সকল পরিবর্তনের সাথে আমি ছিলাম। আবারও এসেছি সেই পরম সত্য নিয়ে। তোমাদের মনের মাঝেই লুকিয়ে আছে সেই মহাকালের শক্তি। আজ তাকে জাগাবার দিন এসেছে।
আমি যখন স্কুলে পড়ি।
তখন থেকেই কারাগারের প্রতি তিব্র আকর্ষন ফিল করতে থাকি। সেই ছোট্ট বেলায় ঝালকাঠী কেন্দ্রীয় কাড়াগারের সামনে যেতাম। গোরস্তান মসজিদের মধ্য থেকে একটি ছোট্ট পথ ধরে কারাগারের সামনে যেতাম। আমরা থাকতাম ঝালকাঠীর পশ্চিম চাঁদকাঠীতে। রাস্তা দিয়ে যাবার সময় কারাগারের বিশাল দেয়াল চোখে পড়তো।
খুব যেতে ইচ্ছে করতো কারাগারের ভিতরে। দেখতে ইচ্ছে করতো কারাগারের ভিতর। আমাদের দেশের কারাগার গুলো সম্পর্কে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে বিভিন্ন ভাবে শুনেছি। এখন পর্যন্ত কোনো কারাগারের ভিতরে যেতে পারি নি।
আরে বন্ধু! যে বাঙালীদের সারাজীবন কাটে অভাবের কারাগারে তাদের আবার কারাবরণ কিসের? নিজের হৃদয়ের ভিতরের জেলকে বেশীরভাগ মানুষই সারাজীবনেও ভাঙতে পারে না।
নিজের বুকের মধ্যে কান পেতে শুনুন, দেখবেন নিত্যদিন সত্যপ্রকাশের আওয়াজ হচ্ছে। কিন্তু সে আওয়াজ যে শুনতে পেয়েও নিজেকে বিকাশিত করতে পারে না। তার মতো অভাগা যে আর নাই? ভেঙে ফেলুন হৃদয়ের কারাগার। আজ নিজেকে সকল মিথ্যা থেকে নিজেকে মুক্ত করে, প্রকাশ হন বাঙালী চেতনায়। দেখবেন সত্যের শক্তি অসীম।
বন্ধু বাংলাদেশের প্রায় সব সেক্টরকেই লাভজনক ও সুন্দর করা সম্ভব। বাংলাদেশের প্রতিটা কারাগার বাইরে থেকে দেখতে বেশ সুন্দর। মফস্বলের একেকটি কারাগারকে বাইড়ে থেকে দেখতে খুব সুন্দর লাগে। কারাগারের উচু দেয়ালের বাইড়ের পাশে সুন্দর সবুজ ঘাসের মাঠ দেখতে পাওয়া যায়।
বাংলাদেশের কারাগারগুলো ব্রিটিশ পলিসিতে নির্মিত।
কারাগারের ভিতরে বিভন্ন টাইপের অপরাধী ঢোকেন। কিন্তু কারাবরণ করার পর ছোট্ট অপরাধী আরো বড় অপরাধী হিসেবে নিজেকে প্রমান করে আবারও কারাগারে যায়। এরপর এক সময় কারাগার নিজের ২য় শ্বসুর বাড়ীতে পরিনত হয়। আর শ্বসুর বাড়ীতে জামাইর যাওয়া আসা একদম স্বাভাবিক একটি ব্যাপার। এমন কেনো হবে?
রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্বরা কারা বরন করে বেশ হাসি আনন্দের সাথে।
কারাগার থেকে বেড় হবার পর তাদের চেহারা আরো সুন্দর হয়। তার সাথে ব্যাক্তিত্বও বেশ সুন্দর হয়। আবার উচ্চবিত্তদের কারাগারে যাবার ব্যবস্থা বেশ সহয। কিছুদিন সুন্দর ভাবে কাটানো যায় আবার নিজের প্রটেকশনও নিশ্চিত হয়। আমার গুরু নজরুল কারাগারে গিয়ে অনশন করেন।
চির চঞ্চল নজরুলের অনশন ভাঙাতে রবীন্দ্রনাথের কারাগারে ছুটে যেতে হয়েছিলো। নজরুল কোনো অসুরের কথায় তার অনশন থেকে ফিরে আসেন নি। কিন্তু যাকে নিত্যদিন মনের মধ্যে দেবতা জ্ঞানে শ্রদ্ধা করেছেন। সেই কবিন্দ্রর দেয়া জল সুধাকে তিনি ফিরিয়ে দিতে পারেন নি। এটা এক বাঙালীর শ্রদ্ধাবোধের উৎকৃষ্ট প্রমাণ।
আজ বাংলাদেশের কারাগার গুলোকে একটি শিক্ষা ও পর্যটনকেন্দ্র বানানোর দিন এসেছে। আমাদের দেশে অনেক অনেক গুণী মানুষের জন্ম। এই সব গুণীজন বিশ্বকে নতুন করে ঢেলে সাজাবার যোগ্যতা রাখেন।
কারাগারের কিছু সম্ভাবনা আপনাদের সামনে তুলে ধরছি।
১।
সব কারাগারগুলোকে একটি সাহিত্যশাসিত প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করতে হবে। কারাগারগুলোর আয় থেকে এর যাবতীয় ব্যায় মিটানো যাবে।
২। কারাগার দর্শনের জন্য সাধারন মানুষ সপ্তাতের নির্দিষ্ট কিছু দিনে বা নির্দিষ্ট কিছু সময়ে দর্শনার্থী হিসেবে যেতে পারবে। কারাগারের ভিতরে দর্শনার্থী হিসেবে যেতে চাইলে ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে টিকিটের দাম নির্ধারণ করা হবে।
সুন্দর একটি টিকিট দেয়া হবে। পরিবার পরিজন নিয়েও বেড়াতে যাওয়ার মতো একটি পরিবেশ থাকবে।
৩। প্রয়োজনে পর্যটন, জাদুঘর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংপৃক্ততা ঘটানো যেতে পারে। যাতে করে দ্রুত ভাবে এক্সিকিশন করা যায়।
৪। কারাগারের ভিতরে চমৎকার কিছু গাছ, ফুলের বাগান, পুকুর থাকবে। অনেক কারাগারের ভিতরে বড় কিছু গাছ ও পুকুর আছে যেগুলো একটু বাড়তি যত্ন নিলেই হয়।
৫। কারাগারের ভিতরে বাংলাদেশের গুণী শিল্পীদের কিছু পেইন্টিং থাকবে।
কিংবা চারুকলায় বিষয়ের শিক্ষার্থীরা কারাগারের দেয়ালে চমতকার কিছু বাণী বা ম্যাসেজ সম্বলিত ওয়াল পেইন্টিং করতে পারেন।
৬। কারাগারে বন্দিদের দর্শনার্থীদের কাছে খানিকটা দুর থেকে তুলে ধরতে হবে। যাতে করে কারাগারের বন্দিরা উৎসাহ নিয়ে দর্শনার্থীদের দেখতে পারেন। তবে এখানে অবশ্যই বন্দিদের ব্যাক্তিত্বের কথা ভাবতে হবে।
বন্দিরা বাংলার সন্তান তারা যেনো নিজেদের মানুষের কাছে তুচ্ছ না ভাবে। তাদের মধ্যে যারা স্বেচ্ছায় নিজেদের দর্শনার্থীর মাঝে নিজেকে দেখার অনমুতি দেবে শুধুমাত্র তাদেরই মানুষ দেখতে পাবে। কোনো কারাবন্দি সার্কাসের যোকার টাইপের অভিনয় করতে পারলে দর্শনার্থী আনন্দ পাবেন। এতে করে কারাবন্দিও বেশ আনন্দ পাবেন এবং এই জোকারীর বিনিময়ে পারিশ্রমিক পাবেন। প্রয়োজনে দর্শনার্থীরাও তাদের কিছু বকসিস দিতে পারবেন।
৭। দীর্ঘমেয়াদী সাজাপ্রাপ্তরা কারাগারের ভিতরে ফাস্টফুড বা রেস্টুরেন্টে কাজ করতে পারবেন। তারা খাবার দাবার পরিবেশন করবেন। কিছু কিছু শোপিস বিক্রয় হবে। যে শোপিসগুলো বানাবে কারাগারের বন্দিরাই।
এবং এই সব শোপিস তৈরী বাবদ বন্দিরা পারিশ্রমিক পাবে।
৮। কারাগারের ভিতরে শিশুদের কিছু রাইড থাকতে পারে। যাতে করে পরিবার সহ কারাগারে বেড়াতে গেলে আনন্দ পাবেন। যেমন ধরেন নগরদোলা।
৯। কারাগারের ভিতরে পাবলিক লাইব্রেরী থাকবে। কারাগারে বন্দিদের লেখা নিয়ে মাসিক বা সাপ্তাহিক পত্রিকা বেড় করা যেতে পারে। যাতে শুধু শাস্তি পাওয়া বন্দিরাই লিখতে পারবেন। এই পত্রিকা দর্শনার্থীরা ক্রয় করতে পারবেন।
১০। কারগারের ভিতর গুনি কোনো কন্ঠশিল্পী থাকলে গান গাইতে পারেন। এই গানের এ্যালবাম বেড় হতে পারে।
বন্দিদের জন্য যে সব সুবিধা থাকতে হবেঃ
১। আপনারা সবাই অবগত আছেন দেশের বড় বড় রাজনীতিবিদ ব্যাবসায়ী বা ভিআইপি শ্রেণীর মানুষ কারাগারে গেলেই অসুস্থ হয়ে পরেন।
এর কারণ জানেন? যাতে তারা হাসপাতালে গিয়ে দিব্যি সুখে দিন যাপন করতে পারেন। অনেক ভিআইপি কারাবন্দির পরিবারও তার সাথে সময় কাটাতে হাসপাতালে যান। এ কেমন অবিচার? একজন বন্দি বিনা দোষে জীবনের অনেক মূল্যবান সময় কারাগারে বিশর্জন দিয়ে আসবে আর ঐ সব শয়তানদের কাছে কারাগারও বেহেশত হয়ে যায়।
ঐ সব বন্দিদের হাসপাতালে পাঠাতে কিছু এ্যাডভোকেট-ব্যারিস্টার ও ডাক্তার নামের জাতির কলঙ্ক মোটা অংকের বিনিময়ে কাজ করেন। ঐ সব জানোয়ারদের হাত পা কেটে দাও।
টেনে ফেলে দাও ওদের বাঙালীর পায়ের নিচে।
যে জেলারগণ রাজনৈতিকদের খেলার পুতুল তারা কিভাবে বন্দিদের শান্তি দিবেন। আজ সকল মুক্ত মনের মানুষদের জেলারদের ভূমিকা পালন করতে হবে। একজন সত্যিকারের বাঙালীকে জেলার হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে। যার মনের মধ্যে সবার আগে প্রধান্য পাবে মানবতা।
বিশ্ব এই বাংলাদেশের কাছ থেকে মানবতা মানবে।
২। বন্দিদের নীতিবোধ শিখতে দিতে হবে। একজন মাদাকাসক্ত জেলে গেলে আরও বড় মাদকসেবীতে পরিনত হয়। কেটু জুতার ভিতরে, বইয়ের ভিতরে, ডাবের মধ্যে করে অবাধে জেলে গাঁজা ফেন্সিডিল ঢোকে।
কিছু কিছু খাবার সাপ্লাইকারী সরাসরী মাদক বহন করে থাকেন। তাই জেলখানায় গিয়ে যে মায়ের সন্তানটির ভালো হবার কথা ও আরও খারাপ হয়ে যায়।
৩। জেলের মধ্যে সব বন্দিদের দৈনিক সংবাদপত্র, পত্রিকা পড়ার অধীকার থাকবে। নইলে যে মানুষিক রোগী হয়ে আরও এই সুন্দর সমাজের ক্ষতি হবে।
৪। প্রতিটি জেলের মধ্যে বন্দিদের জন্য একটি করে সাইবার ক্যাফে থাকবে। এবং একটি কম্পিউটার ল্যাব থাকবে। দিনে কমপক্ষে ১ঘন্টা হলেও কম্পিউটার চালানোর সুযোগ হয়।
৫।
কারাগারের মধ্যে কম্পিউটার শেখার ব্যবস্থা থাকতে পারে। যাতে করে তরুন বা যুবকদের মধ্যে যাদের কারাগারে যেতে হয় তারা কম্পিউটার শিখে নিজের পেশাগত জীবনকে এগিয়ে নিতে পারে।
৬। কারগারের মধ্যে বেয়াম ও শরিচর্চার ব্যবস্থা থাকবে। একান্ত প্রয়োজন না হলে কাউকে লাঠিপেটা করা যাবে না।
এতে করে বন্দির আত্মবিশ্বাস নষ্ট হয়ে যায়। একজন বন্দি নিজেকে শোধরানোর সুবিধা না পেয়ে বরং নষ্ট হয়ে যায়্
৭। বন্দিদের সাথে যাতে বন্দির মা এবং স্ত্রী সন্তানেরা কমপক্ষে সপ্তাহে একবার হলেও দেখা করতে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে। মনে রাখতে হবে বন্দিরা আপনার আমার মতোই একজন মানুষ। একজন বন্দির মা যে আরও বেশী বন্দি।
একজন অপরাধীর মা নিজেকে সমাজের চোখে আরও বেশী অপরাধী হয়ে যায়।
সন্তানের সামান্য ভুলের খেসারত হিসাবে হাজারও বাবার সমাজে নাক কাটা যায়।
৮। বেকার যুবক বন্দিদের বাধ্যতামুলক কিছু পেশার ব্যবস্থা করা বাংলাদেশের কর্তব্য। যাতে করে সে ডিপ্রেশনে না ভোগে।
আর কুপথে যাবার চিন্তা তার মধ্যে না আসে।
৯। বন্দিদের জন্য টিভি ও সিনেমার ব্যবস্থা থাকতে হবে।
১০। ধর্মীয় ও রাস্ট্রিয় উৎসবের দিন ভালো পোশাক গিফট করা যেতে পারে।
যাতে করে তারাও নিজেদের মানুষ বলে ভাবতে পারে।
১১। বন্দিদের মধ্যে যারা সুসাস্থের অধিকারী তাদের সামরিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে আধা-সামরিক ও সামরিক বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
১২। সবার জন্য এবাদাত বা যার নিজ ধর্মিয় প্রেয়ার নিশ্চিত করতে হবে।
যাতে করে সে নিজেকে ধর্মীয় অনুশাসনের শান্তি লাভ করতে পারে।
বন্ধু!!! এ বাংলাদেশী জাতটার উপর যে অনেক অত্যাচার করা হয়েছে। এই অত্যাচার যারা করেছেন তাদেরকে চিহ্নিত করে আপনাদের সামনে তুলে ধরার জন্যই যে আমাদের জন্ম হয়। আমি বারবার বলছি একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিকের অনেক শক্তি। সেই শক্তিটা জাগিয়ে তুলুন দেখবে বাংলাদেশ বিশ্বের ১নম্বর দেশ হিসেবে অবস্থান করে নিয়েছে।
সবার আগে নিজেকে গর্বিত বাঙালী ভাবতে শিখুন। দেখবেন আমরা কি পারি। আপনাদের সুন্দর ও সত্যের পথে নিয়ে যেতেই যে আমি আপনার মনের মধ্যে যুগে যুগে আত্মপ্রকাশ করি।
আমি যে আপনাদের এই জঞ্চালে ভরা অবুঝ মনটার মধ্যে বুঝের আলো ছড়াতে এসেছি বন্ধু। আমাকে আপনারা ভুল বুঝেন তাতে অসুবিধা নাই কিন্তু নিজের সাথে বেঈমানী করবেন না।
আপনার মনের পরিবর্তনই যে বিশ্বের পরিবর্তন ঘটাতে পারে।
আসুন আমদের এই ছোট্টজীবনটাকে মানব কল্যানে নিবেদিত করি।
আজ আপনারা যাকে “মোঃ আসিফ-উদ-দৌলাহ্” বলে জানেন। সে যে এক বন্দি প্রেমিক। যার প্রেমিকা “ইফফাত জামান মুন” এর হৃদয়ে নিজে জাবজ্জীবন কারবন্দি হয়ে থাকবে।
“ইফফাত জামান মুন” এর মতো করে বাংলার অনেক প্রেমিকা যে তার প্রাণের চেয়ে প্রিয় প্রেমিককে এই অসুন্দর সমাজব্যবস্থার কাছে জলাঞ্জলী দিয়ে নিজেকে চির বিধবা করে রেখেছেন।
এই স্বামী বেঁচে থাকা স্বামীহারা বিধবাদের আর্তনাদের মধ্যে যে এক কঠিন সত্য লুকায়িত। আবার অনেকে তার প্রাণের চেয়ে প্রিয় বউকে আপন করে জাগাতে পারে নি, আর সেখানেও যে এক কঠিন সত্য লুকায়িত। আর সেই লুকায়িত সত্যের মধ্যেই যে একটি অসম্ভব শক্তিধর সম্ভাবনার বাস। আসুন আমরা সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে নিজেকে ভালোমানুষ প্রমান করে বিশ্বকে রাঙিয়ে তুলি।
পত্রিকা মালিক, সম্পাদক, বিভাগীয় সম্পাদক, রিপোর্টার, ফটোসাংবাদিক, পাঠক সবাই মন দিয়ে পড়ুন- এ এক বাঙালীর আদেশ!!!
তোমার জীবনের নায়ক তুমি নিজেই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।