আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাচ্চাদের বিবর্তন

হেঁটে হেঁটে যতদূর চোখ যায় সময়কাল ১৯৯৬। তখন আমি ক্লাস ফাইভে পড়ি। কৈশোরের বসন্ত আস্তে আস্তে আমাকে ছুঁতে আরম্ভ করেছে। নাকের নিচে হালকা গোঁফের রেখা ফুটে উঠতে শুরু করেছে। কেন জানি সুন্দরী মেয়েদের দেখতে ভাল লাগাও আমার মাঝে আরম্ভ হয়ে গেছে।

ইংরেজি সিনেমার পোস্টারের দিকে কেন যে তাকিয়ে থাকি তা নিজেই বুঝি না। লুকিয়ে লুকিয়ে তৎকালীন ইত্তেফাকে প্রকাশিত বাংলা ছবির পোস্টারের বৃষ্টি ভেজা নায়িকার ছবি আনমনে দেখি। কিন্তু বুঝতে পারতাম না এগুলো দেখতে আমার কেন অন্যরকম লাগে! এরই মধ্যে আমাদের বাসায় একদিন ভিসিআর কেনা হল। ধুমসে কলকাতার বাংলা আর হিন্দি মুভি দেখা শুরু হয়ে গেল। কিন্তু ছোট বলে আমি একটি ছবির সব কিছু দেখতে পেতাম না।

যখনই বৃষ্টি ভেজা গান শুরু হত কিংবা ভিলেনের আক্রমণে নায়িকা ‘বাঁচাও বাঁচাও’ চিৎকার করা শুরু করে দিত তখনই বড় কেউ একজন অতি বেরসিকের মত ভিসিআর পস (pause) করে দিত আর আমার আকাঙ্ক্ষিত অংশটুকু টেনে দিত। আমি মনে মনে নিজেকে বলতাম, আহারে আহারে ... সময়কাল ২০১২। বাসায় টিভি চলছে। দর্শক আমি আর আমার তিন বছরের পিচ্চি ভাই জিনান। স্বভাবতই সাথে পিচ্চি থাকলে বাধ্যতামূলকভাবে কার্টুন নেটওয়ার্ক দেখতে হয়।

আমরা যে কার্টুনটা দেখছিলাম তার নাম ছিল সম্ভবত ড্যাঞ্চিং প্রিন্সেস। হঠাৎ দেখা গেল একজন প্রিন্স তার প্রিন্সেসকে লিপ কিস করছে। আমি চ্যানেল পরিবর্তন করার উদ্দেশে তাড়াতাড়ি রিমোট ধরতে চেষ্টা করতেই আমার পিচ্চি ভাই হালুম করে আমার হাতে কামড় দিয়ে রিমোট নিজের কব্জাতে নিয়ে নিল। আমি রেগে বললাম, এই রিমোট দে। জানিস টিভির তোর প্রিন্স আর প্রিন্সেস এসব কি করে? ওই পিচ্চি আমাকে একদম পাত্তা না দিয়ে একটা বিভ্রান্তিকর হাসি দিয়ে বলল, জানি তুমা তুমা (চুমা চুমা) করে।

আমি আবার মনে মনে নিজেকে বললাম, আহারে আহারে ... ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.