আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দ্রোহের কবি

আমি মেধায় সাধারণ,আইকিউ লজ্জ্বাজনক,বিশ্বাসে নাস্তিক,তর কে যুক্তিবাদী,সেবায় নিবেদিত,কর্মে ক্লান্তিহীন,সহ যোগীতায় প্রশস্থ হস্ত,ভালবাসায় অন্ধ,মনে প্রাণে উদার আকাশ ,নারী প্রণয়ে ভিতর বাহির উলট-পালট,আগাগোড়া সরল প্রাণ,বন্ধুত্বে শ্রদ্ধাশীল এবং স্বপ্নে স্বাপ্নিক। আমি কখনো ই কারো প্রিয় হতে পারিনি না ঘরে ,না বাইরে না বাইরে,না ভিতরে না ভিতরে ,না ইতরে ............ ........... অবশেষে আমি কখনো ই কারো প্রিয় হতে পারিনি তোষামুদে জনপ্রিয় হয় সবার,এই হলো পরিহাস তোষামোদ করিনি কখনোই আমি ,এই হলো ইতিহাস । উপরোক্ত কবিতাংশটি আখতারুজ্জ্বামান আজাদ এর ফেইসবুক বায়ো এর "ইতিহাস" কবিতা থেকে গৃহীত। কেন টানলাম এই উদাহরণ ? দেখুন,আমার লিখার শিরোনাম কে ইঙ্গিত করছে কিনা ? "দ্রোহ" তার পুজিবাট্টা,আমি বাটখারা দিয়ে সের দরে মাপতে বসিনি । আমার লিখার উদ্দ্যেশ্য তরুন কবি আ•আজাদ এর কবিতা গুলোকে আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ।

সমালোচনা বা মুল্যায়ন নয়। আ•আজাদ এর কবিতা যখন আমি পড়ি তখন সমান্তরালে মানস পটে ভেসে উঠে বাস্তবতার অম্লমধুর করুণ ছবি আর চিত্রায়ন করার পরিকৌশল । কি নিপুণ দক্ষ শব্দ শ্রমিকের মত নির্মান করে চলেছেন ব্যক্তিমনের অভ্যন্তরীণ ক্রিয়াকলাপ । চিন্তন ও অনুভুতির বিশ্বস্ত বিশ্লেষণ । আমি তত্ত্বীয় তকমায় যাবো না ।

শুধু বলবো দৈনন্দিন সাধারণ ও আটপৌরে পরিবেশের বিশ্বস্ত উপস্থাপনার নাম যদি হয় রিয়ালিজম তাহলে তাকে বাস্তববাদী কবি বলতে পারি । যদিও তার কবিতায় মিষ্টি রোমান্টিসিজম আছে । তার "দ্রোহ"ব্যক্তিমানুষ,সমাজ ,ইতিহাস,রাজনীতি ,ঐতিহ্য এইসব নিয়ে আর তার প্রকাশ প্রয়োজনীয় উপমা,প্রতিক ও সাংকেতিক (সাবালিকা ও দাদীজান) সহযোগে । আবার কখনো মনে হয় ক্রোধ বা আক্রোশ প্রকাশ হয়ে যাচ্ছে না তো ? জানি এখনো তা স্নিগ্ধ আছে তার ক্রোধ । আমি একটু প্রশ্রয়ের শীতল পাটি বিছায়ে কবিকে নেমতন্ন জানাই ,আসুন, "ঠোট কাটা "কবি বলুন "সাবালিকার সন্ধির কানা কোনচির খবর ,দাদীজানের বাতের ব্যাথায় গিরায় গিরায় মান্ডার তেলের খবর ।

আ•আজাদের রাজনৈতিক কবিতা গুলু মনে করিয়ে দেয় মানুষ রাজনৈতিক প্রাণী। কবির কাজ কি ?মানব-মানবীর ব্যক্তি সম্পর্ক ,ব্যক্তির টানাপোড়েন ,মানস জগতের স্বরুপ ,মানুষের সাথে সমাজের সম্পর্ক ,প্রকৃতি র সাথে সম্পর্ক ,সামাজিক সংকট,নানা মাধ্যমে তার প্রকাশ করা । তার চুম্বন বিষয়ক কবিতা গুলু ফ্রয়েডীয় ব্যাখ্যার দাবী রাখে । আমি যদিও দ্বন্ধে লটকে থাকি কোনটা ধরে নেব রোমান্টিসিজম না নিও রোমান্টিসিজম ? কিছুটা বোদলেয়ারীয় গন্ধ পাই । কিছু কবিতা য় খুজে পাই কবির কোমল কৈশোর ,কৈশোরের আবেগ আর তার স্মৃতির সিম্ফনি ।

আমি যদি কবির সাহিত্য কর্ম নন্দন তত্ত্বের আলোকে দেখতে চাই তাহলে কিভাবে পর্যালোচোনা করবো?কোন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখবো? আমি তার শিল্পীসত্তা,শিল্পবস্তু ,সমাজ,রস,রুপ,সুন্দর ও অসুন্দর ,নগ্ন ও উলঙ্গ এই গুলু ধরে কি তার শিল্পবিচার করবো? তার কবিতায় নেই অনিশ্চয়তা,অসপষ্ঠতা ,নেই দুর্বোধ্যতা আছে নানা রঙের ব্যঞ্জনা । তার কিছু কবিতা বারবার পড়ার আকুতি জাগায় মনে । অনেক কবিতা তার চাছাঁছোলা ,নির্মেদ ও নিরাভরন যদিও আমার (পাঠকের) ভাবতে কষ্ট হয়না কবিতার চিত্রকল্প,তার কবিতার জুয়েলারী (সাবালিকার কানের দুল) পাঠকের মনে যখন কবিতা পাঠে সৌন্দর্য ও আনন্দের গুঞ্জন উঠে আমি কি বলতে পারিনা কবি সার্থক ?অবশ্য। যুক্তাক্ষরময় পৃথিবীতে কবির সাথে যুক্ত হয়েছিলাম কবির লিখা একটি কবিতা পড়ে। বৃষ্টিতে প্রেমিক যুগল ফিসফিস করে কি কথা বলছে তার অসাধারন বর্ণনা ।

আখতারুজ্জ্বামান আজাদ এর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ সমুহ : ১। শুদ্ধ হবো ,হবে ?(২০১০) ২। পর্দা ছেড়ার স্পর্ধা (২০১১) ৩। সামরিক কবি,বেসামরিক প্রেমিক (২০১২) এবং স্টাটাস গুচ্ছ শুদ্র মুখে রুদ্র বচন (২০১২) সংগম জিন্দাবাদ ---দ্রোহ কবির জয় হোক এই বলে শেষ করব আবু হাসান শাহরিয়ার দিয়ে ,"পাঠকের বোধের দরোজায় কবি এক সামান্য ভিখিরি মাত্র "। .........জলকবি তাং ২৪/০৮/২০১২ ইং ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।