বুকের ভেতর বহু দূরের পথ...
যুদ্ধের চিঠি মঞ্চস্থ করছেন চুয়েটের শিক্ষার্থীরা
পাস করে কী করবেন? ‘থিয়েটার করব। ’ উত্তরটা চমকে যাওয়ার মতো। তাহলে প্রকৌশল পড়ছেন কেন? ‘জীবিকার জন্য প্রকৌশলী হতে এসেছি। কিন্তু মনের খোরাক মেটাতে নাটকে কাজ করতে চাই। ’
কথাগুলো বললেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) নাট্য সংগঠন বাংলানাটের আহ্বায়ক মো. এনামুল হক।
ক্যাম্পাসে নাট্যচর্চার অগ্রনায়কদের একজন তিনি। তাঁর মতো নিলুফার আকতার, নাহিয়ান জ্যোতি, আহসানুল হাবিব, আব্দুর রউফ, রায়হান হাবিব, বিনয় সাহা, আইরিন, তাসমিয়া তাহসিন টুকটুক,আরিফ, তানভীরসহ অনেকের মাথায় চেপে বসেছে ‘মঞ্চনাটকের ভূত!’
দেওয়া গাজীর কিসসা মঞ্চস্থ করছেন চুয়েটের শিক্ষার্থীরা
চুয়েট ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সময়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নাটক হতো। ২০০৮ সালে তড়িৎকৌশল বিভাগের একদল শিক্ষার্থী মঞ্চনাটক করার সিদ্ধান্ত নেন। অনভিজ্ঞ সেই দলের নেতৃত্বে ছিলেন সারোয়ার জাহান সামু। সঙ্গে ছিলেন অর্পণ দেবনাথ, তন্বী, নাহিদ, রাসেল, নবীন, সুমনসহ ২০-২৫ জন।
সারোয়ারের নির্দেশনায় মঞ্চস্থ হলো মামুনুর রশীদের সাড়া জাগানো নাটক 'সংক্রান্তি'। ক্যাম্পাসেও সাড়া ফেলে এটি। একই বছর আন্তবিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক উৎসবে তাঁরা মঞ্চস্থ করেন মান্নান হীরার 'পন্তাআকালি'। সেই থেকে একের পর এক নাটক হলো চুয়েটে।
সঙক্রান্তি মঞ্চস্থ করছেন চুয়েটের শিক্ষার্থীরা
পন্তাআকালি মঞ্চস্থ করছেন চুয়েটের শিক্ষার্থীরা
‘আমাদের ভাবনায় ছিল যেমন-তেমন নয়, পুরোদস্তুর থিয়েটার।
থাকতে হবে আলোর ঝকমকি, ঝলমলে পোশাক আর থাকবে নজরকাড়া মঞ্চ।
আমরা মনে হয় সফল হয়েছিলাম। ’ শুরুর দিনগুলো সম্পর্কে বলছিলেন সারোয়ার জাহান। সারোয়ারের দলটি পাস করে চলে গেলে হাল ধরেন বিপ্লব, রুমি আর শিবলিরা। বিপ্লব আর রুমিরই শুধু পন্তাআকালিতে কাজ করার অভিজ্ঞতা ছিল।
তাঁরাই প্রথম মঞ্চস্থ করেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'খ্যাতির বিড়ম্বনা'। এরপরের গল্পটা একটু অন্য রকম। অন্যের নাটক তো অনেক হলো এবার নিজেদের নাটক করতে হবে। নাটক লিখলেন তারা। নিজেদের লেখা নাটক 'যুদ্ধের চিঠি' ও 'গ্রহণের কাল' মঞ্চস্থ হলো।
যুদ্ধের চিঠি নাটক লেখা হয় একাত্তরের চিঠি বইয়ের আলোকে। গ্রহণের কাল ছিল ছাত্ররাজনীতির বর্তমান সংকট নিয়ে।
গ্রহণের কাল মঞ্চস্থ করছেন চুয়েটের শিক্ষার্থীরা
প্রথম দিকে ৩০-৪০ মিনিটের নাটক হতো। নাটক দুটি দর্শকের প্রশংসা পাওয়ায় তাঁরা আরও বড় কাজ করতে আগ্রহী হন। আর্থিক সমস্যার কারণে তাঁরাও সমস্যায় ছিলেন।
তবে এ বছর ডিবেটিং সোসাইটি আয়োজিত তারুণ্য উৎসবে তাঁরা নাটক করার সুযোগ পান। মঞ্চস্থ করেন একসময়ের সাড়া জাগানো নাটক 'দেওয়ান গাজীর কিসসা'। তবে এতদিন নাট্য সংগঠন ছিল না। এখন হয়েছে। ‘আমরা নাটকে নিয়মিত হতে চাই।
আর পায়ের তলায় মাটি পেয়েছি। অর্থকড়ির সমস্যা সমাধানেও কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতার জন্য আবেদন করেছি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে। নাট্য সংগঠন বাংলানাট গত মার্চে যাত্রা শুরু করেছে। ’ বললেন বিপ্লব।
তাঁর সঙ্গে সায় দিলেন শিবলি ও টুকটুক।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।