আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অভিজ্ঞান শকুন্তলম

রাজা দুস্মন্ত মৃগয়া করতে এসে কণ্ব মুনির তপবনে প্রবেশ করলেন। সেখানে গাছের গরায় জল সেচন রত অবস্থায় কণ্ব মুনির পালিতা কন্যা শকুন্তলা কে দেখে রাজা মুগ্ধ হয়ে গেলেন। বল্কল পরিহিতা, পুস্পস্তবকে সজ্জিতা শকুন্তলার সহজ সরল রূপ তার হৃদয় আলোড়িত করে তুল্ল। বাকপটুতায় শকুন্তলার মন জয় করে তাকে গান্ধর্ব মতে বিবাহ করলেন দুস্মন্ত। বন থেকে চলে আসবার সময় রাজা তার আংটি শকুন্তলাকে সৃতি চিনহ স্বরূপ দিয়ে গেলেন।

একদিন শকুন্তলা তপবনে বসে স্বামী দুস্মন্তের কথা চিন্তা করছেন, এমন সময় সেখানে এলেন দুর্বাসা মুনি। শকুন্তলা নিজের চিন্তায় এতই বিভর হয়ে ছিলেন যে মুনির আবির্ভাব টের পেলেন না। দুর্বাসা ছিলেন ভীষণ রাগী। তিনি চটে গিয়ে শাপ দিলেন, যার কথা ভাবতে গিয়ে তুমি আমায় অপমান করলে সে তোমাকে একেবারে ভুলে যাবে। মুনির অভশাপে রাজা শকুন্তলার কথা একেবারে ভুলে গেলেন।

কণ্ব মুনি যখন জানতে পারলেন যে শকুন্তলার সাথে রাজার বিবাহ হয়েছে তখন তিনি কন্যাকে পতি গৃহে পাঠাবার বাবস্থা করলেন। শকুন্তলার বিরহে প্রকৃতির ও যেন অশ্রু ঝরছে। আকাশে চাঁদ ডুবে গেছে, সরবরে পদ্ম চোখ খুলছে না। শুধু তাদের মনের পাতায় সৃতি টুকু রয়েছে। বাংলা করে বললে, “ মৃগের খসি পড়ে মুখের তৃণ, ময়ূর নাচে না যে আর, খসিয়া পড়ে পাতা লতিকা হতে যেন সে আখি জলধার।

“ কণ্ব শকুন্তলার আসন্ন বিদায় কালে ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলছেন-“কি আশ্চর্য, আমই বনবাসী তপসসি,তাও শকুন্তলার বিয়োগ বেথার চিন্তায় আমার মন ভারাক্রান্ত, কণ্ঠ রুদ্ধ, দৃষ্টি অশ্রু ভারে বেথিত। না জানি এমন অবস্থায় গৃহীদের কতই না দুঃখ হয়!” তারপরই ফের কন্যার শুভ চিন্তায় মঙ্গল কামনা করে বলছেন- “ মাঝে মাঝে পদ্ম বনে পথ হক তবে মনহর, ছায়া স্নিগ্ধ তরু রাজি ঢেকে দিক তিব্র রবিকর। হক তব পদ ধুলি অতি ম্রিদু পুষ্প ধুলি নিভ, হক বায়ু অনুকুল, শান্তিময় পন্থা,হক শিব। “ আবার কন্যা পতি গৃহে গিয়ে জাতে সু গৃহিণী হতে পারে তার জন্য ও সস্নেহ উপদেশ দিচ্ছেন- “সেবা করো গুরুজনে, সপত্নিরে যেন সখি সম, অপরাধী পতি পড়ে, রোষ ভরে হইয়ো না নির্মম। পরিজনে দয়া রেখো, সউভাজ্ঞে হইও না আত্মহারা, গৃহিণীর এই ধর্ম,- কুলনাশি অন্যরূপ যার।

“ জলে স্নান করতে গিয়ে রাজার দেয়া স্মরণ চিনহ সেই আংটিটি গেলো হারিয়ে। দুরবাসার অভিশাপ ফলল। শকুন্তলা আসলে ছিল স্বর্গের অপ্সরি মেনকার কন্যা। রাজা দুস্মন্ত রাজ সভায় বসে শকুন্তলা কে চিনতে পারলেন না, কোন দিন দেখেছেন বলেও স্বীকার করলেন না। মর্মাহত কন্যা এবার মা মেনকার আশ্রয় নিলেন।

কিছুকাল পরে এক জেলে মাছ ধরতে গিয়ে মাছের পেতে একটা আংটি পেলো। এ সেই শকুন্তলা কে দেয়া আংতি-মাছ টা গিলে ফেলেছিল। নগরপাল রা জেলের কাছে রাজার আংটি দেখে তাকে চোর বলে রাজার কাছে ধরে নিয়ে এলো। এতদিন পরে সেই অভিজ্ঞান আংটিটি দেখে দুস্মন্তর সৃতি ফিরে এলো, কিন্তু শকুন্তলা তখন কোথায়??? (চলবে) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।