সুন্নি মুসলিম, ছালেহ্ আশুরা নিয়ে আমাদের মাঝে বিভিন্ন ধরণের বিশ্বাস কাজ করে, তন্মধ্যে সবচে' বড় হিসেবে দেখানো হয় হযরত হুসাইন রাযি. এর শাহাদাত। এরপর বিশ্বের সকল গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এ আশুরাতে ঘটিয়েছেন ও আগত ভবিষ্যতের সকল গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা এ আশুরাতে সংঘটিত করাবেন। পৃথিবীর সৃষ্টি ও ধংশ সবই নাকি এ দিনে হয়েছে ও হবে। এ দিনে পৃথিবীর সৃষ্টি হয়েছে। আদম আ. এর সৃষ্টি এ দিনে হয়েছে।
আদম আ. কে এ দিনে দুনিয়াতে প্রেরণ করা হয়েছে। এ দিনে আদম ও হাওয়ার মিলন হয়েছিল আরাফাতের ময়দানে। উভয়ের তাওবা কবুল হয়েছিল এ দিনে। নূহ আ. এর প্লাবন এ দিনে হয়েছিল। প্লাবন শেষে নূহ আ. এর নৌকা এ দিনে জুদী পাহাড়ে ঠেকে গিয়েছিল।
নবী ইদ্রীস আ. কে এ দিনে আসমানে উঠিয়ে নেয়া হয়েছিল। আইউব আ. এর দীর্ঘ রোগমুক্তি এ দিনে হয়েছিল। মাছের পেট থেকে ইউনূছ আ. এর মুক্তি লাভ এ দিনে হয়েছিল। মুছা আ. তাওরাত লাভের জন্য তুর পাহাড়ে এ দিনে গমন করেছিলেন। নমরুদের আগুন থেকে ইব্রাহীম আ. এ দিনে মুক্তি পেয়েছিলেন।
ইয়াকুব আ. এ দিনে দৃষ্টি ফিরে পেয়েছিলেন। সুলাইমান আ. এ দিনে তার হারানো রাজত্ব ফিরে পেয়েছিলেন। ইছা আ. এর জন্ম এ দিনে হয়েছিল। ইছা আ. কে এ দিনে আসমানে উঠিয়ে নেয়া হয়েছিল। এ দিনে কাবা শরীফের নির্মান কাজ সম্পন্ন হয়েছিল।
এ দিনে কিয়ামত সংঘটিত হবে। আরো কত কিছু যে এ দিনে ঘটেছিল তা আপনি যেমন মসজিদের মিম্বরে উপবিষ্ট অনেক ইমাম সাহেবের মুখে শুনতে পাবেন। তেমনি শুনতে পাবেন এ দিন সম্পর্কে যারা রেডিও, টিভিতে বক্তব্য রাখেন তাদের মুখে।
ওপরের কথাগুলোর সাথে কেউ কুরআন, হাদীস, ইজমা, কিয়াস থেকে কোনো সূত্র উল্লেখ করতে পারে নি।
আশুরার দিন ভাল খাবার- দাবারের আয়োজন করা সম্পর্কে একটি হাদীস দেখা যায়।
من وسع على عياله يوم عاشوراء وسع الله عليه سائر السنة. قال الإمام أحمد : لا يصح هذا الحديث
“যে ব্যক্তি আশুরার দিনে তার পরিবারবর্গের লোকদের জন্য সচ্ছলতার (ভাল খাবার) ব্যবস্থা করবে আল্লাহ সারা বছর তাকে সচ্ছল রাখবেন। ”
এ হাদীস সম্পর্কে ইসলামী স্কলারদের বক্তব্য :
১। ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহ. বলেছেন; হাদীসটি সহীহ নয়।
২। হাদীসটির সকল সূত্র দুর্বল যেমন প্রখ্যাত হাদীস বিশারদ ইবনে কায়্যিম জাওযী রহ. এ হাদীস সম্পর্কে বলেছেনঃ
رواه الطبراني عن أنس مرفوعا، وفي إسناده الهيصم بن شداخ وهو مجهول، ورواه العقيلي عن أبي هريرة وقال: سليمان بن أبي عبد الله مجهول، والحديث غير محفوظ، وكل طرقه واهية ضعيفة لا تثبت
“তাবারানী হাদীসটি আনাস রা. সূত্রে বর্ণনা করেছেন।
এ সূত্রে হাইছাম ইবনে শাদ্দাখ নামের ব্যক্তি অপরিচিত। এবং উকায়লী বর্ণনা করেছেন আবু হুরাইরা রা. থেকে। এবং তিনি বলেছেনঃ এ সূত্রে সুলাইমান বিন আবি আব্দুল্লাহ নামের ব্যক্তি অপরিচিত। হাদীসটি সংরক্ষিত নয় আর এ হাদীসের প্রত্যেকটি সূত্র একেবারে বাজে ও খুবই দূর্বল।
(আল-মানারুল মুনীফ ফিসসহীহ ওয়াজ যয়ীফ : ইবনে কায়্যিম জাওযী -রহ.)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।