রোহিঙ্গা ইস্যু বাংলাদেশের ব্যবসায়িকভাবে ডিল করা দরকার। আগে থেকেই ২৫ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী আছে বাংলাদেশে। তাদের বেলায় বাংলাদেশ কোন ব্যবসায়িক লাভ করতে পারে নাই; এবারের শরণার্থীরা একটা ভালো সুযোগ তৈরি কইরা দিছে। এইটারে গ্রহণ না করা বোকামী হবে। এই ব্যাপারে আমি একটা রূপরেখা দিচ্ছি।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মায়ানমার বিরোধী প্রচারণা বাংলাদেশের জন্য রিস্কি। যুদ্ধপরিস্থিতি তৈরি হইতে পারে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর একটা বড়ো অংশ এখন যুদ্ধকামী অবস্থায় থাকার সম্ভাবনা আছে, বিশেষ কইরা অং সান সুকি বিরোধীরা। বাংলাদেশ যুদ্ধে বিশেষ সুবিধা করতে পারবে ভাবা যায় না; আরাকান দখল কইরা নিতে পারলে যুদ্ধ চাওয়া যাইতে পারে। তা দখল কইরা নিতে পারলেও দখল কইরা রাখা যাবে না আন্তর্জাতিক চাপে।
ফলে এই ব্যাপারে ব্যবসায়িক হইতে পারা দরকার বাংলাদেশের।
প্রথমতঃ বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটা এনজিও ভঙ্গি রপ্ত করতে হবে। বাংলাদেশ এনজিওর মতো কইরা মানবিকতা দিয়া ভালো ব্যবসা ফাদতে পারে রোহিঙ্গা ইস্যুতে (অবশ্য র্যাবসহ রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হত্যা-নির্যাতনের কারণে বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়া কিছু প্রব্লেম হইতে পারে)। এজন্য আগত রোহিঙ্গাদের মানবিকতার কথা বইলা সাদরে গ্রহণ করতে হবে; তবে যারা সপরিবারে আসে নাই—তাদের ফেরত পাঠানো যাইতে পারে; তারা সত্যি সত্যি রিফিউজি নাও হইতে পারে, অন্য উদ্দেশ্য আছে বইলা কিছু সন্দেহ করা যাইতে পারে।
আশ্রয় দিয়া আগের ২৫ হাজারসহ সবাইরে নিয়া কামাই করার জন্য আন্তর্জাতিক অভিযানে নামতে হবে।
ইউনিসেফ থেকে পানি, স্যানিটেশন বা পুষ্টির জন্য ডলার কামাই করা যাবে। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ একটা ফি চাইবে। আরব থেকে খেজুর, তেল, দুম্বার মাংস পাওয়া যাইতে পারে। বিশ্বখাদ্য সংস্থা থেকে খাবার। জাপানের কাছ থেকে চাল আর তাবু।
অষ্ট্রেলিয়া থেকে গম আর দুধ। সেফ দ্য চিল্ড্রেন আর ইউএসএইডকে লেলাইয়া দিতে হবে; বাংলাদেশের সমাজবিজ্ঞানী আর ডাক্তারদের চাকরি হবে। আন্তর্জাতিক প্রচারণা চালাইতে হবে খালি শরণার্থীদের খাওয়া-পরার জন্য। ব্রাক-রে লেলাইয়া দিলে ওইখানে স্কুল বানাইবে, ডোনেশন ফজলে হাসান আবেদই জোগাড় কইরা ফেলবে। আরো বাংলাদেশীর চাকরি! পর্যাপ্ত কনডমের ব্যবস্থা করতে হবে, চীনের কাছ থেকে এইটা পাওয়া যাইতে পারে।
আন্তর্জাতিক প্রচারণার বেলায় কয়েকটা জিনিস খেয়াল রাখতে হবে। যদ্দিন না এই শরণার্থীরা নিজ বাড়িতে ফেরত যায় তদ্দিন সাহায্য ধারাবাহিক করতে হবে। ফেরত নেওয়া বিষয়ে মায়ানমারকে বাংলাদেশ কিছুই বলবে না। জাতিসংঘ আর অন্যদের কাছে থেকে ধারাবাহিক সাহায্যের চুক্তি করতে পারলে ওরাই মায়ানমারের সাথে আলাপ করবে। বিশ্বমিডিয়ায় বাংলাদেশ ভালোভাবে প্রচারণা করতে পারলেই ধারাবাহিক সাহায্য পাওয়া যাবে।
বিদেশে বাংলাদেশের সকল দূতাবাসের সামনে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য অর্থসাহায্য চাইয়া ব্যানার টানাইয়া রাখতে হবে। বন্ধুরাষ্ট্রের দূতাবাসের সামনে টানানোর চেষ্টা করতে হবে। সকল দেশে সরকারী পর্যায়ে চিঠি দিতে হবে। ঢাকায় আসা সকল বিমানকে বা চট্টগ্রামে আসা জাহাজের গায়ে পোস্টারিং করতে বাধ্য করতে হবে। গুগোল আর ফেসবুকে অ্যাড দিতে হবে।
পুরো প্রচারণায় মায়ানমারের সমালোচনা করা যাবে না। তবে বিশ্বমিডিয়ারে শরণার্থী শিবিরে দাওয়াত দিতে হবে। বাংলাদেশের ফটোগ্রাফার আর ডকুমেন্টারি নির্মাতাদের লেলাইয়া দিতে হবে। শরণার্থীদের সাক্ষাৎকার নিতে হবে বেশি বেশি। ইংরেজি সাবটাইটেল থাকতে হবে।
ইউটিউব/বিবিসি/আল জাজিরা/টাইমসরে কাজে লাগাবার চেষ্টা করতে হবে।
এভাবে আওয়ামী লীগও ভালো ব্যবসা করতে পারবে। বিদেশে সরকারের ভাবমূর্তি ভালো হবে। রিলিফ বিতরণে আওয়ামী লীগের কর্মীরা বেশ কামাই করতে পারবে। এই টাকায় চট্টগ্রামে সালাউদ্দিন কাদের বা বিএনপির বেশ কিছু লোক কেনা যাবে।
রাজনীতিক হিসাবে শেখ হাসিনার বিশ্বখ্যাতি অর্জন হবে। বিদ্রুপের মতো শুনাইলেও সত্যি সত্যিই নোবেল বিষয়ক একটা ফল পাওয়া যাইতে পারে।
সমস্যা একটাই—পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ইফিসিয়েন্সি!!
আরেকটা বিষয় বলা দরকার। বাংলাদেশের রাখাইনরা শুনছি মায়ানমার চইলা যাইতেছে। গিয়া তারা প্রতিশোধপরায়ণ হইতে পারে।
সেইটা ঝাড়তে পারে রোহিঙ্গাদের উপর। বাংলাদেশে রাখাইনসহ সকল অবাঙালিদের উপর বাঙালির নির্যাতন বন্ধ করা দরকার। বাঙালিরা লাভ-ক্ষতি ভাইবেন। । ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।