জিহাদ সম্পর্কে একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের সবারই ধারনা থাকা উচিৎ তাহলে অন্তত আমরা জিহাদে অংশগ্রহণ করি বা না করি অন্তত এই ব্যাপারটি দ্বারা আমরা আর কারও দ্বারা ভুল পথে অগ্রসর হব না । আসুন আমার সীমিত জ্ঞ্যানে দেখি ইসলাম কি বলে এই সম্পর্কে আর আমাদের আমরা কি করছি এর নামে ।
আরবি শব্দ “জাহদাহ” থেকে জিহাদ শব্দটির উৎপত্তি যার অর্থ হল সংগ্রাম করা । এর দ্বারা কোন দীনি যুদ্ধ বোঝায় না বরং এই দীনি যুদ্ধ বলতে আরবিতে যা বোঝায় তা হল “হারবু মুকাদ্দাসা “ ।
কিন্তু একটু খেয়াল করলেই দেখবেন কোরআন মাজিদের কোন স্থানেই হারবু মুকাদ্দাসা ব্যাবহার করা হয়নি কেননা সেগুলু দীনি যুদ্ধ ছিল না বরং ছিল আত্মরক্ষা, সমাজব্যাবস্থা , অন্যায় , মিথ্যাচার এর বিরুদ্ধে ।
উল্লেখ্য দীনি যুদ্ধ বলতে যা বোঝায় তা হল ধর্ম প্রচারের উদ্দেশে করা যুদ্ধ বা হারবু মুকাদ্দাসা যা প্রথমবার করেছিল খ্রিস্টানরা এবং সেখানে বহু মানুষও হত্যাও করা হয়েছিল ।
যাই হোক এটা ইতিমধ্যে স্পষ্ট যে আমরা শব্দটির ব্যাখ্যা অর্থ ভুল করি এবং কিভাবে এই জিহাদের অর্থ বিকৃত করে আমাদেরকে বোঝান হয় এবার আসুন দেখি কিভাবে এটির ভুল ব্যাবহার হয় আমাদের মত দেশগুলুতে ।
আসলে কি আমরা জিহাদ করছি ?
সজা ভাষায় উত্তর দিবনা , উত্তর দিব কিছু উদাহরনসহ আমাদের দেশের ।
প্রথেমেই উদাহরণ দেয়া যায় আমাদের দেশের শায়েক আব্দুর রহমান এবং বাংলা ভাই এর দিকে ।
তাদের যেই চিন্তা এবং চেতনা ছিল মুসলিম জিহাদের ব্যাপারে তা সরাসরি ইসলাম বিরোধী ।
ইসলামে এটি প্রানহানি সম্পূর্ণ হারাম এটি প্রথম এবং সর্বও অবস্থায় প্রযোজ্য শুধুমাত্র আত্মরক্ষা এবং যুদ্ধক্ষেত্র ছাড়া কিন্তু যুদ্ধক্ষেত্রে যদি শত্রু লড়াইয়ে অসম্মতি জানায় এবং পরাজয় বরং করে তাহলে তাদেরকে শুধু মাফ নয় সাথে ওই মুহুরত থেকে তার সার্বিক নিরাপত্তা বিধান ওই মুসলমানের । সুতরাং তাদের ওই জিহাদ ইসলামের চোখেতো সম্পূর্ণ হারাম ছিল তাতে কোন সন্দেহই নেই এবং কিছু অর্থলোভী স্বার্থান্বেষী ওঁলামা মাশায়েক এতে তালিম দিয়েছিল এরা ইসলামের চোখে কাফের এবং মুসরেক যারা ইস্লামকে মানুষের চোখে কলুষিত করেছে ।
জামায়েতে ইসলামি বাংলাদেশের জিহাদঃ ভণ্ডামির শেষ আশ্রয়স্থল ।
জিহাদ এর যেই যুদ্ধের রুপ এটি হবে হবে সেখানেই যেখানে আত্মরক্ষার প্রশ্ন জরিত , এটি হবে সেখানেই যেখানে সমাজ ব্যাবস্থায় পরিবর্তন প্রয়োজন এর আগে নয় । মনে রাখবেন জিহাদ মানে সংগ্রাম যা সবসময় আন্দলনের মাধ্যমেই প্রকাশ পাবে তা না ,ব্যাক্তি জিবনেও হতে পারে এর প্রকাশ এবং সেটা হতে পারে কঠোর পরিশ্রম যেমন মাটি কাটা , অর্থ উপার্জন করা , শিক্ষার্জন করা থেকে শুরু করে প্রতিটি কাজ আমাদের মানব জীবনে ।
কিন্তু এই ব্যাখ্যাটি একটি স্থানেই ভুল সেটি হল জামাতি ভাইদের কাছে তাদের বিশ্বাস যে তারা এক অলিখিত যুদ্ধ লড়ছেন রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এবং মাতৃভুমির প্রতি তাদের দারুন বিদ্বেষ যেখানে আমাদের মহানবী নিজেই বলেছেন দেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ এবং তিনি যখন মক্কা থেকে মদিনা হিযরত করেন তখন তার হৃদয় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছিল সুতরাং দেশের বিরুদ্ধে এরুপ ধারনা শোষণকারী আসলে পক্ষান্তরে আমাদের প্রানপ্রিয় নবী করিম হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর দেখান পথের সাথেই বিদ্রোহ করল । যদি দেখেন তারা কেন এই আন্দোলন করেন তাহলে পরিস্কার হবে যে এটি দীনি যুদ্ধ নয় এটি জামাতি যুদ্ধ । তাদের উদ্দেশ্য হল দেশের ক্ষমতায় যাওয়া , অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়া , রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল এবং এসবের ধাল হিসেবে ইসলামকে ব্যাবহার করা । এখন কেও কেও হয়ত বলবেন তাদের ওয়াজ মাহফিলের কথা কিন্তু বেশ কয়েকটি মাহফিলে উপস্থিত এবং বহু মাহফিল টিভি এবং ইন্টারনেট এর কল্যাণে দেখে আমি এততুকু নিশ্চিত যে এগুলুর পিছনে যত না ধর্মীয় উদ্ধেসশ তার চেয়ে বেশী রাজনৈতিক উদ্দেশে আলাপ চারিতা হয়ে থাকে । তো এসব আসলে জিহাদ নয় বরং বলা যায় আমদের সাথে তাদের এক রকম সারথসিদ্ধির পরিকল্পনা ।
এরকম শুধু দেশে নয় বিদেশেও দেখতে পাবেন যেমন আফগানিস্তান, পাকিস্তান , ভারতের কাশ্মীরেএবং জম্বুতে সহ অন্যান্য প্রমুখ জায়গায়। এক অজানা লক্ষে লাখো তরুণ জুদ্ধে যেতে চাচ্ছে যা কিনা তাদেরকে কিছুই দিবে না ইহকালে মৃত্যু এবং পরকালে আত্মহত্যা এবং মানবহত্যার অপরাধে জাহান্নাম ছাড়া ।
সুতরাং এটি আমাদের ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং দীনি কর্তব্য যে আমরা যাতে এসব অশুভ চক্রের হাত থেকে আমাদের ধর্মকে রক্ষা করি এবং জিহাদের নামে যেকোনো জায়গায় আমাদের সমাজকে গুমরা হতে না দেই । একটা জিনিস আমাদের সবার মনে রাখা উচিৎ যে এখন আমরা ইসালামে জিহাদের নামে মানুষকে যেভাবে ধোঁকা দেয়ার চেষ্টা করছি তাতে মানুষের এর উপর থেকে একদিন বিশ্বাস উঠে যেতে পারে এবং সেদিন হয়ত আমাদের জিহাদের প্রকৃত প্রয়োজন পরতে পারে ।
শেষ কথা বলবো না বরং অনুরধ করব ওই ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলটিকে যে আপনারা আল্লাহ এবং রাসুলের দেখান পথে এসে মানুষকে ওই পথে চালনা করার চেষ্টা করুন অন্ন্যথা আপনারা আখিরাতে আল্লাহর কাছে এর জবাব দিতে ব্যারথ হবেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।