আমরা সবাই অভিনয় শিল্পী এই রঙ্গমঞ্চের...... নিলীমার সাথে পরিচয় বছর তিনেক আগে। একসাথে পথ চলতে গিয়ে পরিচয়টা, শুধু পরিচয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে বন্ধুত্বে রুপ নিল। বলা যায় অনেকটা আত্মার সম্পর্ক গড়ে ওঠেছিল। নিলীমা চোখ বন্ধ করে বলেদিতে পারত আমার পথচলা, প্রতিধ্বনি।
নিলীমার চালচলন পোশাক আশাক সবই ছিল, রুচিশীল , ভদ্র আর আধুনিকতার পরিচায়ক।
এযুগের মেয়ে হয়ে ও আধুনিকতার নামে নোংরামি বা আশালীনতার কোন ছাপই তার পোশক, রুচিবোধ কিংবা বাচনভঙ্গিতে ছিল না। যা প্রথমদিনই আমার নজর কেড়েছে। সেই সুবাদেই তার সাথে আমার গড়ে ওঠেছিল আত্মার বন্ধুত্ব।
নিলীমাকে আমি যতটুকু চিনি যতটুকু জানি তা উপর ভিত্তি করে বলতে পারতাম হয়তবা আমিই তাকে সবচেয়ে ভাল বুঝতে পারি। কিন্তু সেই দিন যখন তার সাথে কথা বলছিলাম, তখন ভাবছিলাম আমি কি অন্য নিলীমার সাথে কথা বলছি ?
যে নিলীমা আমাকে স্পর্শ করতে দেয়নি সিগারেটের উষ্ণ আতিথিয়তা, যে নিলীমা আমাকে বঞ্চিত করেছে ওয়াইন আর এলকোহলের আলতো ছোয়া থেকে, যদিও আমি সিগারেট পান করতাম না, ওয়াইন ও রেগুলার খেতাম না , মাঝে মধ্যে ফ্যামিলির মেম্বারদের সাথে পান করতাম, সেখান থেকেও বঞ্চিত , যে নিলীমা কখোনোই পছন্দ করত না ডিজে পাটি, যে নিলীমা পছন্দ করত না রাতের বেলায় ক্লাবে যাওয়া, সেই নিলীমা.......
নিলীমার এঙ্গেইজমেন্ট হয়ে গেছে মাস দুয়েক হয়।
তার বিয়েতে আমার পক্ষ থেকে কোন আপত্তি ছিল না। হবু বরের সাথে তার অনেক আগের পরিচয়। এক সময় দুজনের মাঝে ছিল গভীর প্রনয়। কোন এক কারনে রিলেশনটা ভেঙ্গে যায়। এরপর নিলীমা আর কারো সাথেই সম্পর্কের বাঁধনে জড়ায়নি।
সেই ছেলের সাথেই নিলিমার বিয়ে ঠিক হয় পারিবারিক ভাবে। এই চার বছর বিরতিতে ছেলেটা নিলীমার সাথে সম্পর্ক আবার করার জন্য চেষ্টা করছে প্রতিনিয়তই। কিন্তু লাভ হয়নি। শেষে নিলীমার বাবার চাপে বিয়েতে রাজি হওয়া।
নিলীমা চলাফেরা , পোশাক পরিচ্চেদ আগে যেমনটি ছিল ঠিক তেমনটিই আছে।
আর এখন ছেলেটা বলে নিলীমা দেখতে আনস্মাট, পোশাক পরিচ্ছেদ ভাল না, তার লম্বাচুল কেটে ফেলতে হবে, তার সাথে পাটিতে যেতে হবে, যেতে হবে ক্লাবে ও। ছেলেটা স্কোক করে, ডিংসও করে......হাতে লোম থাকার কারনে তাকে বন মানুষ মনে হয়।
অথচ গত তিন বছরে আমি নিলীমার হাতে এমন কোন লোম দেখিনি যাতে করে তাকে এই কথা বলা যায়। নিলীমার মুখ থেকে যখন আমি কথাগুলো শুনছিলাম সত্যি আমার অনেক কষ্ট হচ্ছিল তার জন্য । নিলীমা এখন ঠিক কি করবে বুঝতে পারছে না।
দুইদিন আগেও আমার এই বিয়েতে আপত্তি ছিল না, কিন্তু এখন আমার প্রবল আপত্তি আছে। নিলীমাকে আমি চাপ ও দিতে পারবনা । সষ্টতই দেখতে পাচ্ছি সেই সুখী হবে না। তাই মনে হচ্ছে আমি যে নিলীমাকে জানতাম, চিনতাম এই কে সেই নিলীমা। যে মুখ বুঝে সহ্য করে যাচ্ছে সব কিছু।
যখন সে আমাকে বলছিল, তার কন্ঠে ছিল নীল বেদনার সুর।
আমি কি সত্যি অন্য কোন নিলীমার সাথে কথা বলছি ???? ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।