“Forget injuries, never forget kindness.” - Confucius ২০০৪ সালে ইয়াসির আরাফাতের পরলোক গমনের পর, তাঁর মৃত্যুর নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠে ছিল। তাঁকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে এমন অভিযোগ উঠেছে বারবার। আরাফাতের স্ত্রীর অনুরধে অতি সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডের একটি রেডিয়েশন ফিজিক্স ল্যাবে আরাফাতের চুল, টুথব্রাশ ও ব্যবহ্নত কাপড় থেকে উচ্চমাত্রার পোলনিয়াম-২১০ (polonium) এর উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।
তাহলে এই পোলনিয়াম-২১০ (polonium) কি?
পোলনিয়াম-২১০(polonium) একটি উচ্চমাত্রার রেডিওএক্টিভ কেমিক্যাল পদার্থ যা হাইড্রোজেন সায়ানাইড(HCN) থেকে প্রায় ২,৫০,০০০ গুন বেশী বিষাক্ত ও ক্ষতিকারক। উল্লেখ্য যে, এই হাইড্রোজেন সায়ানাইড রাসায়নিক অস্ত্রে ব্যবহার করা হত (‘ব্লাড এজেন্ট’ নামে পরিচিত) যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাজি জার্মানরা ব্যবহার করেছিল ইহুদিদের বিরুদ্ধে।
এক মাইক্রোগ্রাম সম পোলনিয়াম-২১০ থেকে যে রেডিয়েশন হবে (১ গ্রাম এর ১০লক্ষ ভাগের এক ভাগ, যা একটি সুচাগ্র সমান ধূলিকণার চেয়ে বড় নয়) তা একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষকে মেরে ফেলার জন্য যথেষ্ট।
গুপ্ত হত্যার জন্য পোলনিয়াম-২১০ এর ব্যবহারের রেকর্ড আরও রয়েছে। ২০০৬ সালে লন্ডনে রাশিয়ার এক প্রাক্তন কেজিবি স্পাই আলেক্সজান্ডার লিট্ভিনেন্কভ’কে চায়ের সাথে পোলনিয়াম-২১০ খাইয়ে হত্যা করা হয়েছিল।
প্রায় তিন বছর পশ্চিম তীরের নিজ কার্যালয়ে ইসরায়েলী বাহিনী দ্বারা অন্তরীন থাকা অবস্থায় ২০০৪ সালের নভেম্বরের একদিন রাতের খাবারের সময় তিনি হঠাত অসুস্থ হয়ে পরেন। ঐ রাতের খাবারে লবণের সাথে পোলনিয়াম-২১০ মিশিয়ে দেয়া হয়েছিল বলে ধারনা করা হয়।
এর পরপরই তিনি অসুস্থ হয়ে পরেন ও তাঁকে হেলিকপ্টারে করে ফ্রান্সের একটি সামরিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং মাত্র ৩ সপ্তাহের মাথায় তিনি মারা যান। মৃত্যুর কারণ হিসেবে ডাক্তাররা ‘রহস্যজনক ব্লাড ডিসঅর্ডার (mystery blood disorder)’ উল্লেখ করেন। সুহা আরাফাত (আরাফাতের স্ত্রী), তাঁর মৃতদেহের ময়নাতদন্তের জন্য অনুরোধ করলেও তা গৃহীত হয়নি। ধারনা করা হচ্ছে, আরাফাতকে পোলনিয়াম-২১০ প্রয়োগে হত্যা করার পরিকল্পনা ইসরায়েলীদের হলেও এর বাস্তবায়ন হয়েছে আরাফাতের ঘনিষ্ঠ প্যালেস্টাইনিদের মাধ্যমেই।
অতি সম্প্রতি, রামাল্লায় সমাধিস্থ আরাফাতের মরদেহ কবর থেকে উঠিয়ে অটপ্সি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাঁর পরিবার।
হয়ত এর মাধ্যমে নিশ্চিত ভাবে জানা যাবে যে তিনি গুপ্ত হত্যার শিকার, কিন্তু বিতর্কিতই থেকে যাবে কে এর জন্য দায়ী।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।