আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চুয়েটে র‌্যাগিং ও ইভটিজিং আতঙ্ক : ভর্তি হওয়াটাই এখন কাল হয়ে দাড়িয়েছে ১ম বর্ষের শিক্ষার্থীদের!

আমরা হেরে যাইনি। এশিয়া কাপ না জিতলেও তোমরা আমাদের হৃদয় জয় করেছ। আমরা গর্বিত চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) সদ্য ভর্তি হওয়া প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা র‌্যাগিং (শারিরিক ও মানসিক নির্যাতন) ও ইভটিজিং আতঙ্কে নির্ঘুম রজনী অতিবাহিত করছে। ক্লাস শুরুর প্রথম কয়েকদিন র‌্যাগিংয়ের মাত্রা বৃদ্ধি পেলেও বর্তমানে র‌্যাগিংয়ের পাশাপাশি বেড়েছে ইভটিজিংয়ের মাত্রা। গত এক সপ্তাহ জুড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল, খাবারের ক্যান্টিন, গোলচত্ত্বর, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিতরে অবস্থিত ব্যাংক, প্রধান ফটকসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ র‌্যাগিং ও ইভটিজিংয়ের শিকার হচ্ছে সদ্য ক্লাস শুরু করা চুয়েটের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা।

সিনিয়র ব্যাচ কর্তৃক ভয়াবহ এই র্র‌্যাগিং ও ইভটিজিংয়ের জন্য বর্তমানে আতঙ্গে রয়েছে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা। এমনকি অনেকে আতঙ্কে রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারছে না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম বর্ষের এক ছাত্রী চুয়েটনিউজ২৪.কমকে জানান, আমি আজ (মঙ্গলবার) ব্যাংকে যাওয়ার সময় ক্যান্টিনের রাস্স্তার পাশে দাড়িয়ে থাকা এক সিনিয়র ভাইয়া আমার পথরোধ করে। সিনিয়র ভাইয়াটি আমার নাম পরিচয় নেওয়ার পর মোবাইল নম্বর চায়। আমার মোবাইল ফোন নাই (মোবাইল নম্বার দিতে অস্বীকৃতি) জানালে ভাইয়াটি আমার ভ্যানিটি ব্যাগ হাত থেকে কেড়ে নেয়।

তারপর ব্যাগ তল্লাশি করে মোবাইল পাওয়ার পর তিনি আমাকে তীব্র স্বরে অশ্লীল ভাষায় ধমকানো শুরু করেন। এছাড়াও চুয়েটে পড়তে হলে বড় ভাইদের কথা শুনতে হবে, না শুনলে সমস্যা (ক্ষতি) হবে এবং ক্যাম্পাসে থাকতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দেন। এছাড়াও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চুয়েটের প্রথম বর্ষের একাধিক শিক্ষার্থী কান্নাকন্ঠে অভিযোগ করে চুয়েটনিউজ২৪.কমকে জানান, আমরা কয়েকদিন হলো ক্যাম্পাসে এসেছি। দিনের বেলা ক্লাসে যাই আর সারারাত জুড়ে আমাদের উপর চলে র্র‌্যাগিং। আমাদেরকে বড় ভাইয়েরা (সিনিয়র ব্যাচ) কানে হাত দিয়ে সমগ্র হল কয়েকবার পাক দেওয়াসহ একপায়ে তিন-চার ঘন্টা দাড় করিয়ে রেখেছিল।

এছাড়াও আমাদেরকে দিয়ে অনেক অপ্রীতিকর ও অসামাজিক কাজ করিয়েছে যেগুলো বলতে পারবো না (কান্নাকন্ঠে)। আমরা র‌্যাগিংয়ের ভয়ে বাইরের খাবারের হোটেলে কিংবা ডাইনিংয়ে খাবার খেতে যেতে পারছি না। এছাড়াও পড়ালেখার জন্য খাতা কেনা ও ফটোকপি করতে বাইরে যেতে পারছি না। এ প্রসঙ্গে চুয়েটের উপাচার্য ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম চুয়েটনিউজ২৪.কমকে জানান, যে সকল শিক্ষার্থী এ ধরনের অনৈতিক ও শৃঙ্খলা বহিভূত কাজ করছে তাদেরকে ইতোমধ্যে শনাক্ত করা হয়েছে। অতিশীঘ্রই তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

' জানা যায়, গত ৭ মে চুয়েটের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন ক্লাস অনুষ্ঠিত হয় এবং ঐ দিনে তাদেরকে হলে আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়। আসন বরাদ্দ পাওয়ার পরপরই শিক্ষার্থীদের উপর শুরু হয়েছিল ভয়াবহ র‌্যাগিংও ইভটিজিং। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিন ধরে ক্যাম্পাসের সকল জায়গায় প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদেরকে দেখার সাথে সাথে চলে র‌্যাগিং। বিশেষ করে রাতের বেলায় চুয়েটের বিভিন্ন বর্ষের একাধিক ছাত্র একত্র হয়ে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদেরকে র‌্যাগ দিচ্ছে বলে ক্যাম্পাসের একাধিক সূত্রে জানা যায়। প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের উপর র‌্যাগিং দেওয়ার সময় হাতেনাতে ধরা পড়া দ্বিতীয় বর্ষের ২৬ শিক্ষার্থীকে কারন দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে নতুন হল কর্তৃপক্ষ।

 ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।