আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

“বাংলাদেশের জ্বালানী খাত ও শিল্প ব্যবস্থা”।

এসো আবার চড়াই উৎড়ই.......... “বাংলাদেশের জ্বালানী খাত ও শিল্প ব্যবস্থা”। পাকিস্তান আমলে আলোচিত আনবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের আলোচনা আজও টেবিল আর ফাইলের ভিতরেই গুমরে কাঁদছে। আফ্রিকা যেমন হীরক খনির দেশ হয়েও, আফ্রিকানরা ঘুরে বেড়ায় পুঁতির মালা পড়ে। তেমনি, আমাদের রাষ্ট্র ব্যবস্থার অসৎ, লোভী, জোচ্চর গুটিকয় ব্যক্তির স্বার্থের দ্বন্দে, রাষ্ট্রীয় জ্বালানী সম্পদকে নামমাত্র মূল্যে ও তৈলমর্দিত চুক্তিতে তুলে দেওয়া হয় বৈদেশিক কোম্পানীগুলোর কাছে। যা দেশীয় বাজারমূল্যের চেয়েও কয়েকগুন কম, আর আর্ন্তজাতিক অঙ্গনের কথা বাদই দিলাম।

আবার, তাদেরই উৎপাদিত পণ্য কিনে নেয় চড়া দামে। এছাড়াও খনি থেকে উত্তোলিত জ্বালানীও নাকি ক্রয় করে নিতে হয় অধিক দামে বিদেশী লুটেরাদের কাছ থেকে। আসুন পিডার কিনে ঘরে বসে আঙ্গুল চুষতে থাকি। উৎপাদিত বিদ্যুতের মূল্য সাধারন জনতা, ঠিকমতো পরিশোধ করলেও, পরিতাপের বিষয় যে, রাঘব বোয়ালগুলো সবসময় ফাঁকি দিয়ে বেড়িয়ে যায়। বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবহৃত অবৈধ (বৈধ বাদ দিয়েও) বিদ্যুতের মূল্য তারা রাষ্ট্রকে কখনও পরিশোধ করে না।

অল্প কিছু ভিক্ষার দান, কিছু অসৎ কর্মকর্তার ভাগে জুটে যায়। শোনা যায়, দেশের শীর্ষ স্থানীয় স্টীল মিলগুলো একদিনেই যে পরিমাণ বিদ্যুৎ বা অন্যান্য জ্বালানী (গ্যাস) চুরি করে, তা দিয়ে চট্টগ্রাম শহরের সমস্ত বাসা-বাড়িতে মাসখানেক নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রদান করা সম্ভব হত। শিল্প-কারখানার মালিকবর্গের বা কর্মকর্তাদের বাসায় জেনারেটর থাকে বলে, তাদের কখনও লোডশেডিং এর ঝামেলা পোহাতে হয় না। শিল্প ব্যবস্থার প্রান ২য়, ৩য় শ্রেনীর কর্মচারী ও শ্রমিকদের জীবন ব্যবস্থা কখনওই শিল্প-মালিকদের ও প্রথম শ্রেনীর কর্মকর্তাদের পোষা কুকুরের চেয়ে উন্নত হয় না। আর উৎপাদিত পণ্য ঠিক ভোক্তাকে সেবা প্রদানের উদ্দেশ্যে, নাকি ভোক্তাকে গলাধঃকরণের উদ্দেশ্যে তা আমাদের বি.এস.টি. আই এর অসাধু কর্মকর্তারা ভালোই জানেন।

বর্তমান প্রেক্ষিতে, দেশে আণবিক বিদ্যুৎ চুল্লির কোন বিকল্প নেই, অনতিবিলম্বে এর ব্যবস্থা করতেই হবে। গ্যাস ও তেল কোন বুদ্ধিমান জাতিই বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার করবে না। পাথঁরকুচি পাতা থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ প্রকল্পটি বৃহৎ আকারে (৫০০ বা ১০০০ মেগাওয়াট) করা সম্ভব কি ? ঢাকাবাসী তাদের উৎপাদিত বৈর্জ্য থেকেই বায়োগ্যাস প্ল্যান্টের মাধ্যমে তাদের ঘাটতি মেটাতে পারে। নেপাল থেকে চীন ও ভারত বিদ্যুৎ আমদানী করে তাদের ঘাটতি মেটায় বলে জানি, আমরাও কি নেপালে কোন প্রকল্প বসিয়ে আমদানির ব্যবস্থা নিতে পারি কি? যতদিন পর্যন্ত না আণবিক চুল্লি স্থাপনের কাজ শেষ না হয়। দেশের রাজস্ব কোথায় যায় আমরা জানি, জ্বালানীখাতে যখন ভর্তুকী দিবেন মনে রাখবেন তাতে সাধারন জনতার কোন উপকারই হবে না, বরঞ্চ শিল্প-প্রতিষ্ঠানের মালিকরা অট্টহাঁসবে, পরিবহন মালিকরা অট্টহাঁসবে, চোরাকারবারীরা অট্টহাঁসবে, আর জনতা ভাববে যে, তাদের যে আয় তাতেই পুষিয়ে যাবে, জীবনযাত্রার গতি হয়ে পড়বে মন্থর।

ভর্তুকী বাদ দিন, শ্রমিক, শিক্ষক, ২য় ও ৩য় শ্রেনীর কর্মকর্তাদের বেতন ভাতা বৃদ্ধি করুন। দেশে শ্রমিক আইনের যথাযথ প্রয়োগে প্রয়োজনে সামরিক শক্তি ব্যবহার করুণ, ঋণ-খেলাপীদের শিল্প-প্রতিষ্ঠানসমূহ রাষ্ট্রীয় মালিকানায় নিয়ে নিন, নিলামে তুলে দিন, উটকো পণ্যের উৎপাদন বন্ধ করুন। প্রায় প্রতিটি ক্যামিকেল ইন্ডাষ্ট্রিজের একাধিক বৈর্জ্য নাকি এইদিক-সেইদিক তাকিয়ে, আস্তে করে পরিবেশে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। পরিবেশ অধিদপ্তর বসে বসে আঙ্গুল চুষছেন কি? বাংলাদেশ শ্রমিক সংগঠনগুলো রাষ্ট্রীয় দলীয় করণের আওতায় এসে যে বিভাজিত মনোভাব প্রকাশ করছে তার ফলাফল তো আমরা দেখতেই পাচ্ছি। আর এজন্যই হয়তো ট্রেড ইউনিয়নের আঞ্চলিক সাধারণ সম্পাদকের বাসায়ও আমরা শিশু শ্রমিক দেখতে পাই।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.