আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সামাজিক অপরাধ , বিষন্নতা ও আর্টস থেরাপি

বাংলাদেশের চিকিত্‍সা সেবায় শিল্পকলার তাত্বিক ও ব্যবহারিক গুরুত্বের স্বরূপ নির্ণয় বাবা কিংবা মা হত্যা করছে তার নবজাতকে। দাম্পত্য কলহের জের ধরে হত্যার শিকার হচ্ছে স্ত্রী-সন্তান। পরকীয়া রূপ নিয়েছে বিষবৃক্ষে। টাকার জন্য মাদকাসক্ত খুন করছে প্রিয়জনকে। এমনকি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বামী-স্ত্রী খুন করছে একে অপরকে ....... সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া ঘটনা এগুলো।

এখন আর সন্ত্রাসীর হাতে নয়, পরিবারের আপনজনের কাছে মানুষ নিরাপদ নয়। এগুলোকে সামাজিক অপরাধ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছেন সমাজ ও মনোবিজ্ঞানীরা। বর্তমান সময়ে এসে মাত্রা অতিক্রম করতে চলেছে এ অপরাধ। এ অবস্থায় সমাজ ও মনোবিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, এখনই লাগাম টেনে ধরা না গেলে আগামী ১০ বছরে ভয়াবহ রূপ নেবে সামাজিক অপরাধ। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করে জানান, দেশে ভয়াবহ ব্যাধির মতো দানা বাঁধছে সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়।

আর নীতিনির্ধারক মহলের অবহেলা আর নজরদারির অভাবে সামাজিক অবক্ষয়ের শিকার ব্যক্তির প্রাণহানির ঘটনা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এর নেপথ্য বেশ কয়েকটি কারণ অবশ্য তারা চিহ্নিত করেছেন। অন্যতম কারণগুলো হচ্ছে অর্থের প্রতি শ্রেণী-পেশা নির্বিশেষে সব মানুষের অসম প্রতিযোগিতা; নৈতিক মূল্যবোধের অভাব; সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক অস্থিরতা; অন্য দেশের সংস্কৃতির সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা; দাম্পত্য কলহ ও স্বামী-স্ত্রীর প্রতি বিশ্বাসহীনতা; স্বল্প সময়ে ধনি হওয়ার ইচ্ছা; সামাজিক উন্নয়নে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া; রাষ্ট্রের উদাসীনতা; বিষণ্নতা ও মাদকাসক্তি প্রভৃতি। এদিকে সামাজিক অবক্ষয়ে প্রাণহানির ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নেয়নি সুনির্দিষ্ট কোনো গবেষণা কার্যক্রমের। এ ছাড়া কার্যকর বিচারব্যবস্থার অভাবে অপরাধ করেও পার পেয়ে যাচ্ছে অপরাধীরা।

সমাজবিজ্ঞনীরা বলছেন, গত দুই বছরে দেশে সমাজিক অপরাধের ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। এখনই এ বিষয়ে সচেতন না হলে আগামী ১০ বছরে এটি ভয়াবহ রূপ নেবে। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, অধিকাংশ সামাজিক অপরাধের পেছনে বিষণ্নতা দায়ী। দেশে বর্তমানে ৬৫ থেকে ৮৫ লাখ মানুষ অতিমাত্রায় বিষণ্নতায় আক্রান্ত। ফলে বিষণ্নতা থেকে যদি তাদের ফিরিয়ে আনা না যায় তবে সামাজিক অপরাধ আরও ভয়াবহ রূপ নেবে।

এ অবস্থায় মানবাধিকার কর্মীরা মনে করছেন, সমাজের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রে রয়েছে অর্থ। মানুষ, বিশেষ করে ছেলেরা অর্থনৈতিক চাপ সহ্য করার ক্ষমতা ক্রমেই হারাচ্ছেন। এ কারণে তারা নিজেরা আত্মহত্যা করছেন এবং পরিবারের সুরক্ষার কথা ভেবে স্ত্রী-সন্তানদের হত্যা করতে দ্বিধা বোধ করছেন না। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সামাজিক অপরাধ প্রতিকারে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে হবে। গণমাধ্যমগুলোরও এ বিষয়ে অনুষ্ঠান প্রদর্শনে এগিয়ে আসতে হবে।

জেলা পর্যায়ে স্থানীয় প্রশাসনকে সামাজিক অপরাধ প্রতিরোধে রাখতে হবে কার্যকর ভূমিকা। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিসিসি) অঞ্চল-৩-এর এক ঊধ্বতন কর্মকর্তা জানান, তালাক-সংক্রান্ত কাজে এখানে পুরুষ বা নারী আসেন, তাদের প্রায় সবাই সম্পর্ক ভাঙার কারণ হিসেবে পরকীয়াকে দায়ী করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের 'বাংলাদেশের যুবসমাজের ওপর আচরণগত বেইজ লাইন সার্ভে' শীর্ষক এক গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে, শহর ও গ্রামাঞ্চলে ষাটের দশকের তুলনায় বর্তমানে বিবাহবহির্ভূত ও বিবাহপূর্ব অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার হার তিন গুণ বেশি। বর্তমানে প্রতি ১০ জনে তিনজন অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছেন। বিষন্নতা এবং এইসব সামাজিক অপরাধ থেকে মুক্তির অন্যতম আধুনিক উপায় হচ্ছে আর্টস থেরাপি।

নিজের কষ্ট নিজের মধ্যে আবদ্ধ রাখার কারণেই মূলত মানুষ বিষাদে ভোগে। অন্তর্মুখী ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে দেখা যায় তারা নিজেদের কষ্ট কারও সঙ্গে শেয়ার করতে কুণ্ঠা বোধ করে। আর এ কারণেই নিজের আঁকা ছবির মধ্যে নিজের কষ্টগুলো শেয়ার করা অথবা পছন্দের মিউজিক শোনা হতে পারে ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির অন্যতম উপায়। ছবি আঁকার ক্ষেত্রে ছবির শিল্পমান বা অভিজ্ঞতার কোনো প্রয়োজন নেই। আসুন আর্টস থেরাপি কী এবং কেন - তা জানি , বন্ধু ও পরিচিতদের সাথে বিষয়টি শেয়ার করি ; অনন্য বাংলাদেশ গড়তে আসুন আবার একাট্টা হই .................... *** তথ্য : জিন্নাতুন নূর, বাংলাদেশ প্রতিদিন , সম্পাদনা : আর্টস থেরাপি ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.