আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাধা ও কৃষ্ণের বিরহপ্রেমকথা

বাংলার মাটি বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল, পুন্য হউক, পুন্য হউক, পুন্য হউক, হে ভগবান। বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ, পুর্ন হউক, পূর্ন হউক, পূর্ন হ্‌উক, হে ভগবান। রবীন্দ্রনাথ রাধা ও কৃষ্ণের বিরহপ্রেমকথা অসীম কালের পটে লিখিত যে পূন্য প্রেমকথা শ্রবণে মুক্তি ভক্তের এরূপই প্রত্যয়, রাধা ও কৃষ্ণের প্রেমের আখ্যান আজও এক মধুর বিস্ময় প্রাচীন কোন কালে মিলেছে দু-জনা মিলেছে পুরুষ ও প্রকৃতি। ফিরিয়ে দৃষ্টি সুদূর অতীতে ধূসর মথুরা নগরে যে নগরে বাস কৃষ্ণ-বাসুদেব উপকন্ঠে নীলযমুনা, আহিরীপল্লীর শ্যামাঙ্গী রাধা গোপন প্রণয়ের নায়িকা কন্ঠে গুঞ্জরী অঙ্গে বল্লরী পরনে রেশমী শাড়িকা। যমুনাকূলেতে শ্যামল রূপশোভা, এ কাহার কৃষ্ণকান্তি এ কাহার চারুরূপ চক্ষে বিদ্যুৎ বাহুতে গোত্রের উলকি, একাকী নিবিড়ে দেখে সে শ্রীমুখ মানসপটে অতি উজ্জ্বল ঘোষের ঘরনী শ্রীময়ী রাধা হলো মৌন শান্ত মৈনাক।

বিরান প্রহরে একাকী রাধিকার হৃদয়ে প্রবল আলোরণ একলা গৃহকোণে বিষাদী দুটি চোখে দীঘল বিরহ উথলায়, কাহার বাঁশী ঐ মননে শ্রুত হয় স্বরের বিস্তার তীব্র কুহকী সুরাবেশে অধীর রাধা শেষে ধস্ত ক্লান্ত আর্ত। চটুল চঞ্চলা গোপীরা স্নানে গেলে যমুনাপাড় হয় মূখরা রাধার শিথিল বেশ শুষ্ক এলোকেশ মলিন গুঞ্জার ফুলেরা, দুধেল রৌদ্রে পাটল-রঙা গাভী হরিৎ চারণে ডাকছে প্রাচীন বৃক্ষের শীতল ছায়াতলে মথুরা-কৃষ্ণ-মুরারী। যে শ্যামল পুরুষ অবশ করে হৃদি সে আজ দৃশ্যে উপস্থিত চপল গোপীর ভিড়ে অচপল এক নারী কেড়েছে তাহারও দৃষ্টি, ধেয়ানী কৃষ্ণ বংশী-ফুৎকারে মোহনী করে তোলে আবহ নিপুন মুদ্রায় রাধাও ধীর পায়ে নৃত্যরতা হয় সহসা । প্রেমিক যুগলের দৃষ্টি বিনিময় এভাবে ঘটেছিল গোকূলে জাগরে কাটে রাত বিবশে কাটে দিন এই তো বিধাতার ইচ্ছে, জীবন বয়ে যায় যেভাবে বয়ে যেত গোকূলে তীব্র বিরহ অসুখী গৃহকোণে ঘোষের ধিক্কার রাধার নিভৃত দুঃখ। আষাঢ়ি পূর্ণিমার ধবল কিরণে উঠানে পা রাখে রাধিকা রাত্রি যদিও জ্যোস্নালিপ্ত তবুও অভিসার আধাঁরে, চকিতে ছুটে চলা রাধার রূপ যেন শুদ্ধতমা ঋষি-বালিকা তিয়াসী কৃষ্ণ অঙ্গ-তাড়নায় যমুনাকূলে একা পীড়িতা।

অনিদ্র গোপীরা সঠিক অনুমানে নেমেছে চুপিসারে পথেতে হাঁটছে যে পথে সে পথ আলোময় ঢেকে তো ছিল-না আধাঁরে, আষাঢ়ি চন্দ্র অশেষ করুণায় ঢেলেছে কিরণ অকাতর যমুনা কিনারের নীরব প্রান্তরে শিশিরে সিক্ত তৃণদল। রাধা ও কৃষ্ণের মিলনে দলিত হয়েছে চারণ-তৃণরা গোপীরা আড়ালে ভীষন শঙ্কিত স্তন কেঁপেছে পুলকে, রাধা ও কৃষ্ণের মিলনে আসলে প্রকৃতি ও পুরুষই মিলেছে প্রাচীন কোনকালে ঘটেছে ঘটনা আড়ালে ছিলেন এক বিধাতা। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।