করণিক: আখতার২৩৯
যে কোনো মহল্লায় মুষ্টিমেয় কয়েকজন সন্ত্রাসী তাদের কীর্তিকলাপ চালানোর সুযোগ নেয়। যদিও এরা নিজেদেরকে দলীয় কর্মী হিসেবে পরিচয় দেয়, এদের পিছনে কোনো রাজনৈতিক দলীয় সমর্থন নেই, --এদের ওপর কোনো দলীয় নিয়ন্ত্রণ নেই। এমনকি প্রচলিত আইন-শৃঙ্খলা-রক্ষাকারী বাহিনী দিয়েও এদেরকে নিয়ন্ত্রণে আনা এজন্যেই সম্ভব নয় যে, এদেরকে জীবিতাবস্থায় গ্রেফতার করলে কিছু প্রভাবশালী ( সমাজে মান্যগণ্য হিসেবে প্রকাশিত ) তাদের জামিনদার হয়ে তাদেরকে অক্ষত অবস্থায় বের করে আনে। ঐ প্রভাবশালীদেরকে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের অস্তিত্ব হারানোর ভয়ে সমঝে চলতে বাধ্য হয়, যে-কারণে নিতান্ত নিরুপায় হয়েই 'ক্রসফায়ার'-এর নির্বিচার হত্যাকাণ্ডকেও তারা আপাত অনিবার্য সমাধান হিসেবে গণ্য করতে বাধ্য হচ্ছে।
কোনো এলাকায় সকলেই সন্ত্রাসী হলে ঐ এলাকায় যে কোনো সন্ত্রাসি-কর্মকাণ্ড ঘটবে না, তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।
পরিবেশ সুযোগ দেয় জন্যেই যেকোনো মহল্লায় হাতেগোণা কয়েকটা সন্ত্রাসী তাদের সন্ত্রাসি-কর্মকাণ্ড চালায়। সন্ত্রাসীদেরও প্রাণের মায়া আছে, --এরা ভয় পায় কেবল গণপিটুনিকে, কেননা, কেউ গণরোষের শিকার হলে তার জন্যে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে 'সমাজে মান্যগণ্য হিসেবে প্রকাশিত' কেউ উদ্ধারকারী হিসেবে দাঁড়িয়ে নিজেকে উলঙ্গ হতে দিতে চায় না। সমাজকে সকলেই ভয় পায়।
বিভিন্ন মতাদর্শের লোকেরা কেউ কারো মতো নয়, তবে তারা সকলে মিলে সমঝোতার শৃঙ্খলকে মেনে নেয়ার মাধ্যমেই শান্তিপূর্ণ সহ-অবস্থান করে, --যাকে আমরা সমাজবদ্ধতা হিসেবে জানি। আমি যদি সমাজকে মানতে না-চাই তো, আমার জন্যে অপেক্ষমান গোঁয়ার, একগুঁয়ে, সমাজবহির্ভূত, একঘরে, --ইত্যাদি ইত্যাদি এমন সব পদবিগুলো; --যেগুলোকে কোনো সুস্থ্ মানসিকতা নিয়ে ধারণ করা যায় না, তবে আমি যদি উন্মাদ হই তো সেটা তখন ভিন্ন প্রসঙ্গ, --যখন সমাজ তার দায়িত্ব হিসেবে আমাকে ধরে-বেঁধে উন্মাদাশ্রমে পাঠাতে অথবা একঘরে করে রাখতে বাধ্য হয়।
প্রাণিকুলে দুর্বলতায় শ্রেষ্ঠতম জন্যেই কোনো মানবাকৃতির প্রাণী কখনো একা একা নিজেকে প্রকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করতে পারে না, তাই তাকে বাধ্য হয়ে সমাজের বন্ধনকে মেনে নিতেই হয়। তারাই সমাজের শত্রু , --যারা ভিন্ন মতাদর্শধারীকে শ্রদ্ধা না-করে বরং নিজেদের মতাদর্শের বিচারে অন্যদেরকে ভিত্তিহীন বলে বলে নিজেদেরকে শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার সাজতে চেয়ে সামাজিক বন্ধনকে দুর্বল করে তোলে।
সন্ত্রাস কোনো বিশেষ দলের বা কোনো বিশেষ মতাদর্শধারীর সমস্যা নয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতোই সন্ত্রাস একটি সার্বজনীন আপদ, যা কি-না সামাজিক ব্যাধি হিসিবে চিহ্নিত। কেবল সমাজবদ্ধ মানবসন্তানেরা সমন্বিতভাবে চাইলেই সন্ত্রাসের মতো একটা সামাজিক ব্যাধিকে দমানো সম্ভব। যথারীতি --এরই সূত্র ধরে ধরে আমি চাই, --যে-কেউ নিত্য সাক্ষাতে কুশল বিনিময়ের পরপরই যেন আমাকে জিজ্ঞেস করে, '--ক্যামোন আছে তোমার প্রতিবেশী?'..
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।