আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শহুরে বাচ্চাদের স্কুলের টাইমিং, বাচ্চাদের বিভিষীকাময় দিন শুরু।

আগে একটা সময় ছিলো, যখন স্কুল ছিলো ১ শিফটে। সকাল ১০টা থেকে ক্লাশ শুরু হতো। ছোটদের ১টা-২টা বাজে শেষ। বড়দের টিফিনের পর আবার ক্লাশ শুরু হয়ে ৪টা কিংবা ৫ টা বাজে ছুটি হতো। নিয়মটা ভালোই ছিলো।

বাচ্ছারা ভালোভাবে ঘুম থেকে উঠে খাওয়া দাওয়া করতো, অনেক সময় হালকা নাস্তা, স্কুলে যাওয়ার আগে ভাত খেতো আবার। তারপর হয়ত ধর্মীয় শিক্ষা, রেওয়াজ কিংবা সকালে বেলা মনযোগ দিয়ে ২-১ ঘন্টা পড়তে পারতো। তারপর গোসল করে স্কুল গমন, আগে তো এমনটাই ছিলো। এখনো ঢাকার বাইরে অনেক জেলা শহরে কিংবা গ্রামে এমন নিয়ম চালু আছে। সারাদিন হই হুল্লোড় করে এসে সন্ধ্যা কিংবা রাতে ৪ ঘন্টায় যেটা পড়া যায়, তার থেকেও ভালো পড়া যায় সকাল বেলা।

কারণ, রাতে ভালো ঘুম হওয়ার পর শরীর মন ২টাই ঝরঝরে থাকে, পড়ালেখায় আগ্রহটা ভালো পাওয়া যায়। কিন্তু এখন ঢাকা শহরে যা দেখি, আমার আক্কেল গুড়ুম হয়ে যায়। সকাল ৭টা থেকেই মর্নিং স্কুল। অত্যাধিক জনসংখ্যার চাপে অনেক স্কুলই এখন ২ শিফটে পড়ায়। বাচ্চাকে নিয়ে অভিভাবক বাসা থেকে সাড়ে ৬টায় বের হচ্ছে।

একটা বাচ্চা পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে পারছে না। ঘুম ঘুম চোখে তারা ক্লাশ করছে। এমন না যে স্কুল ছুটির পর তারা আবার ঘুমাবে। কারণ এর পর তো আছে কোচিং, কম্পুটার ইত্যাদি। এই স্কুলের টাইমিংটা আমার মোটেও পছন্দ নয়।

কেন একটা বাচ্চাকে ঘুম পূর্ণ হওয়ার আগে স্কুলে যেতে হবে? আমার মনে হয়, খুব কম বাচ্চাই ঘুম বাদ দিয়ে আগ্রহ নিয়ে স্কুলে যাবে। স্কুল নিয়ে একটা বিভিষীকা তাদের ছোট বেলা থেকেই মনে হয় মনে ঢুকে যায়। বেশিরভাগ বাচ্চাকেই দেখি মা বাবা কোলে তুলে নিয়ে জোর করে স্কুলে দিয়ে আসছে। তাদের কেউ সকালে বাসায় কিছু খায় না। ঘুম থেকে তুলেই কোনো মতে মুখ ধুইয়েই স্কুলের ড্রেস পড়ানো।

গোসলের কোনো নাম গন্ধ নাই। কিছু বাচ্চার মা খালি টিফিন বক্স নিয়ে বাসা থেকে বের হন, তারপর কোনো বেকারী থেকে চিকেন রোল, বার্গার, কেক, ইসটি বিসটি, ডেলিসিয়া, চিপস , জুস, কোলা, চকলেট এইসব কিনে দিচ্ছেন বাচ্চাদের। এই সব খেয়েই বড় হচ্ছে এখনকার বাচ্চারা। এই খাওয়া গুলো একটা বাচ্চার সকালের খাওয়া হিসাবে মোটেও স্বাস্হ্য সম্মত নয়। মায়েরা বাচ্চাদের কে বাসায় তৈরী করা খাবার খাওয়াতে পারেন না কেন? মায়েরা বলে, বাচ্চারা বাইরের খাওয়া খেতে চায়।

কিন্তু অভ্যাস তো করিয়েছেন আপনি নিজেই। বাচ্চাকে যদি প্রথম থেকেই বাসায় তৈরী খাবার খাওয়াতেন, তাহলে এই সমস্যা হতো না। সকালে যদি বেশি কিছু খেতে না চায়, তবে কি খাওয়াতে পারেন? সুজি, সেমাই, রুটি, কলা, দুধ, ডিম, নুডলস, ডালের খিচুরী, সবজী খিচুরী,পায়েস, সবচেয়ে ভালো হয়, যদি পারেন পেট ভরে গরম ভাত খাওয়ান। দরকার হলে আগে দিন তৈরী করে ফ্রীজে রেখে দিবেন। সকল বাচ্চার জন্য সমবেদনা রইলো।

 ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।