[ তরিকত হচ্ছে আল্লাহকে পাওয়ার একটি সহজ পথ। বিশেষ করে কাদেরীয়া, চিশতিয়া,নকশবন্দিয়া,মুজাদ্দেদীয়া প্রভ্বতি তরিকত বিশ্বমাঝে প্রচলিত,পরিচিত ও সমাদৃত। সকল তরিকতের ইমাম বা পীরগনের উদ্দেশ্য হলো তাদের নিজ নিজ মুরিদদের উপযুক্তভাবে গডেতুলে আল্লাহপাক রাব্বুলআলামীন ও হুজুরপাক(সঃ) কাছে সমর্পিত করা। সেজন্য তরিকতের ইমামগন রেয়াজত বা সাধনার মাধ্যমে অর্জিত বেলাইয়তের শক্তির বলে কিভাবে কোন উপায়ে সাধনা করলে আল্লাহপাক রাব্বুলআলামীন ও হুজুরপাক(সঃ) নৈকট্য লাভ করা সহজ হবে, তা আল্লাহপাক রাব্বুলআলামীন ও হুজুরপাক(সঃ) পক্ষ থেকে নির্দেশ বা এলহাম প্রাপ্ত হয়ে কিছু দোয়া,দরুদ,নফল নামাজ,জিকির-আজকার ইত্যাদি সংযুক্ত করে তরিকতের সংবিধান প্রণয়ন করেন এবং ওই ভাবেই মুরিদদের দোয়া,দরুদ,নফল নামাজ,জিকির-আজকার আদায় করার জন্য নির্দেশ দান করা হয়।
ভিন্ন ভিন্ন তরিকতের ভিন্ন ভিন্ন সংবিধান।
কাদেরীয়া, চিশতিয়া,নকশবন্দিয়া,মুজাদ্দেদীয়া ছাডাও আরও যতগুলো তরিকত রয়েছে সব তরিকতই হক্ক। সকল তরিকতের মাধ্যমে যথানিয়মে সাধনা করে গেলে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়।
কিন্তু এরপরও মাঝে মাঝে এমন কতগুলো দুর্ল্ভ রকমের তরিকতের খবর পাওয়া যায়, যেগুলির সাথে কোরআন, হাদিস ও বিজ্ঞানের সাথে ঘনিস্টতা থাকে। তেমনি এক তরিকত হচ্ছে কাদেরিয়া আলীয়া মুনিরীয়া তরিকত। যে তরিকতের অন্যতম ইমাম হযরত ছৈয়্যদ আব্দুল বারী (রহঃ) আল্লাহর দরবারে অনেক রেয়াজত বা সাধনার পর আল্লাহ তায়ালা ও তরিকতের মূল ইমামগনের পক্ষ থেকে এজাজত প্রাপ্ত হয়ে মুজাদ্দেদীয়া তরিকার "ইন্দিরাজুন নেহায়া ফিল্ বেদায়া" (অর্থাৎ-তরিকতের শেষ ছবককে প্রথমে নিয়া আসা) পদ্দতিকে কাদেরিয়া ও আরো অন্যান্য তরিকতে প্রচলন করেন।
"তাওয়াজ্জুহ্ ও ইন্দিরাজুন নেহায়া ফিল্ বেদায়া বিশিস্ট এই তরিকত বর্তমানে নিখুঁতভাবে সকল বৈশিস্টের আলোকে পরিচালিত হচ্ছে কাগতিয়ার মহান মোর্শেদ হযরত শায়খ গাউছুল আজম মাদ্দাজিলুহুল আলী সাহেব এর রাউজান থানার কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফে।
কাদেরিয়া আলীয়া মুনিরীয়া তরিকতের বৈশিস্ট্যগুলো আলোচনা করার পূর্বে, পীর গ্রহণ বা কেমন পীর গ্রহণ করতে হবে সেই প্রসঙ্গে দু"চার কথা বলা ্সমাচীন বলে মনে করি।
উপযুক্ত এবং হক্কানী পীর গ্রহণের নির্দেশ পবিত্র কোরআন,হাদিছ এমনকি আউলিয়ায়ে কেরামের বিভিন্ন বই পুস্তকের মাধ্যমেও সুস্পস্টভাবে প্রমানিত। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, "হে ইমানদারগন তোমরা আল্লাহপাকের নৈকট্য লাভ করার জন্য উসিলা অনুস্নদান কর। " (সুরা-মায়েদা) এই আয়াতের ব্যাখ্যায় তফসীরে রুহুল বয়ানে উল্লেখ আছে, উসিলা ব্যতীত আল্লাহপাকের নৈকট্য লাভ করা যায়না, আর উক্ত উসিলা হচ্ছেন হাকিকত বা তরিকতপন্হী আলেম বা পীরগন।
হাদিছ শরীফে আছে শায়খ(পীর সাহেব) তাঁর কওমের মধ্যে তদ্রুপ,যেরুপ নবী(সঃ) তাঁর উম্মতের মধ্যে। (দায়লমি,মকতুবাত শরীফ)।
হযরত ইমাম আবু হানীফা(রহঃ) বলেন "আমার জীবনে যদি দুটি বছর না হত, তবে নোমান(আবু হানীফা) ধ্বংস হয়ে যেতাম" অর্থাৎ, আমি আবু হানিফা যদি আমার পীর হযরত ইমাম বাকের ও ইমাম জাফর সাদিক(রাঃ) এর নিকট বাইয়াত না হতাম তবে (শয়তানি প্ররোচনায়) ধ্বংস বা বিভ্রান্ত হয়ে যেতাম। অনুরূপভাবে, হযরত আবদুল কাদের জিলানী(রাঃ) সির্রুল আসরার ও ফাতহুর রব্বানী, হযরত ইমাম গাজ্জালী (রহঃ) কিমিয়ায়ে সাদাত, হযরত মুজাদ্দিদে আল্ফেসানি (রহঃ) মকতুবাত শরীফ ও হযরত আহ্মদ কবীর রেফাইয়ী(রহঃ) আল বুনিয়ানুল মুশাইয়্যদ কিতাবে ক্ব্লব পরিশুদ্দ করার জন্য বা ইলমে তাসাউফ অর্জনের জন্য কামিল পীরের নিকট বাইয়াত হওয়ার কথা উল্লেখ করেছেন।
(চলবে) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।