১৯৯১ সাল সবেমাত্র স্বৈরাচার নিপাতনে সিদ্ধ হয়ে ভুপাতিত। অরাজকতার ভিন্ন রুপ দেখার জন্য জাতি তৈরি হচ্ছে। এই ট্রানজিশন পিরিয়ডটা সবাই নিজেকে গোছগাছ করতেই ব্যস্ত। ক্ষমতায় যারা এতদিন ছিল তারা বুঝতে পারতেছেনা নতুন করে সরকারি দলে যোগ দেবে কি দেবে না। আবার সরকারি দলের লোকেরা ভাবছে ওদেরকে এখনি ঘাটানো ঠিক হবেনা।
এই ভাবতে ভাবতে একদিন নীলক্ষেতে চাঁদা তোলা নিয়ে মারামারি এবং তা পরের দিনের সংবাদের শিরোনাম। হতা-হতের সংখ্যাটা গুরুত্বপূর্ণ নয় কারন যে মারা গেছে সে দুই দলের কেউ নন। সে ফুটপাতের দোকানী তাই গুলাগুলির মাঝে পড়ে জীবন নাশ। চাঁদা কাকে দিবে? কত দিবে? তা নিয়ে দোকান-মালিকদের মাথা ঘামাতে হয়না কারন চাঁদাবাজদের কাছে তাদের যেতে হয়না চাদাবাজরাই নিজ দায়িত্বেই লোক পাঠায়। কিন্তু কতজনকে দিবে এই নিয়েই দুই গ্রুপের মারামারিতে বলি এক গরীব দোকানি।
সবাই ভেতরে ভেতরে ফুসছে কিন্তু কিছু বলতে পারছেনা অস্ত্রের ভয়ে।
সময়টা ২০০২ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত কিন্তু জনগণ শোষণের শিকার আগের মতই। শুধু ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারছে এইটুকুই পার্থক্য এই এক যুগে পরে। প্রসাশন সুশাসনে নয় শোষণে ব্যস্ত। ক্ষমতা কুক্ষিগত হচ্ছে দিনকে দিন।
দুর্নীতি, কমিশনখোরে দেশটা ভরে উঠেছে। নেশার বিষাক্ত ছোবলে যুবকরা দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে অপরাধপ্রবন হচ্ছে দিনকে দিন। নীলক্ষেতে ব্যবসায়ীরা এখন আগের মত যাকে তাকে চাঁদা দেয়না। কোন রংবাজ, মাস্তান চাইলেই টাকা পায়না তাকে অধিক অধিকতর যোগ্য হতে হয়। এখন এখানে, তথা সারা দেশেই মালিক সমিতি কার্জকর হয়ে উঠেছে, প্রচুর টাকা খরচ করে সবাই এখানে সদস্য পদ নেয় কেননা দোকানের মালিকেরা প্রচুর টাকা চাঁদা দেয়।
চাঁদাবাজির নতুন দিগন্ত উন্মোচিত।
বাইরে থেকে উঠতি কোন চাঁদাবাজ আসা মাত্র তাকে ঠেঙ্গানো হয়। গড়ে উঠেছে লাঠি-বাঁশি সমিতি, লড়াই চলে সমানে সমানে। বাঁশির সুরে বেদের মেয়ে জোছনা না আসলেও দোকানের মালিক কর্মচারি লাঠি হাতে বেড়িয়ে এসে মারামারি করে উঠতি মাস্তান-চাঁদাবাজদের সাথে। হার-জিতেই নির্ধারিত হয় চাঁদার পাবে কি পাবেনা।
মাঝে মাঝেই দোকান পুড়িয়ে দেয়া, ফাকা গুলি করা, দুই পক্ষেরই পিটুনিতে আহত, গুরুতর আহত হয়। এখন নিরীহ দোকানিরা খুব কমই নিহত হয় ।
২০১১ এখন সময়টা চলছে গতদশকের ধারাবাহিকতায়। এখন হয়তো বোকারা বালিশের ভেতর টাকা রাখেনা, শেয়ারবাজারেও টাকা রাখেনা সবই বিদেশে পাচার করে। গাড়িতে করেও লাখ-লাখ টাকা পাচার হয়।
এখনও সরকারিদল-বিরোধীদলের চোর-পুলিশ খেলা চলে। তবে এখন আর নীলক্ষেতে চাঁদাবাজরা সুবিধা করতে পারেনা। নিয়মিত মার খেয়ে ফেরত আসে। মারাও যায় চাদাবাজদেরই কেউ কেউ। হাত-পা ভেঙে হাসপাতালে পরে থাকে দীর্ঘদিন।
দোকানমালিক-কর্মচারীরা এখন সংঘবদ্ধ। তারা অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে লড়াই করে যাচ্ছে। নিজেদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা সরকারে মুখপেক্ষী না হয়ে নিজেদের জন্য নিজেরা এই মন্ত্রে লাঠি-বাঁশির ব্যবহার করেই চলছে।
কথায় আছে দশের লাঠি একে বোঝা। সবই সম্ভবপর হবে যদি একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করে চলি।
প্রয়োজনে বিরোধীদলের কাছে বাঁশি আর সরকারীদলের কাছে লাঠি দিয়েই সম্ভব দেশকে ধসের হাত থেকে বাঁচাতে হবে।
যেমনঃ
--যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করা
--নিজেদের টাকায় পদ্মাসেতু করা
--শেয়ারবাজার সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রন করা
--পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন করা ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।