আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মগজের সেলুলয়েড

sorry vai ১ ভীড় ঠেলে উদ্ভ্রান্তের মতো ঘরে ঢুকে পড়লেন লোকটা। কয়েকজন থামাতে গেলে সুমন ঘোষের ঈশারায় তারাও ঠাঁই দাড়িয়ে রইলো। পৌছাতে দেয়া হলো তাকে। একটা মাঝবয়েসী উস্কোখুস্কো লোক। দাড়ি দেখে মনে হচ্ছে জোশ নিয়ে সেলুনের আয়নার সামনে বসার মত মুহুর্ত বহুদিন আসেনি।

খদ্দেরের শার্টটাও জানান দিচ্ছে পরিপাটিবিহীন জীবনের একটা নষ্টালজিক আর্টের কথা। সুমন ঘোষ স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন লোকটার দিকে। লোকটা হাপাচ্ছেন আর বিড়বিড় করতে করতে এলোমেলো মাথা নাড়ছেন ডানে বায়ে। সুমন ঘোষের দিকে চোখ পড়তেই বিড়বিড়টা স্পষ্ট হলো, আসলেই একটা মিরাকেল, মিরাকেল মানে বিরাট মিরাকেল। না হলে কি আর....।

সুমন ঘোষ ভারি গলা খুললেন সুমন ঘোষ জানতে চাইলেন, কি মিরাকেল? লাইফ? লোকটা আস্তে করে হ্যা সূচক ঘাড় নাড়লেন। বসুন, চা খেতে খেতে মিরাকেল এর আলাপ করা যাবে- সুমন ঘোষ পাশের টোলটা ঠেলে দিতে দিতে বললেন। লোকটা জড়োসড়ো হয়ে বসলেন। সুমন ঘোষের ঈশারায় ঘরের লোকজন বাইরে চলে গেলো। ফ্লাক্স থেকে চা ঢালতে ঢালতে সুমন ঘোষ বললেন, গভীর জীবনবোধের সাথে চা না হলে আলাপটা ঠিক জমেনা, নিন, চা নিন।

লোকটা বিরক্ত হয়ে বললেন, আমি খোশগল্প করতে আসিনি। চায়ের আড্ডায় জীবনবোধ আপনাদের সফল মানুষদের মানায়, আমার না। ঠোটের কোণে একটা হাসি মেখে সুমন ঘোষ বললেন, বোঝা যাচ্ছে জীবনের কাছে বেশ নুয়ে পড়েছেন। যতই নুয়ে পড়ুন না কেন, চা টা কে কিন্তু রাখতেই হয়। সংসার ছাড়লেও চা ছাড়া যায়না।

নিন নিন। একটা কষে চুমুক দিয়ে বলুন দেখি কি বলতে এমন দড়িছেড়া লাল ষাঢ়ের মতো ছুটে এসেছেন। লোকটা এবার শান্ত হয়ে চা টাতে চুমুক দিয়ে বললেন, আমি জুনায়েদ আমিন। সিনেমা বানাই। তবে সেলুলয়েডে না, মাথায়।

তো সমস্যাটা হলো মাথায় ওগুলো জমতে জমতে একেবারে যা তা অবস্থা। গোটা জীবনটাই ওগুলো নামানোর চেষ্টায় কাটিয়ে দিলাম। হলো না। আপনারা সুমন ঘোষরা আমার কত্ত পরে জোস্না দেখে কেমন আমার আগেই জোস্নাবিহারি চলচ্চিত্র বানিয়ে একেবারে হুলস্থুল বাধিয়ে দিলেন। আর দেখুন আমি, সেই যৌবন থেকে আজ অব্দি ডাস্টবিনের পাশে দাড়িয়েই মগজের সেলূলয়েডেই খালি চলচ্চিত্র বুনে যাচ্ছি।

মিরাকেল বলবেন না এটাকে তো কি বলবেন? সুমন ঘোষ না সূচক মাথা নাড়লেন, মিরাকেল না ঠিক, এটাকে বলতে পারেন চান্স বা স্কোপ। আমার এসেছে, আপনার আসেনি। লোকটা তীব্রভাবে প্রতিবাদ করলেন, এটাই এটাই মিরাকেল। আপনার এসেছে, আমার আসেনি। সুমন ঘোষ নেড়েচেড়ে বসলেন, তো যাই হোক, আপনার মূল কথাটা ঝটপট সেরে ফেললে ভালো হয়।

আমার স্যুটিং আছে। এবার বেশ ক্ষেপে উঠলেন লোকটা, আপনার লজ্জা করেনা একজন জীবনক্ষয় করা স্বাপ্নিক মানুষের সামনে দিয়ে হাতিঘোড়া নিয়ে স্যুটিং এ যেতে, যে লোকটা এই সিনেমার জন্যই তার সমস্ত জীবন ব্যায় করেছে? সুমন ঘোষ নির্লিপ্তভাবে উত্তর দিলেন, না, লজ্জা করেনা, কারন অনেক নির্লজ্জদের কাছে মাথা নুয়ে নুয়ে এ পর্যন্ত। লোকটা মুখের কাছে এসে আস্তে আস্তে বললেন, ওভাবে না থাকে শিল্পীর ব্যাক্তিত্ব না থাকে শিল্পের মান? সুমন ঘোষের উত্তর, আমাদের এ বাস্তবতায় ব্যাক্তিত্ব রক্ষার জন্যও কিছুটা ব্যাক্তিত্ত্ব বিনিয়োগ করতে হয়। আর শিল্পের মানের কথা বললে তো আপনার ঐ মগজের সেলুলয়েড পর্যন্তই শিল্প দৌড়াবে, এর বাইরে আসতে চাইলেই মান শব্দটা ভুলে গিয়ে মানির চিন্তায় নেমে আসতে হবে। লোকটা একটা তাচ্ছিল্যের হাসি হেসে বললেন, আপনারা পারেনও।

সুমন ঘোষ সোজা লোকটার চোখের দিকে তাকিয়ে বললেন, পারতে হয়, আমাদেরকে অনেক কিছুই পারতে হয়। আপনার মত মানসিক রোগী হবার ইচ্ছে আমার ছিলনা, তাই পারতে হয়েছে। এবার সোজা বলে ফেলুন কি জন্য আমার কাছে এসেছেন। লোকটা একটু চুপ থেকে বললো, আমার অনেক স্ক্র্রীপ্ট লোকে মেরে দিয়েছে। কিছুই বলতে পারিনি।

তবে জীবনের সেরা স্ক্রীপ্টটা কেউ মারতে পারেনি। ওটা আমি বানাবই বানাব। এ জন্য আমার একটা ক্যামেরা দরকার। আপনার কাছে এসেছি একটা ক্যামেরা ধার চাইতে। অল্প কয়দিনের জন্য।

সুমন ঘোষ হেসে বললেন, ধার তাকেই দেয় মানুষ যে ধার শোধতে পারে। আপনার তো সে সামর্থ্য নেই। লোকটা কাচুমাচু হয়ে বললেন, আমি আপনাকে ঠিক দিয়ে দেব কিছুদিনের মধ্যেই। সুমন ঘোষ, তার নিশ্চয়তা কি? লোকটা এবার পাগলের মত শরীর নাড়তে থাকে। সুমন ঘোষ বেশ রুক্ষভাবে বলেন, আপনার ব্যাক্তিত্ত্ব এখন কোথায় গেলো? জানি আপনার আমাকে দেয়ার মতো কোন জামানত নেই।

সো, ক্যামেরা দেয়া সম্ভব না। যদি কোন জামানত দিতে পারেন তবেই। লোকটা কিছুক্ষণ মাথা চুলকিয়ে উচ্ছসিত হয়ে বলে, আমি আপনাকে খুব অসাধারণ একটা স্ক্রিপ্ট দিতে পারি আমাকে ক্যামেরাটা দিলে। বলেই সে পকেট থেকে একটা জীর্ণ স্ক্রীপ্ট বের করে। সুমন ঘোষ থামিয়ে বলে, রাখুন রাখুন।

আমার হাতে অন্তত গোটা বিশেক স্ক্রীপ্ট রাইটার আছে যাদের স্ক্রীপ্ট পাবার জন্য মানুষ লাইন ধরে থাকে। আপনারটা না হলেও চলবে। আচ্ছা, আপনার সংসার নেই? চালান কি করে? বউ পিটায় না আপনাকে তেল নুনের জন্য, বাচ্চারা ঘেন্না করেনা এই অধম জৈবিক পিতাকে? লোকটা হু হু করে হেসে উঠেন, আপনি কি মনে করেন আমার সংসার থাকা উচিত? সুমন ঘোষ উত্তর দেয়, না, একদমই উচিত না, তবে আপনাদের মত লোকেরা যৌবনের কোন এক সময় খুব জীবনমুখী হয়ে হুলুস্থুল বাধিয়ে সংসার পাতেন, তারপর পিতা হবার জন্যও অস্থির হয়ে উঠেন। আর তার কিছুদিন পর থেকে ধীরে ধীরে আপনাদের ঘিরে বেড়ে উঠা মানুষগুলোকে সমুদ্রে ভাসিয়ে নিজের জগতে ডুব দিয়ে বসে থাকেন। না পান নিজে শান্তি না দেন অন্য কাউকে একটা নূন্যতম মানসম্তমত জীবনের নিশ্চয়তা।

লোকটা বেশ ঠান্ডা গলায় বলেন, আপনি বেশ সূক্ষদর্শী মানুষ। হ্যা, আমি পুরুষ হিসেবে ব্যার্থ, কিন্তু পিতা হিসেবে শতভাগ সফল। বউ ছেড়ে গেছে বহু আগে। এখন জুয়া খেলে পেট চালাই। লস করে বাড়ী ফিরলেও ছোট্ট মেয়েটা আমাকে মায়ের মত মাথায় হাত বুলিয়ে শান্তনা দেয়।

তখন মনে হয় আমার থেকে সফল পিতা আর একটাও নেই দুনিয়াতে। সুমন ঘোষ মাথা নাড়েন, আমি বিশ্বাস করিনা যে আপনি পিতা হিসেবে সফল। লোকটা বলে, আমি আপনাকে বিশ্বাস করাতেও চাইনা। যাই হোক। শেষবারের মত জানতে চাচ্ছি ক্যামেরা দিবেন কিনা।

সুমন ঘোষ মুচকি হাসেন, আমি চাইনা শেষ পর্যন্ত আমার ক্যামেরা জুয়ার দানে উঠুক। লোকটা হালকা স্বরে বলেন, মিস্টার ডিরেক্টর, আপনি কোনদিন জুয়া খেলেননি তাই হয়তো জানেননা যে, অনিশ্চয়তাও একটা বড় সত্য। মহাবিশ্বটাও চলছে একটা অনিশ্চয়তার হাত ধরেই। আর আমি একটা আগাগোড়া অনিশ্চিত মানুষ বলে আপনার ক্যামেরার নিশ্চিত কোন জামানত আমি দিতে পারছি না। আমি যাচ্ছি।

২ মেয়ের কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছেন জুনায়েদ আমিন আর মেয়ে চুলে বিলি কেটে দিচ্ছে। জুনায়েদ আমিন বিড়বিড় করে বলছেন, গোটা দুনিয়াটাই একটা অনিশ্চয়তার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে গো মা। এখানে কোন কিছুই নিশ্চিত না। মাগো, আমি জুয়াড়ী মানুষ। সব তাই জুয়ার মতো করে দেখি।

আসলে কি তাই? সবই কি অনিশ্চিত? কোন কিছুই কি জগতে নিশ্চিত না? মেয়েটা একটু ভেবে বলে, না বাবা। একটা জিনিস আছে নিশ্চিত। জুনায়েদ আমিন উঠে বসেন, কি সেটা? মেয়েটা বাবার গলা দুহাতে জড়িয়ে ধরে বলে, এই যে আমি তোমাকে ভালবাসি, এটা নিশ্চিত। কথাটা শুনে জুনায়েদ আমিনের গলা ধরে আসে। চোখের জল আড়াল করার জন্য এদিক সেদিক মাথা নাড়তে থাকেন।

মেয়েটা বাবার দুগালে হাত রেখে সোজা তাকিয়ে বলে, বাবা, দেখো একদিন আমি বড় হয়ে তোমার সব অনিশ্চিত নিশ্চিত করে দেব। জুনায়েদ আমিন বাচ্চাদের মত হাইমাউ করে কেদে উঠেন, আমি আজ নিশ্চিত জিনিসের সন্ধান পেয়েছি মা, আমি আজ এতটা দিন পর নিশ্চিত জিনিসের সন্ধান পেয়েছি। ৩ কাকেরা ঢাকার রাস্তায় কা কা শব্দে মিছিল করছে। ভোরের আলোয় কেবল ভরে উঠছে পথঘাট। জুনায়েদ আমিন মেয়েকে নিয়ে সুমন ঘোষের বাসায় ঢুকলেন।

ড্রয়িংরুম এ স্ত্রীর সাথে বসে চা খাচ্ছেন আর পত্রিকা পড়ছেন সুমন ঘোষ। জুনায়েদ আমিনকে দেখে একগাল হাসি হেসে বললেন, শুভ সকাল। এতা সকালে আপনি? জুনায়েদ আমিন কোমল স্বরে বললেন, আমি জামানত নিয়ে এসেছি। একেবারে নিশ্চিত জামানত। সুমন ঘোষ বললেন, কি জামানত? জুনায়েদ আমিন মেয়ের দিকে তাকিয়ে বললেন, আমার কণ্যা।

যার প্রতি আমার ভালবাসা একটি নিশ্চিত ব্যাপার। ওকে রেখে আপনি নির্দ্বিধায় আমাকে ক্যামেরা ধার দিতে পারেন যে আপনার ক্যামেরা জুয়ার দানে উঠবেনা। সুমন ঘোষ শান্ত গলায় বললেন, আপনি বসুন। মেয়েকে নিয়ে বসলেন জুনায়েদ আমিন। মেয়েটাকে কাছে টেনে এনে সুমন ঘোষের স্ত্রী জিজ্ঞেস করলেন, তোমার নাম কি? মেয়েটা উত্তর দিলো, আমার নাম শ্রাবস্তী।

মিসেস সুমন বললেন, বাহ, দারুন নাম। নামটার অর্থ কি বলো তো? শ্রাবস্তী বয়েসীদের মতো উত্তর দিলো, শ্রাবস্তী একটা সুন্দর প্রাচীন নগরীর নাম। কবি জীবনানন্দ দাস তার বনলতাসেন কবিতায় বনলতার সৌন্দর্য বর্ণণা করতে গিয়ে শ্রাবস্তী নগরীর উপমা দিয়েছেন। মিসেস সুমন অবাক হয়ে বলেন, মেয়েকে তো একেবারে মিনি সাহিত্যিক বানিয়ে ফেলেছেন। বলেই শ্রাবস্তীকে জড়িয়ে ধরে।

আপনি স্যুটিং এ যান। ও আমার কাছেই থাকুক ততদিন। শ্রাবস্তী প্রতিবাদ করে, না, আমিও বাবার সাথে স্যুটিং এ যাবো। জুনায়েদ আমিন আফসোসের হাসি হেসে বলেন, মা গো, এখনও তো ক্যামেরাই জোগাড় হয়নি, স্যুটিং তো বহুদূর। অমনি সুমন ঘোষ হাক ছাড়েন, ফরিদ, লেটেস্ট থার্টিফাইম এম এম এর ক্যামেরাটা নিয়ে আসো।

ফিল্ম ভরে দিয়ে, সাথে কিটস যা যা আছে দিয়ে দিও। মেয়েটা আবার বলে, আমি তোমার সাথে স্যুটিং এ যাবো। মিসেস সুমন বলেন, স্যুটিং এ গেলে বাবার কাজের ডিস্টার্ব হবে। তুমি কি চাও বাবার কাজে ডিস্টার্ব হোক? মেয়েটা বাবার দিকে ছলোছলো দৃষ্টিতে তাকায়। বাবা মেয়ের দিকে চেয়ে মুচকি হেসে মাথা নেড়ে ভরসা দেয়।

৪ খা খা রোদ। পয়ত্রিশ মিলিমিটারের ক্যামেরাটা কাধে ঝুলিয়ে জুনায়েদ আমিন ঢাকার পথে হাটছেন। যেন গুরুত্ত্বপূর্ণ কিছু খুজছেন। মাঝে মধ্যে আবার আখের রস খেতে খেতে জিরিয়ে নিচ্ছেন। এভাবেই নতুন ঢাকার চাকচিক্য ছাড়িয়ে পুরান ঢাকার ঘুপচি পেরিয়ে সদরঘাট।

শেষ আখের রস খাচ্ছেন আর তাকাচ্ছেন আশেপাশে। হঠাত কাঙ্খিত জিনিসচি মিলে গেলো। একটা টোকাই। রাস্তার পাশে বিমর্ষভাবে বসে আছে। কাধে খালি বস্তা।

মায়াবী চেহারার এমন কোন ছেলেকেই খুজছিলেন তিনি যার মাঝে তার নিজের শৈশবের ছায়া দেখা যায়। জুনায়েদ আমিন এগিয়ে গিয়ে ছেলেটার পাশে বসলেন ফুটপাত এ। ছেলেটা নির্বিকার। জুনায়েদ আমিন আলতোভাবে ছেলেটার চুলে হাত রাখেন। ছেলেটা এবার তাকায়।

জুনায়েদ আমিন টানা তাকিয়ে থাকেন কিছুক্ষণ। তারপর ঠোট নাড়েন, তোমার নাম কি? ছেলেটা যেন কতো বছর তুমি সম্বোধনটা শোনেনি কারো কাছে। তাই চোখ দুটোতে যেন অশ্রুর ঢেউ বাধ ভেঙে আসতে ধরে। ধরা গলায় ছেলেটা জবাব দেয়, ছলিম, ছলিমউদ্দিন। জুনায়েদ আমিন মোলায়েম গলায় বলে, এতা মন খারাপ কেন? ছেলেটা জবাব দেয়, বাপ ফালাইয়া গেছে গা।

মায় কাইল আরেক বেটারে নিকা করছে। জুনায়েদ আমিন বলেন, আমার সাথে যাবে? ছলিম শুকনো গলায় জানতে চায়, কই যামু? জুনায়েদ আমিন বলেন, স্যুটিং এ। আমি একটা সিনেমা বানাবো। তুমি ঐটাতে অভিনয় করবা। ছলিম হেসে বলে, আমারে দিয়া কি সিনেমায় চা টানাইবেন? জুনায়েদ আমিন বেশ কৌতুক বোধ করেন।

মাথা নেড়ে উত্তর দেন, না, তোমাকে নায়ক বানাবো। ছলিম খিক খিক করে হেসে উঠে, মান্না না সাকীব খান? জুনায়েদ আমিন বলেন, না, ছলিম খান। নায়ক ছলিমউদ্দিন। তারপর দুজন হো হো করে হেসে উঠে। ৫ লঞ্চের ডেকে ছলিম আর জুনায়েদ আমিন গল্পে মশগুল।

ছলিমঃ তাইলে তো আফনে আমার প্রতিবেশী। জুনায়েদ আমিনঃ কিভাবে? ছলিমঃ আপনার অগামসি লেন এর মসজিদের পাশে একটা ভাঙ্গারীর দোকান আছে না? ঐ দোকানে মহাজন আমারে রাইতে ঘুমাইতে দেয়। জুনায়েদ আমিনঃ তাহলে তো আসলেই প্রতিবেশী। প্রতিবেশী হউলো বিপদের সাথী। এই যে আমার এখন বিপদ, সিনেমার হিরো পাইতাছিনা।

তুমি আমার ছবিতে মাগনা হিরোর পার্ট করতেছ। (ছলিম হো হো করে হেসে উঠে) ছলিমঃ তা সিনেমার গল্প তো কইলেন না? আমি কিন্তু আলেকজেন্ডার বো এর মুতন ফাইট দিবার পারি। তারপরে সাকীব খানের মুতন নাচবার পারি। বলেই উঠে দাড়িয়ে একটা ফাইট আর একটা নাচের অভিনয় দেখায়। জুনায়েদ আমিন হাসতে হাসতে বলেন, আমার সিনেমায় যে এইসব কিছুই নাই।

তাহলে কি তুমি অভিনয় করবা না? ছলিম, না থাকলে তো ছবি হিট অইবোনা। তারপরও করমু। জঅবনের প্রথম কামেই কেউ হিট অয়না। টাইম লাগে। জুনায়েদ আমিন আবারো হাসতে হাসত গড়িয়ে পড়েন, আচ্ছা, আগে এইটা করো।

পরে এই ছবি থেকেই তুমি ভালো অফার পাবা। ছলিম হা করে তাকিয়ে থাকে। একটু পর বলে, আচ্ছা ছবির গল্পটা এইবার কন দেহি। জুনায়েদ আমিন গল্প শুরু করেন, একটা ছোট্ট ছেলে প্রতিদিন ঘুড়ি উড়ায় লালনডাঙার মাঠে। লাল নীল আর হলুদ রঙা চিলে ঘুড়ি।

প্রতিদিন সে সূতা বাড়ায় নাটাইয়ের। প্রতিদিন সে মেঘ ছুতে চায়। কিন্তু পারেনা। আকাশ ধোকা দেয়। আকাশ আর মেঘের উপর তাই তার প্রবল অভিমান উছলে পড়ে।

একদিন সে তার মাটির ব্যাংক এ জমানো টাকা দিয়ে অনেক সূতো কিনে। আজ সে মেঘ ছোবেই ছোবে। সূতা বাড়ে, ছেলেটার উচ্ছাস বাড়ে। সূতা বাড়ে, ছেলেটার উচ্ছাস বাড়ে। সূতো বাড়ে, ছেলেটার উচ্ছাস বাড়ে।

হঠাত মেঘ কালো হয়ে উঠে। কালচে ভয়ানক হাওয়া খামচে দিয়ে চিলেঘুড়ির ডানা ছিড়ে নেয়। ছেলেটা বলে, নেমে আয়, আমার চিলেঘুড়ি নেমে আয়। নেমে আয়, আমার মাটির ঘরে ফিরি। শেষে ডাকু হাওয়া খামচে ছিড়ে ফেলে মাটির বন্ধন।

চিলেঘুড়ি পশ্চিমে ছুটে। ছেলেটাও ছুটে। ছেলেটার পঙ্খিরাজ ঘোড়া নেই যে তার লুণ্ঠিত রাজকুমারীকে উদ্ধার করে। পা দুটো থেমে যায় পথের শেষে। খালের অপারে দিগন্তে চিলে ঘুড়িটা একসময় মিলিয়ে যায়।

ছলোছলো চোখে দিগন্তরেখায় তাকিয়ে থাকে চেলেটা। একটা বয়েসী হাত তার তেলচিটচিটে মাথায় হাত রেখে বলে, তোমার ঘুড়ি আবার ফিরে আসবে। ছেলেটা প্রশ্নাকূল চোখে তাকায় প্রবীণের দিকে। প্রবীণ কন্ঠে উচ্ছাস, যেদিন এ হাওয়া উল্টো দিকে বইবে সেদিন তোমার চিলে ঘুড়ি ঠিক ফিরে আসবে। তারপর ছেলেটা সেই খালপাড়ে দাড়িয়ে থাকে, কখন উল্টো হাওয়া বয়।

গল্পটা শেষ করে জুনায়েদ আমিন উদাস দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন আকাশের দিকে। ছলিমউদ্দিন কোমল গলায় বলে, আমি তেমুন কিছুই বুাঝ নাই, তয় খুব মন খারাপ অইয়া গেলো। আমি অভিনয় করমু। ৬ মিসেস সুমন শ্রাবস্তীকে নিয়ে বারান্দায় বসে গল্প করছেন। ___ তোমার মা র জন্য কষ্ট হয়না? ___ না।

___ কেন? ____ আমার বাবা আছে না? ও ই আমার সব। ____ তুমি আমার মেয়ে হবে? ___ না। ___ আমি তোমাকে চাদের বুড়ির গল্প শোনাবো, কানামাছি খেলবো, ঘুরে বেড়াবো অপূর্ব সব জায়গাগুলোতে, রোবট কিনে দেব, সাইকেল কিনে দেব। শুধু আমাকে মা বলবে আর আমার বুকে ঘুমাবে। ___ না।

কক্খনও না। আমার বাবা তাহলে কাদবে। আমার বাবা সিনেমা বানিয়ে ফিরে এলে আমি আমাদের বাসায় চলে যাবো। আমার নয়নতারা গাছগুলোতে পানি দিতে হবে, আমার টিয়াটাকে খেতে দিতে হবে। ___ তোমরা কোথায় থাকো? ____ ৩১, আগামসি লেন।

আমার ফুপুর বাড়ী। উনারা আমেরিকায় থাকেন। বাবাকে থাকার জন্য বাড়ীটা দিয়ে গেছেন। আগামী বছর এসে ওখানে এপার্টমেন্ট বানাবে। আর আমাদের তাড়িয়ে দেবে।

___ তখন কোথায় থাকবে? তারচেয়ে আমার এখানে থাকো। অনেক ভালো থাকবে। ___ আরে না, বাবা বলেছে, আমাদের তাড়িয়ে দিলে আমাকে নিয়ে বাবা নাকি মেঘনা নদীতে একটা নৌকা ভাসাবে। আমরা নৌকায় ঘুমাবো আর মাছ ধরে ধরে খাবো। কত্তো মজার না? আমি মনে মনে আল্লার কাছে বলি ফুপি যেন তাড়াতাড়ি এসে আমাদের ঘাড় ধরে বের করে দেন।

মিসেস সুমন হা করে মেয়েটার দিকে তাকিয়ে থাকে। ৭ একটা পাকা রাস্তা ধরে জুনায়েদ আমিন আর ছলিমউদ্দিন হাটছে। দুইদিকে কিছু দোকানপাট। জুনায়েদ আমিন ভ্রু কুচকে বললো, এইটা কি সত্যিই আমার লালনডাঙা? একটা পথচারীকে থামিয়ে বললেন, ভাই, এইটা লালনডাঙা না? লোকটা উত্তর দিলো, হ, কেন সন্দেহ আছে নি? জুনায়েদ আমিনঃ এইখানে একটা বড় মাঠ ছিলনা? পথচারীঃ আছিল, তয় সরকার বাড়ীর লোকজন এইডারে বয়লার বানাইছে। এখন কেউ কি জমিন পতিত রাখে মিয়া? জুনায়েদ আমিন উদ্ভান্তের মত চারদিকে তাকায়।

তার শৈশবের দৃশ্য ভাসতে থাকে। পাশের খালে টলমলে পানি ছিল, এখন সেখানে সরু ড্রেন। বিস্তৃত ধানক্ষেতে মানুষের বাড়ীঘর। জুনায়েদ আমিন ধরা গলায় বলেন, আমি সিনেমা বানাবো না। ছলিমুদ্দিন কাছে এসে শোধায়, ক্যান? জুনায়েদ আমিন উত্তর দেন, আমার ঘুড়ি উড়ানো সেই মাঠ আর নেই।

৮ লঞ্চের ডেকে তারা দুইজন। রাতের লঞ্চে সবাই ঘুমিয়ে। একটা বৃদ্ধ বাউল দু তারা ঝুলিয়ে গান গাইছে, বদল করলাম জমিনদারী বদল করলাম বধু, বুকের মধ্যে বাইন্দা রাখলাম মন দু তারা শুধু। বদল কইরা কি পামু রে সেই পরাণের সুধা, মিটিবে কি একজনমে সাত জনমের ক্ষুধা। রাতের আধার কেটে শো শো করে লঞ্চ ছুটতে থাকে।

বাউলের গানটা মৃদু বাতাসে মিলিয়ে যেতে ধরে আবার ফিরে ফিরে আসে। ৯ এভাবেই কিছুদিন জুনায়েদ আমিন সলিমকে খোজে ফেরেন ঢাকার অলিগলি। শেষে না পেয়ে কোন এক ভোরবেলা তার মন জানান দেয় যাই ঘটুক না কেন কণ্যাকে ছাড়া তার জীবন চলবেনা। সব হারিয়ে মানুষ বাচেনা। এতদিন সংসার সমুদ্রে একটা ক্ষুদ্র কাঠের ফালির মতো মেয়েটাই তাকে ভাসিয়ে রেখেছিল।

এখন বেশ ভালো করেই বোঝা যাচ্ছে যে তিনি তলিয়ে যাচ্ছেন। তলানোর আগে মানুষ শেষ অবলম্বন ঝাপটে ধরে। তিনিও ধরবেন। ছুটে গেলেন সব ভুলে সুমন ঘোষের বাসায়। ঘরে ঢুকেই সুমন ঘোষের মুখ।

তাকে দেখে সুমন ঘোষ উচ্ছসিত হয়ে বললেন, তাহলে ফিল্ম মেকারের ফিল্ম শেষ হলো এবার? ক্যামেরাটা দারুন না? একদম লেটেস্ট আনিয়েছি। জুনায়েদ আমিন চুপ। কোন সাড়া না পেয়ে সুমন ঘোষ বললেন, কি হলো আপনার? মন মতো হয়নি? সমস্যা নেই, আবার শুটিং হবে, আমি ইউনিট দেবো। খুব বড় ক্যানভাসে ছবি হবে। আপনি দুহাত ভরে বাজেট খাটাবেন ছবিতে।

সিঙ্গাপুর থেকে প্রিন্ট হবে ছবি। সব সিনেমা হলে মুক্তি পাবে। রাতারাতি আপনার সারাজীবনের বিনিয়োগ উঠে আসবে। সুমন ঘোষ উচ্ছাসে কাপছেন। জুনায়েদ আমিন শুধু একটা কথাই জানতে চাইলেন, আমার শ্রাবস্তি কোথায়? সুমন ঘোষ জানান, ও তো আমার উয়াইফ এর সাথেই সারাদিন থাকে।

হবে কোন রেস্টুরেন্ট, শপিংমল কিংবা চাইল্ড পার্ক এ। আমি জানতাম আপনি শুধু ক্যামেরা দিয়ে পারবেন না। শুধু ক্যামেরা দিয়ে ফিল্ম হয়না। কবে শুরু করতে চাচ্ছেন বলেন। জুনায়েদ আমিন মখ শক্ত করে জানতে চাইলেন, আপনি হঠাত আমার ফিল্ম নিয়ে এতো আগ্রহী হয়ে উঠলেন কেন? সুমন ঘোষ বললেন, হিসেব সহজ, লেটেন্ট ডিমান্ড।

আপনার অভাব আমি পূরণ করবেন আর আমারটা আপনি। আমার উয়াইফ নিঃসন্তান। শ্রাবস্তির সাথে এই কদিনে খুব বেশী জড়িয়ে গেছে ও। ও আপনারই মেয়ে থাকবে। শুধু আমরা ওকে লালনপালন করবো।

বাবা ও আপনাকেই ডাকবে। শুধু... জুনায়েদ আমিন হো হো করে হেসে উঠলেন, আমি আপনার আজীবন গোলামী করবো, আপনার বাড়ীতে চাকরের কাজ করব। শুধু আমার মেয়েটাকে আপনি ফিরিয়ে দিন। সুমন ঘোষ ভূরু কুচকে জিজ্ঞেস করেন, মানে? জুনায়েদ আমিন মাথা নিচু করে বলেন, আপনার ক্যামেরাটা আমি হারিয়ে ফেলেছি। সুমন ঘোষ খুব ঠান্ডা মাথায় বলেন, কেন মিথ্যে বলছেন? ক্যামেরাটা তো আপনি জুয়ার দান এ খোয়া দিয়েছেন।

সমস্যা নেই। দরকার পরলে আজীবন আপনার জুয়া খেলার খরচ আমি দেব। শ্রাবস্তীকে শুধু... জুনায়েদ আমিন আহত গলায় বলেন, আপনি কি আমার কথা বিশ্বাস করছেন না? সুমন ঘোষ ক্ষেপে গিয়ে বলেন, উন্মাদ আর ভন্ড মানুষের বেলায় বিশ্বাস শব্দটা প্রয়োগ করাটাও একটা ভন্ডামী। ততক্ষণে শ্রাবস্তী সুমন ঘোষের স্ত্রীর সাথে ড্রয়িংরুম এ আসে। প্রতিবাদী গলায় ও বলে, আমার বাবা মিথ্যাবাদী না।

আমার বাবাকে বকা দিবে না তুমি। সুমন ঘোষ রাগে কাপতে থাকেন কিন্তু কিছুই বলতে পারেননা। মিসেস ঘোষ অনেকভাবে বোঝান জুনায়েদ আমিনকে। মেয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরে বলে, তোমরা আমাকে আমার বাবার কাছে যেতে দাও। ।

আমি বড় হয়ে তোমাদের ক্যামেরা ফেরত দেব। এই যে বাবাকে ছুয়ে বলছি, আমি তোমাদের ক্যামেরা ফেরত দেবই দেব। শ্রাবস্তীর এই কথার পর একটা ক্ষণিক নিরবতা নেমে আসে সবার মাঝে। কয়েক মূহুর্ত পর মিসেস ঘোষ নীরবতা ভেঙে গোমড়ে কেদে ওঠে দ্রুত ঘরে চলে যান আর যাওয়ার সময় একটা কথা বলতে থাকেন, আমার কেউ নেই, আমার কেউ নেই। ১০ জুনায়েদ আমিন ঘরের তালা লাগালেন।

শ্রাবস্তীর হাতে টিয়া পাখির খাচা । একটা ছোট্ট ব্যাগ কাধে ঝুলিয়ে জুনায়েদ আমিন মেয়েকে বলেন, চল মা। মেয়ে জিজ্ঞাসু চোখে তাকিয়ে বলে, আমরা কোথায় যাচ্ছি বাবা? কিছুই তো বলছ না? জুনায়েদ আমিন হেসে ওঠেন, কেন, সেই নৌকাটার কথা মনে নেই? আমরা নৌকায় সংসার পাতবো গো মা। মেয়ে আনন্দে লাফিয়ে উঠে। মেয়ের মাথায় হাত রেখে বাবা বলেন, মা গো, এই শহর বড় নির্দয়, এই শহর বড় মায়াবীও।

এই গোলকধাধায় আর না। যেখানে ফুল, পাখি, প্রজাপতি আছে সেখানে যাই মা, চলো। দুজন হাটা দেয়। ১১ কয়েকদিন পরের কথা। মিসেস ঘোষ গাড়ী নিয়ে ছুটে যান শ্রাবস্তীর খোজে।

বাসার সামনে নেমেই দেখেন একটা ছোট্ট ছেলে তালাবদ্ধ দরজায় বসে আছে। মিসেস ঘোষ এগিয়ে গিয়ে ছেলেটাকে জিজ্ঞেস করলেন, এটা জুনায়েদ আমিনের বাসা না? ছেলেটা ঘাড় নেড়ে হা বলে। মিসেস ঘোষ বলেন, উনারা কোথায়? ছেলেটা বলে, আমিও খুজতাছি উনাদের। হুনলাম কয়দিন ধইরা খোজ নাই। আমি সেই বিয়ানবেলা থাইকা বইয়া আছি।

মিসেস ঘোষ বলেন, কেন? তোমার কি দরকার? ছেলেটা বলে, আমি উনার সিনেমার হিরু আছিলাম। সিনেমাটা অয়নাই। আমি ক্যামেরাডা নিয়া ভাইগা গেছিলাম। এহন ফেরত দিবার আইছি। মিসেস ঘোষ বেশ বড় একটা ঝাকি খান।

বলেন, কেন মেরে দিলে আবার কেন দিতে এলে? ছেলেটা বলে, আমার মায় খালি ট্যাকার জন্যে আমারে রাইখা এক বেটারে বিয়া করছে। আমি মারে ছাড়া থাকতে পারিনা। কষ্ট অয়, ঘুম অয়না রাইতে। তাই ভাবছিলাম ক্যামেরাডা বেইচা মায়েরে অনেক টেকা দিমু, যাতে হেই আমারে ছাইডা কুনদিন না যায়। কিন্তু জিনিসটা চুরি করনের পর থাইকা খালি পরিচালক চাচার মুখটা মুনে মুনে ভাসতাছে।

লোকটা ফেরেস্তার মুতন ভালা মানুষ। হেই লোকটার ক্যামেরা মাইরা দিয়া তারে বিপদে ফালানো রিরাট বেঈমানি। পারলাম না। তাই ফিরত দিতে আইছি। মিসেস ঘোষ ধরা গলায় বলেন, তোমার পরিচালক চাচা আর কোনদিন ফিরবে কিনা জানিনা।

তবে উনাকে আমি খুজে বেড়াব। তুমি আমার সাথে যাবে? আমাকে মা ডাকবে? ছেলেটার চোখ ছলছল করে উঠে। ১২ গ্রামের একটা রেলস্টেশনে নামেন জুনায়েদ আমিন মেয়েকে নিয়ে। চারপাশে তাকিয়ে দেখে নেয় এলাকাটা। তারপর মেয়েকে দূরের একটা পথ দেখায়, চল মা, আমরা ঐ পথে হাটা দেই।

দেখি পথটা আমাদের কতদূর নিয়ে যায়। মেয়ে মাথা নাড়ে। দুজন হাটতে হাটতে ক্রমশ দূরে মিলিয়ে যেতে থাকে। যেন দিগন্ত ছোয়ার বড় তৃষ্ণা ওদের। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।