আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মহাসমাবেশ : ১৯ দফা ‘বিশেষ’ নির্দেশনা

গর্জে ওঠার এইতো সময়.... তিতাস বাচাও, দেশ বাচাও ‘চলো চলো ঢাকা চলো’ শ্লোগানে রাজধানীতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলগুলোর ডাকা আগামী ১২ মার্চের মহাসমাবেশ বিধিনিষেধে মুড়িয়ে রাখা হয়েছে। মহাসমাবেশমুখী জনস্রোত ঠেকাতে ১৯ দফা লিখিত ‘বিশেষ’ নির্দেশনা সারাদেশের থানাগুলোতে পাঠিয়েছে পুলিশ সদর দফতর। বিশেষ ওই নির্দেশনায় বিএনপি-জামায়াতসহ অন্যান্য দলগুলোর নেতা-কর্মীদের ঢাকায় প্রবেশ একরকম নিষিদ্ধই করা হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী, যে থানা থেকে নেতা-কর্মীরা ঢাকার উদ্দেশে রওনা করবে, সেখানেই তাদের আটক কিংবা থামানো হবে। এক্ষেত্রে বিএনপি-জামায়াতের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনসমূহের ‘সংগঠকদের’ প্রথমে গ্রেফতার করতে বলা হয়েছে।

১৯ দফা বিশেষ নির্দেশনাসমূহ: এক. সাধারণ জনগণকে গড়পড়তা বা গণহারে গ্রেফতার না করে প্রয়োজনে গ্রেফতার কম হলেও গ্রেফতার যেন গুণগত/মানসম্মত হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। (কোন জেলার পুলিশ সুপারের সাফল্য কেমন তা পুলিশ সদর দফতর দেখবে। দুই. মফস্বল জেলার যে থানা হতে লোক/নেতা-কর্মীরা ঢাকার উদ্দেশে রওনা করবে সেখানেই তাদের আটক করতে হবে/থামাতে হবে। তিন. জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও বিআরটিএ’র সাথে আলাপ করে মহাসড়ক পাশ্ববর্তী থানাসমূহে চেকপোস্ট ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে আইন অনুযায়ী যানবাহন তল্লাশী, জরিমানা, আটক করতে হবে। গাড়িতে মাদক, অস্ত্র-গোলাবারুদ আছে কিনা তা দেখতে হবে।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং বিআরটিএ’র সহায়তা পাওয়া না গেলে তা পুলিশ সদর দফতরকে জানাতে হবে। চার. পুলিশের গাড়িসমূহ নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে, যাতে গাড়িগুলোতে কেউ ইট/পাথর না মারতে পারে বা গাড়ির কোনো রকম ক্ষতিসাধন করতে না পারে। পুলিশের দায়িত্ব পালনরত অফিসার ও ফোর্সের নিজস্ব নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং মোতায়েনকৃত ফোর্স রায়ট সরঞ্জামাদি (হেলমেট, বুলেট প্রুফ, লেগগার্ড ইত্যাদি) পরিধান করে ডিউটি করবেন। পাঁচ. ১২ মার্চ ২০১২ পর্যন্ত বিশেষ ব্যতিক্রম ছাড়া জেলা পুলিশ সদসদের সকল প্রকার ছুটি বন্ধ রাখতে হবে। ছয়. গৃহীত কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির লক্ষ্যে মাস্তান টাইপের লোকজন যাতে যানবাহন ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি কার্যক্রম সংঘটিত করতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে এবং এ ধরণের লোকজনকে গ্রেফতার করতে হবে।

সাত. বস্তি থেকে লোকজন যাতে ঢাকা যেতে না পারে সে লক্ষ্যে বস্তির নেতৃস্থানীয়দের সাথে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে তাদেরকে কৌশলে প্রভাবিত করতে হবে। বিষয়টি নজরাধীন রাখতে হবে এবং প্রয়োজনে গ্রেফতার করতে হবে। আট. ডেমরার কোনাপাড়া মান্নান হাইস্কুল মাঠে হাটহাজারীর শফি হুজুর ওয়াজ ওয়াজ মাহফিলে (১০ ও ১১ মার্চ) তিনি যাতে না যান সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। নিতান্তই পারা না গেলে বিষয়টি এসবি, ঢাকাকে অবহিত করতে হবে। নয়. সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস, এসএ পরিবহন ইত্যাদি জায়গায় সাদা পোষাকে পুলিশ সদস্য নিয়োজিত করতে হবে।

ওই স্থানসমূহে কি পার্শ্বেল আসে, ব্যানার লিফলেট আসে কি না তা পর্যবেক্ষণসহ সন্দেহজনক কোনো কিছু আদান প্রদান হচ্ছে কিনা তা লক্ষ্য রাখতে হবে। দশ. বিভিন্ন সরকারি অফিসের কর্মকর্তা-সরকারি কর্মচারিরা যাতে ছুটি নিয়ে ঢাকা না যেতে পারে সেজন্য ঊর্ধ্বতন কর্তপক্ষকে অধ:স্তনদেরকে ছুটি প্রদান হতে বিরত থাকতে হবে। এসপি, ডিএসপি হিসাবে তা নজরাধীন রাখতে হবে। এগারো. বিএনপি/জামায়াতপন্থী গাড়ির মালিকরা যাতে তাদের গাড়িগুলো ঢাকায় নেতাকর্মী বা সমর্থক প্রেরণে ব্যবহার করতে না পারে সেজন্য বিএনপি/জামায়াতপন্থী গাড়ি মালিকদের গাড়িগুলো সরকারি প্রয়োজন না থাকলেও প্রয়োজন দেখিয়ে অধিকহারে রিক্যুইজিশন করতে হবে, চেক করতে হবে, প্রসিকিউশন দিতে হবে। বারো. ট্রাকে করে লোক যাতে ঢাকা যেতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

ট্রাক মানুষ পরিবহনের জন্য নয়, মালামাল পরিবহনের জন্য। তেরো. ঢাকামুখী মাইক্রোবাস ভালোভাবে তল্লাশী করতে হবে এবং আরোহনকৃত যাত্রীদেরকে তল্লাশী/জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। চৌদ্দ. রেলওয়ে পুলিশকে সাথে নিয়ে ঢাকামুখী ট্রেনে তল্লাশী অভিযান পরিচালনা করতে হবে এবং সন্দেহভাজনদেরকে গ্রেফতার করতে হবে। পনেরো. মাদরাসা, ইসলামিক এনজিও, ইসলামিক কিনিক, শিবিরের মেস ইত্যাদি সন্দেহজনক প্রতিষ্ঠানসমূহে তল্লাশী অভিযান পরিচালনা করতে হবে এবং সন্দেহজনক কাউকে পাওয়া গেলে সাথে সাথে গ্রেফতার করতে হবে। ষোল. বিএনপি/জামায়াত এর বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনসমূহের সংগঠকদের প্রথমে গ্রেফতার করতে হবে।

সতেরো. কিছু লোক ঢাকায় কোনো ঘটনা ঘটলে ওই ঘটনার জের ধরে স্থানীয় এলাকায় প্রতিক্রিয়া/ভাঙচুর করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর জন্য ওত পেতে থাকতে পারে। এ ধরনের কোনো ঘটনা যাতে ঘটতে না পারে সে জন্য আগে থেকে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে এবং এ জাতীয় লোকজনকে গ্রেফতার করতে হবে। আঠারো. এম্বুলেন্স, দমকল বাহিনীকে আগে থেকে চিঠি দিয়ে প্রস্তুত রাখতে হবে। যাতে জরুরি মুহূর্তে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের পক্ষ থেকে সহায়তা পাওয়া যায়। উনিশ. স্থানীয় মাদরাসা, স্কুল, কলেজ যাতে খোলা থাকে এবং ছাত্র-শিক্ষক যাতে উপস্থিত থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

প্রয়োজনে প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষদের সাথে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। View this link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.