যুদ্ধাপরাধীর বিচার ও জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবী করছি বেগম খালেদা জিয়া আর উনার পরিষদবর্গ সামিয়ানা টাঙ্গানোর মঞ্চে বসেছিলেন - নীচে লাল কার্পেট পাতা আর কর্মীরা বসেছিলো কঠিন রৌদ্রে তপ্ত পিচের উপর। এইতো আর কিছু না একটা সামন্ততান্ত্রিক জোটবদ্ধতার ছবি।
সভার শুরু হয় শিবিরের "পলাতক" সভাপতি দেলোয়ার হোসেন সাইদীর বক্তৃতার মাঝ দিয়ে - সেই মঞ্চে বসে ছিলো যে মামলায় বিএনপির নেতার জেলে সেই মামলার দুই পলাতক আসামী জামাতি নেতা। বেগম খালেদা জিয়া নিজের দলের নেতাদের জেলে রেখে জামায়াতের পলাতক নেতাদের নিয়ে সভা করে দেখালেন - উনি আসলে জামায়াতের উপর কতটা নির্ভরশীল।
জামায়াতের কর্মীরা সকাল থেকে আসা শুরু করে - দুপুর তাদের খাবার আর বিকেলে বিরানীর প্যাকেট দেওয়া হয় কেন্দ্রের থেকে।
এখানে প্রশ্ন - কোন জনসমাবেশে খাবারের ব্যবস্থা থাকে এমন কোন কথা আগে কখনও শুনিনি - তা থাকে কর্মী সন্মেলনে বা কাউন্সিলে - কারন কে আসবে - কতজন আসবে তা জানা যায়। রেজিষ্ট্রেশন করার কারনে এই ব্যবস্থাপনা করা সম্ভব। জনসভায় কি সম্ভব?
আর কি দেখলাম - সভাস্থলে জামায়াতের নেতাদের মুক্তির দাবীতে ফেস্টুন আর বিশাল বেলুন।
অবশেষে মহাসমাবেশ পরিনত হলো - জামায়াত-শিবিরের কর্মী সন্মেলনের । আর মার্চের উত্তপ্ত আন্দোলন গিয়ে ঠেকলো হুমকী ধামকীতে।
এই সমাবেশ আসলে কার জন্যে - কিসের জন্যে - কি দাবী আদায়ের জন্যে।
গতকাল খালেদা জিয়ার কন্ঠেও ছিলো না তেমন কোন আত্নবিশ্বাসের ছাপ - শুধু সরকারে সমালোচনা ছাড়া নতুন কিছু শুনলাম না। যদিও আন্দালিব পার্থ ক্ষমতায় গেলে বিপক্ষদলকে জেলে পাঠানোর কথা বললেন আর জামায়াত নেতারা যথারীতি মুক্তিযুদ্ধকে আন্ডারমাইন করে রাজনৈতিক সন্ত্রাসের কথা বলে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার গনহত্যার ( জেনোসাইড) কে আড়াল করতে চেযেছে। কি লাভ এতে - ইতিহাসতো তো রাজনৈতিক মঞ্চ থেকে লেখা না।
যথারীতি শিবির কর্মীরা মঞ্চের সামনে বসা নিয়ে ছাত্রদলের সাথে পিটাপিটি করলো।
এরা যদি সুযোগ পায় কোথা যাবে ছাত্র দল - সেই ভাবনার একটা ডেমো দেখলাম কাল।
সব মিলিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ঘূর্নিঝড় এখন লঘুচাপে পরিনত হয়েছে।
গতকাল ব্যারিষ্টার রফিকুল হক বিএনপিকে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন - তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ছিলো - সংসদে যাওয়া আর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার মেনে নেওয়া। দেশের রাজনীতির আবহওয়া যদি বিএনপির নেত্রী ভাল ভাবে পড়তে পারেন - তাহলে আশা করি মহাসমাবেশেরে নামে জামায়াত শিবিরের কর্মী জমায়েত আয়োজন করে যে জনসম্র্পক্ততা পাওয়া যাবে না - এই সোজা সত্যটা বুঝতে পারবেন।
বিএনপি একটা বড় রাজনৈতি দল - শুধুমাত্র ভোটের পরিসংখ্যানে ভয় না পেয়ে বিএনপির উচিত তাদের রাজনীতিকে ডাইভার্স করা।
সংসদ সদস্যদের সংসদে পাঠানো - যারা সংসদে না যাবে তারা সংগঠন গুছানো এবং জনগনের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে একটা সুনির্দিষ্ঠ লক্ষ্য নিয়ে দলকে চালানো।
এক দলের উপর রাগ করে আরেক দলকে ভোট দেওয়ার যে রীতি (নেতিবাচক ভোট) তা যদি আগামী নির্বাচনে কাজ না করে - তবে বিএনপির যে সংগঠনিক অবস্থা তা নিয়ে নির্বাচনে লড়াই করা কঠিন হবে। আর সব সময় দুই যোগ দুই চারই হবে তা অন্ধের মতো বিশ্বাস করা ঠিক না। বিশেষ করে জামায়াতের মতো একটা অতিধূর্ত দল - যারা জোটের নেতাদের দাবী অনুসারে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যেই পলাতক আসামীরা সমাবেশে এসে বত্তৃতা করতে পারে - তাদের উপর নির্ভরশীল না হওয়া ভাল।
বিএনপির উচিত দ্রুত সংসদে যাওয়া আর জামায়াতের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিষয়ে সুষ্পষ্ট বক্তব্য দিয়ে নির্ভার রাজনীতি শুরু করা।
নুতবা জামায়াতের সম্পৃত্ততাই তাদের জন্যে সর্বনাশের কারন হতে পারে - যেমনটা হয়েছে বিগত নির্বাচনে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।