আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দ্রোহের গান

সত্যবাদী দেশকে আমরা সবাই নিজের মত করে ভালবাসি। কেও দেশকে ভালবেসে বুকের রক্ত দেয়, কেও রক্ত দেবার শপথ নেয়, কেও মাটি কামড়ে পরে থাকে, কেওবা আবার চলে যায় দূরে। মা’র বুক ছেড়ে অন্য মাটিতে দাত কামড়ে পরে থাকে। নাড়ির বন্ধনে যে টান, সেটা জেগে উঠে হটাত দেখা নিউজ ফ্ল্যাশে; লঞ্চ ডুবিতে শাতাধিক মৃত্যু! অথবা ভয়াবহ বন্যা, কিংবা সিডর! মুহূর্তের মধ্যে শেকড়ে টান পড়ে, আহা, আমার মায়ের সন্তানেরাই তো! স্বপ্ন দেখে, একদিন এমন একটা সময় আসবে, যখন অন্যেরা মাটি কামড়ে পরে থাকার জন্যে আসবে এই দেশে। অথবা ক্ষণিকের বিভ্রান্তিতে কেও সত্যি সত্যি ভেবে বসে, দেশ কে ভালবেসে রক্ত দেবার প্রতিজ্ঞায় সেও ছিল।

নিজের অজান্তেই মুষ্টিবদ্ধ হয় হাত। হটাত অস্ফুটে স্লোগান দিয়ে ওঠে; ‘ক’ তে কাদের মোল্লা, তুই রাজাকার! অতঃপর, চিরচেনা পরগাছা জীবনে ডুবে যাওয়া, হারিয়ে যাওয়া। উপলব্ধি হয়, মাটির টান আর দেশ প্রেমের সংযোগ ঘটাতে হলে যে আত্মত্যাগ করতে হবে, তার মুল্য গোনার মত নিঃস্বার্থ সে নয়। তবু মেনে নিতে কষ্ট হয়, পরগাছা জীবনের নিয়তও যুদ্ধের মাঝে থেকেও একবার ইচ্ছে হয়, শাহবাগের উন্মাদনায় মিশে যেতে। তাই কোন এক দুর্বল মুহূর্তে অতর্কিতে টিকেট কেটে চেপে বসে দেশে ফেরার বিমানে।

হত দরিদ্র মা আমার, শত ছিন্ন তার বেশ। দারিদ্র, দুর্বল প্রশাসন, চারদিকে অব্যবস্থাপনা। নিজের অজান্তেই ভুরুটা কুঁচকে উঠতে থাকে তার। দেশ প্রেমের সুবাস ঢাকা পরে রাস্তার পাশের পাহাড় সম ময়লার স্তূপের পাশে। বিমানবন্দর থেকে বসুন্ধরার বাসার পথটার বাকে বাকে দেশ প্রেম গুলো আঁটকে যেতে থাকে।

কি হবে এই দেশের, কেন এই অবস্থা! দেশের মানুষ গুলোর কোনও পরিবর্তন নেই কেন! পরিবর্তনের গন্ধ খুঁজতে জেট ল্যাগ কাটিয়ে দৌড়ে যাওয়া শাহবাগে। রক্তে আগুন ধরা স্লোগানে পরিবর্তনের সুরটা ক্ষণিকের জন্যে তাকে স্পর্শ করে। তারপর আবার দুঃসহ জ্যাম ঠেলে বাসায় ফেরা, ট্রাফিক সিগন্যালের প্রতি দেশের মানুষের চরম অবহেলা দেখতে দেখতে ভ্রুকুঞ্চিত মুখমণ্ডল। পরিবর্তনের স্পর্শ গুলো প্রতিটা সিগন্যালের বাকে বাকে আঁটকে যেতে থাকে। কিছু কি হওয়া সম্ভব এই দেশে! অতঃপর ফিরতি টিকেট কেনা, বুকে হতাশা, আশা গুলো কমতে থাকে।

যেটুকু বাকি থাকে তা হারিয়ে যায় ইমিগ্রেশনের লম্বা লাইনে; একজন কে ঠেলে আরেকজনের সামনে যাবার চেষ্টা দেখতে দেখতে। তারপর কোনও এক ট্রানজিটের হোটেল ফেরত বাসে দেখা হয় একদল শেকরহীন দেশী মানুষের সাথে। চরম ক্ষোভে মতপ্রকাশ; কিস্যু হবে না এই দেশের, সব আশা শেষ! অতঃপর ভুলে যাওয়া, হারিয়ে যাওয়া, মিথ্যে দেশপ্রেমের বিভ্রান্তিতে অবগাহন। আহা, আমার দেশটাকি এদের মত হতে পারতনা? হতে পারত এবং হবে; আমাদের দেশকে নিয়ে আমরা একদিন গর্ব করব! সময় লাগবে, কারণ আমরা আমরা কারও সম্পদ চুরি করে বড় হব না, আমরা ২০০ বছর কাওকে শোষণ করে বড় হব না! ২০০ বছরের গণতন্ত্রের সুফল সরূপ পাওয়া কোনও দেশের উন্নতি দেখে আমরা বিভ্রান্ত হই কেন! পরিবর্তনের গান শুরু হয়েছে, সাড়ে তিন বছরের কন্যা কিছু না বুঝেই বলছে রাজাকারের ফাঁসি চাই। এই প্রজন্ম দেশকে ভালবেসে বড় হবে, আমরা সেটা নিশ্চিত করব।

মিথ্যে হাঁ হুতাশ না করে এখনি সময় উপলব্ধির! আমার মায়ের এই ছিন্ন বেশ আমার অবহেলাতেই! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।