যেমন কর্ম তেমন ফল।
রাজধানীতে বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বেওয়ারিশ কুকুরের রাজত্বে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে নগরীর মানুষ। যত্রতত্র পাগলা কুকুর মানুষকে কামড়িয়ে আহত করছে। বেওয়ারিশ কুকুরের চিত্কার চেচামেচিতে ঘুমোতে পারছেনা মানুষ।
কিন্তু এ পরিস্থিতিতেও দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ঢাকা সিটি করপোরেশনের (ডিসিসি) কুকুর নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল সূত্রে জানাগেছে, রাজধানীতে কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিনই ২/১ জন রোগী কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে চিকিত্সা নিতে আসছে হাসপাতালে। গত ৮ জুলাই মাত্র সাড়ে ৫ ঘন্টার ব্যবধানে রাজধানীতে ১৬ জন কুকুরের কামড়ে আহত হয়। বেওয়ারিশ পাগলা কুকুরের দৌরাত্নে এখন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে নগরজীবন।
উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরের বাসিন্দা জুলফিকার আলম সিরাজী বলেন, বেওয়ারিশ কুকুরের দৌরাত্মে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন তারা। তিনি বলেন, সেক্টর-১১, ১২, ১৩, ১৪সহ পুরো উত্তরা এলাকায় এক প্রকার রাজত্ব চলছে বেওয়ারিশ কুকুরের। সিটি করপোরেশনের কুকুর নিয়ন্ত্রণ কোন কার্যক্রম ওই এলাকায় চলেনা বলে অভিযোগ করেন তিনি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ বিভাগের পরিচালক ডা. বেনজির আহমদ বলেন, কুকুরের কামড় থেকে জলাতঙ্ক রোগ হয়। আর জলাতঙ্ক রোগের পরিণতি হচ্ছে মৃত্যু।
তিনি বলেন, যে কোন মূল্যে রাজধানীর কুকুর নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
খোঁজনিয়ে জানাগেছে, কুকুর নিয়ন্ত্রন সংক্রান্ত ডিসিসির একটি বিভাগ থাকলেও গত দেড়যুগ ধরে ওই বিভাগে কোন জনবল নেই। মাংস নিয়ন্ত্রণ বিভাগের জনবল দিয়ে চালানো হচ্ছে কুকুর নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম। আরও অবাক করা বিষয় হল বেওয়ারিশ কুকুর নিয়ন্ত্রণে ডিসিসির আলাদা কোন বাজেট নেই। যখন কুকুরের দৌরাত্ন বেড়ে যায় তখন থোক বরাদ্দ দিয়ে কুকুর নিধনে ব্যয় করা হয়।
ডিসিসি সূত্রে জানাগেছে, ২০১০-২০১১ অর্থ বছরে ১৭ হাজার ১শ ২৪ টি কুকুর নিধন করেছে। তবে এ কুকুর নিধনের সংখ্যা নিয়ে রয়েছে নানা কথা। কম সংখ্যক কুকুর নিধন করে তা বাড়িয়ে দেখানো হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি ডিসিসির স্বাস্থ্য বিভাগের। জানা যায়, চলতি মাসে এক মৌখিক আদেশে কুকুর নিধন কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বলেছে ডিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।
ফলে বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রবের মৌসুমে কুকুর নিধন কার্যক্রম বন্ধ করায় নগরীতে এখন রীতিমতো বেওয়ারিশ কুকুরের রাজত্ব চলছে। এ বিষয়ে জানতে ডিসিসির প্রধান ভেটেরিনারী কর্মকর্তা ডাঃ আজমত আলী বলেন, পর্যাপ্ত বরাদ্দ ও জনবল না থাকায় কুকুর নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম সঠিকভাবে করা সম্ভব হচ্ছেনা। পরিবেশবাদী সংগঠন অভয়ারণ্যের চেয়ারম্যান রুবাইয়া আহমেদ বলেন, কুকুর নিধন কুকুর নিয়ন্ত্রণের কোন সঠিক পন্থা নয়। তিনি বলেন, কুকুর নিধন বন্ধ করে নিয়ন্ত্রনের জন্য বৈজ্ঞানিক পদ্ধকি অনুসরন করতে হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।