দুঃখটাকে দিলাম ছুটি, আসবে না ফিরে
শফিউল্লাহ সাহেব স্বল্প আয়ের একজন চাকুরে। ঢাকা শহরে ১২ হাজার টাকা মাইনেতে পাঁচজনের একটি পরিবার কোন মতে চলতে পারে, কখনও কখনও পারে না। হয়ত সেভাবেই চলছে তাঁর সংসার।
তাঁর জন্য আজ বিশেষ আনন্দের দিন। অফিসে তাঁকে ডেকে বস ৫০০০ টাকা বোনাস দিলেন বিশেষ একটা কাজে পারদর্শীতার জন্য।
ভদ্রলোক টাকাটা পেয়ে খুব খুশী। কল্পনায় তিনি এই টাকা দিয়ে কিভাবে তাঁর সংসারকে খুশী করবেন তার ছবি আঁকছেন। বেশ উৎফুল্ল মন নিয়ে বাড়ী ফিরছেন। পথে এক মহিলার সাথে দেখা হলো, যিনি খুব অসহায়ভাবে তাঁর মৃত্যুপথযাত্রী শিশুকে বাঁচানোর জন্য পথচারীদের পথ আগলে ধরছেন। শফিউল্লাহ সাহেবের খুব দয়া হলো।
তিনি বোনাসের পুরো টাকাটায় দিয়ে দিলেন তাঁকে।
বাসায় পরিবার অধির আগ্রহে তাঁর আগমনের জন্য অপেক্ষা করছে। ছেলেরা বলাবলি করছে বাবা কার জন্য কি নিয়ে আসতে পারেন। স্ত্রীও আশা করে আছেন সংসারের প্রয়োজনীয় কিছু একটা কিনবেন। শফিউল্লাহ সাহেব বাসায় ফিরে আদ্যপান্ত বর্ণনা করে ছেলে এবং বৌয়ের তোপের মুখে পড়লেন।
ছেলেরা ভীষণভাবে মর্মাহত এই ভেবে যে তাঁদের পিতার কোন বুদ্ধি-সুদ্ধিই নেই। কোন রকম চিন্তা ভাবনা ছাড়াই এধরনের বোকামী কেউ করে! দিনব্যাপি ছেলে এবং স্ত্রীর মুহুর্মুহু বর্ষণে কিছুটা পর্যুদস্ত হয়ে গেলেন শফিউল্লাহ সাহেব।
রাতে অলস ভঙ্গিতে টিভিতে খবর দেখছেন। হঠাৎ, সচকিত হলেন চাঞ্চল্যকর একটি খবরে। এক মহিলা তাঁর ছেলেকে মৃত্যু পথযাত্রী বানিয়ে জনগণের সাথে প্রতারণা করার অপরাধে গ্রেফতার হয়েছেন।
খবরে প্রকাশ, ছেলেটি আসলে মারা যাচ্ছিল না। আর যাই কোথায়? এবার শফিউল্লাহ সাহেবের উপর দিয়ে সিডর বয়ে যাচ্ছে। ভীষণ চাপের মুখে শফিউল্লাহ সাহেবের কন্ঠ হঠাৎ সচল হলে ক্ষণিকের জন্য সবাই থেমে গেল। তিনি বলছেন, আমার দেখা সবচেয়ে আনন্দের সংবাদ এটি। বড় ছেলে চিৎকার করে বলে উঠল, তুমি এখনও বুঝতেছ না যে তুমি ধোঁকাবাজির স্বীকার হয়েছ! তোমার টাকাগুলোকে ছিনতাই করা হয়েছে! তুমি একটা আস্ত বোকা!..... পিতা তখন বললেন, আমি তো এই জন্যই ঐ মহিলাকে টাকাটা দিয়েছি যাতে শিশুটি বেঁচে যায়।
যেহেতু শিশুটি মারা যাচ্ছে না, সেটা কি আমার জন্য সুখের সংবাদ নয়?
................................................
ভাল কাজ সব সময়ই তা ভাল। সেটার জন্য কোন অনুশোচনা থাকতে নেই। আর এটাকেই বলে আত্নবিশ্বাস, সুন্দর চরিত্রের জন্য যা বড়ই প্রয়োজনীয়।
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।