আমি একজন ছাএ সন্ত্রাস বিরোধী (সংশোধনী) বিল ২০১৩ পাস হয় ১১ জুন ২০১৩ তারিখে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি সন্ত্রাস দমন আইন ২০০৯ পাস হয়। তবে আইনটি পাশের পর বলা হয়, এটি যুগোপযোগী নয়। পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ধরণও দ্রুত বদলে যেতে থাকে। এ কারনে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন প্রতিরোধে আন্তরাষ্ট্রীয় সংস্থা এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ (এ পি জি) এবং ফিন্যান্সিয়াল এ্যাকশন টাস্কফোর্সের (এফ এ টি এফ) মানদণ্ড অনুসরণ করতে সন্ত্রাস বিরোধী আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।
এর পর গত বছর এক দফা আইনটি সংশোধন করা হয়। কিন্তু তার পরও আরো কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আন্তর্জাতিক মহল থেকে অনুরোধ আসে। এসব বিষয় যুক্ত করতেই সরকার আইনটির সংশোধনের জন্য উদ্যোগ নেয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর বিলটি পাশের জন্য উত্থাপন করলে তা কণ্ঠ ভোটে পাশ হয়। বিরোধীদলের সদস্যরা অংশ গ্রহণ করায় বিলটি পাশ হতে ১ ঘণ্টারও বেশি সময় লাগে।
বিলটি পাশের আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, কোন সন্ত্রাসী ব্যক্তি বা সংগঠন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করলে সাক্ষ্য আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন, এ সংক্রান্ত তথ্যগুলো প্রমান হিসাবে আদালতে উপস্থাপন করা যাবে। বাংলাদেশ ছাড়া বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে চুক্তি নয় এমন আনুষ্ঠানিক আন্তর্জাতিক সনদ (কনভেনশন) এই প্রথম আইন হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এছাড়া আল-কায়েদার সম্পদ বাজেয়াপ্ত, অস্ত্র বিক্রি ও ভ্রমনে নিষেধাজ্ঞা এবং জঙ্গিবাদে অর্থায়নে নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের নেওয়া দুটি প্রস্তাবও আইনে পরিণত হল। তাই এটিকে আন্তর্জাতিক আইন হিসাবে অভিহিত করা যায়। এ আইনের ধারা ২ অনুসারে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে ম্যানুয়াল/ইলেক্ট্রনিক/ডিজিটাল কিংবা যে ভাবেই লেনদেন করা হোক না কেন, তা এ আইনের আওতায় আসবে।
অর্থের উৎস দেশ/বিদেশ যে কোন স্থান থেকে হতে পারে। এক্ষেত্রে নগত টাকা পাঠানোর বিষয়টি প্রমানিত হতে হবে তা নয়। চেক, মানি অর্ডার, পে অর্ডার, ডি ডি, টি টি, ক্রেডিট কার্ড এমনকি ই-মেইল বার্তায় প্রমান পাওয়া গেলে তা এই আইনের আওতায় অর্থ পাচারের অভিযোগে সাক্ষ্য হিসেবে আমলে নেয়া হবে। এছাড়া সন্দেহজনক যে কোন লেনদেন এ আইনের আওতায় আসবে।
এই আইনের ২১ ধারায় বলা হয়েছে কোন সন্ত্রাসী ব্যক্তি, সত্ত্বা বা সংগঠনের ফেসবুক, স্কাইপ, টুইটার বা ইন্টারনেটের যে কোন মাধ্যমের অপরাধ সংশ্লিষ্ট আলাপ-আলোচনা ও কথাবার্তা অথবা অপরাধ সংশ্লিষ্ট স্থির ও ভিডিও চিত্র অপরাধের আলামত হিসাবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা আদালতে উপস্থাপন করতে পারবে।
প্রস্তাবিত আইনের ৪০ ধারায় বলা হয়েছে, এই আইনের অধিনে কোন অপরাধ সংঘটিত হলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা তাৎক্ষনিক ভাবে সংশ্লিষ্ট জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে অবহিত করে মামলা করে তদন্ত করতে পারবে। এই আইনের ১৫ ধারায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক যে কোন ব্যাংক হিসাব যাচাই করে দেখতে পারবে। সন্ত্রাসী কাজের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে যদি কোন ব্যক্তিসত্ত্বা বা সংগঠন বা বিদেশি নাগরিক বাংলাদেশের অখণ্ডতা, সংহতি, জননিরাপত্তা বা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার জন্য জন সাধারনের কোন অংশের মধ্যে আতংক সৃষ্টির মাধ্যমে সরকার, ব্যক্তি বা সত্ত্বাকে কোন কাজ করতে বা কাজ করা থেকে বিরত রাখে তবে তা সন্ত্রাসী কাজ। এ উদ্দেশ্যে কোন ব্যক্তিকে হত্যা, গুরুতর আহত, আটক বা অপহরণ করলে তা সন্ত্রাসী কাজ সংঘটনের অপরাধ হিসাবে গণ্য হবে। ২০ ধারায় বলা হয়েছে, ১৮ ধারা অনুযায়ী কোন সংগঠন নিষিদ্ধ হলে, সরকার সেই সংগঠনের কার্যালয় বন্ধ করে দিতে পারবে।
জব্দ করতে পারবে তাদের ব্যাংক হিসাব। সংগঠনের সদস্যদের দেশ ত্যাগে বিধি নিষেধ আরোপ করতে পারবে। নিষিদ্ধ সংগঠনের পক্ষে বা সমর্থনে কোন বিবৃতি, প্রচারণা, প্রকাশনা বা বক্তৃতা দেয়া যাবে না। সম্পদ অবৈধভাবে অর্জিত প্রমানিত হলে সরকার তা বাজেয়াপ্ত করতে পারবে। যদি কোন ব্যক্তি বা বিদেশী নাগরিক এ ধারার অধীনে কোন অপরাধ করেন, তবে তিনি সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
দেশবাসী আশা করেন এই আইনের মাধ্যমে দেশের শান্তি শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।