আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিশ্ব আদিবাসী দিবস : অজস্র বঞ্চনা , শোষন , নিপীড়নের দেশ বাংলাদেশে এক টুকরো সার্কাস

আমি এমন এক সাধারন মানুষ হতে চাই যে অসাধারন হবার পেছনে দৌঁড়ায়না এবং বিনা প্রশ্নে কিছু গ্রহন করেনা । “Patriotism is when love of your own people comes first; nationalism, when hate for people other than your own comes first.” – Charles De Gaulle বরাবরের মত এবারো সারাবিশ্বে ৯ আগষ্ট পালিত হতে যাচ্ছে “বিশ্ব আদিবাসী দিবস”। যথারীতি নানাবিধ রঙ্গে ভরা এই বঙ্গদেশেও দিবসটি তথাকথিতভাবে ‘পালিত’ হবে। কিন্তু মনে করার কোন কারন নেই উপরিউক্ত কোটেশনটির মর্ম বুঝতে এই দেশের হিপোক্রেট শাসকশ্রেনী এবং তথাকথিত ‘দেশপ্রেমিক’ বাঙ্গালি সক্ষম, তারা কেউই সক্ষম নয়। যেই দেশের শিক্ষিত মধ্যবিত্ত ফুটবলের বাংলা করে ‘চর্মনির্মিত গোলাকার বস্তুবিশেষ পদাঘাতে যা স্থানান্তরিত হয়’ এবং প্রবল জাত্যাভিমানে বলীয়ান হয়ে ক্রিকেট খেলায় বিপক্ষ দলের খেলোয়াড় সেঞ্চুরী করলে কিংবা ৫ উইকেট পেলে কদাচিত স্ট্যান্ডিং ওভেশন জানায় তাদের কাছে কোটেশনটির মর্ম অনুধাবন করার প্রত্যাশা করা আর মাইক টাইসনের কাছে গান্ধীবাদী আদর্শ ফেরী করে বেড়ানো একই কথা, উভয়েই অর্থহীন।

তারচেয়ে দেখা যাক ‘বিশ্ব আদিবাসী দিবস’ এদেশের শাসকশ্রেনী এবং জনগণের কাছে আদপেই কোন তাৎপর্য্য বহন করে কিনা। ১. বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের জন্মলগ্নের আগে থেকেই আদিবাসীদের উপর শোষন, নিপীড়ন সর্বোপরি তাদের নানাবিধ অধিকার হতে বঞ্চিত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। ১৯৬৪ সালে ‘Chittagong Hill Tracts Regulation - 1890’-এ পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন পাহাড়ি জাতিসত্তাভুক্ত জনগণের জন্য যে সব অধিকার সংরক্ষিত ছিলো এবং ঐ অঞ্চলে বাইরের লোকদের প্রবেশ ও বসতি স্থাপনের উপর যে বিধি নিষেধ ছিলো তার সব উঠিয়ে নেওয়া হয়। তখন থেকেই আদিবাসীদের উপর অত্যাচার, নিপীড়নের যেই যাত্রা শুরু হয় তা পরবর্তীতে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির জন্মের পরেও ধারাবাহিক থাকে। ১৯৭২ সালের ২৪ এপ্রিল মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা বাংলাদেশের খসড়া সংবিধান প্রণেতাদের কাছে বেশ কিছু দাবী বিস্তৃত আকারে প্রকাশ করেন।

সেগুলোর মধ্যে ছিলো, ১ ) পার্বত্য চট্টগ্রামের স্বায়ত্তশাসন, নিজস্ব আইন পরিষদ, ২) সেখানকার জনগণের অধিকার সংরক্ষনের জন্য ১৯০০ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধির ন্যায় অনুরুপ সংবিধি ব্যবস্থা, ৩) কোন প্রকারের শাসনতান্ত্রিক সংশোধন বা পরিবর্তন সেখানে হবেনা এরুপ সংবিধি ব্যবস্থা, ৪) পার্বত্য আদিবাসী রাজাদের দপ্তর সংরক্ষণের ব্যবস্থা। বলাই বাহূল্য তৎকালীন রাষ্ট্রনায়ক শেখ মুজিবর রহমান সেগুলোর একটিও মানেন নি। বরং তিনি মানবেন্দ্র লারমাকে বলেন যে “তোরা সবাই বাঙ্গালি হইয়া যা। ” সেই প্রস্তাবের জবাবে মানবেন্দ্র লারমা বলেছিলেন “আমি চাকমা। আমি বাঙ্গালি নই।

আমি বাংলাদেশের একজন নাগরিক, বাংলাদেশী। আপনারাও বাংলাদেশী, তবে জাতি হিসাবে আপনারা বাঙ্গালি। আদিবাসীরা কখনো বাঙ্গালি হতে পারেনা। ” এবং তার পরবর্তীতে বাংলাদেশের প্রতিটি সরকারই ধারাবাহিকভাবে আদিবাসীদের প্রতি অত্যাচার, শোষণ, নিপীড়নই চালিয়ে এসেছে। কাজটি তারা প্রধানত করেছে দুইভাবে।

প্রথমতঃ সমগ্র এলাকাতে অর্থাৎ, পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি জেলাঃ রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়িতে সামরিক উপস্থিতি ব্যাপক ও জোরদার করে সেখানে নানা প্রকারে শক্তি প্রয়োগের ব্যবস্থা করা। দ্বিতীয়তঃ সমতল ভূমি থেকে বাঙ্গালিদেরকে নিয়ে গিয়ে সেখানে তাদের বসতি স্থাপন, তাদেরকে জমি বরাদ্দ করা, তাদের চাকুরীর ব্যবস্থা করা ইত্যাদি। পাহাড়িরা বরাবরই বলে এসেছে তারা তাদের নিজস্ব জাতিসত্তা নিয়েই আত্মনিয়ন্ত্রনের অধিকার চায়। তাদের ঐতিহ্যগত নিজস্ব সংস্কৃতি, নিজস্ব আচার, নিজস্ব ভাষাভাষির সংস্কৃতিতে বসবাস করতে চায়। তাদের চিরায়ত ভূমি ব্যবস্থা বহাল রাখতে চায়, যার মানেই হচ্ছে তারা সেখানে বাঙ্গালি সেটেলারদের স্বাগত জানাবেনা।

শাসকশ্রেনীর সাথে তাদের মূল দ্বন্দ্ব এটাই। আর শাসকশ্রেনী সেই দ্বন্দ্ব মোকাবেলা করার জন্য অত্যন্ত সুচারুভাবে সমতলের হতদরিদ্র চাষাভুষাদের টাকা - পয়সা, জমি - জিরেতের লোভ দেখিয়ে পাহাড়ে পাঠিয়ে দিয়েছে পাহাড়ি - বাঙ্গালি সমতা আনবার জন্য। “Divide and Rule” গেমের কি চমৎকার, অনবদ্য প্রদর্শন! এসবের মধ্যে বসবাস করেই আমরা গদগদ হয়ে ‘দেশপ্রেমের’ জয়গান গাই। আর বছরের পর বছর ধরে আদিবাসীরা রয়ে যায় নিপীড়িত, শোষিত, নির্যাতিত। ২. প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারী এলে বাংলাদেশে নানাবিধ ছেনালী, নির্লজ্জ হিপোক্রেসি দেখতে পাওয়া যায়।

মোবাইল কোম্পানীগুলো বাংলায় ‘গর্জে উঠার আহবান জানিয়ে’ বার্তা পাঠাচ্ছে। কর্পোরেট কোম্পানীর স্পন্সরে ‘দুনিয়া কাঁপানো ৩০ মিনিট’ নামক প্রহসনকেও এই অসভ্য, সার্টিফিকেটধারী মুর্খ জাতি সাদরে স্বাগতম জানিয়েছে। সামরিক শাসনের অপার মহিমায় ভাষা শহীদগণ ‘ভাষা সৈনিকে’ পরিণত হয়েছেন, প্রভাতফেরীর পরিবর্তে রাত ১২ টায় শহীদ মিনারে একগুচ্ছ চাটুকার দ্বারা পরিবেষ্টিত হয়ে হোমরাচোমরাদের পুষ্পস্তবক অর্পণ করাও ফ্যাশন। টেলিভিশন হোক কিংবা চৌরাস্তা চোঙ্গা দেখলেই তা দিয়ে দেদারসে মিথ্যা কথা বলতেও আমাদের এতটুকুও বাঁধেনা। নানাবিধ রঙ - বেরঙের মহোৎসব, বেলেল্লাপনার ভেতরে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারদের স্মৃতি টিমটিম করে হয়তো কারো কারো মনে জ্বলে, কিন্তু সুদেষ্ণা সিংহরা সম্পূর্ণই অচ্ছ্যুত।

কে এই সুদেষ্ণা সিংহ? আজ পর্যন্ত পৃথিবীর ইতিহাসে কেবল দুটি ভাষার জন্যই জনগণকে লড়াই করতে হয়েছে, বুকের রক্ত ঝরাতে হয়েছে - ভাষা দুটি হলো বাংলা এবং বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরি। মাতৃভাষার সাংবিধানিক স্বীকৃতি ও মাতৃভাষার শিক্ষার দাবীতে ভারতের আসাম ও ত্রিপুরা রাজ্যে গত শতকের পঞ্চাশের দশক থেকে প্রায় অর্ধশত বছর ধরে সংঘটিত হয়েছে এক রক্তক্ষয়ী আন্দোলন। সেই আন্দোলনের চরম পর্যায়ে পুলিশের গুলিতে আত্মাহুতি দেওয়া মানুষটির নাম ভাষা সহীদ সুদেষ্ণা সিংহ। ১৯৯৬ সালে মার্চ মাসে আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ভাষা বিপ্লবীরা বরাক উপত্যকায় ৫০১ ঘন্টার রেল অবরোধ কর্মসূচী ঘোষণা করেন। সেই কর্মসূচীতে যোগ দেবার আগে সুদেষ্ণা সিংহ সহচরী প্রমোদিনীকে দ্ব্যর্থহীন কন্ঠে জানিয়ে দিয়ে যান “মোর রকতলো অইলেউ মি আজি ইমারঠারহান আনতৌগাগো চেইস!” (আমার রক্ত দিয়ে হলেও আজ আমি আমার মাতৃভাষাকে কেড়ে আনবো, দেখিস) সেদিন বিনা উস্কানীতে রাষ্ট্রের পুলিশ গুলিবর্ষণ শুরু করলে ভাষা শহীদ সুদেষ্ণা সিংহ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

এই দেশের হিপোক্রেট শাসকশ্রেনীর এবং হিপোক্রেট জনগণের মাতৃভাষা আন্দোলন নিয়ে উৎসব, আমেজের কোন কমতি নেই কিন্তু তাদের সবার ডাইরীতেই সুদেষ্ণা সিংহরা ব্রাত্য, অস্পৃশ্য। উর্দুর বিরুদ্ধে ভাষা আন্দোলন করেছিলেন যারা নিজেদের কৃতিত্ব জাহির করেন তারাই যখন পাহাড়ি জনগণকে অথবা উর্দুভাষী জনগণকে নিজেদের ভাষা পরিত্যাগ করে বাঙ্গালী হয়ে বাংলা চর্চার নির্দেশ দেন, তখন ভাষাগত ফ্যাসিজমের বিষয়টি অত্যন্ত স্পষ্ট ও প্রকট হয়েই উন্মোচিত হয়। ‘জাতীয়তাবাদের ’ মধ্যেই ফ্যাসিজমের বীজ সুপ্ত থাকে যুগে যুগেই যার প্রমান আমরা বহুবার দেখে এসেছি। বঙ্গদেশে তারই ধারাবাহিকতা চলছে বিগত ৪০ বছর ধরেই। মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বেঁচে থাকলে বাংলাদেশকে দেখলে অট্টহাসি দিতেন তাতে সন্দেহ নেই, নিজের উত্তরসরীদের সরব উপস্থিতি সর্বত্রই যে বিরাজ করছে!! ৩. ‘মার্ক্সবাদ’ বরাবরই নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর মুক্তির মূলমন্ত্র হিসাবে নিজেকে প্রমান করে এসেছে এবং আসছে।

জাতিপ্রশ্নের ক্ষেত্রেও মার্ক্সবাদ সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা, বিশ্লেষন নিয়েই হাজির হয়, যা জাতির সংজ্ঞা থেকেই আমরা জানতে পারি- “জাতি হচ্ছে একটি সাধারণ ভাষা, সাধারণ ভূখণ্ড, সাধারণ অর্থনৈতিক জীবন, আর একটি সাধারণ সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে প্রকাশিত মানসিক গড়নের ভিত্তিতে গঠিত, ঐতিহাসিকভাবে বিকশিত জনগণের স্থায়ী জনসমষ্টি। ” এবার দেখা যাক ক্ষুদ্র জাতিসত্তার টিকে থাকা বা বেঁচে থাকার প্রশ্নটির ব্যাখ্যা মার্ক্সবাদ কিভাবে দেয়: জাতির আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার প্রসঙ্গে স্ট্যালিনের মতে - “জাতির ইচ্ছামত জীবন বিন্যাসের অধিকার। অর্থাৎ, সে জাতির স্বায়ত্তশাসনের ভিত্তিতে জীবন বিন্যাসের অধিকার যেমন রয়েছে, তেমনি সম্পূর্ণ পৃথক হবার অধিকারও আছে। মার্ক্সবাদী-লেনিনবাদীদের কাছে সকল জাতিই সার্বভৌম এবং সকল জাতিই সমান অধিকার সম্পন্ন। কমিউনিস্টরা সব দেশেই জাতির আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার ঘোষণা করে।

আর আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার কথাটির অর্থ হলো, কেবল জাতির নিজের হাতেই তার ভাগ্য নিয়ন্ত্রণের অধিকার থাকবে, জাতির জীবনে জবরদস্তি করার অধিকার কারও নেই। ” - (জাতি সমস্যা ও স্ট্যালিনের চিন্তা) এখন প্রশ্ন উঠতে পারে তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার থাকতেই পারে, কিন্তু স্বায়ত্তশাসনের অধিকার কেন থাকবে? তার জবাবে: “স্বায়ত্তশাসনের ধারায় জাতি মাত্ররই জীবন বিন্যাসের অধিকার রয়েছে, এমনকি পৃথক হবারও অধিকার আছে। এই ক্ষেত্রে মার্ক্সবাদীরা দেখবে সেই স্বায়ত্তশাসনের দাবী সেই বিশেষ জাতির বেশীরভাগ লোক অর্থাৎ মেহনতি মানুষের পক্ষে সুবিধাজনক হবে কিনা। ” - (জাতি সমস্যা ও স্ট্যালিনের চিন্তা) আমাদের তথাকথিত রাষ্ট্রবিশ্লেষকদের ভ্রান্ত ধারণা মতে পাহাড়িরা বহির্শত্রুর সাথে আঁতাত করে দেশভাঙ্গার ষড়যন্ত্র করছে। আমরা লেনিনের কাছে তার ব্যাখ্যা পাই এভাবে: “আমরা যদি হাজার ঢঙে ঘোষণা ও পুনরাবৃত্তি করতে থাকি যে, সমস্ত জাতীয় অত্যাচারের আমরা ‘বিরোধী’ আর অন্যদিকে যদি নিপীড়কের বিরুদ্ধে এক নিপীড়িত জাতির কোন শ্রেণীর অতিগতিশীল ও আলোকপ্রাপ্ত অংশের বীরত্বপূর্ণ বিদ্রোহকে ‘ষড়যন্ত্র’ আখ্যা দেই, তাহলে আমরা কাউটস্কীপন্থীদের মতো সেই একই নির্বোধ স্তরে নেমে যাবো।

” (জাতীয় সমস্যায় সমালোচনামূলক মন্তব্য, জাতিসমূহের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার) লেনিন এই তথাকথিত মার্ক্সবাদীদের (কার্যত রাষ্ট্রবাদীদের) বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত টেনেছেন এভাবে - “জাতি ও ভাষাসমূহের সমানাধীকার যে স্বীকার করেনা এবং স্বপক্ষে দাঁড়ায়না, সর্বপ্রকার জাতীয় নিপীড়ন ও অসাম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেনা, সে মার্ক্সবাদী নয়, এমনকি গণতন্ত্রীও নয়। ” আমরা কমিউনিস্ট পার্টির ইশতেহারে দেখতে পাই- “ব্যক্তির উপর ব্যক্তির শোষণ যে অনুপাতে শেষ করা হয়, এক জাতির উপর অন্য জাতির শোষণও সেই অনুপাতে শেষ করা হবে। জাতির ভিতর বিভিন্ন শ্রেণীর দ্বন্দ্ব যে অনুপাতে লুপ্ত হবে, সেই অনুপাতে এক জাতির প্রতি অন্য জাতির শত্রুতাও শেষ হবে। ” আমাদের এই তথাকথিত সিভিলাইজড, মডার্ন, আরবানাইজড সমাজে নানাবিধ অত্যাচার, নিপীড়নকে ঢেকে রাখা হয়। বিত্ত-বৈভব, আমেজ-উৎসব, প্রমোদ-ফূর্তির আড়ালে চাপা পড়ে থাকে হাজারো বঞ্চনা।

এই লেখাটি লিখতে লিখতেই শুনলাম আগষ্ট মাস “শোকের মাস” বিধায় আদিবাসী দিবস নামে “অপ্রয়োজনীয় আনন্দ অনুষ্ঠান” পরিহার করতে বিশেষ করে তিন পার্বত্য (রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান) জেলা এবং দেশের কয়েকটি জেলায় প্রশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদি তাই হয়, তবে কোথাও কিন্তু প্রশ্ন তোলা হচ্ছেনা, এই “শোকের মাসে” ঈদ উদযাপন করার ন্যায্যতা কোথায়? ১৯৫২ সালে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহকে আমরা যেই ভূমিকায় দেখেছিলাম তার ৬০ বছর পর এসে আমি লক্ষ লক্ষ মানুষকে দেখছি নিজ নিজ জায়গায় তারই ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে। হুমায়ূন আজাদকে স্মরন করি- “আমার রক্ত টের পাচ্ছে শান্তি নেই পার্বত্য চট্টগ্রামে। তাহলে পার্বত্য চট্টগ্রামের ছড়িগুলো দিয়ে কি আরো বহু দিন বইতে থাকবে অশান্তি ঘৃণা বিদ্বেষের পঙ্কীল ধারা?” – নৈসর্গিক আনন্দের সান্নিধ্যে কিছু সময় কাটাবার উদ্দেশ্যে আমরা যারাই কথায় কথায় রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ইত্যাদি জায়গায় ঘুরতে বেরিয়ে পড়ি তাদের কেউই স্মরন করার চেষ্টা করিনা পাহাড়ি আদিবাসীদের কথা যারা দশকের পর দশক ধরে বলে চলেছে “এই জীবন আমাদের নয়। ” কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ ১) মনজুরুল হক - পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং শাসকশ্রেনীর জোড়াতালি তত্ত্বের বিপরীতে একটি বিশ্লেষণ ২) কুঙ্গ থাঙ - ভাষা শহীদ সুদেষ্ণা এবং ভাষার জন্য বিষ্ণুপ্রিয়া মনিপুরীদের দীর্ঘ সংগ্রামের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ৩) মালবিকা টুডু - কর্পোরেট কালো থাবায় স্বকীয় বাংলা ভাষার নাভীশ্বাস এবং ভাষার আধুনিক টার্মোলজি :: রাষ্ট্রের উগ্র জাতীয়তাবাদ ৪) হুমায়ূন আজাদ - পার্বত্য চট্টগ্রাম : সবুজ পাহাড়ের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হিংসার ঝরনাধারা ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.