পোশাক কী ও কেন
মানুষের বেঁচে থাকার জন্য প্রথম প্রয়োজন খাদ্যের। এর পরেই সর্বাধিক গুরুত্ব পোশাকের। যা দ্বারা মানুষ লজ্জাস্থান আবৃত রাখে। শীত-গ্রীষ্মের প্রকোপ থেকে বাঁচে। এবং সুন্দর ও পরিপাটি থাকার স্বভাবজাত চাহিদা পূরণ করে।
কুরআন মজীদে ইরশাদ হচ্ছে, يَا بَنِي آَدَمَ قَدْ أَنْزَلْنَا عَلَيْكُمْ لِبَاسًا يُوَارِي سَوْآَتِكُمْ وَرِيشًا وَلِبَاسُ التَّقْوَى ذَلِكَ خَيْرٌ ذَلِكَ مِنْ آَيَاتِ اللَّهِ لَعَلَّهُمْ يَذَّكَّرُونَ
(তরজমা) হে বনী আদম! আমি তোমাদের জন্য পোশাক অবতীর্ণ করেছি। যা তোমাদের সতর ঢেকে রাখে এবং সৌন্দর্য্যরেও উপকরণ। (সূরা আরাফ: ২৬) আরো ইরশাদ হচ্ছে, وَجَعَلَ لَكُمْ سَرَابِيلَ تَقِيكُمُ الْحَرَّ وَسَرَابِيلَ تَقِيكُمْ بَأْسَكُمْ كَذَلِكَ يُتِمُّ نِعْمَتَهُ عَلَيْكُمْ لَعَلَّكُمْ تُسْلِمُونَ (তরজমা) তিনি তোমাদের জন্য ব্যবস্থা করেছেন পরিধেয় বস্ত্রের, যা তোমাদেরকে গরম ও তাপ থেকে রক্ষা করে। এবং এমন বস্ত্রের ব্যবস্থা দিয়েছেন, যা তোমাদেরকে বিভিন্ন ক্ষতি ও অনিষ্ট থেকে রক্ষা করে। এভাবে তিনি তোমাদের প্রতি তাঁর নিয়ামতকে পরিপূর্ণ করেন, যাতে তোমরা আত্মসমর্পণ কর।
(সূরা নাহাল: ৮১)
ইসলাম যেহেতু একটি পরিপূর্ণ ধর্ম, তাই জীবনের ছোট-বড়, গৌণ-মুখ্যÑসব বিষয়েই ইসলামের দিকনির্দেশনা রয়েছে। পোশাক-পরিচ্ছদের ব্যাপারটিও এর ব্যতিক্রম নয়। মানুষের কল্যাণেই ইসলাম এ বিষয়ে কতক মৌলিক নীতিমালা নির্ধারণ করে দিয়েছে। যেগুলোর অনুসরণ মুমিন নারী-পুরুষের জন্য অত্যাবশ্যকীয়। এবং ব্যতিক্রম করা কারো জন্য বৈধ নয়।
এ যুগের পাশ্চাত্য কৃষ্টি-কালচার দ্বারা প্রভাবিত এক শ্রেণীর লোকের ধারণা, পোশাক-পরিচ্ছদ ও সাজ-সজ্জা একান্তই মানুষের স্বভাবগত বিষয়। স্থান ও যুগের চাহিদা ও প্রচলন অনুসারে মানুষ যা ইচ্ছা তা-ই গ্রহণ করতে পারে। এসবের সঙ্গে হালাল-হারাম, বৈধ-অবৈধের কোন সম্পর্ক নেই।
তাদের এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল ও অজ্ঞতাপ্রসূত। লেবাসের হাকীকত ও তাৎপর্য কী, মানুষের জীবনে এর প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া কতটুকু, এ সব বিষয়ে অবগতি না থাকা এবং চিন্তা-ভাবনা না করাই এহেন ভুল ধারণা সৃষ্টির মূল কারণ।
বাস্তবতা হচ্ছে, পোশাক যদিও বাহ্যিক বিষয়, এবং শরীরের বাইরের সাথেই এর সম্পর্ক। কিন্তু তা এক গভীর প্রভাব সৃষ্টি করে ব্যক্তির অন্তর-জগতে। তার স্বভাব ও চরিত্রে, মনন ও মানসে। কোন পোশাক মানব মনে অহংকার ও অহমিকার বীজ বপন করে। কোন পোশাক অন্তরে বিনয় ও বিনম্্রতাকে লালন করে।
কোন পোশাক উত্তম চরিত্র গড়ে তোলার পথ সুগম করে। আবার কোন পোশাক উচ্ছৃঙ্খলতা ও অপরাধের পথ অবারিত করে।
সুতরাং যিনি মনে করেন, লেবাস-পোশাক কেবলই বাহ্যিক আবরণ, মানব মন ও মননের সঙ্গে এর কোনই সম্পর্ক নেই, তিনি মানুষের স্বভাব- প্রকৃতি সম্পর্কে নিরেট অজ্ঞ ও মূর্খ।
সঙ্গত কারণেই ইসলাম পোষাকের ব্যাপারটি পূর্ণরূপে মানুষের এখতিয়ারে ছেড়ে দেয়নি। যা ইচ্ছা তা-ই পরবে, যেমন খুশী তেমন সাজবে।
এমন মুক্ত স্বাধীনতা দুনিয়ার জীবনে ঈমানদারকে দেয়া হয়নি। হ্যাঁ, ইসলাম প্রকৃতির ধর্ম। জীবনের সব ক্ষেত্রেই ইসলাম এমন বিধান আরোপ করেছে, যা মানব স্বভাবের সম্পূর্ণ অনুকূলে। এবং মানুষের স্বাভাবিক রুচি-প্রকৃতিকে পূর্ণ সমর্থন করে। কিন্তু, কারো যদি রুচিটাই বিকৃত হয়ে যায়, তাহলে তার কথা ভিন্ন।
মানুষ যেহেতু স্বভাবগত কারণেই খাওয়-পরাসহ সব বিষয়েই বৈচিত্র পছন্দ করে। কোন এক প্রকারে তুষ্ট হয় না এবং তুষ্ট থাকতেও পারে না। এ কারণে ইসলাম কোন এক প্রকারের পোশাককে ঈমানদারদের জন্য আবশ্যক করে দেয়নি। কোন নির্দিষ্ট পোশাককে মুসলমানের ইউনিফর্ম ঘোষণা করেনি।
হ্যাঁ, ইসলাম এতটুকু করেছে যে, এ বিষয়ে কতক মৌলিক নীতিমালা নির্ধারণ করে দিয়েছে।
এগুলো অনুসরণের পর মুমিন নারী-পুরুষের পূর্ণ স্বাধীনতা থাকবে নিজেদের রুচি এবং যুগের চাহিদা অনুযায়ী যা খুশি পরতে পারবে।
নি¤েœ প্রতিটি মূলনীতি দলীলসহ আলোচিত হলো
চলবে........
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।