নিপুণ লেখনীর শানিত গর্জন / লিখব আজ নিপুণ কথন "তুমি রবে নীরবে..."
ক্লোজ আপ ওয়ান তারকা আবিদ শাহরিয়ার চলে গেছেন এক বছর হল । আজ তাঁর প্রথম মৃত্যুদিবস । গতবছর এই দিনে বন্ধুরা মিলে কক্সবাজারে বেড়াতে গিয়ে হঠাৎ করেই মৃত্যুর কাছে ধরা দেন এই জনপ্রিয় উদীয়মান সঙ্গীতশিল্পী । অসম্ভব রকমের প্রতিভাবান একজন মানুষকে হারিয়ে আমরা আজও শোকে মাতম করি । তাঁর এই অকাল প্রস্থান কিছুতেই মেনে নেয়া যায়না, মেনে নেবার নয় ।
আবিদ ভাইকে নিয়ে আমার একটি লেখা গতবার বেশ আলোচনায় এসেছিল । সেই লেখাটি আজ আবিদ ভাইয়ের স্মৃতির উদ্দেশ্যে আমি আবারও শেয়ার করতে চাই । আবিদ ভাইয়ের আত্মার শান্তি কামনা করছি, সৃষ্টিকর্তা যেন তাঁকে জান্নাতবাসী করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারকে এই শোক সহ্য করার ক্ষমতা প্রদান করেন- এই কামনা করছি ।
||গতবারের লেখাঃ ||
এ কেমন ঝরে পড়া ? এ কেমন চলে যাওয়া?? কাউকে কিছু না বলে, কিছু বুঝতে না দিয়ে, এটা কেমন বিদায় ? সবাইকে কাঁদিয়ে এভাবে যদি যেতেই হবে তাহলে কেন এত কাছে টেনেছিলেন একদিন? কেন ভালবেসে "ভাই" বলে ডেকেছিলেন??
হায়রে মানুষ! আজ আছে তো কাল নেই । ভাল মানুষগুলোই কেন আগে আগে যায় বুঝিনা ; ব্যাপারটা এমন যেন মনে হয় এটাই নিয়ম ! যারা চলে গেলে হাজার হাজার মানুষ কাঁদবে, তাদেরকেই কেন বারবার অসময়ে চলে যেতে হয় আমার বোধগম্য হয়না।
তবে কি ভাল মানুষগুলোর পৃথিবীতে আসাটাই ভুল? অসময়ে চলে গিয়ে কাছের মানুষগুলোকে কাঁদানোর চেয়ে কি না আসাটাই উত্তম নয়?
এই তো সেদিন আমার বাবাকে নিয়ে বাংলা একাডেমীর উপ-পরিচালক তপন বাগচী কাকুর একটা স্মরণিকা বের হল প্রথম আলো পত্রিকায়(২৩/৭/২০১১ তারিখে ), লেখাটা শেয়ার করে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে ফেসবুক-এ একটা নোট লিখলাম; আরও অনেকের পাশাপাশি সেখানে মন্তব্য দিলেন ক্লোজআপ ওয়ান-খ্যাত আবিদ ভাই (Click This Link ) । তার মন্তব্যটি পরে আমি আমার বাবাকে নিয়ে আরও বেশি গর্ব অনুভব করলাম, সাথে সাথে আবিদ ভাইকেও কৃতজ্ঞতা জানালাম । হায়রে, কে জানত এটাই হবে আবিদ ভাইএর সাথে আমার শেষ কথা ? কে জানত ঠিক এক সপ্তাহ পর নিজেই তিনি খবরের কাগজের শিরোনাম হবেন অকাল মৃত্যুর জন্য??
একই বিশ্ববিদ্যালয় এ পরেছি; আবিদ ভাই গতবার মাস্টার্স শেষ করে ‘মাত্রা’-এ ঢুকলেন, আর আমি এখনও পরছি। এত অমায়িক একজন মানুষ ছিলেন যে মনে পরলে চোখে পানি চলে আসে। ক্লোজআপ ওয়ান এ যখন গাইতেন, সমস্ত মন-প্রাণ উজার করে গাইতেন।
বিশেষ করে রবীন্দ্রসংগীতে তার জুরি মেলা ভার ছিল। আমি তখনও ছোট, ভাইয়ার সাথে পরিচয় ছিলোনা। টিভিতে ভাইয়ার গলার সাথে গলা মিলিয়ে গাইতাম। ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে সেই মানুষটি আর মধুর গলায় গান গাইবেনা! ফেসবুক এ আর মন্তব্য দেবেনা! দেখা হলে কুশল জানতে চাইবেনা!!
কী নিষ্ঠুর এ মৃত্যু । মুহূর্তের মাঝে কেড়ে নেয় তাজা প্রাণ।
আজ আমার মনে পরে যায় সেই দিনটাকে, যা আমি কখনই ভুলে যেতে পারবনা। হঠাৎ মৃত্যু এসে কেড়ে নিয়ে গিয়েছিল আমার বাবার তাজা প্রাণ , আমার সবকিছু । ওইদিন বাবাও জানতনা কি হতে যাচ্ছে আজ তাঁর ! গতকাল আবিদ ভাইয়েরও এমনটিই হল। ফেসবুক এ স্ট্যাটাস দিলেন –“passing a wndrfl tym with MATTRA at cox'sbazar..... ”. এটাই মনে হয় তার কাল হল। আর ফিরে আসা হলনা সাগর থেকে।
আরও দুই বন্ধুর সাথে লাশ হয়ে ফিরলেন আমাদের প্রিয় আবিদ ভাই । খবরটা প্রথম পেলাম সাজিদ ভাইর লিঙ্ক দেখে। মনটা ভেঙ্গে গেল। পেপার ঘেঁটে নিশ্চিত হলাম...আর কি, সব শেষ! জীবন খেয়া ভাসিয়েছেন আবিদ ভাই...পরপারের পানে ...
মন চাইল ভাইয়ার ফেসবুক প্রোফাইলটা (Abid Shariar )একটু ঘুরে আসি, গিয়ে দেখলাম সেই স্ট্যাটাস...হঠাৎ মনে কি জানি হল। poke দিয়ে বসলাম ভাইয়ার id তে ।
কে জানে হয়ত আবিদ ভাই বেঁচে আছেন...হয়ত এখনি খোঁচার জবাব দেবেন...সারা দেবেন আমাদের আবিদ ভাই... আবার হেঁসে উঠবেন...মধুর কণ্ঠে গান ধরবেন... হয়ত... ... ...
basic info :
ABID SHARIAR
B.B.A.. , M.B.A. (Marketing, DU)
01716144197
এই লেখাটি লেখার তারিখ : 30/7/2011
সময়ঃ ভোর ৫ টা । (একটুও ঘুমাতে পারিনি সে রাতে)
লিখেছেনঃ দেবু ফরিদী (DEV D NIPUN ) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।