আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ছেড়া টাকা বদলান সহজেই

জগৎ পারাবার তীরে শিশুরা করে খেলা আমাদের দেশে ছেড়া টাকা বদলানো বেশ ঝামেলার কাজ। আবার অনেক সময় সঠিক তথ্য না জানার কারণে আমরা ইচ্ছা থাকা সত্তেও ছেড়া টাকা বদলাতে পারিনা। প্রথমেই জানা দরকার ছেড়া টাকা কোথায় বদলানো যায়। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ছেড়া টাকা বদলানোর জন্য সকল তফছিলি ব্যাংক এর সকল শাখাকে নির্দেশনা প্রদান করা আছে। তাহলে ছেড়া টাকা বদলানোর জন্য আপনি যেতে পারেন সকল সরকারি, বেসরকারি, বিদেশী, বিশেষায়িত ব্যাংক এর যেকোন শাখাতে।

তাছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক এর প্রধান কার্যালয় সহ ০৮টি শাখাতো রয়েছেই। তবে বাস্তবতা হল আমাদের বাণিজ্যিক ব্যাংক এর ক্যাশিয়ারদের এ ব্যাপারে ব্যপক অনিহা। তারা অবস্থানভেদে কখনো সরাসরি না করেন আবার কখনো বা বাড়তি আইন কানুনের ঝামেলা দেখিয়ে গ্রাহককে বিদায় করেন। আবার এরকম অলাভজনক কাজে কোন ব্রাঞ্চ ম্যানেজারেরও আগ্রহ থাকেনা । এই সুযোগে গুলিস্তানসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অসাধু ব্যবসায়ীরা চালিয়ে যাচ্ছে রমরমা অবৈধ ব্যবসা।

ছেড়া টাকার প্রকারভেদ: লেনদেন করতে অসুবিধা হয় এরকম টাকাকে অনেকভাবে ভাগ করা যায়। ১. দুই খন্ডে খন্ডিত নোট ২. দুইয়ের অধিক খন্ডে খন্ডিত নোট ৩. অত্যধিক ময়লা নোট ৪. রং দেয়া নোট ৫. নিরাপত্বা সূতা বিহীন নোট ৬. জং ধরা নোট ৭. আগুনে পোড়া নোট ৮. পোকা/ইদুরে কাটা নোট ৯. সিরিয়াল নম্বর বিহীন (সিরিয়াল নম্বর ছেড়া বা অস্পষ্ঠ)নোট ১০. ইচ্ছাকৃত ভাবে কেচি বা ধারাল বস্তু দিয়ে কাটা নোট ১১. দুটি বা অধিক ভিন্ন ভিন্ন নোটের বিভিন্ন অংশ জোড়া দিয়ে তৈরী নোট ১২. জাল নোট উপরে উল্লেখিত নোটের মধ্যে ইচ্ছাকৃত ভাবে কেচি বা ধারাল বস্তু দিয়ে কাটা নোট, দুটি বা অধিক ভিন্ন ভিন্ন নোটের বিভিন্ন অংশ জোড়া দিয়ে তৈরী নোট এবং জাল নোট বদলাতে গিয়ে নিজের বিপদ ডেকে আনবেন না। বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখা সমূহে ৩ পদ্ধতিতে ছেড়া টাকা বদল করে দেয়া হয়। ক. অভার দি কাউন্টার(সরাসরি): নির্ধারিত লাইনে দাড়িয়ে কাউন্টার ক্যাশিয়ার কতৃক যে সকল নোট বদল করে দেয়া হয়: ১. দুই খন্ডে খন্ডিত নোট ২. অত্যধিক ময়লা নোট ৩. রং দেয়া নোট ৪. নিরাপত্বা সূতা বিহীন নোট খ. অভার দি কাউন্টার(অফিসার কতৃক পাশের মাধ্যমে): এক্ষেত্রে কয়েকদিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। নির্ধারিত লাইনে দাড়িয়ে কাউন্টার ক্যাশিয়ারে এবং একজন অফিসার কতৃক উত্থাপিত দাবী পাশের মাধ্যমে যে সকল নোট বদল করে দেয়া হয়: ১. দুইয়ের অধিক খন্ডে খন্ডিত নোট (নোটের তিনচতুর্থাংশ বা তার বেশী অংশ উপস্থাপন করতে হবে) ২. জং ধরা নোট ৩. সিরিয়াল নম্বর বিহীন (সিরিয়াল নম্বর ছেড়া বা অস্পষ্ঠ)নোট গ. বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখার মাধ্যমে: যে সকল নোট বদল বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখা সমূহে সরাসরি বদল দেয়া হয়না বরং বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখার মাধ্যমে উপস্থাপন করতে হবে: ১. আগুনে পোড়া নোট(সংশ্লিষ্ট এলাকার চেয়ারম্যান কতৃক আগুনে পোড়া নোটের পরিমান, মালিকের নাম, তারিখ, ঘটনার বিবরণ ইত্যাদি উল্লেখ করে প্রতয়্যনপত্র জমা দিতে হবে) ২. পোকা/ইদুরে কাটা নোট নোট বদল করার খরচাপাতি: মজার ব্যাপার হল সরাসরি বাংলাদেশ ব্যাংকে নোট বদল করতে কোন খরচ হয়না।

তবে আপনার উত্থাপিত নোট সঠিকভাবে উপস্থাপন না করা হয় অথবা বদল করার অযোগ্য হয় তবে আপনাকে কোন অর্থ ফেরত দেয়া হবেনা। এমনকি আপনার উত্থাপিত নোটও পাবেন না। এখানে ডিসকাউন্টের কোন সুযোগ নেই। তবে বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখার মাধ্যমে নোট বদল করতে চাইলে প্রকৃত ডাকখরচ আপনাকে বহন করতে হবে, তাদেরকে পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে এবং উত্থাপিত নোট সঠিকভাবে উপস্থাপন না করা হয় অথবা বদল করার অযোগ্য হয় তবে আপনাকে কোন অর্থ ফেরত দেয়া হবেনা। বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখায় কেবলমাত্র অভার দি কাউন্টার(সরাসরি) পদ্ধতিতে নোট বদল করা যায়।

নোটে সাদা কাগজের পেস্টিং দেয়া: নোটের একাধিক টুকরা থাকলে নোটে সাদা কাগজের পেস্টিং দেয়া আবশ্যক। নোট অল্প ছেড়া থাকলে চিকন করে সাদা কাগজ কেটে নোটের পিছনে লাগিয়ে দিন। বেশী ছেড়া থাকলে নোটের সমান করে কেচি দিয়ে একটুকরা সাদা কাগজ কাটুন। তারপর নোটের প্রতিটি টুকরা গাম দিয়ে কাগজের উপর সাজিয়ে দিন। কোন অবস্থাতেই স্কচটেপ দেয়া যাবেনা।

যে সকল নোটে সাদা কাগজের পেস্টিং দিয়ে উপস্থাপন করতে হবে: ১. দুইয়ের অধিক খন্ডে খন্ডিত নোট(নোটের তিনচতুর্থাংশ বা তার বেশী অংশ উপস্থাপন করতে হবে) ২. পোকা/ইদুরে কাটা নোট ৩. আগুনে পোড়া নোট(সংশ্লিষ্ট এলাকার চেয়ারম্যান কতৃক আগুনে পোড়া নোটের পরিমান, মালিকের নাম, তারিখ, ঘটনার বিবরণ ইত্যাদি উল্লেখ করে প্রতয়্যনপত্র জমা দিতে হবে) বেশী বেশী করে ছেড়া টাকা বদলান। দেশের অথনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখুন। টাকা ব্যবহারে যত্নবান হোন। ভাল থাকুন। ব্যাংক হিসাব খুলবেন? সেভিংস না কারেন্ট? কি কি লাগে???  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।