আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

টিউটোরিয়ালঃ হয়ে যান ঘাগুগ্রাফার!

হাজার বছর ধরে আমি পথ হাঁটিতেছি পৃথিবীর পথে টিউটোরিয়ালঃ হয়ে যান ঘাগুগ্রাফার! আমার এবারের লেখাটি একটি বিনোদনমুলক টিউটোরিয়াল। ঘাবড়াবেন না। বিষয়টা খোলাসা করছি। এই লেখা পড়ে কেউ অপমানিত হবে, যাতে আমি অনেক বিনোদন পাবো। অনেকে “কিভাবে অমুকতমুক ছবি তুলিবেন” শীর্ষক আর্টিকেল লিখেছেন।

আমি কিঞ্চিত ভিন্ন জ্ঞ্যান শেয়ারের প্রচেষ্টায় আরেকটি আর্টিকেল লিখলাম যা ব্যবহার করে নিজেকে অত্যন্ত ঘাগু ফটোগ্রাফার প্রমাণ করতে পারবেন। তবে মক্কার হাজী যেমন হজ্ব পায়না, তেমনি আমার ফতোয়া আমার কাজে দেয়নি। তবে আপনারা ট্রাই করে দেখতে পারে, মিললেও মিলিতে পারে অমূল্য রতন। দেখুন কম, তুলেন বেশি: ছবি দেখে কি আসে যায়? তারচেয়ে ছবি তুলে হাত পাকায় ফেলা ভালো না? কে কি তুলল, এসব হাবিজাবি জিনিস এনালাইসিস না করে নিজের ছবি মুগ্ধ হয়ে দেখুন। মনে রাখবেন, দেশে আপনার চেয়ে ভালো ফটোগ্রাফার নাই।

আর বিদেশে? কালা দূরে থাক, সাদা চামড়া মানেই কি আপনার চেয়ে ঘাগু? কখনোই না। বলুন হুমমমমঃ আপনার ছবিতে আপনার গুণমুগ্ধ কেউ কমেন্টাইলে উত্তরে হুমমম বলুন। বেশি কথা বললে সস্তা হয়ে যাবেন। আর যদি লোকেশন, এক্সিফ বা এইধরনের প্রশ্ন করে তবে এড়িয়ে যাবেন। মনে রাখবেন, কথা বললেন তো পাতি পুলাপাইন হয়ে গেলেন।

ছবির চেয়ে ক্যামেরার সমঝদার হয়ে যান: একটা ছবি ভালো লাগলো? তবে তার ক্যামেরার বডি বা লেন্সের প্রশংসা করুন। আপনার চেয়ে ভালো ছবি কেউ তুলে ফেললো? তবে ঐ ব্যক্তির মত গিয়ার নাই বলে আফসোস করুন। ভুরু কোঁচকানো আয়ত্ত করুন: ছবি তুলতে গেলে ছবি তুলেই ভুরু কুঁচকে এলসিডি দেখুন। যদি টের পান কেউ তাকিয়ে আছে আপনার দিকে, তবে ভুরু আরও কুঁচকে হতাশ হতাশ চেহারা করে মাথা নাড়ুন। যে আপনাকে খেয়াল করছে সে ভাববে “খাইসে বাওয়া, এ তো চ্রম মাল”।

আশেপাশে কেউ ছবি তুললে তাদের ক্যামেরায় ছবি দেখুন ভুরু কুঁচকে, হতাশ হয়ে মাথা নাড়ুন, ম্যাগনিফাই করে দেখুন, আবার মাথা নাড়ুন। ব্যাস! কি হল ওটা না দেখে কি হয়নি সেটা খুজুনঃ সবারই পশ্চাদ্দেশ আছে, এবং যত সুন্দরীই হোক না কেন পশ্চাদ্দেশে সবারই গন্ধ। তাই গন্ধ খুঁজছেন? পশ্চাদ্দেশ শুঁকুন। তবে আক্ষরিক অর্থে আবার সেটা শুরু করে দিয়েন না। সব ছবিই কিছু হয়েছে, তার মানে অন্য কিছু একটা হয়নি।

যেটা হয়নি সেটা নিয়ে চিল্লাফাল্লা করে দিন। নতুনদের অপমান করুন: একটা দাগ বড় করার সেরা উপায় পাশে একটা ছোট দাগ এঁকে দেয়া। নিজেকে বড় করতে চান? তবে নতুন পুলাপাইনদের অপমান করুন, নিরুৎসাহিত করুন। আমাকেও আমার মুরুব্বি ফটোগ্রাফাররা অনেক নিরুৎসাহিত করেছিলেন, তারা বিভিন্ন ফটোগ্রাফি সংঘের নেতা। আপনিও শুরু করুন।

ফায়দা পাবেন। তাদের সব ছবিতে বাগড়া দিন, তাদের বলুন “তোমার হচ্ছেনা”, কেন হচ্ছেনা সেটা ভুলেও বলতে যাবেন না। মারফতি ক্যাপশন দিন: উল্লাপাট্টা ছবি তুলুন। তারপর আন্ধাগুন্ধা ক্যাপশন দিন। ছবির বিষয় এমনিতেই ঘোলা, তার উপর ক্যাপশন দিয়ে আরও ঘোলা করুন।

কারণ মানুষ যদি কিছু বুঝতে না পারে, তাহলে আপনাকে উচ্চমার্গয় ব্যক্তি ভাববে। কোপায় পোস্ট-প্রসেস করুন: পারলে একটা সাধারণ পোর্ট্রেইটও এইচডিআরআই তুলুন। যদি সেটা না পারেন, তবে অকারণে মেঘের ক্ল্যারিটি বাড়িয়ে একটা আজগুবি কিছু বানান। রাস্তার মানুষদের গরিবি ছবি তুলে প্রচণ্ড শার্প করে একটা আর্ট-ওয়ার্ক ভাব আনুন। অতঃপর আগের পয়েন্ট অনুযায়ী “নির্মম ক্ষুধার্ত ফকিন্নি ও কাঠ-পেন্সিলের প্রেম” টাইপ ক্যাপশন দিন।

আপনি হিট! চিকস এবং সুড়সুরিঃ ফ্রেন্ডলিস্টে বেহায়া টাইপ মেয়ের সংখ্যা বাড়ান। তাদের বিভিন্ন ছবিতে ট্যাগ করুন। অতঃপর চাম বুঝে তাদের ভজিয়ে কিছু ছবি তুলুন। বিভিন্ন রকমের মোচড়ামুচড়ি’র ছবি তুলুন, সুড়সুরিময় অংশটুকু ক্রপ করুন। এবং আপলোড করুন।

যাবতীয় হিট আপনি! ভুলবেন না দেশে লুল পুলাপাইন প্রচুর। ক্যানন ও নাইকনঃ আপনি ক্যানন ইউজার হলে যে কোনও আড্ডায় নাইকন কত ফালতু সেটা এ্যানালাইসিস করুন, প্রয়োজনে কাইজ্জা করুন। আর আপনার নাইকন হলে ক্যানন যে ভণ্ড এই বিষয়ে ১০/১২ টা পয়েন্ট মুখস্থ রাখুন। প্রয়োজনে অন্য ব্র্যান্ডের ক্যামেরা ইউজার কে ফ্রেন্ড-লিস্ট থেকে বাদ দিন। দরকার নাই ওদের! কিছু কি ভুলে গেলেন? ওহ আচ্ছা, আসল পয়েন্ট- ফেসবুক ফ্যানপেজঃ যদি এখনও না খুলে থাকেন চটপট খুলে ফেলুন।

নাইলে বিলাইও আপনারে বাম পা দিয়ে পুছবে না। ইহা একটি মাগনা সার্ভিস। আমার ছোট্ট মস্তিষ্কে ঘাগুগ্রাফার হবার এই কয়েকটা তরিকার স্থান হয়েছিলো। আপনাদের কোনও আইডিয়া থাকলে আমাকে দিয়েন। আমার অনেক শখ ঘাগুগ্রাফার হবার।

যারা ব্যাঙ্গ না বুঝে সিরিয়াস কাঞ্ছন হয়ে যাবেন, তারা দূরে গিয়ে ......। । পোস্ট কৃতজ্ঞতাঃ জুনায়েদ সাব্বির আহমেদ জুলাই ৪, ২০১২ http://www.zunayed.com  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।