দের নামে লিখে দিলেন। আমি কয়েক কাঠা পেলাম, ভাইয়েরা কয়েক বিঘা করে পেল।
জানলাম আমার স্বামি ভালো জুতজাতে আছে, তাই আমার বাবার জমি খুব দরকার নাই।
বিয়ের সময় আমার পছন্দ মত যায়গায় যেতে পারলাম না। কারন আমার পছন্দ করা মিনমিনে মানুষ টা বাবা মার বাইরে যেতে পারেনি। তাদের যৌতুক দরকার ছিল, বাবা তা দিতে পারেন নি। বাবার বন্ধুর এক মিলিওনিয়র ছেলেকে বিয়ে করলাম, দেশ ছেড়ে এলাম।
আমার মতের কোন তোয়াক্কা করা হয়নি।
আমার মোহরানা ছিল দুই লাখ নিরানব্বই হাজার নয় শত নিরানব্ব্ই টাকা নিরানব্বই পয়সা। প্রথম রাতে আমার ধনাঢ্য স্বামী ঐটা মাফ করিয়ে নিলেন। আমার দাদী বলে দিয়েছিলেন, নাত জামাই মোহর মাফ চাইলে মাফ করে দিস। নইলে তার মনে কষ্ট লাগবে।
স্বামি মনে কষ্ট পেলে সারা রাত ধরে এক লাখ ফেরেশতা তোর জন্য বদ দোয়া করবে। অথচ আমি জানতাম আমাদের নবী বলেছেন, সেই পুরুষ উত্তম যে তার স্ত্রীর কাছে উত্তম।
স্বামী আমার উচ্চ শিকখিত। আমি পড়তে চাইতেই হাদিস কুরানের দোহায় আসলো, ছেলে মেয়ে লালন পালন করাই নাকি আমার একমাত্র কাজ হওয়া উচিৎ। সেই মফস্বল শহরের পাস কোর্সে বিএ এমএ দিয়ে কোমর ভাংগা সাপের মত হাটি।
এক ইসলামি সার্কেলে বসতাম। মেয়েদের এক রূমে রেখে বাইরে বসে একজন বুড়া হুজুর কিয়ামত ও কবর নিয়ে ওয়াজ করতেন। ওনাকে সামনে দেখা যাবেনা। অথচ আমার জানা মতে ঐ হুজুর অন্তত: সপ্তাহে ২০ জন বেপর্দা নারীর সাথে কথা বলেন। মানে শপিং করতে যেয়ে।
আর আমাদের হুজুর আপা কে দেখেছি অন্তত: ২০ জন যোয়ান যুবকের সাথে সেইন্সবারি বা আইস লান্ডে কথা বলতে। তিনি একদিন এক পুরুষের কাছে দর কষা কষিও করেছেন দেখলাম, এবং তা করতে যেয়ে রীতি মত হাসাহাসিও করলেন। অথচ ইসলামের প্রোগ্রামে পুরুষের সামনে বসা যাবেনা।
কত বার চাইতাম আমার পাশের মসজিদে জুমা আদায় করতে। আমাদের যেতে দেয়না।
কেন? এটা নাকি হারাম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।