আন্তর্জাতিক ও দেশিয় রাজনীতি নিয়ে অধ্যাপক রেহমান অনেক দিন ধরে লেখা-লেখি করছেন। তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমান রাজনৈতিক সংকট মোবাবেলায় তিনি কিছু প্রস্তাব আনলেন। প্রস্তাব গুলো হচ্ছে....
বর্তমান সরকার তাদের ক্ষমতার শেষ পর্যায়ে এসেছে। গত ৪০ মাসে তারা কতটুকু তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পেরেছে, তার ভার জনগণের ওপর ছেড়ে দেওয়াই মঙ্গল। এ ক্ষেত্রে একটি নিরপেক্ষ সরকারের হাতে নির্বাচন পরিচালনার ভার দিলে তাতে ক্ষতির কিছু নেই।
বরং আমার বিশ্বাস, সরকারের জনপ্রিয়তা তাতে বাড়বে। যদিও বিএনপির দাবি তত্ত্বাবধায়ক সরকার।
তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজনের বিষয়টি অত সহজ নয়। এ ক্ষেত্রে সংবিধান সংশোধনী আনা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। বর্তমান সংবিধান রেখে কোনো নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করা যাবে না।
প্রশ্ন হচ্ছে, সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব কে আনবে? সরকার? বিরোধী দল? নাকি সরকারের কোনো 'বন্ধু'? এটা তো ঠিক, বিরোধী দল কোনো সংশোধনী আনলে তা সংসদে পাস করানো যাবে না। তাদের সেই 'সংসদীয় ক্ষমতা' নেই। একমাত্র সরকার যদি 'সিদ্ধান্ত' নেয়, তাহলেই সংবিধান সংশোধনী আনা সম্ভব। সরকার নীতিগতভাবে একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে জোটভুক্ত কোনো 'দল'কে দিয়ে এ ধরনের একটি প্রস্তাব সংসদে উপস্থাপন করতে পারে। ওয়ার্কার্স পার্টি কিংবা জাসদ নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ধারণা সমর্থন করে।
তারাও একটি প্রস্তাব সংসদে উপস্থাপন করতে পারে। তবে নিঃসন্দেহে এই তত্ত্বাবধায়ক সরকার 'ওয়াল-ইলেভেনে'র সময়কার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো হবে না। এর একটি নতুন কাঠামো দেওয়া যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন 'ফর্মুলা' নিয়ে আলোচনা হতে পারে। এক. ড. ইউনূস ও ফজলে হাসান আবেদের যৌথ নেতৃত্বে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার, যাদের দায়িত্ব হবে তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করা।
কোনো উপদেষ্টা থাকবেন না। সচিবরা মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন পরিচালনা করবেন। এই সরকার নীতিগত কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে না। দুই. ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের নেতৃত্বে একটি সরকার। ব্যারিস্টার হক দুটি দলেরই 'বন্ধু' এবং দুই দলীয় প্রধানের কাছেই গ্রহণযোগ্য।
তিন. প্রধান বিচারপতি অথবা সংসদের বর্তমান স্পিকারকে প্রধান করে সরকার ও বিরোধী দলের ৫ জন করে প্রতিনিধি নিয়ে (যারা নির্বাচন করতে পারবেন না। স্পিকারও নির্বাচন করবেন না) ৩ মাসের জন্য একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, যাদের দায়িত্ব নির্বাচন আয়োজন করা। চার. একটি 'এলডার্স কাউন্সিল' গঠন, যাদের দায়িত্ব হবে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করা। এই 'এলডার্স কাউন্সিল' যৌথ নেতৃত্বে পরিচালিত হবে। সদস্যসংখ্যা তিন থেকে চারে হতে পারে।
সাবেক তিন প্রধান বিচারপতি তিনজন গুণী ব্যক্তি অথবা তিনজন সাংবিধানিক পদমর্যাদার অধিকারী ব্যক্তিকে নিয়েও এই 'এলডার্স কাউন্সিল' গঠিত হতে পারে। এ ধরনের যে কোনো 'ফর্মুলা' সংবিধানের কোনো অংশ হবে না। সংসদে গৃহীত একটি সিদ্ধান্তের মাধ্যমেও এটি করা সম্ভব। তবে বিষয়টি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক যাতে না হয়, সে ব্যাপারে সংবিধান বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলাপ করা যেতে পারে।
বিস্তারিত ভিতরে.. ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।