[ তরিকত কি ও কেন পীরের কাছে যাব? ( পর্ব-১ )
বর্তমানে চারিদিকে পবিত্র পীর শব্দটি নিয়ে বিভিন্ন রকমের কথাবার্তা শোনা যায় । ভণ্ডপীরের আস্তানা,ভণ্ডপীর উল্লেখিত বাক্যগুলোর বৃহৎ শিরোনাম এখন পত্র পত্রিকায়, ব্লগে ফেইসবুকে সহ বিভিন্ন গন মাধ্যমে নিয়মিত ছাপা হচ্ছে ও শোনা যাচ্ছে। তবে ে সংবাদগুলোকে একবারে তচ্ছ ভেবে আবার উডিয়েও দেয়া যায়না। তেমনি সংবাদগুলোকে বানোয়াটও বলা যায় না। কারন এখন এক শ্রেনীর এলম ও আ্মলবিহীন এমনকি ধর্মের সাথে সম্পর্কবিহীন ব্যক্তি নিজেদের পীর, বুজুর্গ বা ফকির সজিয়ে আনাচে-কানাচে আস্তানা গডে তোলে, সরলপ্রান মুসলমান ছাডাও বিধর্মীদের পর্যন্ত প্রতিনিয়ত ধোঁকা দিয়ে যাচ্ছে।
এই কমার্শিয়াল, ধোঁকাবাজ পীর, ফকিরদের প্রতি প্রকৃ্ত পীর ও অলিভক্তদের শত ধিক্কার। আর তাই সাধারন মানুষেরা ভেবে থাকেন যে পীরগিরি বলতেই প্রতারনা, ধোকাবাজি ছাডা আর কিছু না। সত্য-মিথ্যা,হক-না-হক্ক যাচাই না করে,প্রকৃ্ত পীর অলীগনের প্রতিও এই দোষারোপ ও অপবাদ প্রতিফলিত হতে দেখা যায়। এটা একদিকে যেমন অঙ্জ্ঞতাঁর পরিচায়ক, অপরদিকে গুনাহের কাজও বটে।
তবে এটাও বাস্তব যে, আজকাল অনেক পীর আলেম দেখা যায়, যারা প্রতিনিয়ত শরীয়ত বিরুধী কাজে লিপ্ত থাকেন।
হাদিস শরীফে আছে "তোমরা কিরুপ লোক থেকে তোমাদের দ্বীন (ইলম বা নছিহত) গ্রহণ করছো,তা ভালভাবে লক্ষ্য কর। "(মুসলিম,তিরমিজি)। ইচ্ছাক্বতভাবে বুক চিতিয়ে ছবিতোলা,পীর সাহেবের সামনে নারীদের আসা যাওয়া বা পীর সাহেব নারীদের সামনে যাওয়া এখন এক রকম ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। তারা মনে করেন হয়তো তারা পীর সাহেব বলে নারীদের দেখা দিতে পারবেন। ওই সমস্ত পীর সাহেবদের ভক্ত ও অনুসারীরা এই শরীয়ত বিরোধী কাজকে দলিল হিসাবে ব্যবহার করে।
তারা বলে বেডায়, আমাদের পীর সাহেব কি কিছু না জেনে, না বুঝে নারীদের দেখা দিচ্ছেন? অথচ পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক এরশাদ ক্রেছেন,"নারীগন পা এমন জোরে নিক্ষেপ করবেনা যাতে অন্য লোকেরা তাদের গোপন সৌন্দর্যের কথা জানতে পারে"।
হযরত উম্মে সালমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, একদা তিনি ও হযরত মায়মুনা (রাঃ) হুজুরপাক (সাঃ) এর নিকট ছিলেন। এমন সময় হযরত ইবনে উম্মে মাক্তুম (রাঃ) (অন্দ সাহাবী) তাঁর কাছে আস্লেন। তখন আল্লাহর রাছুল (সাঃ) বললেন,তোমরা পর্দা কর। আমি বললাম, হে রাছুল (সাঃ) তিনি কি অন্ধ নন? তিনি তো আমাদের দেখছেন না।
তখন রাছুল (সাঃ) বললেন, তোমরা কি অন্ধ যে তাঁকে দেখছনা?(মুসনদে আহমদ)। সুতারাং যে সমস্ত পীর সাহেব তাঁদের মহিলা মুরীদ বা বাইরের মহিলাদের দেখা দেন তারা সত্যের ওপর প্রতিস্টিত রয়েছেন কিনা সন্দেহ আছে।
কিতাবে লেখা আছে "হাছনাতুল আব্রার সাইয়্যাতুল মোকাররবিন" অথ্যাৎ-সাধারণ লোকের জন্য যা নেকের কাজ, খাস বা বিশেষ লোকদের (হাদিদের)জন্য তা গুনাহের কারন। যেমন হাদিস শরীফে এরশাদ হ্যেছে,"আমার পর তোমরা আর্ধেক দ্বীন শিক্ষ্যা লাভ করবে হযরত আয়েশা সিদ্দিকা(রাঃ) থেকে"। হুজুরপাক (সাঃ) এর পর যেহেতু হযরত আয়েশা সিদ্দিকা(রাঃ) হাদী হবেন, তাই তাঁকে হুজুরপাক (সাঃ) বলেন, হে আয়েশা (রাঃ)! মহিলাদের জন্য কয়েকটি জিনিষ জায়েজ হলেও তোমার জন্য সেগুলা জায়েজ নয়।
(১) রেশমী কাপড পরিধান করা,(২) লাল কাপড পরিধান করা, (৩) স্বর্ণের অলংকার ব্যবহার করা। কারন তুমি আমার পরে হাদী হবে......।
সুতারাং এই সংক্ষিপ্ত আলোচনা থেকে বুঝা গেল যে যারা পীর,হাদী,আলেম ইত্যাদী হবেন তাদেরকে হারাম ও নাজায়েজ কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। ক্ষেত্র বিশেষ মোবাহ কাজও ছেডে দিতে হবে। তাসাউফের কিতাব সমূহে উল্লেখ আছে,যিনি পীর বা অলিয়াল্লাহ তিনি ফরয,অয়াজিব,সুন্নাতে মোয়াক্কাদা ছেডে দেওয়া তো দুরের কথা বরং ইচ্ছাকৃতভাবে কোন সুন্নাতে যায়েদাহ বা মোস্তাহাব কাজও ছেডে দেবেনা।
কিন্তু বাস্তবে এখন এক শ্রেনীর পীর সাহেব ও আলেমকে এসব (ছবিতোলা,নারীদের দেখা দেওয়া) হারাম ও নাজায়েজ কাজ থেকেও বিরত থাকতে দেখা যাচ্ছে না। প্রকাশ্যে অন্য পীর আলেমদের সমালোচনা করার মতো শরীয়ত বিরোধী কার্যকলাপ ও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। হাদিস শরীফে এরশাদ হয়েছে "তোমরা কিরুপ লোক থেকে তোমাদের দ্বীন (ইলম বা নছিহত) গ্রহণ করছো,তা ভালভাবে লক্ষ কর। (মুসলিম,তিরমিজি)
(চলবে) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।