শহরে নতুন..... ১। সদর হাসপাতাল,ডাক্তার সাহেবের রুমে: স্যার আমার ভাগনের গত ২ দিন ধরে জ্বর আর পাতলা পায়খানা হচ্ছে
ডাক্তার:বাচ্চার দিকে না তাকিয়ে একটা কাগজে লিখে দিলেন, নাপা সিরাপ ১ চামচ করে দিন ৩বার
(রোগির গায়ে হাত দিয়ে জ্বর এখন আছে কিনা দেখার প্রয়োজন বোধ করলেন না,রোগির পাতলা পায়খানার কারনে বর্তমানে শরিরের সাসপেনশন জাতীয় কিছু লাগবে কিনা তাও দেখলেন না
)যাই হোক আমরা সাধারন মানুষ তো আর সবকিছিু বুঝি না,তাই চলে এলাম।
বাসায় পিরে দেখি ওর শরীর খারাফের দিকে যাচ্ছে,তাই আমাদের শহরের ভালো হাসপাতালে সিরিয়োল দিলাম বিকেলের জন্য।
বিকেল ৪টায় ডাক্তার আসার কথা কিন্তু তিনি ৩ টা ৪৫ মিনিটে হাজির,আমাদের সিরিয়াল ৩ নাম্বার,এবং ঠিক সময়ে ডুকলাম।
স্যার আমার ভাগনের ২ দিন ধরে জ্বর আর পাতলা পায়খানা হচ্ছে
ডাক্তার: আরে বসুন বসুন এই বাবু টাতো আমার পুরোননো রুগী,আপনারা তো সকালে সদরে দেখা করেছেন
তা বাবা এখন তুমি কেমন আছে,পায়খানা হচ্ছে কিনা,বাবা তোমার চোখ দেখি তো ইত্যাদি ইত্যাদি।
আমি মনে মনে কহিলাম: হ্যা বাবার এখনো পায়খানা হচ্ছে তবে তোর জন্য কিছু জমিয়ে রাখছে,তুই হ্যা কর তোর গালেই সারবে।
২। দেড় বছর আগে আমার প্রবাসী বড় ভাইকে ঢাকাস্থ ধানমন্ডীর একটা নামকরা প্রাইবেট হসাপটালে ভর্তি করার প্রয়োজন হয়,কারন ওখানে আমরা যে ডাক্তার দেখাতে গিয়েছি উনি বলেছেন আমার ভাইয়ের ছোট একটি অপারেশন করা লাগবে (পায়খানার রাস্তায়)
যাই হোক ভর্তি হলাম আর ১ দিন পরে অপারেশন হল এবং ২দিন পরেই রিলিজ দিয়ে দেয়া হল।
আমরা যাবতীয় মেডিসিন সহ পিরে এলাম,মোট ৪ দিনে আমার বিল তৈরী করা হলো ১ লক্ষ ২১ হাজার টাকা। এবং শুধুমাত্র ডাক্তার সাহেব যে দিন ৩বার রাউন্ড দিয়েছেন তার জন্য প্রতিবার ৮০০টাকা করে লেখা হয়েছে,প্রতিজন সিস্টার এর জন্য ৩০০ টাকা।
যাবতীয় টেষ্টগুলো ডাক্তারের নির্দেশমত যে রেফারেল ডায়াগনষ্টিক সেন্টার এর ঠিকানা দিছেন সেখানেই করাতে হলো।
আমার প্রবাসী ভাই ১৫ দিন পর দুবাই চলে গেলেন এবং সেখানে গিয়ে অনুভব করলেন তার পায়খানার রাস্তায় আবারো সমস্যা দেখা দিচ্ছে,বাংলাদেশের সেই ডাক্তার সাহেব কে কল দিলেন আর উনি বল্লেন আপনি আবার দেশে আসেন এবং আমার চেম্বারে আসেন।
ইমার্জেন্সী তিনি ঢাকা এসে ডাক্তারকে কল দিলেন এবং ডাক্তার বললেন আমি তো আগের চেম্বারে বসি না,এখন গ্রিনরোড়ের ... হসপিটালে বসি।
গেলাম আমরা সেখানে।
ডাক্তার সব কিছু দেখলেন এবং কম্পিউটারে ছবিতুলে দেখে বললেন,আপনার একটি ছোট অপারেশন করা লাগবে,কারন আমরাদের আগের অপারেশনে একটু ভুল হয়েছে
।
তাই বাধ্য হয়ে আবার অপারেশর করাতে হলো,এবং সেই ২ দিনে তিনি সর্বমোট ৮৪ হাজার টাকা বিল লেখালেন এবং রিলিজ করলেন
(ডাক্তার এর অপারেশন করার জন্য আমাদের একটি মেশিন ক্রয় করে দিয়ে হয়েছিল এবং ওই মেশিন কোথা থেকে কিনতে হবে তা তিনি নিজেই ঠিক করে দিয়েছিল। )
আমার ভাই এখনো সেই কষ্টে আছে,তার জীবনের বাকী দিনগুলো হয়েতো সেই ডাক্তারের খামখেয়ালির জন্য ভুগতে হবে।
৩। গত বছর আমার আম্মার জরায়ূমুখে অপারেশন করা লাগে,অপারেশনের ৩দিন আগ থেকে ডাক্তারের নির্দেশ মত তারই নিজের হাসপাতালে স্যালাইন লাগিয়ে রাখা হয়,তিনদিন পরে উনি বলেন আসলে যে ডাক্তার এই অপারেশন করবেন উনি মাসে এখানে একবার আসেন,কাল অপপারেশন করে গেলে আবার ১ মাস পর আসবেন।
এবার কি করি করি আমার আম্মার অবস্থা সিরিয়াস তাই আমাদের শহরের আরেকটি হাসপাতালে অপারেশন করালাম।
(শুধু শুধু তিন দিন স্যালাইন লাগিয়ে রেখে আমাদের থেকে ১৪ হাজার টাকা বিল করে নিয়ে গেলন। )
৪। আমার এক চাচা বাংলাদেশের ১ম ৪জন ডাক্তারের একজন, তিনি একজন ক্যান্সার গভেষক এবং আমেরিকান ক্যান্সার গভেষনা ইনিস্টিটিউটের মেম্বার।
তিনি বর্তমানে সিলেট মেডিকেল কলেজের একটা বিভাগের প্রধান এবং সহকারী অধ্যাপক।
তার প্রচুর রোগী,ক্যান্সার রোগীদের থেরাপি দিতে হয়,তিনি রোগীদের হসপিটালে ভর্তি করে ১ ডোস দিয়ে কোথায় যেন চলে যায়,ফোন করলে বলে আমি তো ৩ দিনের তাবলিকে আছি।
এবার বলেন মানব সেবার চাইতে কি তাবলিক মহত কিছু ?
৫। বাবা আমি ডাক্তার হয়ে গ্রামের গরিব মানুষের জন্য একটা ফ্রি চিক্যিসা করার হাসপাতাল বানবো।
৪ বছর পরে: দূর আব্বা কি কন,গ্রামে গেলে ৫০০/১০০০ টাকা দেবার মত রোগী নাই,আমি আব্বার শহরের অমুক সরকারী হাসপাতালে যোগ দিচ্ছি আর ডজন খানেক ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের দালালির চেষ্টায় আছি।
বর্তমানে দেশের বেশিরভাগ উপশহর/থানা সরকারী হাসপাতালে ডাক্তার দের পোস্ট খালি,কারন জানতে গেলে বেরিয়ে আসে কোন ডাক্তার গ্রামে আসতে চায় না,কেননা এখানে চেম্বার গুলোতে তেমন একটা বিজিট পায়না
আমার ফুপাতো ভাই ডাক্তার কে যে উপহার টা দিলেন
৬। আমি : স্যার টেস্টগুলো কোথায় করাবো ?
ডাক্তার: অমুক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে
আমি একই টেস্ট অন্য একটা স্থানে করিয়ে আনি (৫০০ টাকা কমে)
পরের সপ্তাহ,আমি এবং আমার ফুপাতো ভাই গেলাম,রিপোর্ট দেকাতে গেলে মানুষ টাকা দেয় না বেল তাদের ৩০ মিনিট বসিয়ে রেখে একটা ২ মিনিটের সুযোগ দেয়া হয়ে থাকে,
আমি: স্যার রিপোর্ট
ডাক্তার: ছুড়ে পেলে দিলেন রিপোর্ট,আমি যেখানে বলেছি ওখানে করান নি কেন ? এই রিপোর্ট হবে না,যান আবার করিয়ে নিয়ে আসুন।
আমার ফুপাতো ভাই ডাক্তার সাহেবের কলার চেপে কানের ২ ইঞ্জি নিচে কসিয়ে মারলেন একটা,এরপর ডাক্তার সাহেব রিপোর্ট তুলে নিয়ে বললেন বাবা রা তোমাদের রিপোর্ট সব ঠিক আছে
এতেই চলবে,বাইরে কাউকে কিছু বলার দরকার নেই।
(মাইরের উপরে ওষুদ নাই)
আমি বর্তমানে সকল রিক্সাওয়ালাকে ২/৩ টাকা বেশি দেই,কেননা তারা গরিব মানুষ ২/১ টাকা চেয়ে নেয় কিন্তু ডাক্তার তো রেট করে ৫০০/১০০০ টাকা নেয়। তাই গরিব রিক্সাওয়ালাকে ২ টাকা দিলে বরং লাভই হচ্ছে।
সকল ডাক্তারের কাজকর্ম বা চরিত্র এক না, তবে সকল ডাক্তারের কিছু কিছু কাজ একই ,যেমন সরকারী হাসপাতালে তুই তুই করে রোগীর সাথে কথা বলে আর প্রাইবেট চেম্বারে গেলে আব্বা ডাকে।
(না জানি প্রতিদিন কতজনকে আব্বা ডাকে)
বেশির ভাগ ডাক্তার বলেন আমি অমুক ইউনিভার্সিটি থেকে .... টাকা খরচ করে ডাক্তার হয়েছি তাই আমার ভিজিট ... টাকা
সরকার আমাদের কত টাকাই আর বেতন দেয়,আমরা ইন্টার্নি করে কত অবহেলায়
আমি তাদের বলছি,সরকার আপনাকে যদি বেতন কম দেয় তবে চাকরি চাড়ছেন না কেন ? শুধু শুধু একটােআসন দখল করে বসে আছেন কেন ?
আপনাকে যেখানে পোস্টং দিচ্ছে সরকার আপনি না যেতে চাইলে ,গ্রামে না যেতে চাইলে ডাক্তার হবার আগে বড় বড় ভাষন কেন দিয়ে ছিলেন ?
যারা বলেন অনেক কস্টে ডাক্তার হয়েছি,বাপরে সখ মেটাতে, দাদুর শেষ ইচ্ছে পূরন করতে ডাক্তার হয়েছি, ভিটেমাটি বিক্রি করে ডাক্তার হয়েছি
তাদের বলছিbr /> আমি জানি বাংলাদেশের কতিপয় ফকিরের পোলা আজকে ডাক্তার হয়েছে,বাকী সবাই বড় লোকের পোলা,কারো বাবা অমুক দলের নেতা,কারো চাচা অমুকে ব্যাংকের ম্যানেজার আর কারো মা অমুক মন্ত্রনালয়ের তমুক।
তাই কষ্ট করে ডাক্তার হয়েছি এটা আর না বল্লে কি হয়,মানুষ তো জানে ।
দুনিয়োতে এমন কোন পেশার মানুষ আছে,যাদের কোন কষ্ট ছাড়াই চাকরি পেয়েছেন।
আমি একজন প্রকৌশলী, আমি যদি কালকে বলি যে মাননীয় সরকার,আমি অনেক কষ্টে ইঞ্জিনিয়ার হয়েছি,তাই আমি শুধু একটা চেয়ারে পাছা মেলে বসে থাকবো,আপনি আমার জন্য একটা আসনের বরাদ্ধ দিন।
তখন আমার পাছায় লাত্থি দিয়ে সরকার আমাকে বলবে তুমি নিজের পাছায় হাতবুলাত বুলাতে বাড়ি চলে যাও।
৭।
সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ডাক্তারের বাড়ির কাজ করলেন, টাকা নিলেন ১ কোটি টাকা আর বাড়ি তৈরীতে খরচ করলেন ৫০ লাখ টাকা
ডাক্তার: আপনি পুকুর চুরি করলেন কেন,বেটা চোর,নকল করে ইঞ্জিনিয়ার হয়েছিস ? টাকা নিলি বেশি কাজ করলি কম কেন ?
ইঞ্জিনিয়ার: স্যার আমি তো কষ্ট করে ইঞ্জিনিয়ার হয়েছি তাই একটু ডিমান্ড বেশি।
(তখন ডাক্তার তার পায়ের জুতা খোজা শুরু করলেন ইঞ্জিনিয়ারকে মারার জন্য। )
* সকল পেশাজীবির একটা দাম আছে,সবাই কষ্ট করে বড় হয়,শিক্ষত হয় দেশ/সমাজ/গরিব মানুষের সেবা করার জন্য
কিন্তু আমরা সবাই যদি কষ্ট করে ডাক্তার কিংবা ইঞ্জিনিয়ার হয়েছি বলে ডিমান্ড বাড়িয়ে দেই তবে এই গরিব দেশের সাধারন মানুষ কোথায় যাবে বলতে পারেন ?
** সারা দিন পুলিশকে চোর বলি,ভেবে দেখেন একজন পুলিশ কত টাকা বেতন পায় ? তার চুরি করা লাগবে না যদি এদেশের ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার রা তাদের সেলামি ৫০০/১০০০ টাকা থেকে কিছুটা কমিয়ে দেয়,সবার জন্য না হলেও অন্তুত গরিব মানুষের জন্য।
*** যারা বাবার স্বপ্ন পূরন করতে ডাক্তার হয়েছেন তারা যদি সার্টিফিকেট দিয়ে ব্যাবসা করেন তবে আপনার বাবার কি এই ব্যাবসার স্বপ্নটাও মনে মনে ছিল ?
মনে রাখবেন ১ বালতি দুধে একফোটা বিষ দিলে পুরো বালতি যেমন বিষ হয়ে যায় তেমনি একজন ডাক্তারের খারাপ ব্যাবহার/ভুল চিক্যিসার/দূর্নিতির কারনে সকল ডাক্তার তখন কসাই বনে যায়।
আসুন সবাই সবার কথা ভাবি,দেশকে ভালোবাসি ,দেশের মানুষকে ভালোবাসি।
(আজকে ডাক্তার দের নিয়ে অনেকে অনেক লেখা লিখেছেন তাই সেই প্রসঙ্গে লিখেছি, আর উপরের সকল গটনার সাথেই আমি প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত এবং সকল গটনা বিগত ৩/৪ বছরের মধ্যে গটেছে )
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।