ফিলিস্তিনের প্রয়াত নেতা ইয়াসির আরাফাতকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করা হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছিল। পরীক্ষাগারে কিছু আলামত পরীক্ষা করার পর এ ব্যাপারে প্রমাণও মিলেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে গতকাল মঙ্গলবার আল-জাজিরা ও টেলিগ্রাফে প্রকাশিত খবরে এ তথ্য জানানো হয়।
ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের স্বপ্নদ্রষ্টা মহান নেতা ইয়াসির আরাফাত ২০০৪ সালে ফ্রান্সের সামরিক হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর এ মৃত্যু নিয়ে তখন থেকে গুঞ্জন চলে আসছে।
অনেকের সন্দেহ, তাঁকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করা হয়। এই সন্দেহের জের ধরে সুইজারল্যান্ডের পরীক্ষাগারে আরাফাতের ব্যবহূত কিছু জিনিস নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। ফলাফলে পলোনিয়াম বলে একধরনের বিষাক্ত পদার্থের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে বলে গবেষকদের ভাষ্য।
সুইজারল্যান্ডের লসান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব রেডিয়েশনের প্রধান ফ্রাঙ্কোয়েস বোচাড দাবি করেছেন, আরাফাতের ব্যবহার করা ওই সময়কার জিনিসপত্র থেকে সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাঁরা এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে তাঁকে পলোনিয়াম বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘তাঁর ব্যবহার করা জিনিসপত্রে আমরা পলোনিয়াম পেয়েছি।
’
রাশিয়ার সাবেক গোয়েন্দা ও পরে দেশটির তীব্র সমালোচক বনে যাওয়া আলেকসান্দর লিতভেনেনকোকে হত্যায় পলোনিয়াম ব্যবহার করা হয়েছিল। লন্ডনের একটি হোটেলে তীব্র মাত্রার পলোনিয়ামযুক্ত চা-পানের পর তিনি মারা যান।
স্বাধীন ফিলিস্তিনের দাবিতে চার দশক সংগ্রাম চালিয়ে ইয়াসির আরাফাত ২০০৪ সালের ১১ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর আগে তিনি বেশ কয়েক সপ্তাহ ফ্রান্সের হাসপাতালে চিকিত্সাধীন ছিলেন। ফ্রান্সের কর্মকর্তারা তখন ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অজুহাত দেখিয়ে নোবেজয়ী এই নেতার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ বা তাঁর শারীরিক অবস্থার কোনো তথ্য প্রকাশ করেননি।
এতে তাঁর অসুস্থতার বিষয়টি নিয়ে তখন অনেক গুজব রটে—নানাজন নানা রকম কথা ছড়ায়।
৭৫ বছর বয়সী ইয়াসির আরাফাতের মৃত্যুর পর ফিলিস্তিনের কর্মকর্তারা দাবি করে আসছিলেন, দীর্ঘদিনের শত্রু ইসরায়েল তাঁকে বিষ প্রয়োগে হত্যা করেছে। তবে ২০০৫ সালে ফিলিস্তিনের এক তদন্তে বলা হয়, ক্যানসার, এইডস বা বিষক্রিয়ায় আরাফাতের মৃত্যু হতে পারে। কিন্তু এসব কারণের পক্ষে জোরাল কোনো বক্তব্য তুলে ধরা সম্ভব হয়নি।
ফ্রাঙ্কোয়েস বোচাড বলেন, আরাফাতকে পলোনিয়াম বিষ প্রয়োগে হত্যা করা হয়েছে—বিষয়টি নিশ্চিত করতে আরাফাতের দেহাবশেষের নমুনা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা দরকার।
আরাফাতের স্ত্রী সুহা আরাফাত যদি তাঁর স্বামীর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে চান, তাহলে কবর থেকে তাঁর দেহাবশেষের নমুনা প্রতিষ্ঠানটির কাছে দেওয়া উচিত বলে তিনি মন্তব্য করেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।