আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ধর্ষণ (কিঞ্চিৎ ১৮+)

জীবন মানেই, অনিশ্চয়তায় গা ভাসিয়ে নিশ্চিন্তে পথ চলা। ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় গত পরশু রাতে একটি গণধর্ষণেরঘটনা ঘটেছে। পুলিশের বরাত দিয়ে আমাদের সংবাদদাতা জানান- গতকাল রাত ৯টার দিকেকর্মস্থল থেকে বাসায় ফেরার পথে গার্মেন্টসকর্মী সুমাইয়া (২০) কে একদল সন্ত্রাসী ধরেনিয়ে যায়। তারপর আশুলিয়ায় একটা পরিত্যক্ত বাড়িতে তাকে পালাক্রমে ধর্ষণের পরসেখানেই ফেলে রেখে যায় সন্ত্রাসীরা। পুলিশ সকালে মেয়েটিকে উদ্ধার করে নিকটবর্তিএকটি ক্লিনিকে ভর্তি করে।

পরে অবস্থা খারাপ হলে তাকে ঢাকা মেডিকেলে স্থানান্তর করাহয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মেয়েটির জ্ঞান ফিরেছে, তবে কে বা কারা এই ধর্ষণের কাজকরেছে সেই সম্পর্কে মেয়েটি কিছুই বলতে পারছে না। পুলিশ বলছে, তদন্তের কাজ শুরুহয়েছে। খুব শীঘ্রই আমরা আসামী ধরতে পারবো বলে আশা করি। পত্রিকার পাতার এই খবরটা রুমানা কম করে হলেওদশবার পড়েছে, আবার পড়লো এখন।

এই ধর্ষণের তদন্তের ভার পরেছে তার উপর। অল্প কিছুদিনহলো রুমানা ডিবি পুলিশে জয়েন করেছে। পেশাটা ভালোই লাগে ওর, ইন্ডিয়ান সিআইডি আরফেলুদার কাহিনীর চরম ভক্ত ও। ফলে এই পেশাটাকে অনেক মজার চোখেই দেখছে সে। এইগনধর্ষণটি সম্পর্কে অনেক প্রয়জনীয় তথ্য উপাত্ত এর মাঝে যোগার করে ফেলেছে সে।

ধর্ষিত হওয়া মেয়েটির সাথে তার কথাও হয়েছে এর মাঝে। অপরাধীদের এখনো শনাক্ত করা যায়নি। তবে আশা করা যাচ্ছে সেইটার জন্য খুববেশী সময় আর লাগবে না। ছেলেরা কেন ধর্ষণ করে এই নিয়ে রুমানারআগ্রহের শেষ নেই। নারী পুরুষ উভয়ের জন্যেই যৌনতা ব্যাপারটা একটা একটা মৌলিকচাহিদা।

কিন্তু যে যৌনতার মাঝে কোন রোমাঞ্চ নেই, ভালোবাসা নেই, সেই যৌনতায় ছেলেরাকিসের এত মজা পায় এইটা রুমানার মাথায় আসে না। তবে কি শুধুমাত্র একটা মেয়েরঅসহায়ত্বের সুযোগ নেয়াটাই মজা, নাকি অন্যকোন কারন আছে এর পিছে। কথাগুলো ভাবতেভাবতে রুমানা উইকিপিডিয়ায় ইংরেজীতে RAPE লিখে সার্চ দিলো। বের হয়ে আসলো রেপ বিষয়ক অনেক তথ্য। একটা বিশেষ তথ্যেরদিকে তার চোখ পড়লো “একাধিক গবেষণা থাকে জানা যায়, পুরুষ-পুরুষ বন্দী ধর্ষণ ধর্ষণের সর্বাধিক পরিচিত একটি ধরন।

অথচএই ধর্ষণেরসংবাদই সবচেয়ে কম প্রকাশ্যে আসে। কয়েকটি গবেষণা থেকে আরও জানা যায় যে এই ধরনেরধর্ষণের সংখ্যা সাধারণ জনসংখ্যায় পুরুষ-নারী ধর্ষণের মাথাপিছু ও আনুমানিক সংখ্যার চেয়েও বেশি। ” বলে কি? পুরুষরা এত খারাপ কেন? তারা শুধু মেয়েদেরই ধর্ষন করে নাবরং ছেলেদেরও করে, যেটার পরিমান নাকি আবার বেশী। মনে মনে একটু হেসে নিলো রুমানা,সেই হাসিটি পুরুষজাতির প্রতি একটা বিদ্রুপেরই বহিঃপ্রকাশ। পরদিন সকালে রুমানা কাগজ কলম নিয়ে এইপর্যন্তপ্রাপ্ত তথ্য নিয়ে একটা রিপোর্ট লিখতে বসল, কিছুটা অংশ লেখার পর সে ভাবলো- আচ্ছাধর্ষিত হবার সময় মেয়েরা কেমন অনুভব করে? তারা কি আসলেও তখন যৌনতার কোন মজা পায়?নাকি শুধু ব্যাথা যন্ত্রনাই অনুভব করে? এই ব্যাপারটা জানা দরকার।

কিন্তু কিভাবেজানবে সে, সে তো নিজে কখনো ধর্ষনের শিকার হয়নি। ছোটবেলায় ব্যকরণ বইতে পড়া সেইকবিতাটি মনে পড়ে গেলো তার- “কি যাতনা বিষে বুঝিবে সে কিসে, কভূ আশীবিষে দংশেনিযারে”। আসলেও তো যে মেয়েটা ধর্ষনের শিকার হয়েছে সেই কেবল বলতে পারবে ঐ সময় তারকেমন লেগেছিলো। রুমানার খুব কাছের বান্ধবী দিশা একজন ডাক্তার ওর কাছে শুনলে কেমনহয়, ডাক্তারদের তো এইসব ব্যাপারে ভালো জানার কথা। সে ভাবতে ভাবতেই ফোন দিয়ে বসলোদিশাকে।

কিছুক্ষন আলোচনার পর যেটা জানা গেলো, সেটা হচ্ছে- ধর্ষিত হবার সময় মেয়েরাসাধারনত তাদের সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে, কিন্তু ছেলেদের সাথেমেয়েদের শক্তির পার্থক্য থাকায় মেয়েরা সেটাতে পেরে ওঠে না। তাছাড়া অতিরিক্ত শক্তিপ্রয়োগের ফলে শরীরের ক্যালরীর খরচ হঠাৎ করে এতই বেশী হয় যে শরীর আর শক্তি সরবরাহকরতে পারে না। তখন শরীর নিস্তেজ হয়ে যায়। হাত পা সহ সারা শরীর অবশ হয়ে আসে ফলেশরীরে আর বোধশক্তি থাকে না। যৌন উত্তেজনার ফলে মেয়েদের যৌনাঙ্গ দিয়ে একটা তরলপদার্থ নির্গত হয় যার ফলে যৌনাঙ্গ ভেজা থাকে ফলে সেক্স করতে সুবিধা হয়।

কিন্তুধর্ষনের সময় এমন কোন পদার্থ বের হয় না। ফলে মেয়েরা অনেক ব্যাথা অনুভব করে। যৌনাঙ্গক্ষতিগ্রস্থ হয়, ডিম্বাশয় ক্ষতিগ্রস্থ হয়, রক্তক্ষরন হয়। এমনকি অতিরিক্ত খারাপ অবস্থাহলে মেয়েটা মারাও যেতে পারে। রুমানা ভাবলো, তার এই তদন্তের জন্য এইসবডাক্তারি ব্যাপারস্যাপার গুলো তেমন কাজে লাগবে না তারপরেও ব্যাপারগুলো জানা থাকাভালো।

জ্ঞান জিনিসটা সকল প্রকার ঐশ্বর্যের চেয়েও অনেক দামী, কখন যে কোথায় কাজেলেগে যায় বলা মুশকিল। রুমানার মোবাইল ফোন বেজে উঠলো, অপরিচিতনম্বর, ফোন ধরতেই ওপাশ থেকে ভয়ঙ্কর কন্ঠস্বরে ওকে কিছুক্ষন অকথ্য ভাষায় গালিগালাজকরা হলো। আর বলা হলো, ও যদি এই ধর্ষণের তদন্ত করে তাহলে ওর অবস্থা খারাপ করে দেয়াহবে। রুমানা কিছু না বলেই ফোনটা রেখে দিলো। মনে মনে একটু ভয় পেলো রুমানা।

কিন্তুভয় পেলে তো আর চলবে না, এই পেশায় ভয় পেলে চলে না। শাস্তির ভয় কার না আছে? শাস্তিরভয়ে অপরাধীরা হুমকি দিবে এটাই স্বাভাবিক। ফোনটা পেয়ে ওর সুবিধাই হলো, এখন এই ফোননম্বর ট্রাক করে অপরাধীদের খুব সহজেই শনাক্ত করা সম্ভব হবে। রুমানা মনে মনে হাসলো,ওরা এতো বোকা কেন, এমনতেই ওদের খুঁজে পাচ্চছিলাম না, এখন ফোন করে নিজেরাই নিজেদেরসর্বনাশ করলো। আসলে ওদের মাথায় বুদ্ধি থাকলে তো আর ধর্ষণের মত জঘন্য কাজটা ওরাকরতো না।

রুমানা তাকে হুমকি দেবার ব্যাপারটা থানায় জানালো, এবং একটা সাধারন ডায়েরিকরে রাখলো। আর ফোন নম্বর ট্র্যাকিঙের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করলো। এখন রুমানার খুব শান্তি লাগছে, তদন্তের কাজপ্রায় শেষ। পাঁচ জন আসামীর মধ্যে দুইজন ধরা পরেছে। আর তিনজন কে এখনো খুঁজে পায়নিপুলিশ।

তবে খুব তারাতারিই পেয়ে যাবে মনে হয়। আজ রুমানার এক আত্মীয়ের বিয়ে, সেখানেযেতে হবে। সবকিছু গুছিয়ে রুমানা বের হলো বিউটি পার্লারের উদ্দেশ্যে ওখান থেকেসরাসরি বিয়ের অনুষ্ঠানে যাবে ও। বিউটি পার্লার থেকে খুব সুন্দর করে সাজলো রুমানা,বিয়ের অনুষ্ঠান বলে কথা, বিয়ের অনুষ্ঠানে অনেক লোকজন থাকে সেখানে নিজেকে একটুসুন্দরী না দেখালেই নয়। বিউটি পার্লার থেকে বেড়িয়ে সিএনজির জন্য অপেক্ষা করছে সে।

আজ শুক্রবার হওয়ায় রাস্তায় খুব বেশী গাড়ি নেই সিএনজিও নেই তেমন, একটা সিএনজি পেলেওএত বেশী ভাড়া চাইলো যে রুমানার মনে হলো, সব কাজকাম বাদ দিয়ে সিএনজি চালানোই শুরুকরতে হবে, এতেই ইনকাম বেশী। কিছুক্ষনের মাঝেই একটা মাইক্রোবাস এসে থামলো ওর সামনে। কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই ক্লোরফর্মের সাহায্যে ওকে অজ্ঞান করে মাইক্রোবাসে করেতুলে নিয়ে যাওয়া হলো। পরদিন একটা ব্রীজের নিচ থেকে রুমানার লাশউদ্ধার করা হলো। তদন্ত রিপোর্টে বলা হলো- কয়েক দফা ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে তাকেহত্যা করা হয়েছে।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৯ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।