আমি পৃথিবীতে প্রতিনিধি সৃষ্টিকারী! বলল, তারা তো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে। বললেন, আমি যা জানি, তোমরা তা জানো না!
ছবি: প্যারাকম্যান্ডো স্পেশাল ফোর্স অপারেটিভের অহঙ্কার। চেস্ট ব্যাজ।
স্পেশাল অপারেশন্স ফোর্স, গুপ্তচর, ইন্টেলিজেন্স, কমান্ডো- এইসব বিষয়ে সবারই একটা শিশুসুলভ আগ্রহ থাকে। ওদের ট্রেনিঙ, কাজের ধরণ, গোপনীয়তা- সবকিছু যেন লাইভ থ্রিলার মুভি।
ছবি: আমি ভগবান-বুকে এঁকে দিই পদচিহ্ন
আমাদের দেশটাতেও স্পেশাল অপারেশন্স ফোর্স রয়েছে। আমার করা টপটেন মন্দ লাগবে না হয়ত। আর, যদি কোনটার নাম না দিয়ে থাকি বা না জেনেই থাকি, এই সুযোগে সহব্লগাররা জানিয়ে যাবেন কিন্তু!
ডিসক্লেইমার: এখানে এমন কোন কথা আনা হয়নি যা ইতোমধ্যে গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়নি। এমনকি তথ্যেও ছোটখাট ভুল থেকে যেতে পারে, সেসব হতে পারে উৎসের ভুল। আন্দাজে কিছু দেয়া হয়নি।
১০. বিশেষ কয়েকটি সংস্থা
প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্ট বা পিজিআর বেশ শক্তপোক্ত অবস্থানে ছিল জিয়া ও এরশাদ আমলে। স্বাভাবিক, তখন দেশ চালাতেন রাষ্ট্রপতি, তাই তাদের গার্ড রেজিমেন্টই হবে একটা স্পেশাল ফোর্স। কিন্তু পরে প্রধানমন্ত্রীনির্ভর রাষ্ট্রব্যবস্থা আসায়, প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের ওই পালক থাকল, থাকল স্পেশাল ফোর্স নামটাও, কিন্তু খুব একটা বিশেষত্ব রইল না আর।
এয়ারফোর্স স্কুল অভ সিকউরিটি অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স বেশ করিৎকর্মা ইন্সটিটউট। সবসময় আপডেটের উপর, সব সময় ইন্টিগ্রেশনের উপর থাকছে।
অড সেভেন্টিওয়ান কি গুজব? এমন কোন গ্রুপ কি নেই? বলা হচ্ছে ওডিডি সেভেন ওয়ান বাংলাদেশ নৌবাহিনীরই আরো গোপনীয় ডিটাচমেন্ট। কে জানে! কিছু জানেন নাকি?
এক সময় তো পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ কে বিশেষায়িত করে তৈরি করা হয়েছিল। ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ বা ক্রিমিন্যাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট ছিল সত্যিই স্পেশালাইজড। তারপর এল চিতা ও কোবরা এবং এ ধরনের কিছু ছোট ছোট টিম। কেন যেন, পুলিশে এই ফোর্সগুলো সত্যিকার কার্যকর ও বিশেষায়িত থাকে না।
ন্যাশনাল পুলিশ ব্যুরো অভ কাউন্টার টেররিজম- এই কি এনপিবিসিটি’র পুরো নাম? বর্তমানে এটা বেশ কার্যকর, এমনটা শোনা যাচ্ছে।
৯. এনএসআই
জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা। ন্যাশনাল সিকউরিটি ইন্টেলিজেন্স।
জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর। ডাইরেক্টরেট জেনারেল অভ ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স।
যুগযুগ ধরে এই বেসামরিক সংস্থাটি বাংলাদেশের প্রাইম গোয়েন্দা সংস্থা ছিল। দেশের প্রতিটা জেলায়, মায় প্রতিটা থানায় রয়েছে অফিস। সব সংগোপনে। এমনকি তাদের হেডকোয়ার্টারও পুরোপুরি আন্ডারকাভার।
ধরণ: রাষ্ট্রের নিরাপত্তা ও অখন্ডতা, বাইরের দেশের হুমকির বিষয়গুলো দেশের ভিতরে ট্যাকল করা, কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স, প্রয়োজনে অল্পবিস্তর অ্যাসল্ট।
গোয়েন্দা তথ্য জোগাড় করে তা বিশ্লেষণ করা ও প্রয়োজন অনুসারে সরকারকে জানানো।
নিয়োগ: ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ড ডিরেক্টর পদে, (যদি বিশাল পদে যেতে চান আরকী!) সিভিলিয়ান থেকে নিয়োগ করা হয়। সব সময় মহাপরিচালক হন একজন আর্মড ফোর্সেস পার্সোনেল। বর্তমানে আসেন মেজর জেনারেলরা। যে কোন পরিস্থিতিতে এ সংস্থায় আর্মি পার্সোনেল অনেক আসেন, এমনকি মেজর র্যা ঙ্কের অফিশিয়ালরাও।
আকৃতি: পুরোপুরি অজানা।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এ ধরনের সংস্থা: এফ বি আই, অ্যামেরিকা। সিবিআই, ইন্ডিয়া। মজার ব্যাপার হল, এই দুটা সংস্থারচে আমাদের এনএসআই আরো অনেক বেশি নিভৃতে চলাফেরা করেছে এবং অনেক বেশি রহস্য উৎপাদন করেছে।
ট্রেনিঙ: পুরোপুরি গোপনীয়।
দেশে ও দেশের বাইরে। তবে, আর্মি, নেভি, এয়ার, ডিজিএফআই’র সাথে ঘনিষ্ঠ ট্রেনিঙ হয়, তাদের ফ্যাসিলিটিতে। এই সংস্থার ট্রেনিঙের মা-বাপ নেই বলে শোনা যায়। একেবারে ফায়ার সার্ভিস থেকে শুরু করে মেডিক্যাল কলেজ হয়ে যেখানে যাওয়া যায়, প্রয়োজনমত উন্নয়ন চলতে থাকে।
গোপনীয়তা: সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে পরিচালিত।
টপক্লাস। একটা সময় পর্যন্ত এই সংস্থার নাম কোন ধরনের মিডিয়াতেও প্রকাশ পেত না। ইদানিং বড় বড় দুয়েকটা পত্রিকা নামটা প্রকাশ করা শুরু করেছে।
কাজের ক্ষেত্র: মূলত শুধু বাংলাদেশ। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া অ্যাসল্ট নয়।
বর্তমানে অ্যাক্টিভিটি ও অথরিটির দিক দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে চলে এসেছে, প্রথম অবস্থান ডিজিএফআই’র।
প্রয়োজনে পুলিশ ব্যবহার করা হয় বা পুলিশের ছদ্মরূপ ধরা হয়।
বিশেষায়িত অস্ত্র: অজানা।
বিশেষ আলোচনায়: দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা।
মিষ্টি গুজব: শোনা কথার কোণা নাই।
বেশ কয়েক বছর আগে এক ফটোসাংবাদিক নাকি এনএসআই নিয়ে রিপোর্ট করবেন তো করবেন, গেছেন হেডকোয়ার্টারের ছবি নিতে। আর ভিতর থেকে পঞ্চাশজন এসে সেইরে পিটুনি!
৮. সোয়াট
ছবি: স্ট্রিট ডিউটিতে বাংলাদেশের সোয়াট
স্পেশাল উইপন্স অ্যান্ড ট্যাকটিক্স
আমেরিকার সোয়াট টিমের আদলে, তাদেরই অর্থায়নে, তাদেরই ট্রেনিঙে এবং তাদেরই সব ইক্যুইপমেন্টে সজ্জিত হয়ে বাংলাদেশেও যাত্রা শুরু করল তাদেরই সমান আকৃতির একটা সোয়াট টিম।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ স্পেশাল উইপন্স অ্যান্ড ট্যাকটিক্স টিম- সোয়াট।
ধরণ: ছোট্ট টিম, পুরোপুরি উদ্ধার অভিযান কেন্দ্রীক। সোয়াটের ধারণাটা সুন্দর।
শুরু অ্যামেরিকায়। যেসব সংস্থায় সশস্ত্র উদ্ধারকাজ দরকার হতে পারে, তেমন সব সংস্থার জন্য একই ধরনের একটা করে টিম গঠন করে দেয়া হয়। এই টিমগুলোর ট্রেনিঙ একই রকম, সামান্য এদিক সেদিক। কিন্তু তারা থাকবে লোকালাইজড সংস্থার সাথে। যেমন, এফবআই’র নগরভিত্তিক প্রতিটা অফিসে, পুলিশের প্রতিটা বড় ইউনিটে ছোট একটা করে সোয়াট টিম, কোস্টগার্ড, বর্ডারগার্ড, কাস্টমস, ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন- সর্বত্র।
নিয়োগ: খুবই শক্তপোক্ত নিয়োগ হয় এই ফোর্সটায়। শারীরিক হার্ডওয়ার্কের উপর বিশেষ নজর দেয়া হয়। শারীরিক উচ্চতা, সুস্থতা, মানসিক দৃঢ়তা ও খাটতে পারা- এ থেকে শুরু। বাকিটা করে নেয়া হবে। সাধারণত সংশ্লিষ্ট মাদার অ্যাজেন্সি থেকেই আসে রিক্রুটরা।
আকৃতি: সব সোয়াট টিমই পঁচিশ-পঁয়তাল্লিশজনে সীমাবদ্ধ।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এ ধরনের সংস্থা: আমেরিকার সব ধরনের সোয়াট, আমেরিকা মাশাল্লাহ, দক্ষিণ কোরিয়া, ইরাকেও সোয়াট জারি করেছে। জাপানিজ স্পেশাল অ্যাসল্ট টিম। মালয়েশিয়ার স্পেশাল অ্যাকশন ইউনিট। ব্রিটেনে স্পেশালিস্ট ফায়ারআর্মস কমান্ড।
মুম্বাইয়ের ফোর্স ওয়ান। ইন্দোনেশিয়ার ব্রিগেড মোবিল কে এর সমমান ধরলেও ডিটাচমেন্ট এইটিএইটের কথা যেন ভুলেও মুখে আনবেন না! ওকথা বলে না! ওটা ডেল্টা ফোর্সের সমমান।
ট্রেনিঙ: লোকে বলে, ফুড সাপ্লিমেন্ট দিয়ে তাদের ব্যায়ামের পরিমাণ ও সহ্যক্ষমতা বাড়ানো হয়, তারপর এক্সটেন্সিভ এক্সারসাইজ এর মাধ্যমে তৈরি করা হয় মাসলম্যান।
গঠন ও শুরু: এইতো, কয়েকদিন আগে। মার্কিন সোয়াট টিম যে বাংলাদেশে সোয়াট বানাচ্ছে তার খবরই জানা ছিল না প্রায়, তারপর একসময় হুড়মুড় করে হাজির হল সোয়াট।
সেই থেকে চলছে। মাত্র একটা টিম বর্তমানে অপারেশনাল। মূল পরিকল্পনা অনুযায়ী, সামনে প্রতিটা মেট্রোপলিটান পুলিশের কমিশনারের সরাসরি তত্ত্বাবধানে একটা করে সোয়াট টিম থাকবে।
গোপনীয়তা: মনে তো হয় খুব। কারণ, কোন অপারেশনের কথা জানা যায় না, স্ট্রিট ডিউটি (যা মূলত শো অফ) এই দেখা গেছে বাংলাদেশের সোয়াটদের।
ছবি: বিশ্বকাপ ক্রিকেটে 'শো অফ' স্ট্রিট ডিউটি।
কাজের ক্ষেত্র: উদ্ধার, উদ্ধার এবং উদ্ধার। ডিএমপি কমিশনারের সরাসরি নির্দেশে পরিচালিত।
বিশেষায়িত অস্ত্র: মার্কিন সোয়াট ও মেরিন স্ট্যান্ডার্ডের সব অস্ত্র। সামনে নাকি হামভি জিপও আনা হবে কাজে গতি সঞ্চারের জন্য।
বিশেষ আলোচনায়: জানেন কেউ? জানালে টুকে দিব।
মিষ্টি গুজব: দ্যাশটারে নাকি আমেরিকা খাইয়া ফালাইলো।
৭. ফরমেশন কম্যান্ডো কোম্প্যানি
ছবি: বাংলাদেশের এক গর্বিত কম্যান্ডো। জাতিসংঘ শান্তিমিশনে ফুল কমব্যাট ড্রেস ও ইকুইপমেন্টে সজ্জিত। বুলেট ও শ্র্যাপনেলপ্রুফ ভেস্ট, শর্টব্যারেল কারবাইন লক্ষ্যণীয়।
ধরন: দুই থেকে তিনটা প্ল্যাটুন নিয়ে এক কোম্প্যানি। সহজ কথায়, আশি থেকে সোয়া শত জনবল। একজন ক্যাপ্টেন বা মেজরের অধীনে আর্মি ফরমেশনগুলোতে একটা করে কম্যান্ডো কোম্প্যানি থাকার কথা। প্রতি ডিভিশনেই (বা ক্যান্টনমেন্টে) আছে এমন কোম্পানি।
নিয়োগ: অবসরের পর একটা ব্যবসা ট্যবসা খুলে বসব গ্রামের বাড়িতে গিয়ে।
প্রমোশনের দরকার নাই, কমান্ডো হইতে চাই না। – আর্মির প্রাইভেটদের দ্রুত অবসর হয়ে যায়। প্রমোশন হলে একটু বাড়ে চাকরির মেয়াদ, তাও এই অবস্থা, বাকীটা বুইঝা লন।
আকৃতি: ওইযে, প্রতি কান্টুনে এক কোম্প্যানি।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এ ধরনের সংস্থা: অভাব নাই।
আমেরিকা যদিও দাবি করে, তাদের রেঞ্জার্স আমাদের কম্যান্ডোর সমান- আসলে তা নয়। তাদের আড়াইমাস ট্রেনিঙ পাওয়া হোৎকা পোটকা রেঞ্জার আর আমাদের চার থেকে ছমাস ট্রেনিঙ পাওয়া গালভাঙা পাথুরে কমান্ডো পাশাপাশি দাঁড় করালেই তফাত টের পাওয়া যাবে। তবে জার্মান কম্যান্ডো স্পেজিয়ালক্রাফতে বা মার্কিন ডেল্টা ফোর্স, ইন্দোনেশিয়ান ডিটাচমেন্ট এইটিএইট আরো আপগ্রেডেড।
ট্রেনিঙ: চার থেকে ছয় মাসের অকল্পনীয় ট্রেনিঙ।
গঠন ও শুরু: প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষদিকে কিছু কিছু।
মূল উদ্ভব দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে। সে সময় প্রয়োজন পড়ল এমন সব দানবের, যারা ভূলোক দ্যুলোক গোলক ভেদিয়া খোদার আসন আরশ ছেদিয়া উঠিবে চির বিস্ময় আমি বিশ্ববিধাত্রির।
গোপনীয়তা: তেমন কিছু নেই। নামেই যার পরিচয়। তবে অপারেশনে নামলে সে কথা জানা যাবে, তা আশা করার দরকার নেই।
বিশেষায়িত অস্ত্র: টাইপ ফিফটি সিক্সের লাইট ফুলমেটাল ভার্শন (এখানে সবচে সাধারণ), বিশ্ব কাঁপানো উজি মেশিন পিস্তল ও সাবমেশিনগান, মার্কিন এম ফোর কারবাইন, স্পেশাল ফোর্সেস শর্ট ব্যারেল স্পেশাল এডিশন কারবাইন, কমান্ডো গ্রেনেড-নাইফ-ভেস্ট-এস্কেপ টুলস।
কাজের ক্ষেত্র: সামরিক। শত্রুব্যুহভেদ। শত্রুরেখার পিছনে কাজ। গোপন তথ্য উদ্ধার/ গোপন স্যাবোট্যাজ।
স্পেশাল অ্যাসাইন্ড কিলিঙ। স্পর্শকাতর উদ্ধারকাজ বা শত্রুবাহিনীর মূল কোন একটা পয়েন্ট গুঁড়িয়ে দেয়া।
বিশেষ আলোচনায়: মেজর জিয়া, মেজর আবু তাহের- এই হেলকমান্ডো বা প্রাইম কমান্ডোরা দেশের স্বাধীনতার আগে ও পরে কী ব্যঘ্রহৃদয়ের কাজ করেছেন তা আজীবন মানুষ মনে রাখবে।
মিষ্টি গুজব: সাপ খায় ব্যাঙ খায় কাতুকুতু কুতুকুতু।
৬.সিটিআইবি
কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো।
ধরন: আল্লা কে জানে তোমার... অপার, লীলে!
নিয়োগ: ডিজিএফআই থেকে। ডিজিএফআই'র একটা পরিদপ্তর এই উপ-সংস্থা। কিন্তু এর সক্ষমতা ব্যাপক, তাই কোথাও কোথাও একে আলাদাভাবে চিহ্নিত করা হয়। তাছাড়াও, একটি বু্রোর আলাদা সংস্থা হিসেবে উপস্থাপনে দোষ নেই।
আকৃতি: ঐ।
একজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল/ কর্নেল বা সমমানের অফিসার দ্বারা পরিচালিত। বুরোতে তার পদবী, পরিচালক।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এ ধরনের সংস্থা: গ্রুপো অ্যারোমোভিল দে ফুয়ের্জাস ইস্পেসিয়ালেস- গাফে। ম্যাক্সিকো। এই অতিবিশেষায়িত মেক্সিকান ফোর্সটি যেমন পুরোপুরি অদৃশ্য থেকে শুধু রাষ্ট্রীয় অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাস মোকাবেলা করে, শুধু আর্মি থেকে এসে এবং শুধু কম্যান্ডো-ইন্টেলিজেন্স বাহিনী হয়ে, সিটিআইবির সাথে বোধহয় এরই মিল হয়।
ছবি: মেক্সিকান গাফে। এর সাথে কাজের ধারায় মিল পাওয়া যায় আমাদের সিটিআইবির।
ট্রেনিঙ: কে জানে তোমার... দ্রষ্টব্য। আমরা আন্দাজ করে নিতে পারি, বিশেষ করে পৃথিবীর বড় বড় অ্যান্টি টেররিজম অর্গানাইজেশনের সাথে সহযোগিতামূলক আদান-প্রদান হয় ট্রেনিঙে।
গঠন ও শুরু: ঐ
গোপনীয়তা: ঐ
কাজের ক্ষেত্র: শুধু বড় আয়তনের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস নিয়ে ডিপকাভার তদন্ত, প্রয়োজনে আরো ডিপ আক্রমণ।
বিশেষ আলোচনায়: ঐ
মিষ্টি গুজব: ঐ
৫. রেব
ছবি: অ্যান্টি রিফ্লেকশন ফিল্ডগ্লাস চোখে রেবের জওয়ান। নিচে দুজনের হাতে বাংলাদেশে তৈরি একে ফোর্টি সেভেনের চেয়ে আপগ্রেডেড ভার্শন টাইপ ফিফটি সিক্সের ভ্যারিয়্যান্ট অ্যাসল্ট রাইফেল।
রেপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান ফোর্সেস
ধরন: কাউন্টার টেরোরিজম, অ্যান্টি ড্রাগ অ্যান্ড নারকোটিকস, স্পেশাল সেফটি অ্যান্ড সিকউরিটি, ইন্টারনাল ব্ল্যাক অপস।
নিয়োগ: সেনাবাহিনী ৪৪%, পুলিশ ৪৪%, বিজিবি-আনসার-নেভি-এয়ার বাকি ৬%।
আকৃতি: প্রতিটি ব্যাটেলিয়ন আকৃতির মোট ডজনখানেক।
প্রতি ব্যাটেলিয়ন গঠিত ছ-সাতশ লোকবল সহ, একজন অধিনায়ক লে. কর্নেল সমমানের তত্ত্বাবধানে। অতিরিক্ত মহাপরিচালক, একজন কর্নেল মুখপাত্রের কাজ করেন। মহাপরিচালক, সব সময় পুলিশের একজন অতিরিক্ত ইন্সপেক্টর জেনারেল।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এ ধরনের সংস্থা: মিশরের ইউনিট থ্রিথার্টিথ্রি, ফ্রান্সের রেইড, ভারতের ব্ল্যাক ক্যাটসের সাথে অবশ্য অমিল আছে- ব্ল্যাক ক্যাটস অনেকটাই ব্যস্ত ইন্টারনাল ভিভিআইপি সিকিউরিটিতে, কিন্তু ব্যাপ্তি ও ভারিক্কিতে ব্ল্যাক ক্যাট বা ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড- এনএসজি'র সাথে একপাল্লায় ফেলা যায়।
ট্রেনিঙ: রেবের ফিল্ডে থাকা সবার ট্রেনিঙ একই মানের নয়।
গোয়েন্দা শাখার ট্রেনিঙ বিশ্বমানের, ইন্টারোগেশনও সর্ব্বোচ্চ শ্রেণীর। রেব শুরুতে যখন গঠিত হয়, তখন পুরো ফোর্সের অর্ধেকই ছিলেন শুধু আর্মির প্যারাকমান্ডো। পরে তাদের সবাইকে মূল সার্ভিসে রিপ্লেস করা হয়, যা খুব ভাল সিদ্ধান্ত ছিল।
গঠন ও শুরু: আমেরিকার ওঅর অ্যাগেইন্সট টেরোরিজমের আওতায়, তাদের সুস্পষ্ট আর্থিক, টেকনোলজিক্যাল ও ট্রেনিঙ সহযোগিতায় বিএনপি জামাত জোট সরকারের আমলে।
রেবের শাখা প্রশাখা অনেক।
ইন্টেলিজেন্স শাখা স্বয়ং সম্পূর্ণ। আইটি ও ইন্টারনেট-সাইবার স্পেস শাখা চালু আছে অনেক আগে থেকে। ইন্টারোগেশন এ বিশেষজ্ঞ অফিসার তৈরি করা হয় বিশেষত মার্কিন সহায়তায় এবং ইউকে স্পেশালিস্টদের ট্রেনিঙে। ব্ল্যাক অপসের অপারেটিভদের জেনারেল সিকিউরিটি ডিউটিতে পাঠানো হয় না।
গোপনীয়তা: কাজের শ্রেণীভেদ অনুযায়ী।
কখনো কখনো ব্ল্যাকঅপসেও গোপনীয়তা রাখা হয় না।
কাজের ক্ষেত্র: সন্ত্রাস দমন, গোয়েন্দা নজরদারী।
বিশেষায়িত অস্ত্র: উজি সাবমেশিনগান, অ্যাডভান্সড টাইপ ফিফটি সিক্স, আরো অনেক কিছু। এমনো তত্ত্ব আছে, দশ ট্রাক অস্ত্র আসলে একটা নাটক, রেব ও স্পেশাল ফোর্সেসের জন্য এত দামি অস্ত্র কিনে আনলে দেশে সমালোচনা হতে পারে, তাই সাজানো নাটক।
বিশেষ আলোচনায়: ক্রসফায়ার কন্ট্রোভার্সি।
মিষ্টি গুজব: দরবারের দুই কোটি টাকা লুট।
৪.এসএসএফ
ছবি: ট্রেনিঙ। ব্লগার আমার নাম নাই বলেছেন, এটা এসএসএফ এর ট্রেনিঙের ছবি। সৌম্য জানাচ্ছেন, এটা এসএসএফ এরই ছবি।
স্পেশাল সিকউরিটি ফোর্স
ধরন: সরকারপ্রধানের নিরাপত্তার বিশেষায়িত বাহিনী।
একজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেলের অধীনে গঠিত ছিল, বর্তমানে মেজর জেনারেলের অধীনেও কাজ করে।
নিয়োগ: তিন বাহিনী থেকে। অপারেটিভরা সাধারণত ক্যাপ্টেন বা সমমানের পদবী থেকে আসা।
আকৃতি: বলা হয় হাজার আড়াই।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এ ধরনের সংস্থা: ইউনাইটেড স্টেটস সিক্রেট সার্ভিস- অ্যামেরিকা।
প্রেসিডেন্সিয়াল সিকিউরিটি সার্ভিস, দক্ষিণ কোরিয়া। বর্তমানে সিরিয়ার আসাদকে নিরাপত্তা দিচ্ছে রিপাবলিকান গার্ড। ইউনিট ৫৭০০১ বা ইউনিট ৮৩৪১ বা সেন্ট্রাল সিকিউরিটি বু্রো- চীন। দেভযাতিক বা দেবতিক বা নাইন্থ চিফ ডাইরেক্টরেট ছিল সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের কেজিবির অধীনে এ ধরনের সার্ভিস। বর্তমানে প্রেসিডেন্সিয়াল সিকিউরিটি সার্ভিস।
কিন্তু শ্রীলঙ্কার প্রাইম মিনিস্টার্স সিকিউরিটি ডিভিশন বা প্রেসিডেন্টস সিকিউরিটি ডিভিশন অথবা ভারতের প্রেসিডেন্ট'স বডিগার্ড এইসব সার্ভিস থেকে অনেক আপগ্রেডেড আমাদের এসএসএফ।
ট্রেনিঙ: সেরামান। সব সময় আপগ্রেডের উপর। সব সংস্থার সাথে ট্রেনিঙে সম্পর্কিত।
গঠন ও শুরু: বিশেষভাবে শক্তিমান হয় খালেদা জিয়ার প্রথম সরকারের সময় থেকে।
আস্তে আস্তে সুগঠিত হতে থাকে। বর্তমানে আগাপাশতলা চমতকার এক সংস্থা।
গোপনীয়তা: পুরোপুরি। ফিল্ডের অনেক কাজ বাস্তবায়নে পুলিশ-রেব এমনকি সেনাবাহিনীও কাজে লাগানো হয়।
কাজের ক্ষেত্র: প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা, গোয়েন্দা নজরদারি, সফর সঙ্গী হওয়া।
বিশেষায়িত অস্ত্র: ইলেক্ট্রনিক জ্যামার (রটনা?), ফিফটিন রাউন্ড পিস্তল, স্পেশাল স্নাইপার রাইফেল।
বিশেষ আলোচনায়: একমুখী বাহিনী। তাই বিশেষ আলোচনা নাই।
মিষ্টি গুজব: আপনজনার খেলাধূলা চলে এখানে। ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বলে কথা।
দুই প্রধানমন্ত্রীই নাকি মহিলা ক্যাপ্টেনদের বিশেষ অবস্থান দেন এখানটায়। আর, কাটিঙ এজ টেকনোলজি এখনো পুরোপুরি আসেনি এখানে- এমন কথা লোকে বলে।
৩.অ্যাসোকোম / আর্মি স্পেশাল ফোর্সেস
ছবি: বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্যারা-কম্যান্ডো। মেরুন ব্যারেট (গোল ভেলভেটের ক্যাপ) লক্ষ্যণীয়। পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশে প্যারাসু্ট নিয়ে ঝাঁপানোয় দক্ষ স্পেশাল অপস এর সেনাদের মাথায় থাকে মেরুন ব্যারেট।
প্রত্যেকের বুকের নেমট্যাগের উপরে আছে ডানা ও প্যারাসু্ট সহ কম্যান্ডোর প্রতীক। কোমরে মাল্টিপারপাস কম্যান্ডো নাইফ। হাতে শর্টব্যারেল স্পেশাল ফোর্সেস অ্যাসাইন্ড মাল্টি অপারেশনাল সাবমেশিনগান-কাম অ্যাসল্ট রাইফেল। রাইফেলগুলোর নল ছোট হওয়ায় তা স্পেশাল অপসের জন্য বিশেষ উপযোগী।
ধরণ: প্যারাট্রুপার ফোর্স।
আর্মির সেই দল, যা দেশের প্রাইম অপারেশনগুলো যুদ্ধাবস্থায় বা ইন্টেলিজেন্স এর প্রয়োজনে শান্তির সময়ও পরিচালনা করে। উপরে বর্ণিত ফর্মেশন কম্যান্ডো বাহিনী এরই এক শাখা, কিন্তু এই স্পেশাল ফোর্সেস আরো বেশি বিশেষায়িত।
নিয়োগ: সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড, ক্ষেত্রবিশেষে এমনকি পুলিশ ও আনসার থেকেও স্পেশাল ফোর্সেস ট্রেনিঙে নেয়া হয় যদি প্রয়োজনীয় যোগ্যতা থাকে। সাধারণত নিয়োগের সময় ১৫% প্রার্থীও টেকেন না।
আকৃতি: এক দশক আগেও মূল প্যারাকমান্ডো ফর্মেশনটার নাম ছিল প্যারা কমান্ডো ব্যাটেলিয়ন।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এ ধরনের সংস্থা: যারা প্যারাট্রুপিঙে স্পেশালাইজড- ব্রাজিলিয়ান প্যারাট্রুপার ব্রিগেড, ফিফটিন্থ এয়ারবোর্ন কর্পস, চায়না; ইলেভেন ই ব্রিগেড প্যারাশুতিস্তে, ফ্রান্স; পাকিস্তানের ফিফটিয়েথ এয়ারবোর্ন ডিভিশন; অ্যামেরিকার এইটি সেকেন্ড এয়ারবোর্ন ডিভিশন।
আর স্পেশাল অপারেশন্স এর দিক দিয়ে ওয়ান ডিগ্রি ব্রাজিলিয়ান স্পেশাল অপারেশন্স ব্রিগেড, চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মি স্পেশাল অপারেশন্স ফোর্সেস, কউবান ব্ল্যাক ওয়াস্পস, ভারতের গারুড কমান্ডো ফোর্স, ঘটক ফোর্স, প্যারা কমান্ডোজ।
তবে ইন্দোনেশিয়ার কোপাসাস, ইউনাইটেড স্টেটসের ডেল্টা ফোর্স, পাকিস্তানের স্পেশাল সার্ভিস গ্রুপ, ইরানের তাকভার, ইসরায়েলের শায়েরেত (মাতকাল, ১৩, গোলানি, মাগলান)- এগুলোর পর্যায়ে যেতে হলে এগুলোর মতই কষ্ট করতে হবে। সেসব ক্ষেত্রে, ওই ফোর্সগুলোয় ছ মাসের মত বেসিক ট্রেনিঙের পর দেড় বছরের বাড়তি ইন্টেন্সিভ ট্রেনিঙ চলে। তারা পাঁচ দশ লক্ষ সৈনিক থেকে এক দেড় হাজার এমন পার্সোনেল তৈরি করতেও হিমশিম খেয়ে যায়।
ট্রেনিঙ: চার থেকে ছয় মাসের দুর্দান্ত ট্রেনিঙ নিয়ে প্যারা কমান্ডো ব্যাটেলিয়ন এ ঢোকার সুযোগ পেতেন প্রাইভেটরা। যারা এই ট্রেনিঙ শেষ করে নিজ সার্ভিসে ফেরত যেতেন, তারা সাধারণত ফর্মেশন কমান্ডো কোম্পানি বা এ ধরনের কোন কাজে নিযুক্ত হতেন। আর মেইনস্ট্রিম স্পেশাল ফোর্সেস অপারেটিভকে ট্রেনিঙ শেষ করার পরে তিন বছর সার্ভিস দিতে হত এই ব্যাটেলিয়নের সাথে। এই মোট সাড়ে তিন বছরকেই বলা চলে একজন স্পেশাল ফোর্সেস অপারেটিভ হয়ে ওঠার পথ। তারপর সাধারণত কাউকে পাঠিয়ে দেয়া হত নিজ নিজ সার্ভিসে, অথবা এখান থেকে বেছে নিয়ে আরো বিশেষায়িত অপারেটিভ তৈরি করা হত।
আনআর্মড কমব্যাট, নাইফ কমব্যাট, স্নাইপিঙ, সব ধরনের ভেহিক্যাল নিয়ন্ত্রণ, টপলেভেল সারবাইভ্যাল ট্রেনিঙ, ইন্টেলিজেন্স, ইন্টারসেপ্ট, হোস্টেজ নেগোসিয়েশন-অ্যাসল্ট। ব্ল্যাক অপস বিহাইন্ড দ্য এনিমি লাইন্স।
গঠন ও শুরু: খুব ধীরে ধীরে এবং খুব সামান্য পরিসরে বাংলাদেশের প্যারা কমান্ডো এগিয়ে গেছে। তারপর হঠাৎ করেই গত দেড় দশকে বেশ গ্রহণযোগ্য আকৃতিতে পরিণত হয় কমান্ডো শক্তি। আর এই ‘কমান্ডো’ বা প্যারাট্রুপার সহ ‘প্যারা কমান্ডো’ পরিণত হয় স্পেশাল ফোর্সেসে, মাত্র বছর কয়েক আগে।
সামনে স্পেশাল ফোর্সেসকে আনা হবে অ্যাসোকোমের অধীনে- এক পরম সক্রিয় সুগঠিত স্পেশাল ফোর্সেস কেন্দ্রীয় কম্যান্ড। আর অ্যাসোকোম কাজ করবে সরাসরি বাংলাদেশ সরকারের অধীনে। প্রকৃত ডায়ন্যামিক স্পেশাল ফোর্সেস যুগের যাত্রা শুরু হবে তখনি।
ছবি: প্যারা কমান্ডো ব্যাটেলিয়ান থেকে স্পেশাল ফোর্স হয়ে ওঠার গল্প।
স্কুল অভ স্পেশাল ওঅরফেয়ার এবং ওয়ান প্যারাকমান্ডো ফার্স্ট ডিগ্রি ব্যাটেলিয়ন এই বিশাল স্পেশাল ফোর্সেসে শামিল।
শেষেরটা সরসরি পরিচালিত হয় আর্মি হেডকোয়ার্টারের অধীনে। স্কুল অভ মিলিটারি ইন্টেলিজেন্স তাদের জন্য ইন্টেলিজেন্সের আপগ্রেড প্রোভাইড করে।
গোপনীয়তা: বাড়তি গোপনীয়তার প্রয়োজন পড়ে না, যেহেতু তারা এমনিতেই আর্মির সবচে বিশেষায়িত বাহিনী। আর তাদের কখনো দেশের ভিতর অপারেশনের প্রয়োজন পড়ে না। সব সময় কাটে ট্রেনিঙ ও ফিল্ড প্র্যাক্টিসের উপর।
কাজের ক্ষেত্র: পুরোপুরি সামরিক। প্রতিটা ক্যান্টনমেন্টে, হাই প্রোফাইল অ্যাসল্ট (রাষ্ট্রীয়), নিরন্তর ট্রেনিঙ-ইভালুয়েশন-প্র্যাকটিস-ডেমোনস্ট্রেশন এর উপর ব্যস্ত। সত্যিকার যুদ্ধাবস্থায় সবচে বড় বড় ওয়ান ম্যান বা মাইক্রোটিম অপারেশন্সে তাদের দরকার পড়বে সবচে বেশি।
বিশেষায়িত অস্ত্র: ফর্মেশন কম্যান্ডো দ্র.। আরো কাটিঙ এজ টেকনোলজি আনার চেষ্টা হচ্ছে।
বিশেষ আলোচনায়: বিশ্বকাপ ক্রিকেট, ঢাকা।
ছবি: বিশ্বকাপ ক্রিকেট। শুধু ক্রিকেট নয়, শক্তির ভিন্নমাত্রিক প্রকাশে চমকে দিয়েছিলাম আমরাও।
মিষ্টি গুজব: বাংলাদেশের সেনাবাহিনী পৃথিবীতে সবচে সাহসী এবং বেপরোয়া হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিল, আর এর কম্যান্ডো বাহিনী সেখানেও সবচে এগিয়ে- তারপর এক সময় কম্যান্ডো বাহিনীর চেয়ে এগিয়ে গেল স্পেশাল ফোর্সেস আর আস্তে আস্তে টেকনোলজি ও নতুন ট্যাকটিক্স নিয়ে স্পেশাল ফোর্সেসে নাম লেখাল বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর স্পেশাল ফোর্সেসও।
২.ডিজিএফআই
ছবি: কম্যান্ডো ট্রেনিঙরত ডিজিএফআই'র অপারেটিভ।
ধরন: আউয়ালে আখিরে মাওলা তুই রে তুই! জাহিরে বাতিনে মাওলা তুই!
নিয়োগ: সেনা-নৌ-বিমান বাহিনীর শুধুমাত্র ওই সদস্য, যিনি আগে কোনদিন ডাইরেক্টরেট জেনারেল অভ ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্সে যোগ দেননি।
আকৃতি: খারাপ না। বেশ বড়। গত দশ বছরে মহীরুহের মত বাড়ছে।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এ ধরনের সংস্থা: ডি আই এ হল ভিতরের কাজের দিক দিয়ে, সি আই এ (অ্যামেরিকা) হল বাইরের কাজের দিক দিয়ে আমাদের ডিজিএফআই’র মত, আই এস আই (পাকিস্তান) - এটার আদল অনেক এসেছে আমাদের সংস্থাটায়, র’ (ভারত)- এটার এক্সটার্নাল গড়নের সাথে মিল।
ট্রেনিঙ: পুরোপুরি কম্যান্ডো ট্রেনিঙের পর আছে ইন্টেলিজেন্স ট্রেনিঙ এর আকাশপাতাল ফারাক বিষয়ক অসংখ্য শাখা প্রশাখা যার একটার দেখা পেলে আরেকটার দেখা নাও পাওয়া হতে পারে। কুমিল্লা সহ সারাদেশে ডিজিএফআই'র ট্রেনিঙ ফ্যাসিলিটি ছড়িয়ে আছে।
গঠন ও শুরু: খুব সম্ভব জিয়াউর রহমান এর সময় থেকে।
গোপনীয়তা: পুরোপুরি ছিল, এখনো রয়েছে, কিন্তু অ্যাক্টিভিটি এত বেশি, গোপনীয়তা রাখা সম্ভব হয় না।
কাজের ক্ষেত্র: তিন বাহিনীর অভ্যন্তর, সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তর, সব রাজনৈতিক দল, সব মিডিয়া, বাংলাদেশের সাথে ক্লোজ রিলেশন্সে থাকা বৈদেশিক কার্যক্রম, সারা পৃথিবীর কূটনৈতিক মিশন।
আগে, প্রথমদিকে ডিজিএফআই'র কার্যক্রম ছিল শুধু ফোর্সগুলোর ভিতরে এবং বৈদেশিক মিশনে।
বিশেষ আলোচনায়: এক থেকে এগারো পর্যন্ত গুনে দেখুন, এ লিস্টের বাকি নয়টা ফোর্স বাদ পড়ে যাবে।
মিষ্টি গুজব: ছি ছি কী বলেন! এ কথা শত্রুও বলতে পারবে না।
১. সোয়াডস
ছবি: দ্য ব্রুট। বুনো দানব হিসাবে পরিচিত সোয়াডসের 'ট্রেইনি-আতঙ্ক' এক ট্রেইনার, দক্ষিণ এশিয়ার কোন এক অপ্রকাশিত জায়গায়।
ধরণ: মেরিন সেনা। মেরিন সেনার সুপার স্পেশাল ফোর্সেস। নৌ কমান্ডো।
নিয়োগ: শুধুমাত্র বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও নৌবাহিনী থেকে কোস্টগার্ড এ যাওয়া পার্সোনেল। মাত্র ৭-৮% প্রার্থী টিকে যান, বাকিরা যোগ্য হবার পরও ঝরে পড়েন।
আকৃতি: একটা ব্রিগেড আকারে স্বীকৃতি দেয়া হয়। সত্যিকার সংখ্যা কখনো বলা হয় না। অথচ ভারত দাবী করে তার অ্যাত্ত বড় নৌবাহিনীতে মাত্র হাজার দুয়েক মারকোস রয়েছে।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এ ধরনের সংস্থা: ইউ এস নেভি সীল ডেল্টা ফোর্স। পাকিস্তানের স্পেশাল সার্ভিস গ্রুপ, নেভি।
ভারতের মেরিন কম্যান্ডোস, মারকোস। তবে বাংলাদেশ এই একটা দিক দিয়ে ভারত ও পাকিস্তানকে উষ্টা মেরেছে- এমনটা বলা হয়।
ট্রেনিঙ: সবচেয়ে সেরা, সবচেয়ে আধুনিক, সবচেয়ে ভয়ঙ্কর, সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ।
ছবি: মার্কিন ট্রেইনারদের সাথে বাংলাদেশের সোয়াডস প্রাইভেটরা।
সোয়াডস এর ট্রেইনাররা সারা পৃথিবীতে ভাতৃসুলভ ট্রেইনিঙ দিয়ে বেড়ান।
তাদের এককথায় পরিচয়- দ্য ব্রুট। বুনো।
এর ইক্যুইপমেন্টের সবকিছুই মার্কিন ন্যাভাল ব্ল্যাক অপস ফোর্সের (সিল ডেল্টা ফোর্স) সমমানের ও তাদের সাথে কোলাবরেশনে গঠিত।
গঠন ও শুরু: ভারত তাদের সমুদ্রগামী মেরিনফোর্স তৈরি করে, মারকোস নাম দিয়ে। সবচে উন্নত ট্রেনিঙ ও বন্দোবস্ত রাখে তাদের জন্য।
বার্মার সমুদ্রসীমাও বেশি, তাদের জলযানও বেশি। সুতরাং, সেই পুরনো কথা, তোমার টাকা নেই তো হয়েছে কী, ট্রেনিঙ তো নিতে পারো।
গোপনীয়তা: সর্বোচ্চ।
কাজের ক্ষেত্র: কোন অপারেশনের কথা জানা যায় না। শুধু সমুদ্র, শত্রুর নৌবন্দর, নৌবন্দর অকেজো করে দেয়া, বিহাইন্ড দ্য এনিমি লাইন্স, অ্যাম্ফিবিয়াস অ্যাসল্ট।
এমনকি চোরাচালান রোধী ছুচো মেরেও তাদের হাত গন্ধ করা হয় না।
বিশেষায়িত অস্ত্র: মার্কিন ইউডিটি বা সীল এর সমমান। ভারত ও চীনের সমুদ্রাধিপত্য কমানোর জন্য ওরাই এই ব্যবস্থা করেছে।
বিশেষ আলোচনায়: সারা পৃথিবীতে বাংলাদেশের এই একটা ফোর্স সর্ব বিবেচনায় অগ্রণী।
মিষ্টি গুজব:এরশাদ চাচার পতনের আগদিয়ে নাকি নাজারা দেখানো হয়েছিল চট্টগ্রাম মহানগরীতে।
তবে তখনো এই ভয়ানক ন্যাভাল ফোর্সটি সম্ভবত নৌ কমান্ডো আকারেই ছিল।
কানাঘুষা শোনা যাচ্ছে, চট্টগ্রামে কর্ণফুলীর উপর গড়ে উঠছে শতকোটি টাকা ব্যয়ে কাটিঙএজ সোয়াডস সেন্টার।
সুতরাং বার্মা হও আর ভারত হও, নজর দিও না, আমরা খেজুর কাঁটা দিয়ে ডাকাতের চোখ উপড়াতে ওস্তাদ। মনে থাকে জানি!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।