জগতে সব মিথ্যা সব মায়াময়/ স্বপ্ন শুধু সত্য আর সত্য কিছু নয়। গাড়িতে বসা বস সাবেরে দূরে দেখিয়া প্রাতে,
গোলাম মির্জা ছুটিয়া গেল পুষ্প লইয়া হাতে,
গেট খুলিয়া আগাইয়া গিয়া সশব্দ এক সালাম
‘আহলান স্যার, সাহলান স্যার’, কহিল মির্জা গোলাম।
“স্যারের গেট আপ দেখিয়া আমার চক্ষু জুড়িয়া গেলো,
পারফিউমের সুগন্ধে এই ধড়ে প্রাণ ফিরে এল;
হেভিলি প্রেসড ক্লোদিং এন্ড সু পলিশ চকচকে,
রূপ গুন আর ব্যক্তিত্ব ঝরিয়া পড়িছে ত্বকে
আগা গোড়া ফিট, ক্লিন এন্ড নীট, স্যারকে সকালে পেলাম
ধন্য হইয়া গেলাম আমি”, কহিল মির্জা গোলাম।
বস সাব শুনি তেল খাইয়া তেলতেলে চোখে,
গর্বে ফুলিয়া ফাঁপিয়া ওঠা বারো হাত বুকে,
গোলাম মির্জা কত বড় পাপী, বস ভুলিয়া বসেন,
প্রশংসা শুনিয়া তিনি পুলকিত হাসি হাসেন,
ভাবেন মনেতে, “বউটা আমার মন্দ মোটেও নয়
গোলাম মির্জা, থ্যাংকসটা তোমার ভাবিকে দিতে হয়। “
চতুর মির্জা বস সাবের বুঝিয়া মনের গতি,
বলিতে থাকে, “ভাবি আমার বিশাল গুণবতী;
ভাবির সমতুল্য শুধু ভাবিই এই ভবে,
এক মানুষে এতটা গুন, দেখিয়াছে কে কবে
চাকরি সংসার রান্না বান্না, ফার্স্ট লেডি অব টাউন
হাইলি কালচার্ড ভাবি আমার কোন দিকেই বা ডাউন।
সংগীত আবৃতি নাটক কিংবা নৃত্যকলা
এত সব কিছু কি আর, লাগে মুখে বলা?”
বকধার্মিক মির্জার মুখে শুনিয়া গুনগান,
বস সাহেব এক নিমিষেই সত্যি ভুলিয়া যান;
খালি পেটে ছুঁচোর নাচন, হয় নাই নাস্তা
বউ বলেছে, “ধরো এবার নিজের রাস্তা,
বেশি খিদা পেলে তুমি রুটি বানিয়ে খাও,
পারলে আমার বেড টি টা টেবিলে রেখে যাও। “
শুকনা মুখে বস সাহেব বানাইয়া দিয়া চা,
দরজা খুলিয়া অফিস পানে বাড়ান তাহার পা;
অফিসে এসে ওয়াশ রুমে দেখিলেন আয়নায়
দুই জোড়ার দুই পাটি চটি, তাহার দুইটা পা’য়;
তাড়াহুড়ার লুপে বেল্টটা হয় নাই পরা,
গাল ভাঙ্গিয়া খুলিয়া পড়িছে, চেহারা জীর্ন জরা।
অফিস কক্ষে ফিরিয়া বস দেখেন মির্জা গোলাম
দুই হাতে দুই ফাইল লইয়া বিনয়ে ঠুকিয়া সেলাম
কহিল, “স্যার, অফিসের কাজ একলা আমিই করি
বাকি সবগুলো, শালগম মুলো, শুধু মিছে বাহাদুরি। “
বাড়াইয়া দিয়া ফাইলটা মির্জা করিল মেনশান,
“এইটা আমার ফিফটিন ডেইজ লিভ এপ্লিকেশান।
রিক্রিয়েশান লিভটা যদি না হয় মর্জি,
কাজে কামে থাকে কি আর ফুল এনার্জি?
শুধুমাত্র পঞ্চাশ দিন, বিকামস রিয়েলি টাফ
কাটালাম আমি ক্যাজুয়াল লিভ, ইজ ইট এনাফ?”
মির্জার কথা শুনিয়া বস হারিয়ে ফেলেন ভাষা,
আউলা ঝাউলা চোখে তিনি ভুলিয়া নিজের দিশা,
লিভ এপ্লিকেশান বিনা শব্দে করিয়া সাইন
ভাবেন, “হায়রে মির্জা গোলাম, ইউ উইল শাইন
বিশাল সার্কুলেশান ভেল্যু, আস্ত তেলের খনি
ওয়েল ডান গোলাম মির্জা, উঠিয়াছে জয়ধ্বনি”;
হরষে কিংবা বিষাদে বস হইয়া উন্মাদ
বলিয়া উঠেন, ‘সাবাস, গোলাম মির্জা জিন্দাবাদ’।
।
(বিঃ দ্রঃ ১। গোলাম মির্জা এবং বস দুইটি কাল্পনিক চরিত্র; এর সাথে কেউ অন্য কারো চরিত্রের মিল খোঁজার চেষ্টা করবেন না। কেউ পার্সোনালি নেবেন না, শুধুমাত্র নিছক আনন্দ দান ই কবিতাটির একমাত্র উদ্দেশ্য। )
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।