মহান রাব্বুল আলামীন প্রত্যেক জাতির হিদায়াতের জন্য একজন পথপ্রদর্শক প্রেরণ করেছেন। নির্দিষ্ট শরীয়ত দিয়ে। কখনো কোন জাতির জন্য। কখনো কোন সময়ের জন্য। সেই জাতি ধ্বংস হয়ে যাওয়া ও নির্দিষ্ট সময় অতিক্রান্তের পর সেই শরীয়তও রহিত হয়ে যায়।
যেহেতু আল্লাহ তাআলার ইচ্ছেই নয় উক্ত ধর্মকে চিরদিন টিকিয়ে রাখা, তাই সেটাকে সংরক্ষণ করার দায়িত্ব্ও তিনি নেননি। কিন্তু সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হযরত মুহাম্মদ সা. এর শরীয়ত যেহেতু কিয়ামত পর্যন্ত মানুষের জন্য কার্যকর। তাই এটিকে কিয়ামত পর্যন্ত অক্ষুন্ন রাখাও আবশ্যক। এ জন্যই হযরত মুহাম্মদ সা. এর উপর আনীত শরীয়তের মূল ভিত্তি পবিত্র কুরআনকে সংরক্ষণের দায়িত্বও মহান রাব্বুল আলামীন নিজেই নিয়েছেন। ঘোষিত হয়েছে- {إِنَّا نَحْنُ نَزَّلْنَا الذِّكْرَ وَإِنَّا لَهُ لَحَافِظُونَ} [الحِجر : 9]
অর্থাৎ নিশ্চয় আমি কুরআন অবতীর্ণ করেছি আর আমিই এর রক্ষক।
{সূরা হিজর-৯}এ কারণেই কুরআন অবতীর্ণ হবার পর সাড়ে চৌদ্দশত বছর বিগত হয়ে গেলেও পবিত্র কুরআনের একটি নুকতা বা জের-জবরও কেউ পরিবর্তন বা পরিবর্ধন করতে পারেনি। যে ভাষায় নাজিল হয়েছিল,যে পদ্ধতিতে নাজিল হয়েছিল,তা অবিকৃত অবস্থায় আজো আমাদের কাছে রয়েছে। গোটা পৃথিবীব্যাপী কোটি কোটি হাফেজের সিনায় পবিত্র কুরআনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অবিকৃত অবস্থায় সংরক্ষিত আছে। কুরআনের অগণিত কপি হুবহু আরবী ভাষায় অবিকৃত অবস্থায় বিদ্যমান রয়েছে। কিন্তু অন্য নবীদের দ্বীনে শরীয়ত যেহেতু চিরস্থায়ী নয়।
তাই তাদের ধর্মগ্রন্থও অবিকৃত রাখার দায়িত্ব আল্লাহ তাআলা নেননি। ফলে সেগুলি বিকৃত হতে হতে মূল কিতাবই হারিয়ে গেছে। বাইবেলের একজন হাফেজের অস্তিত্ব্ গোটা পৃথিবীর কোথাও নেই। তদুপরি যে ভাষায় নাজিল হয়েছিল তার মূল কপিও আজ নেই। যা আছে সবই অনুবাদ।
বাইবেল পরিচিতি
বাইবেল [bible] গ্রীক ভাষার শব্দ। এর অর্থ গ্রন্থ। দি হোলি বাইবেল। [the holly bible] অর্থ পবিত্র গ্রন্থ। বাইবেলে দু’টি অংশ আছে।
একটিকে ওল্ড টেষ্টামেন্ট [Old testament] বাংলায় “পুরাতন নিয়ম”। এতে তাওরাতের ৫টি পুস্তকসহ মোট ৩৯টি পুস্তক রয়েছে। দ্বিতীয় অংশটিকে ইংরেজীতে নিউ টেষ্টামেন্ট [New testament] বাংলায় “নতুন নিয়ম” বলা হয়। এ অংশে চার ইঞ্জিলসহ মোট ২৭টি পুস্তক রয়েছে। এই ৬৬টি গ্রন্থের সমষ্টির নাম হল বাইবেল।
যা বাংলাদেশ “বাইবেল সোসাইটি” কর্তৃক পবিত্র বাইবেল এবং কিতাবুল মোকাদ্দাস নামে বাংলা ভাষায় অনুদিত ও মুদ্রিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, খৃষ্টানদের দু’টি প্রধান দল আছে। ক্যাথলিক ও প্রটেষ্ট্যান্ট। আর উল্লেখিত সংখ্যাটি প্রটেষ্ট্যান্ট খৃষ্টানদের বাইবেল অনুসারে।
এই ২৭ টি গ্রন্থের ১.মথি { matthew} ২.মার্ক (mark)৩. লূক (luke)।
৪. যোহন/ইউহোন্না (jhon) এই ৪ টিকে বাংলায় সুখবর বা সুসমাচার, ইংরেজীতে Gospel উর্দু ও আরবীতে ইঞ্জিল বলা হয়। মূলত গ্রীক “ইংক্লিউন” শব্দটি আরবীতে ইঞ্জিলরূপে ব্যবহৃত। “মথি” মানে মথি লিখিত সুসমাচার,একইভাবে মার্ক, লূক ও ইউহোন্না। এই চারটি পুস্তকই মূলতঃ ইঞ্জিল নামে পরিচিত। যদিও খৃষ্টানগণ ২৭ টি গ্রন্থের সমষ্টিকে ইঞ্জিল বলে থাকে।
কিন্তু সেগুলো আদৌ কুরআনে উল্লিখিত ঈসা আঃ এর উপর নাযিলকৃত ইঞ্জিল নয়। বরং এগুলি তাঁর জীবনীগ্রন্থ মাত্র। যেকোন ব্যক্তি এগুলো পাঠ করলেই সেটা বুঝতে পারবেন। ঈসা আঃ এর উপর নাযিলকৃত ইঞ্জিল যে এগুলো নয় তার বড় প্রমাণ হল, এগুলোতে কিভাবে তাকে গ্রেফতার করা হল। বিচার করা হল,শুলে চড়ানো হল এবং কবর দেয়া হল ইত্যাদি সব বিষয়ের উল্লেখ রয়েছে।
ঈসা আঃ এর উপর নাযিলকৃত মূল ইঞ্জিল কিভাবে, কোথায় হারিয়ে গেছে এর জবাব খৃষ্টান সমাজ আজও পর্যন্ত দিতে পারেনি। তারা শুধু ইঞ্জিল শরীফের শেষে এতটুকু লেখে লিখেছেন যে, খোদাবন্দ ঈসা মসীহের এই দুনিয়াতে বাস করিবার সময়ে ইঞ্জিল শরীফ লেখা হয় নাই (দ্রঃ পৃষ্ঠা-৭২২)
একথা পরিস্কার মনে রাখতে হবে যে,বর্তমান বাইবেলে তওরাত যবূর ও ইঞ্জিল নামে আমরা যে কিতাবগুলো পাচ্ছি তা আদৌ কুরআন হাদীসে উল্লেখিত ও মুসলমানদের নিকট পরিচিত তওরাত, যবুর ও ইঞ্জিল নয়। তওরাত নাজিল হয়েছিল হিব্রু“ ভাষায়, যবুর গ্রীক ভাষায়, আর ইঞ্জিল হল সুরয়ানী বা সেমিটিক ভাষায়। এই কিতাবগুলির মূল বা অনুবাদ কোন কিছুই এখন আর বর্তমানে নেই। ইহুদীদের দাবি, ব্যবিলনের বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়ে হযরত উযায়র আঃ নতুন করে তওরাত সংকলন করেছিলেন।
কিন্তু তাও ছিল হিব্রু“ ভাষায়। সে কপিটিও এখন বিদ্যমান নেই। এখন হিব্রু“ ভাষায় যে তওরাত পাওয়া যায় তা গ্রীক ভাষা থেকে অনূদিত। গ্রীক ভাষায় কে অনুবাদ করলেন? আবার হিব্রু ভাষায় কে ভাষান্তর করলেন? তাদের নামের উল্লেখ কোথাও নেই। নেই কোন হদিসও।
মথি, মার্ক, লূক, যোহন যে সুখবর নামে ঈসা মসীহের জীবনী লিখেছেন, এবং যেগুলো ইঞ্জিল নামে প্রচারিত, সেগুলোরও মূল কপি বা পান্ডুলিপি বিদ্যমান নেই। আছে তার অনুবাদ বা সম্পাদনার পর সম্পাদনাকৃত তরজমা। সেখানেও অনুবাদকের নাম অনুপস্থিত। একই অবস্থা বর্তমান কাল পর্যন্ত সকল অনুবাদের।
১৬১১ সালে বৃটেনের রাজা জেমসের উদ্যোগে সর্ব প্রথম বাইবেলের ইংরেজী অনুবাদ প্রস্তুত ও প্রকাশিত হয়।
তাকে “কিং জেমস সংস্করণ” বলা হয়। পরবর্তীকালের সকল অনুবাদের ভিত্তি এটিই। কিন্তু তাও অক্ষুন্ন থাকেনি। সম্পদনার পর সম্পাদনা করে এতে অনেক পরিবর্তন আনা হয়।
১৮৮১ সালে Revised Version নামে সম্পাদিত একটি ইংরেজী অনুবাদ বাজারে আসে।
মনে করা হয় হয়েছিল এটাই শেষ চেষ্টা। কিন্তু বাস্তবে তা ছিল না। ১৯৫২ সালে আমেরিকার ৩২জন খৃষ্টান গবেষক বাইবেলের পূণঃ সম্পাদনার প্রয়োজন বোধ করেন। এবার “ষ্ট্যান্ডার্ড রিভাইজড ভার্সন” নামে তাঁরা অপর একটি অনুবাদ প্রকাশ করেন। উক্ত অনুবাদে বাইবেলের নতুন ও পুরাতন নিয়ম থেকে ৪১টি পদ বিলুপ্ত করা হয়েছে।
একইভাবে পোপ ৮ম আরবানুসের নির্দেশে সার্কিস হারোনী ১৬২৫ সালে বাইবেলের আরবী একটি মডেল সংস্করণ তৈরীর জন্য হিব্রু,গ্রীক ও আরবী ভাষায় পন্ডিত একদল খৃষ্টান গবেষককে দায়িত্ব দেন। তাঁরা বহু পরিশ্রম করে এটি তৈরী করেন। শুরুতে একটি নাতিদীর্ঘ ভূমিকায় তাঁরা স্বীকার করেছেন যে, প্রাচীন আরবী অনুবাদে, এমনকি হিব্রু ও গ্রীক অনুবাদেও কিছু কিছু ভুল-ত্রুটি রয়ে গেছে। তাই একটি বিশুদ্ধ সংস্করণ তৈরীর জন্য প্রয়াস।
কিন্তু এরপরও যতগুলি আরবী সংস্করণ বেরিয়েছে সেগুলিতেও সংযোজন-বিয়োজন অব্যাহত ছিল এবং আছে।
আমরা কেবল প্রচলিত বাইবেলের বিকৃতির বিষয়টিই উপস্থাপন করব।
খৃষ্টানগণ সম্ভবত মুসলমানদের আপত্তির কারণেই বারবার প্রত্যেক পরবর্তী সংস্করণের অনুবাদে হেরফের ও পরিবর্তন ও পরিবর্ধন সাধন করেছেন। এতে আপত্তি কমেনি বরং আরো বেড়েছে।
বাইবেল বিকৃতির ঐতিহাসিক দলিল
হযরত মুসা আঃ তাঁর ইন্তিকালের পূর্বে তাওরাত শরীফকে বনী ইসরাঈলের প্রধান ব্যক্তিদের হাতে তুলে দিয়ে প্রতি সাত বছর পর পর সকলের সামনে তা পাঠ করে শোনানোর নির্দেশ দিয়ে গিয়েছিলেন। {দ্বিতীয় বিবরণ-৩১.২৬} কিছুকাল পর্যন্ত তারা সেই নির্দেশমত কাজ করে, এরপর তাদের অবস্থার পরিবর্তন ঘটে।
দাউদ আঃ পর্যন্ত তাদের অনেক শাসকরা ধর্মত্যাগ করে মূর্তি পূজা করতে থাকে। এভাবে সুলায়মান আঃ এর যুগে তাওরাত যে সিন্দুকে সংরক্ষিত ছিল সেটি খুলে দেখা গেল ১০টি বিধান ছাড়া তওরাতের বাকি অংশ গায়েব। {রাজাবলি-৮.৯}
এরপর বাইবেলের বর্ণনা মতে খোদ সুলাইমান আঃ পিতৃধর্ম ত্যাগ করে তাঁর স্ত্রীদের প্ররোচনায় মূর্তিপূজায় জড়িয়ে পরেন। {রাজাবলি, ১১নং অধ্যায়} নাউজুবিল্লাহ}
সুতরাং তওরাত সংক্ষণের ব্যাপারে তাঁর কোন প্রকার উদ্যোগ না থাকাই স্বাভাবিক। তারপর থেকে অবস্থার আরো অবনতি ঘটে।
{বিস্তারিত দেখুন-বাইবেল বিকৃতি: তথ্য ও প্রমাণ-২৮-৩৩}
বাইবেল বিকৃতির কিছু আজব নমুনা
পিতার চেয়ে পুত্র বড়!
২ বংশাবলি পুস্তকে বলা হয়েছে-অহসীয় বেয়াল্লিশ বৎসর বয়সে রাজত্ব করিতে লাগিলেন। {বাংলা বাইবেল-২২:২} এখানে “বেয়াল্লিশ” কথাটি বিকৃত ও ভুল। কারণ তাঁর পিতার মৃত্যুর পর পরই তিনি রাজত্ব লাভ করেছিলেন। {বংশাবলি-২১:২০} সুতরাং বেয়াল্লিশ বৎসর কথাটি সঠিক বলে মনে করার অর্থ হল পিতার চেয়ে পুত্র দুই বছরের বড় ছিলেন!
অপর দিকে ২ রাজাবলি পুস্তকে বলা হয়েছে অহসীয় বাইশ বৎসর রাজত্ব করেন। রাজত্ব করিতে আরম্ভ করিয়া যিরুশালেমে এক বৎসর রাজত্ব করেন।
{৮:২৬} এই বর্ণনাটি একদিকে পূর্বের বর্ণনাটির সঙ্গে সাংঘর্ষিক,অন্যদিকে পূর্বের বর্ণনাটি বিকৃত হওয়ারও প্রামণ।
এই পর্যন্ত প্রকাশিত প্রায় সকল অনুবাদেই উক্ত বিকৃতিটি বিদ্যমান ছিল। বাংলা পবিত্র বাইবেলেও তা আছে। কিন্তু বাংলা কিতাবুল মোকাদ্দাসের অনুবাদকরা এই ভুল ও বিকৃতির বিষয়টি টের পেয়ে গেছেন। ফলে “বিয়াল্লিশ” এর স্থলে “বাইশ” শব্দটি তারা বসিয় দিয়েছেন।
পৃথিবী ধ্বংস হবে? না হবে না? বাইবেলের কোন কথাটি সঠিক?
বাইবেলের বুক অফ হিব্রুর ১ম অধ্যায় ১০-১১ অনুচ্ছেদ,এবং বুক অফ শামের ১০২ অধ্যায়ের ২৫,২৬ অনুচ্ছেদে উল্লেখ আছে যে, “সর্ব শক্তিমান ইশ্বর আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন,আর এগুলি ধ্বংস হয়ে যাবে”।
আর বুক অফ একলেসিষ্ট ১ম অধ্যায়ের ৪ অনুচ্ছেদে আর বুক অফ শামের ৭৮ অধ্যায়ের ৬৯ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে, “পৃথিবী কোনদিন ধ্বংস হবে না”।
এখন প্রশ্ন হল কোন কথাটি সঠিক? স্রষ্ঠার কথায় কখনোই এমন বিপরীতমুখী বক্তব্য সম্ভব নয়।
আকাশের স্তম্ভ আছে?
আমরা জানি আকাশের স্তম্ভ নেই। যা স্পষ্টতই কুরআনে বর্ণিত।
সূরা লুকমানের ১০ নং আয়াতে স্পষ্টই উল্লেখ আছে যে, আকাশের কোন স্তম্ভ নেই।
কিন্তু বাইবেলে ইয়োবের ২৬ অধ্যায়ের ১১ অনুচ্ছেদে রয়েছে যে, “আকাশমন্ডলীর স্তম্ভ কাঁপিয়া উঠিবে”।
পৃথীবীরও নাকি স্তম্ভ আছে? তা আছে শেমুয়েলে ১ম গ্রন্থের দ্বিতীয় অধ্যায়ের ৮ অনুচ্ছেদ, এবং বুক অফ ইয়োবের (যুবের) ৯ অধ্যায়ের ৬ অনুচ্ছেদে এবং বুক অফ শামের ৭৫ অধ্যায়ের ৩ অনুচ্ছেদে রয়েছে,যে “পৃথিবীর স্তম্ভ আছে”।
এই রকম অযৌক্তিক কথা কি ঐশী গ্রন্থে থাকতে পারে?
নূহ আঃ এর পর আর কোন দিন বন্যা হবে না?
বুক অফ জেনেসিসের ৯ নং অধ্যায়ের ১৩-১৭ অনুচ্ছেদে বলা আছে যে, “আমি পৃথিবীতে রংধনু বসিয়ে কথা দিলাম, পৃথিবীকে আর কোনদিন বন্যার পানিতে ডুবিয়ে দিব না”।
অথচ আমরা জানি সূর্যের আলোর সাথে বৃষ্টির পানির প্রতিসরণের কারণে রংধনুর সৃষ্টি হয়।
সুতরাং এই কথাটি একটি মারাত্মক অবৈজ্ঞানিক কথা যে, রংধনু বসানোর মাধ্যমে আল্লাহ বন্যাকে থামিয়ে দিলেন। যা কিছুতেই ইশ্বর বলতে পারেন না। আর কোন দিন বন্যা হবে না এই কথাটিও ভুল। কারণ পরবর্তীতে পৃথিবীতে মারাত্মক মারাত্মক কিছু বন্যা হয়েছে।
একটি ফালতু চিকিৎসা পদ্ধতি
বুক অফ লেবিটিকাশ এর ১৪ নং অধ্যায়ের ৪৯-৫৩ অনুচ্ছেদে আছে যে, “কোন বাড়িকে প্ল্যাগ বা কুষ্ঠ রোগ মুক্ত করতে দু’টি পাখি নিয়ে একটিকে মেরে ফেলে চামড়া ছাড়িয়ে রেখে দিন।
আর যেটি বেঁচে আছে সেটাকে পানিতে চুবান তারপর বাড়ির চারপাশে এগুলোকে ছড়ান”।
এরকম উদ্ভট চিকিৎসা কি খৃষ্টানরা করে থাকে?
প্রসবী মহিলাদের নাপাক থাকা প্রসঙ্গে
বুক অফ লেবিটিকাসের ১২ নং অধ্যায়ের ১-৫ অনুচ্ছেদে রয়েছে, যখন কোন মহিলা ছেলে সন্তানের জন্ম দেয় তখন সে নোংরা থাকবে ৭ দিন আর এই নোংরা অবস্থার প্রভাব থাকবে আরো ৩৩দিন। আর কন্যা সন্তান জন্ম দিলে নোংরা থাকবে ১৪ দিন, আর এই নোংরা থাকার প্রভাব থাকবে আরো ৬৬ দিন। এক কথায় ছেলে জন্ম দিলে নোংরা থাকবে ৪০ দিন আর মেয়ে সন্তান জন্ম দিলে নোংরা থাকবে ৮০ দিন। এ উদ্ভট কথা কি যৌক্তিক হতে পারে? এটা বাইবেল বিকৃতির একটি জ্বলন্ত প্রমাণ।
স্রষ্টা কখনো এরকম উদ্ভট কথা বলতে পারেন না।
ব্যভিচারিনী চিনার পদ্ধতি
বুক অফ নাহাম্বার ৫ নং অধ্যায়ের ১১-৩১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে-“যাজক একটি পাত্রে কিছু পবিত্র পানি নিবেন। মেঝে থেকে ধুলি নিবেন। সেটা পানিতে মিশাবেন। আর এটাই হল তেঁতো পানি।
এই পানিকে অভিশাপ দিয়ে ঐ মহিলাকে দেয়া হবে। মহিলা সেটা খাবে। যদি মহিলা ব্যভিচার করে থাকে তাহলে তার পেটে সেই অভিশাপ চলে যাবে। ফলে পানিটা পেটে গিয়ে তার পেট ফুলে যাবে, উরু পচে যাবে। সকল মানুষ তাকে অভিশাপ দিবে।
আর যদি সেই মহিলা ব্যভিচার না করে থাকে তাহলে তার কিছুই হবেনা। সে সুস্থ্য থাকবে”।
এই তেঁতো পানির পরীক্ষা দিয়ে তাহলে কেন আমেরিকা আদালতে কার্যকর করে না?
ভুলে ভরা বই কি করে ঐশী গ্রন্থ হয়?
ঘরের চেয়ে বারান্দা উঁচু?
বংশাবলিতে আছে-ঘরের সামনের বারান্দা ঘরের চওড়ার মাপ অনুসারে বিশ হাত চওড়া ও তার ছাদ একশো বিশ হাত উঁচু করে দেওয়া হল {৩:৪}
এখানে “একশো বিশ হাত” কথাটা ভুল। কারণ মূল ঘরের উচ্চতা ছিল ত্রিশ হাত। দেখুন ১ রাজাবলি-৬:২।
সুতরাং বারান্দার উচ্চতা ১২০ হাত হতে পারে না। আমাদের উভয় বাংলা অনুবাদে ও ইংরেজী অনুবাদে এখনো এ ভুল রয়ে গেছে। যদিও সুরয়ানী ও আরবী অনুবাদকরা এটা বিকৃত করে সংশোধনের চেষ্টা চালিয়েছেন, তারা “একশো” কথাটি উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন এর উচ্চতা ছিল ২০ হাত।
ভ্রাতা? না চাচা?
২ বংশাবলী পুস্তকে আছে, যিহুদা ও যিরুশালেমের উপরে তাহার ভ্রাতা সিদিকিয়কে রাজা করিলেন {বাংলা বাইবেল-৩৬:১০}
এখানে “তাহার ভ্রাতা” বলতে যিহোয়াখীনের ভ্রাতা বোঝানো হয়েছে। কিন্তু এই ভ্রাতা কথাটি ভুল।
কারণ সিদিকিয় যিহোয়াখীনের ভাই ছিলেন না, বরং চাচা ছিলেন। {২ রাজাবলি-৪:১৭}
কিতাবুল মোকাদ্দাসের অনুবাদকরা এই ভুল বুঝতে পেরে উক্ত বাক্যের অনুবাদ এইরূপ করেছেন-আর যিহোয়াখীনের চাচা সিদিকিয়কে এহুদা ও জিরুজালেমের বাদশাহ করলেন। কিন্তু বাংলা বাইবেলের “ভ্রাতা” আর ইংরেজী বাইবেলের “His brother” শব্দটি এখনো সেই ভুলের উজ্জ্বল সাক্ষ্য বহন করছে।
ইস্রায়েলের রাজা? না এহুদার?
২ বংশাবলিতে আছে-কেননা ইসরাঈল রাজ আহসের জন্য সদা-প্রভু যিহুদাকে নত করিলেন। {বাংলা বাইবেল-২৮:১৯}।
এখানে “ইসরাইলের রাজ” কথাটি ভুল। কারণ আহস ইস্রালের রাজা ছিলেন না। ছিলেন এহুদার/যিহুদার রাজা। {২ বংশাবলি-২৮:১,২} গ্রীক ও ল্যাটিন অনুবাদকরা সেজন্যই “ইস্রায়েল” শব্দটির স্থানে এহুদা শব্দটি উল্লেখ করেছেন। বাংলা কিতাবুল মোকাদ্দাসের অনুবাদকরা হয় এই ভুল টের পেয়ে গেছেন।
তাই “ইস্রায়েল রাজ” কথাটি বাদ দিয়ে অনুবাদ করেছেন-বাদশাহ আহসের জন্য মাবুদ এহুদাকে নিচু করেছিলেন, কিন্তু বাংলা বাইবেলের ইস্রায়েল রাজ ও ইংরেজী বাইবেলের “king of Israel” এখনো ঐ ভুলের জ্বলন্ত সাক্ষ্য বহন করছে।
এরকম অসংখ্য ভুলের ভাগাড় রয়েছে বাইবেলে। দেখুন-বাইবেল বিকৃতি :তথ্য ও প্রমাণ, বাইবেলের ভুল ভ্রান্তি অধ্যায়।
বাইবেলে অশ্লীলতা
মিশনারী তৎপরতা চালিয়ে অক্ষর-জ্ঞানহীন সাদামনের মানুষগুলোকে লোভ দেখিয়ে বিপথগামী করার পরও থেমে থাকেনি খৃষ্টীয় সমাজ। পর্ণোগ্রাফী বেহায়াপনা,ব্যভিচার আর অবাধ যৌনাচারকে বৈধ করার পাঁয়তারা করছে সুনিপূণভাবে।
ঘরে ঘরে পতিতালয় প্রতিষ্ঠা কারার হীন খাহেশে বাইবেলেও ঢুকিয়ে দিয়েছে যৌন-ঘটিত পরম গীত; যাতে করে এর দোহাই দিয়ে অবাধে যৌনাচারে লিপ্ত হয়ে যেতে পারে। সলোমনের লেখা পরমগীতের অধ্যায় ৮ এর ১-৩,১০; ৭ম অধ্যায়ের ৮,৯,১১-১৩; ৪র্থ অ্যধায়ের ৫,৯,১০,১২; ১ম অ্যধায়ের ২-৪,১৩,১৬; ২য় অধ্যায়ের ৬ এবং ৫ম অধ্যায়ের ২-৪, ৮ বিশ্লেষণী দৃষ্টিতে অধয়্যন করলেই স্পষ্টতই অনুধাবন করা যায় বিকৃতকারীদের মনমানসিকতা আর গভীর ষড়যন্ত্রের বিধ্বংসী বর্বরতার বাস্তব চিত্র। নিশ্চিতভাবেই,ঈসা আঃ এসব নোংরা কথা বলেননি। এসব কিছু বিকৃতকারীদের চরম মিথ্যাচার ছাড়া কিছুই নয়।
Let us look at Song of Songs 1:2-4 “Let him kiss me with the kisses of his mouth– for your love is more delightful than wine. Pleasing is the fragrance of your perfumes; your name is like perfume poured out. No wonder the maidens love you! Take me away with you–let us hurry! Let the king bring me into his chambers. We rejoice and delight in you; we will praise your love (i.e., semen) more than wine. How right they are to adore you!”
১ পরম গীত-সলোমনের লেখা।
২ তিনি নিজের মুখের চুম্বনে আমাকে চুম্বন করেন; তোমার প্রেম-লীলা যে আঙ্গুররসের/মদের চেয়েও মধুর!
৩ তোমার সুগন্ধি তেলের সুবাস উৎকৃষ্ট; ছড়িয়ে পড়ে সুগন্ধি তেলের মতই তোমার নাম;
এজন্য যুবতীরা তোমাকে ভালবাসে। ৪ তোমার পিছু পিছু আমাকে আকর্ষণ কর! এসো, ছুটে যাই!
রাজা অন্তঃপুরেই আমাকে প্রবেশ করিয়ে আনুন। আমরা তোমাতে উল্লাসিত ও আনন্দিত হব,
আঙুররসের/মদের চেয়েও তোমার প্রেমের গুণকীর্তন করব, তোমাকে ভালবাসা সত্যি সমীচীন।
Sleeping with his sister: Let us look at Song of Songs 5:4 “I slept but my heart was awake. Listen! My lover is knocking: ‘Open to me, my sister, my darling, my dove, my flawless one. My head is drenched with dew, my hair with the dampness of the night.’ I have taken off my robe (i.e., she showed his breasts and vagina to him. Underwears and bras didn’t exist back then!) must I put it on again? I have washed my feet, must I soil them again? My lover thrust his hand through the latch-opening; my heart began to pound for him.” What a disgusting way for someone to talk so pervertly about his sister and/or about her brother like that!!
৫ পরম গীত-সলোমনের লেখা।
২ আমি ঘুমিয়ে ছিলাম, কিন্তু আমার হৃদয় জেগে উঠল;একটা শব্দ! আমার প্রেমিক দরজায় ঘা দিচ্ছে;
‘দরজা খুলে দাও,বোন আমার,সখী আমার,কপোতী আমার,শুদ্ধমতী আমার;
কারণ আমার মাথা ভিজে গেছে শিশিরে,আমার কেশরাশি রাত্রির জলবিন্দুতে।
’
৩ ‘আমি তো আমার পোশাক খুলে ফেলেছি,কেমন করে তা আবার পরে নেব?
আমি তো পা ধুয়ে নিয়েছি, কেমন করে তা আবার মলিন করব?’
৪আমার প্রেমিক দরজার ছিদ্র দিয়ে হাত বাড়ালেন,এতে আমার অন্তর শিহরে উঠল।
প্রেমিক তার প্রেমিকাকে অনুরোধ করছে: দরজা খুলে দাও,কনে আমার …. বোন আমার….সখী আমার!
একটি মারাত্মক অশ্লীল গল্প
বাইবেলের হেজকীল পুস্তকের ২৩ নং অধ্যায়ে জিনাকারী দুই বোনের এক চরম অশ্লীল বর্ণনা স্থান পায়। বাইবেল বিকৃতিকারীদের রুচির নিম্নতা তুলে ধরার জন্য উক্ত ঘটনাটি দেয়া হল।
পরে মাবুদ আমাকে বললেন-“হে মানুষের সন্তান! দু’টি স্ত্রীলোক ছিল,যারা একই মায়ের মেয়ে। অল্প বয়স থেকে মিসর দেশে তারা বেশ্যাগিরি করত।
সেই দেশেই লোকে তাদের বুক ধরে সোহাগ করে তাদের সতীত্ব নষ্ট করেছে। তাদের মধ্যে বড়টির নাম ছিল অহলা ও তার বোনের নাম ছিল অহলীবা। পরে তারা আমার হল এবং ছেলেমেয়েদের জন্ম দিল। অহলা হল সামেরিয়া আর অহলীবা হল জেরুজালেম।
“অহলা আমার থাকতেই জেনা করেছিল।
তার প্রেমিকদের প্রতি অর্থাৎ আশেরীয়দের প্রতি তার কামনা ছিল। এরা ছিল নীল কাপড় পরা যোদ্ধা,শাসনকর্তা ও সেনাপতি। সকলেই সুন্দর যুবক এবং ঘোড়সওয়ার। সব সেরা সেরা আশেরীয়দের কাছে সে নিজেকে বেশ্যা হিসেবে দান করেছিল। যাদের সে কামনা করত, তাদের সমস্ত মূর্তি দিয়ে সে নিজেকে নাপাক করেছিল।
মিসরে যে বেশ্যাগিরি শুরু করেছিল তা সে ছেড়ে দেয়নি। সেখানে তার অল্প বয়সেই লোকে তার সঙ্গে শুয়ে তার সতীত্ব নষ্ট করেছে ও তাদের কামনা তার উপর ঢেলে দিয়েছে।
সেই জন্য আমি তাকে তার প্রেমিকদের হাতে অর্থাৎ সেই আশেরীয়দের হাতে ছেড়ে দিলাম। তারা তাকে উলঙ্গ করে তার ছেলেমেয়েদের কেড়ে নিয়ে তলোয়ার দিয়ে তাকে হত্যা করে। তার শাস্তি বিষয় নিয়ে স্ত্রীলোকেরা বলাবলি করতে লাগল।
তার বোন অহলীবা এই সব দেখল, তবুও সে তার কামনা ও বেশ্যাগিরিতে তার বোনের চেয়ে আরও বেশি খারাপ হল। তারও আশেরীয়দের প্রতি কামণা হল, তারা ছিল শাসনকর্তা ও সেনাপতি। তারা সুন্দর পোশাক পরা যোদ্ধা ও ঘোড়সওয়ার। তারা সবাই সুন্দর যুবক। আমি দেখলাম সেও নিজেকে নাপাক করল।
দু’জনে একই পথে গেল।
কিন্তু অহলীবা তার বেশ্যাগিরিতে আরও এগিয়ে গেল। সে দেয়ালের উপর লাল রংয়ে আঁকা ব্যাবিলনীয় পুরুষদের ছবি দেখল। কোমরে তাদের কোমর বাঁধনি,মাথার উপর উড়ন্ত পাগড়ী। তারা সবাই দেখতে ব্যাবিলন দেশের সেনাপতিদের মত।
তাদের দেখামাত্রই তাদের প্রতি তার কামণা জাগল, এবং সে ব্যাবিলনে তাদের কাছে লোক পাঠাল। তাতে ব্যাবিলনীয়রা তার কাছে এসে তার সঙ্গে বিছানায় গেল এবং জেনা করে তাকে নাপাক করল। তাদের দ্বারা নাপাক হবার পর সে তাদের ঘৃণা করতে লাগল। সে খোলাখুলিভাবেই যখন তার বেশ্যাগিরি চালাতে লাগল, এবং তার উলঙ্গতা প্রকাশ করল, তখন আমি তাকে ঘৃণা করলাম। যেমন আমি তার বোনকে ঘৃণা করেছিলাম।
যৌবনে যখন সে মিসরে বেশ্যা ছিল তখনকার দিনগুলি মনে করে সে আরও বেশি জেনা করতে লাগল। সেখানে সে তার প্রেমিকদের কামণা করল যাদের পুরুষাংগ ছিল গাধার পুরুষাংগের মত। এবং যাদের বীর্য বের হত ঘোড়ার বীর্যের মত।
হে অহলীবা! তোমার যৌবনকালে মিসরের লোকেরা তোমার বুক ধরে আদর করে তোমার সতীত্ব নষ্ট করেছিল। এখন তুমি আবার সেই লোকদের সঙ্গে জেনা করতে চাও।
সেই জন্য আমি আল্লাহ মালিক বলছি যে,তোমার যেসব প্রেমিকদের তুমি ঘৃণা করেছ আমি তাদেরই তোমার বিরুদ্ধে উত্তেজিত করব এবং চারদিক থেকে আমি তাদের তোমার বিরুদ্ধে নিয়ে আসব।
এই যদি হয় ঐশীগ্রন্থ তাহলে পর্নোগ্রাফী কোনটি?
বাইবেল শুধু ইজরাঈলের জন্য নাযিল হয়েছে
খৃষ্টধর্ম কোন বৈশ্বিক ধর্ম ছিল না। হযরত ঈসা আঃ সকল মানুষের প্রতি রাসূল হিসেবে প্রেরিত হননি। প্রেরিত হয়েছিলেন শুধু বনী ইসরাঈল বা ইহুদীদের নবী হিসেবে। একথা যেমন কুরআনে আছে তেমনি আছে বর্তমান ইঞ্জিলেও।
গসপেল অফ মেথুয়ে এর ১০ নাম্বার অধ্যায়ের ৫ নং ও ৬ নং অনুচ্ছেদে লিখা হয়েছে-“তোমরা কেউ জেন্টাইলদের কাছে যেও না। তোমরা কেবল ইজরাঈলের কাছেই যাবে”। {মেথু-১০:৫,৬}
এই জেন্টাইল কারা? যারা ইহুদী নয়, হিন্দু বা মুসলিম।
ঈসা আ. গসপেল অফ মেথুয়ে এর ১৫ নং অধ্যায়ে ২৪ নাম্বার অনুচ্ছেদে আছে-আমি কেবল ইজরাঈলবাসীর জন্য প্রেরিত হয়েছি। {মেথু-১৫:২৫}
আর কুরআন এসেছে পূর্ণ মানবজাতির জন্য, এবং সব সময়ের জন্য-সূরা ইব্রাহিমের ৫২ নং আয়াত, সূরা বাকারার ১৮৫ এবং সূরা জুমআর ৪১ নং আয়াতে বলা হয়েছে।
সূরা আম্বিয়ার ১০৭ নং আয়াত।
বাইবেলের ভাষায় ঈমানদারদের নিদর্শন
“যারা ঈমান আনে তাদের মধ্যে এই চিহ্নগুলি দেখা যাবে-আমার নামে তারা ভূত ছাড়াবে। তারা নতুন নতুন ভাষায় কথা বলবে। তারা হাতে করে সাপ তুলে ধরবে। যদি তারা ভীষণ বিষাক্ত কিছু খায় তবে তাদের কোন ক্ষতি হবে না।
আর রোগিদের গায়ে হাত দিলে রোগিরা ভাল হবে”। {মার্ক-১৬: ১৭,১৮, বাংলা ইঞ্জিল শরীফ-১০৬}
প্রিয় পাঠক/পাঠিকারা! খেয়াল করুন। বাইবেলে বলা হয়েছে ঈসা আঃ এর উপর ঈমানদার তারা বিশেষ কিছু ক্ষমতা লাভ করবে। যথাক্রমে-
১. ঈসা আঃ এর নামে তারা ভূত ছাড়াবে।
২. তারা নতুন নতুন ভাষায় কথা বলবে।
৩. তারা হাতে সাপ তুলে ধরবে।
৪. যদি তারা ভীষণ বিষাক্ত কিছু খায়, তবে তাদের কোন ক্ষতি হবে না।
৫. রোগীদের গায়ে হাত দিলে রোগীরা ভাল হবে।
এই ৫ টি বিষয় হল ঈসা আঃ এর উপর ঈমান আনার নিদর্শন। এখন কথা হল-খৃষ্টানদের মাঝে কয়জন ঈমানদার আছে? যদি বলা হয় খৃষ্টান পাদ্রীরা ঈমানদার।
তাহলে তাদের বিষ খেতে দিন। কারণ তারা ঈমানদার হলে বিষ খেলে তাদের কিছু হবেনা।
তাদের বলুন-হাতে বিষাক্ত সাপ ধরে রাখতে। যারা ধরে রাখতে পারবে কেবল তারাই বাইবেলের ভাষায় ঈমানদার হবে।
তাদের বলুন-রোগিদের গায়ে হাত বুলিয়ে সুস্থ্য করে তুলতে।
কারণ এটা বাইবেলের ভাষায় ঈমানদারের নিদর্শন।
তাদের বলুন-অনর্গল যেকোন ভাষায় কথা বলতে। কারণ এটা বাইবেলের ভাষায় ঈমানদারের নিদর্শন।
যদি এর কোনটাই খৃষ্টান ধর্ম যাজকরাও না পারে। তাহলে বুঝতে হবে খৃষ্টান দাবিদারদের মাঝে কেউ ঈমানদার নয়।
আর নিজেরা ঈমানদার না হয়ে কিভাবে তারা অন্যদের খৃষ্টান ধমের্র উপর ঈমান আনার দাওয়াত দিচ্ছে? বড়ই আশ্চর্য!
কুরআনের আলোকে বাইবেল বিকৃতি
পবিত্র কুরআনের বহু আয়াতে বাইবেল বিকৃতির প্রমাণ রয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-
فَوَيْلٌ لِّلَّذِينَ يَكْتُبُونَ الْكِتَابَ بِأَيْدِيهِمْ ثُمَّ يَقُولُونَ هَذَا مِنْ عِندِ اللَّهِ لِيَشْتَرُواْ بِهِ ثَمَناً قَلِيلاً فَوَيْلٌ لَّهُم مِّمَّا كَتَبَتْ أَيْدِيهِمْ وَوَيْلٌ لَّهُمْ مِّمَّا يَكْسِبُونَ (79)
অর্থ-সুতরাং ধ্বংস সেই সকল লোকের জন্য,যারা নিজ হাতে কিতাব লেখে, অতঃপর বলে এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে, যাতে তার মাধ্যমে সামান্য কিছু আয়-রোজগার করতে পারে। সুতরাং তাদের হাত যা রচনা করছে সে কারণেও তাদের জন্য ধ্বংস। এবং তারা যা উপার্জন করছে সে কারণেও তাদের জন্য ধ্বংস। {সূরা বাকারা-৭৯}
وَقَدْ كَانَ فَرِيقٌ مِّنْهُمْ يَسْمَعُونَ كَلاَمَ اللَّهِ ثُمَّ يُحَرِّفُونَهُ مِن بَعْدِ مَا عَقَلُوهُ وَهُمْ يَعْلَمُونَ (75)
অথচ তাদের মধ্যে একটি দল এমন ছিল, যারা আল্লাহর কালাম শুনতো, অতঃপর তা ভাল করে বোঝার পরও জেনে শুনে তাতে বিকৃতি ঘটাত।
{সূরা বাকারা-৭৫}
يُحَرِّفُونَ الْكَلِمَ عَن مَّوَاضِعِهِ
অর্থ-তারা আল্লাহর কিতাবের শব্দাবলির স্থান স্থির হয়ে যাওয়ার পরও তাতে বিকৃতি সাধন করে। {সূরা মায়িদা-৪১}
ঠিক এই কথা বাইবেলের ইয়ারমিয়া পুস্তকেও বলা হয়েছে- “কিন্তু তোমরা যেন আর কখনো না বল মাবুদের কালাম এই; কারণ প্রত্যেক লোক নিজের কথাকে আল্লাহর কালাম বানায়;এইভাবে তোমরা জীবন্ত আল্লাহর তোমাদের মাবুদ আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কালাম বাঁকা কর”। [বাংলা বাইবেলে বিপরীত করিয়াছ] {কিতাবুল মোকাদ্দাস, ইয়ারমিয়া-২৩:৩৬}
খোলা মন নিয়ে বাইবেলের পূর্বাপর অনুবাদগুলি পড়লে যেকোন পাঠকই বুঝতে পারবেন। এটা কিছুতেই আল্লাহর প্রেরিত কিতাব হতে পারে না।
সর্বশেষে বাইবেল থেকেই একটি উদ্ধৃতি পেশ করে লেখাটি শেষ করছি, যেখানে স্পষ্টই ইংগিত রয়েছে যে,নতুন নবী আসলে পূর্বের ধর্ম বাতিল হয়ে যায়।
সুতরাং ঈসা আঃ এর পর সর্বশেষ নবী মুহাম্মদ সাঃ আসার পর ঈসা আঃ এর ধর্মও বাতিল ও রহিত হয়ে গেছে।
“যখন ইমামের পদ বদলাম হয়,তখন শরীয়তও বদলাম দরকার হয়”। {ইঞ্জিল শরীফ, ইবরানী-৭:১২}
সুতরাং যখন ইমাম বা নবী মুহাম্মদ সাঃ এলেন তখন শরীয়তও পাল্টে গেছে। এখন আর পূর্ববর্তী কোন ইমাম তথা নবীর চলবে না।
আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলকে হেদায়েতের পথে চলার তৌফীক দান করুন।
খৃষ্টান মিশনারীদের অপতৎপরতা আর ধর্মান্তরের ভয়াবহতা থেকে আমাদের হিফাযত করুন আমাদের দেশের সরলমনা মুসলমানদের। আমীন। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।