......... মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী,
এক বুক হতাশা তার চেয়েও বড় এক বুক আশা নিয়ে আপনার উদ্দ্যেশ্যে লিখতে বসেছি। জানি না আমার এই হতাশা আপনার বিব্রত মনকে বুয়েট সমস্যার সমাধানে ব্রত করতে পারবে কিনা।
সেদিন আপনার একটা ছবি দেখলাম। আপনি আপনার ছাত্রাবাস পুড়ে যেতে দেখে অঝোর ধারায় কাঁদছেন। ছবিটা আমাদের কষ্ট দিয়েছে, আপনার কান্না আমাদের ব্যথিত করেছে।
মাননীয় মন্ত্রী, আমাদের এই বুয়েটও আজ অন্যায়ের কালো থাবায় পুড়ে যেতে বসেছে। আমরা আমাদের এই প্রাণপ্রিয় প্রতিষ্ঠানটির পুড়ে যাওয়া দেখে বারবার কেঁদে উঠছি। আপনার ছাত্রাবাসটি হয়ত আপনার সামনে পুড়ে যায়নি, কিন্তু আমাদের এই প্রতিষ্ঠানটি আমাদের সামনে পুড়ে যেতে শুরু করেছে। আমরা তাই কেঁদে কেঁদে পুড়ানোর এই মরণ আগুন থামানোর প্রাণপণ চেষ্টা করে যাচ্ছি। কিন্তু ভাবতে অবাক লাগে আমাদের এই চেষ্টা আপনাকে বিব্রত করে দিচ্ছে।
আপনার কান্নায় আমাদের কান্না পাচ্ছিল,কিন্তু আমাদের কান্না আপনাকে বিব্রত করে দিচ্ছে, এর চেয়ে হতাশা আমাদের জন্য আর কী হতে পারে!
আমাদের সাথে আছেন আমাদের শিক্ষক। একবার কি ভেবে দেখছেন কেন ৪১৯ জনের মাঝে ৩৫৭ জন শিক্ষক একসাথে পদত্যাগ করতে চাচ্ছেন? কেন এতগুলো ডিন, বিভাগীয় প্রধান একসাথে পদত্যাগ করল? মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়, পদত্যাগ যাঁরা করছেন তাঁরা এ দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান, এ দেশের সবচেয়ে মেধাবী মানুষদের মাঝে তাঁদের অবস্থান। আপনি কি একটু মূল্য দিয়েছেন এতগুলো মেধাবী মানুষের মতামতকে? এতগুলো মেধাবী মানুষ যে বিষয়টায় এক বিন্দুতে এসে মিলেছে সেই বিন্দুটা যে কত শক্তিশালী তা কি একবার বুঝার চেষ্টা করেছেন? নাকি বুঝার চেষ্টা করতে যেয়েই বিব্রত হয়ে পড়েছেন?
মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়, আমরা অনেক স্বপ্ন নিয়ে বুয়েটে ভর্তি হয়েছিলাম। অনেক স্বপ্ন দেখেছিলেন আমাদের বাবা মা। আপনি হয়ত জানেন না কত বাবা মা দূরের ঐ গ্রামে পথ চেয়ে বসে আছে কবে তাঁর ছেলে বা মেয়েটি ইঞ্জিনিয়ার হয়ে উপার্জন শুরু করবে।
আপনি হয়ত জানেন না আমাদের আব্বু আম্মু খবরে বুয়েটের এই অবস্থা দেখে কতটা হতাশ হয়, কতবার ফোন করে আমাদের বলে বাবা, ঝামেলায় যাস না।
আপনার কাছে আকুল আবেদন, দয়া করে বিব্রত হবেন না, আমাদের প্রাণের প্রতিষ্ঠানটিকে মেরে ফেলবেন না, আমাদের স্বপ্ন ভঙ্গ করবেন না, জানেন তো স্বপ্নকে হত্যা করা মানে মানুষটাকেই হত্যা করে ফেলা!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।